কবিতা

দেয়ালের ডায়েরি

র বী ন্দ্র না থ প্র ধা ন

দেয়ালটা ঝকঝক করছিল। নাতনি সেখানে রং পেনসিল দিয়ে আঁকছিল আঁকাবাঁকা লাইন,
ফুলের মতো, আকাশের মতো,
কখনো ভাঙা একটা ঘুড়ি।

দেয়াল জানে---
এই গল্প বেশি দিন টিকবে না।
বড় হলে সবাই চলে যায়।
পড়ার চাপ, স্কুল, অফিস, নতুন শহর-
আর দেয়ালটা থেকে যায় একলা।
একটা পুরোনো প্রেমপত্রের মতো,
যার প্রাপকের আর ঠিকানা নেই।

আজই বিকেলে নাতনি তাকে বলল,
‘জানো? আমি বড় হয়ে ডাক্তার হবো।
তখন এ-সব আর আঁকব না।’

দেয়াল হালকা কেঁপে উঠল হঠাৎ,
আলোটা ঠিকরে পড়ল এক কোণে।
বুঝলে?
বয়স আসলে দেয়ালকেও কাঁদায়-
শুধু কারও চোখে পড়ে না।






কামনার হুল

বি শ্ব জি ৎ বা উ না

ভেঙে দাও খরা, উমোদ জলের কাছে হাতছানি।
নাভির চৌকাঠে লালায়িত বিকেলের মিহি ফেরা।
প্রচ্ছদে কাপালিক আলো, পাখনায় উপুড় জানি
তোমাকে ত্রিমাত্রিক ভাবি। গৃহী নোঙরে আমি চেরা।

সাবলীল হতে চাই, সে আলুলায়িত জলে রাখা
নীলিমা উজ্জ্বল চোখ নিয়ে বসি পালকের ধারে।
পাঁজরে মেঘলা প্রেম নিয়ে চুপ মহামান্য পাখা...
সীমানায় ডুবে প্রেম দীর্ঘ কারিগর হতে পারে।

নেভানো উপক্রমে একাকী বুকে চোরাস্রোত বাড়ে,
ঝনঝন আঙুলে খোলস উঠে আসে ঘিলু খেয়ে।
কাছে নতজানু দাঁড়াই, নিজে নিজে ভিক্ষুক হাড়ে
বুঝি জীবনের কোনো মানে নেই তোমাকে না পেয়ে।

কাঠের আয়ুষ্কাল নিয়ে নামিয়ে রাখি আলো-উঁই।
তোমাকে জলীয় ভাবি, কামনার হুল দিয়ে ছুঁই।






একফালি

ক বি তা ব ন্দ্যো পা ধ্যা য়

জানলা দিয়ে দেখা যায় একফালি আকাশ!
সেখানে সূর্য খেলা করে, চাঁদ, তারাদেরও
দাপট থাকে,
কিন্তু সব ছাপিয়ে থাকে একটা ছবি,
তাতে অস্পষ্ট এক লেখা!
পড়া যায়না, আতস-কাঁচের চেষ্টাও ব্যর্থ হয়;
অপেক্ষা করতে করতে চোখে ঘুম নেমে আসে, 
স্বপ্নে দেখতে পাই একটা ছবি,
হুবহু সেই আকাশের ছবিটা !
পড়তেও পারি এবং আতস-কাঁচ ছাড়াই...
লেখা আছে 'শৈশব-কৈশোর-যৌবন'
আমি হঠাৎই অস্থির হয়ে পড়ি
বৃদ্ধ-চোখের হতাশা মুছি ঘষে ঘষে...






কালপিঞ্জর

হে ম ন্ত স র খে ল 

কী ভীষণ বর্বর এই স্তব্ধতা!
এই নৈঃশব্দ কী অসম্ভব চুপ!
ডুবে যাওয়ার আগে যেন চাঁদের জ্যোৎস্না মূক!

                  হে অ-বাক
এভাবে স্পন্দহীন থেকো না।
হাতে উঠে এলে ডমরু
ভয়ে তো বলে উঠবে,
'-- কোথায়? এই তো আমি! ওসব সত্যি নয়, রটনা।'

ওঠো, জাগো, ভাঙো পিঞ্জর, সাড়া দাও---
অভাবে ডুবে যাচ্ছে চেতনা।






ভূদান যজ্ঞের শেষে 

অ ভি জি ৎ ঘো ষ 

ভূদান যজ্ঞের শেষে,
দেবতা আমার---
বধ্যভূমী কেন চোখে আসে?

এরকম কথাতো ছিলনা।

ব্রত উদযাপনের পর ও 
তমসা হয়নি দূর---
তীব্রতর হয়েছে আঁধার।

তবু কেন কাটেনা দুঃসময়?

পুষ্পাঞ্জলি দিই সর্বশক্তিমানে,
মানুষের মানবিক উত্তরণে---
অথচ, কেবলই অবরোহণ।

অশান্তির আবরণে আবৃত ধরা।

এখনও হারাইনি বিশ্বাস
প্রতিটি মানুষই অমানুষ নয়---
শয়তানও দেবত্ব পেতে পারে।

কারণ, বিশ্বাস হারানো অপরাধ।

একদিন হবে নতুন সূর্যোদয়,
মলিনতা যাবে মুছে‌---
কলুষতাহীন হবে পৃথিবী।

সেদিন মানুষ--- মানুষ হবে।
ভুদান যজ্ঞের শেষে,
দেবতা আমার---
ফিরে পাবো সৌহার্দ্যের অপার প্রাঙ্গণ।

সেইদিন কবি,
ভালোবাসার কবিতা লিখবে।






স্পর্শক 

শ র্মি ষ্ঠা 

কোনও বিঘ্নিত মধ্যযামে গরাদে মিশে যায় নিশুতি-নিঝুম
প্রবেশ করে উজাড় করা সর্ষের প্রান্তর
গোলা ভরা ধান
তাঁতের মাকুর শব্দ
আর সর্বনাশের নামডাক।

সন্তর্পণে এগিয়ে যাই সেই স্থানে যেখানে একদা বাতায়ন ছিল
লেবুপাতার সুবাস নিতে নিতে দেখি
দেহটা কুচো বকুল হয়ে 
মরচের ফাঁক গলে নিমেষে উধাও
শ্বাসটুকু একলা ঘর হয়ে রয়ে গেল চৌমাথার মোড়ে।

জলের শব্দ শুনতে শুনতে যখন তুমুল অন্তজ আখর
ঝরে যায় বকুল, কুয়াশাচ্ছন্ন ঘর
আঁধারের নবান্ন হয় তখন
ফুট মেপে এগোয়
এ যাবৎকালের মায়ার শরীর পৃথিবীর কিনারে।

ওটা মেরুপ্রদেশ
ওখানে শীত বলে কিছু নেই
অথবা আছে ভীষণভাবে গভীরে।






অ-সুখ 

ম ধু মি তা ধ র 

মেঘলা আকাশ বুঝতে দেয়নি কিছু
পূর্বাভাস না থাকলে নোঙর করা নৌকোও মাস্তুল ছিঁড়ে বেরিয়ে যায়...

কখন যেন  তুমি ক্লান্ত দেহ এলিয়ে দিলে সিটে
হুস্ করে আমার মন পেরিয়ে চলে গেলে...
গাড়ির ভিতরের আবছা অন্ধকার
কাঁটাতার হয়ে বেঁধে দিল সীমারেখা।

অ-সুখ, তুমি সহবত শিখে নাও...
সুখের সাথে বোঝাপড়ায় গেলে
ক্যানভাসে ফুটে উঠবে শুধুই 
বৃষ্টির রঙ...

সচেতন না হলে বর্ষা কিন্তু আর কোন ঋতুকেই
জায়গা ছেড়ে দেবে না।






দিগন্তের পথে 

ড. শ মি তা ভ ট্টা চা র্য 

রাত যায় দিন আসে
কাঁচের জানালায় চড়ুই...
বৃষ্টি পড়ছে, একটুকু জায়গা চাই,
আমারও চাই, তবু অন্যের বাসায় নয়।
কিন্তু আজও একটি বাসা হলো না
রাত হলো, দিন হলো,
ভালো হলো মন্দও তো হলো
কিন্তু আমার একটি দেয়াল হলো না!!
যেখানে আমি বলতে পারি
প্রবেশ নিষেধ কিংবা স্বাগতম্।
ব্যস্ত মুহূর্তের কিছুটা অংশ নিয়ে
মেঝেতে নিজের রঙে আলপনা।

বাইরে দরজায় নেম প্লেট আছে
সেখান আমার নাম দেখেছি 
কিন্তু বাসাটা খুঁজে পাইনি,
মজলিশের আলোয় বড় আঁধারের হাতছানি
অপরের অধিকার খুব শক্ত করে
নেপথ্যে রঙ মাখে,
দল বেঁধে নিন্দে, সত্যের অপলাপ
যা দেখা যায়, যা বোঝা যায়
মুখোশের আস্তরণে
এক বিরাট সং...
আমি সার খুঁজে এতটুকু পাইনি
শুধু ছোট্ট  মজবুত ভালো একটি
বাসা তৈরির ইচ্ছেতে 
আয়না আজ ভেঙে চুরমার
আমি আর আমাকে দেখতে চাই না...
নিখিল বিশ্বের ছাদের তলায়
আমি এবার পাখির মত 
উড়তে চাই,
অধরা, অচেনা দিগন্তের পথে।






অবরোহন 

ছ ন্দা চ ট্টো পা ধ্যা য়  

লোকটা সিঁড়ি বেয়ে উঠতে চেয়েছিল, উঠেওছিল অনেক বছর ধরে...
সে সিঁড়িতে মসৃণ মার্বেল পাথরের কারুকাজ...
যে কোনো মুহূর্তে পা পিছলে যাওয়ার ভয়... 
ভয়ঙ্কর টেনসন, টানটান উত্তেজনা, লোকটা তবু উঠছিল!
তার জন্য অপেক্ষায় ছিলো না কোনো অলৌকিক লিফট, 
প্রার্থী সে দৈব অনুগ্রহের... ছোটবেলায় বাবা বলেছিলো,
'কষ্ট না করলে কেষ্ট মেলে না!' 
লোকটা একটা একটা করে সিঁড়ি ভাঙছিলো, আর ভাঙছিলো, আর ভাঙছিলো...
আর ভাবছিলো একটা প্রশস্ত ছাদের কথা!
ঐ ছাদের উপর চাঁদের চাঁদোয়া... নক্ষত্রের চুমকি!  
লোকটা সিঁড়ি বেয়ে উঠে আসলো একটা অন্ধকার বারান্দায়, সারি সারি বন্ধ দরজা...!
লোকটা সব দরজায় টোকা দিয়ে চিৎকার করে বললো, দরজা খোলো, করুণা করো... 
তার প্রার্থনা দরজা থেকে দেওয়ালে আছড়ে পড়লো প্রতিধ্বনি তুলে...
দরজা খোলোওওও, করুণা করোওওও...!
কোনো অদৃশ্য অদৈব হাত তার ঘাড়ে ধাক্কা দিলো...
লোকটা গড়িয়ে পড়তে লাগলো এক বালতি জলের মতো...
লোকটা বুঝতে পারছিলো... আরোহনে দম লাগে, 
অবরোহন সাবলীল...!!





মায়া লেগে যায় 

ছ ন্দা দা ম  
 
কি জানি কোথায়, সোঁদা হৃদয়টায়, কষ্ট কষ্ট আঁচ ছুঁয়ে যায়
হৃদয়টা হতে থাকে ভারী, সময়টা দিয়ে যায় আড়ি তবু...
কেন জানি মায়া লেগে যায়!!

আধভাঙা চুরিতে, কানের জোড় হারানো দুলটাতে,
ছিঁড়ে যাওয়া পায়েলটাতে মন সেঁটে যায,
শুধু শুধুই মায়া লেগে যায়!!

ভরে যাওয়া ডায়রি, কালি শেষ বলপেন, রঙচটা গলার চেইন
সব সব অর্থহীন জানি, তবু তুলে রাখি বুকের খাঁচায়
সব অর্থহীনতায় কেন জানি কেন জানি মায়া লেগে যায়!!

বিবর্ণ শাড়িটা, পুরোনো ছেঁড়া মশারীটা,বেরঙীন রুমালের...
কোণটাতে কার জানি স্পর্শের ছোঁয়াচ অসুখ বাসা বেঁধে যায়
অতীত যাকিছু ছেড়ে দিতে হয় তবু জানি....
ব্যথাময় বুকটাতে ঘোর লাগা চোখটাতে মায়া লেগে যায়!!

পুরোনো রসিদ, সংসারী ফর্দ, আধা লেখা চিঠি কোনো...
হৃদয়টা নিংড়ে নিয়ে কাউকে লেখার শুরু, কিন্তু শেষটা বাকি থেকে যায়...
ফেলে দেয়া দায়, মনটা দেয় না সায়...
হলদেটে যত্তসব প্রাণের সুতো ধরে টান দেয়া বস্তুগুলোর...
       জানি না কি কারণে অহেতুক অকারণে মায়া লেগে যায়!!

মোবাইলের গ্যালারি, কথোপকথন, সব সব....
ধুয়ে মুছে ফেলতে পারি না এই তো জ্বালা,
আমার কাছে সব কিছুই প্রাণের আপন হয়ে যায়,
       মাঝে মাঝেই জ্বর ওঠে আমার...
                স্পর্শহীন স্পর্শের আমার খালি মায়া লেগে যায়!!






সেখানে তুমুল ভাঙচুর 

দে বা শী ষ স র খে ল 
  
এখানে বিমলকান্তি 
সুন্দর এখানে এসে থমকে আছে।
তার এত অপরূপ বিভা 
অথচ তিনি কিছু দিতে অপারগ।
সামনে দাঁড়ালে এক প্রলম্বিত ছায়া পাওয়া যায়।
দেখা যাবে রাহুলের নিমীলিত চোখ 
ভন্তে আনন্দ যেন তারই প্রতিবিম্ব।
পুরুষের চোখে নয় 
এখানে এলে ফিরে পাবে মানুষের আঁখি।
পৃথিবীর শেষ তপস্বিনী তরঙ্গিনী তাকে পাওয়া যাবে
       অনিন্দ্যসুন্দরী গোপা
      নীল ফুলে অজস্র মৌমাছি।
তিনি কিছু দিতে পারেন না,
শুধু ছায়া দেন 
আলোর ধেনুগুলি দোল খায় জেতবনে কুঞ্জছায়ায়।
তোমার ভেতরে যে অনবরত ভাঙচুর বিস্ফোরণ 
তা অকস্মাৎ থেমে আছে 
আছো নিবিড় যাপনে,
যা সংগ্রহ করেছ 
কষ্ট করে, ভ্রষ্টপথে নয়
 তা তুমি করেছ, একান্ত তোমার সংগ্রহ।
 যেভাবে বলেন গুরুবর 
      তার ভাষা সেরকম নয়।
 ঈশ্বরের দূতের মত নয় তার বাণী।
 তিনি একজন মানুষ যিনি দেবতা হতে পারেন।
 তিনি একজন দেবতা, প্রকৃত মানুষ হয়েছেন।
 সিদ্ধান্তে তুমুল ভাঙচুর
 তবু এই সেই জনপদ 
তথাগতপুর।
আলোর অধিক আলো মেখে নির্জনতা শুয়ে আছে জলে ও জঙ্গলে।






বরষে শাওন 

শি খা দ ত্ত 

ভিজে যায় গাছপালা 
ভেজে জনপদ 
বেজে যায় বৃষ্টি নূপুরে
"বাদরিয়া বরষে শাওন কি"
উঠে আসি ঝুল বারান্দায়;
দেখি কোন এক মগ্ন জাদুকর 
আকাশের বুক থেকে খুলে নেয় 
নক্ষত্রের জড়োয়া গয়না 
কেড়ে নেয় ডুবন্ত দিনের মুখে 
ম্লান  ছায়া ভিখারি আলোর। 
ডুবে যায় নগ্ন চাঁদ অভিমানী মেয়েটির মত। 
অন্য এক জাগতিক মায়া 
সিঁদ কাটে বুকের অন্দরে।
খুলে পড়ে ঈর্ষার ঘন নীল 
কখনো বা চাতুরী প্রলাপ 
ইতঃস্তত কিছু ভেজা স্মৃতি। 
রাতভর জল মেপে মেপে 
কথা হয় শূন্যপুরাণ;
তবুও শ্রাবণ এলে বারবার 
অনর্গল মেপে নেব তার জল রং।





বৃষ্টি তুমি 

বী থি কা ভ ট্টা চা র্য 

আসমানী রঙ মেঘলা আঁচল, অনুভবে হৃদয় ছোঁয়া, 
আকাশ ভাঙা বাদল দিনে, মেঘ বালিকা বৃষ্টি ধোয়া। 
চুমকি জরির সুতোর কাজে, মেঘের ডানায় মুখ লুকিয়ে, 
কালো মেঘের ভেলায় ভেসে, বাদল বাতাস ধায় হাঁকিয়ে। 
সাগর জলের সফেদ ফেনায়, আকাশ নীলের সমুদ্দুরে,  
রঙ ছড়িয়ে, মন জড়িয়ে, যায় হারিয়ে অচিন পুরে।
মেঘ বালিকার বৃষ্টি ফোঁটা, রিমঝিম ঝিম শব্দ বোনে, 
বাদল মেঘের প্রলয় নাচন, বাণ ভাসি মন প্রমাদ গোণে। 
বৃষ্টি যখন শব্দ সাজায় সৃষ্টি ছাড়া, অঝোর গানে,
নীল ভ্রূকুটির কুটিল দুচোখ, জল ভরা মেঘ বজ্রবাণে।
থেকে থেকে সগর্জনে, মেঘের জটা প্রলয় প্রকট, 
হুহুংকারে কাঁপছে ধরা, অগ্নি বেশে কোন সে শকট।
পৃথ্বী কাঁপে সন্ত্রাসে তার, বুকের মধ্যে ধরায় কাঁপন, 
তরঙ্গ ধায় আকাশ চিরে, গর্জনে তার অনুরণন। 
নদীর জলে ঢেউয়ের দোলে, মত্ত ধারায় তুমুল মাতন। 
উথাল পাথাল বাদল নীরে, কূল ছাপানো অথৈ প্লাবন। 
ঝরো না আর বৃষ্টি তুমি, ভাসিয়ো না আর, শ্রাবণ নীরে,
গরীব চাষীর করুণ দুচোখ, আকাশ পানে তাকায় ফিরে। 
সবহারাদের নেইতো সহায়, নেই আবরণ মাথার পরে, 
বন্যা ধারায় ডুবলে ধরা, বাঁচবে তারা কেমন করে! 
সৃষ্টি বাঁচুক বৃষ্টি তোমার মিষ্টি ছোঁয়ায় মনটা জুড়ে,
বৃষ্টি ঝরুক দৃষ্টি মধুর, বৃষ্টি নাচুক ছন্দে সুরে।






কোনো হেলদোল নেই 

প্র দী প সে ন  

উলঙ্গকে উলঙ্গ বলে সম্বিত ফেরানোর চেষ্টায় হাঁকছি 
কিন্তু কিছুতেই কিছু হচ্ছে না! 
কী করি এখন? 
জ্ঞানপাপীকে কী পাঠ শোনাবো? 
সবই তো চালুনিতে জল আটকে রাখার মতো 
সেবকের বেশে মাকালকে দেখেই বুঝে গেছি মালটা নকল।
নকল টিকি দাড়ি উপড়ে ফেলে বললাম- হচ্ছেটা কী?
কোনো হেলদোল নেই! 
কাতুকুতু দিয়ে ঠিক নিজের ঝোলা ভরে নিচ্ছে। 
ভাবলাম খামোকা হেঁকে মরি কেন 
জাহান্নামে যাক যে যার মতো, আমার বয়েই গেছে। 
কিন্তু মৌনব্রত তো সবার জন্য নয় 
ডুবলে যে আস্ত নৌকোটাই ডুববে যে নৌকার আমিও এক যাত্রী 
তাই তো হাঁকতে হয়।






কৃপণ আমি 

অ মি তা ভ দে  

সেই তো একই ঢ্যাম কুড়কুড়
একই ভাবে চক্ষুদান
ভাবলে পরেই বুক দুরদুর
পকেটে বুঝি পড়লো টান।

সেইতো একই ঘর পাঁচালী
গুষ্টিসহ আমোদ করে
চিবিয়ে গেলাম খড় বিচালী
গণ্ডেপিণ্ডে এলো ঘরে।

পুজো মানেই হাড় জ্বালানো
বাপের টাকায় ফুর্তি করা
গন্ধমাদন ঘাড় কাঁপানো
বুঝবে কবে বুঝবে ওরা!

গেঞ্জি ছেঁড়া নোংরা বালিশ
কেটেই গেল বিশটা বছর
কলুর বলদ করছে হাপিস
একটু দুপুর নাক ঘড়ঘড়।

বলুক লোকে আমায় কৃপণ
সময় কৃপণ কেউ বোঝে না
আমিই বুঝি আমার জ্বলন
আমার পুজো দীপ খোঁজে না।

যখন ছিলাম পুজোর ঘোরে
সবার মতো গতে বাঁধা
অতীত সেসব আজের ভোরে
কিপটেমিতেই গলা সাধা।

আমার পুজো তোমার পুজো
যোজন ফারাক তোমায় আমায়
দুগ্গা মা গো তুমি বোঝো
ব্যাজার হলেও প্রণাম তোমায়।






অসহযোগ 

প ল্ল ব ভ ট্টা চা র্য অ ন ন্ত 

তোমাদের কাছে একটু রোদ্দুর চেয়েছিলাম।
তোমরা আগুন জ্বালাতে বলেছিলে---
সুখ পুড়ে যাবে বলে আমি আগুন জ্বালাইনি।
তোমরা নীলামে কিনতে চেয়েছিলে কিনা জানিনা--
আমি আমার ইচ্ছেগুলোকে চাইনি বেচে দিতে।
তোমাদের ডাকে সাড়া দিইনি---
তাই তোমরা আমাকে সম্পূর্ণ একা করে দিলে!
আমার সেই একাকিত্বকে আমি ছড়িয়ে দিয়েছি
আমার কবিতার ঊষর মাঠে---
জানি একদিন প্রতিবাদের ফসল হয়ে
নিশ্চিত মিশে যাবে সমবেত'র দলে, জলে স্থলে।
সোজা হাতে তোমাদের কাছে চেয়েছিলাম
একটু সাহায্য, সাহস আর একটু সহযোগিতা
তোমরা উপুড় হাতে কেবল দিয়েছ ধিক্কার।
কেউ কারো জন্য নয় জেনেও---
আমার ইচ্ছার বীজ বপন করেছি অদৃশ্য ভূমিতে
জানি, একদিন উদ্ভিদ হয়ে ঠিক পারবে চিনে নিতে।।






বন্ধু 

স ন্দী প ন গু প্ত 

রাত পেরিয়ে আসে ভোর
ফোটে শিউলি ফুল,
জানবে না কেউ আঁধার ছিল
কতটা প্রতিকূল...

কাছের মানুষ কেমন আছে
কেউ কি দিন গোনে?
সারা বিশ্বের খবর যদিও
থাকে নখদর্পণে...

যেমন কর্ম তেমনই ফল
মুখের বাণী গীতা,
সুখের ভাগ ফিফটি ফিফটি
দুঃখ বিলাসিতা...

পাল্টে ফেলে মুখের স্বাদ
হাসছে মানুষ শোকে,
বন্ধু বলে হয়না কিছু
এখন মর্ত্যলোকে...






বর্ষার আমেজ 

স ঙ্ঘ মি ত্রা ভ ট্টা চা র্য 

এখন চারিদিকে বর্ষার আমেজ|
তবুও সবুজের সমারোহে কেমন যেন বিষন্নতা!
 বর্ষাও এখন খানিকটা দ্বিধাগ্রস্ত!
সবুজের তারুণ্য আর বিমর্ষ ধূসরতার মধ্যে পড়ে 
সেও যে খানিক বিমোহিত কিংবা দিশেহারা!
একটা গোটা দিন অপেক্ষায় ছিল 
শ্রাবনের বারিধারায় 
অথচ আকাশের কিছু জমা মেঘ 
চলে গেলো দিকশূন্যপুরে!
তবুও পিছন ফিরলে দেখতে পাই 
এমন একটা ঢল ঢল বৃষ্টিস্নাত সন্ধ্যা ছিল 
যখন তোমার চোখ আমার চোখের দিকে 
চেয়ে বলতে চাইতো...
"এমন দিনে তারে বলা যায়"
তবুও তো বলা হলো না কত কথা!
শোনা হলো না রাতের রজনীগন্ধার গন্ধের 
মধ্যেও ভেসে আসা বৃষ্টির নীরব কান্না!
একদিন যে বৃষ্টির নুপুরের ছন্দে 
পা মিলিয়েছিল আমার অপটু যৌবন!
আজ সেই কালের নিয়ম কে আগ্রাহ্য করেই...
সমগ্র আকাশ ভেঙে নেমে এলো বৃষ্টির স্রোত!
চারিদিক চুপচুপে হয়ে ভিজলো۔۔۔۔
খড়কুটোর মতো ভেসে গেলো 
আমার কাগজের নৌকো 
যাতে লেখা ছিল তোমার আমার প্রেমের গল্প!
নদীর দুকূল ছাপিয়ে প্লাবন এলো 
কিন্তু স্নিগ্ধ হলো না দেহ মন 
তৃপ্ত হলো না অন্তর 
বর্ষার ভেতরে যে এতো ধূসরতা 
এতো আগুন!
জানতাম না তো এতদিন!






এসো, চেতনা ভক্ষণ করি 

শ ম্পা সা ম ন্ত 

বুঝলাম সব যখন চলে যায়, তুমি আসো।
বয়োবৃদ্ধ বটের ছায়ার মতো।অজস্র ঝুরি নামে প্রিয় মুখ আনত॥
যখন স্বার্থসমূহ সরে যায় কাছের দরজায়
তুমি আরো কাছে এসে বসো।
স্পর্শে উত্তাপ এনে  চাদর  জড়িয়ে দাও ঠকঠক কেঁপে ওঠা ধমনী তন্ত্রে।
সমস্ত পাপ পুণ্য একাকার করে ফেলি।
আর এই দশহাতে সামলে যাওয়া উৎসাহ ঢেলে দিচ্ছ এগিয়ে রাখা বিশ্বস্ত গিরিচূড়ায়।
শাদা মেঘের মধ্যে ভেসে যাওয়া চাঁদ। শেষ রাতে পৌঁছে বলে দেব পৌঁছানো সংবাদ।
তার চেয়ে এসো বসি 
খবরের চেয়ে সত্য হয়ে উঠি।
আর ভক্ষণ করি পরস্পরের চেনা
চেতনা।






চরাচর জুড়ে বৃষ্টি নামুক 

ম ঞ্জি রা ঘো ষ 
 
বৃষ্টি আমার মনের শরীরে অবিরাম ধারাপাত
রিমঝিম ঝিম ধ্বনি বেজে ওঠে মেঘমল্লার তানে-
না বলা কথায়, বৃষ্টি বেলায় এঁকে যায় আলপনা
তৃষাতুর মনে, বারিষ বিন্দু শ্রান্তি ফিরিয়ে আনে। 

গোপনে গোপনে সারা দিনমান, অপেক্ষা করে কেউ! 

বিবিক্ত পথে আনাগোনা তাঁর, মৃদু মন্দ্রিল ধ্বনি
পথ ছুঁয়ে থাকে জুঁই বেলি আর কদম ফুলের ঘ্রাণ---
ফোঁটায় ফোঁটায় কচি কিশলয় করে যেন কানাকানি, 
বৃষ্টিগন্ধী আশ্বাস নিয়ে ভরে ওঠে কলতান। 

চরাচর জুড়ে বৃষ্টি নামুক, সোহাগ জলের ঢেউ!!





মহা-ওস্তাগর 

মা লা চ্যা টা র্জ্জি 

কতকাল পথচলার জীবন-শৈলী, কিন্তু অজানা
নীড়ের খোঁজ তুমি এড়াতে পারো না,
পাখিদের উড়ে যাওয়া দেখে বুঝে যাও ওপারের
ডাক এসেছে,
পান্ডুলিপি খসড়ার পর আবার  বুঝি শুরু হয় পথ?
শূন্যে মহা-ওস্তাগরকে তুমি কখনও দেখতে পাওনি!





আমার দখিনের বারান্দা

বি দি শা ব্যা না র্জী 

আমার দখিনের বারান্দা।
উন্নয়নের জোয়ারে গা ভাসিয়ে
ধীরে ধীরে মফস্বল থেকে প্রায় শহর হয়ে ওঠা
এক জনপদের নিভৃত প্রান্তে---
আমার দখিনের বারান্দা।
কাছেপিঠে অবিন্যস্তভাবে গড়ে ওঠা কিছু বাড়িঘর 
আমার প্রতিবেশী।
কবিতায় যেমন পড়া যায়,
তার সবই আছে এখানে---
টলটলে দীঘি, তালতমালের সারি,
বাতাসে ঢেউ খেলে যাওয়া ইতিউতি কিছু ধানের                                                                     ক্ষেত। 
আমার দখিনের বারান্দার সামনে
বেশ বড়সড় এক মাঠ 
বিকেলবেলায়, উঠতি খেলোয়াড়দের ভিড়ে মুখরিত                                                                হয়ে ওঠে।
তারও ওপারে পায়ে-চলা এক পথ। 
সে পথে গোধূলিবেলায়
ঘরে ফেরা গোরুদের পায়ের ধূলোয়
সত্যি সত্যি আকাশ রাঙা হয়ে ওঠে!
দখিনা বাতাস,  প্রথম বৃষ্টির সোঁদা গন্ধ, 
আমের মুকুলের ঘ্রাণ,  দূরের বলাকা---
সব কিছুর সাক্ষী থেকেছি আমি,
আর সাথী আমার দখিনের বারান্দা।

ক্রমশ কানে খবর ভেসে আসছে,
আশেপাশের অনেক জনপদে
বাড়ছে ক্রমে লোকসমাগম।
বাড়ছে মানুষ, বাড়ছে গাড়ি,
কমছে সবুজ, উঠছে বহুতল।
আমার সামনের মাঠে পড়েছে ইঁট বালির পাহাড়!
উঠবে নাকি বহু ফ্ল্যাটের সারি!
পড়বে ঢাকা আমার সূর্যাস্ত, আমার গোধূলি!
দৈত্যের মতো উদ্ধত কংক্রিটের জঙ্গল সামনে রেখে
অতীতচারণ করব কেবল...
আমি আর আমার দখিনের বারান্দা!






দূরত্ব

চ ন্দ ন দা শ গু প্ত 

জোনাকি জ্বলা রাতের আঁধারে,
নিঃসঙ্গ তারাগুলো মিটমিট করে,
সময়ের নদীর সাথে ভেসে ভেসে,
ওরা ধীরে ধীরে যাবে সরে,
একদিন যারা ছিল খুব কাছাকাছি,
একসাথে পড়াশোনা-খেলাধূলো,
পাশাপাশি চলাফেরা-ওঠাবসা,
তারাদের মতো কবে যেন ওরা নিঃশব্দে সরে গেছে দূরে,
স্মৃতির খাতায় রেখে গেছে শুধু কিছু অস্পষ্ট দাগ,
সুদূর নীহারিকার মতোই, 
কবে যেন সরে গেছে,
সব কাছের মানুষ,
হয়তো তাদের কেউ আজও আছে বেঁচে,
কেউবা চলে গেছে না-ফেরার দেশে,
ক্লান্তির অতল সমুদ্রে ডুবে,
আজও শুধু ভেবে যাই,
ঘুম ভাঙা... জোনাকি জ্বলা রাতের আঁধারে...





ভালোবাসি বলা হয়নি আজও 

ন ব কু মা র মা ই তি 

সময় চলে যায় 
স্রোতের অভিমুখে জল তরঙ্গ ধ্বনি
 স্মৃতি রোমন্থনে জেগে উঠেছে
 তোমার উজ্জ্বল উপস্থিতি, লাবণ্যপ্রভা 
সোনালী স্বপ্নের দেশ, সুডৌল রূপমাধুরী
মুখের অবয়ব জুড়ে শ্রাবস্তীর কারুকৃতি 
কত না রোমান্টিক মুহূর্ত 
সময়ের অলিন্দ বেয়ে চলে গেছে
 কত চন্দ্রভুক অমাবস্যা, কোজাগরী পূর্ণিমা রাত 
বৈকালিক নদী পাড়ে মিষ্টিমধুর হিমেল বাতাস 
বন কলমীর ডগায় কাঁপন লাগে
শাল পিয়াল হিজল তমাল 
সারি সারি পাইন ফার দেবদারু
সুনীল আকাশ, অপরূপ প্রকৃতির নিসর্গ 
পথ চলতি মধুর আলাপনে 
পরম মমতায় কোনোদিন বলোনি
 সুন্দর, ভালোবাসি-ভালোবাসি.... 

জীবনের পড়ন্ত বেলায় আয়ুসূর্য প্রৌঢ়ত্ত্বের সীমা
ছুঁয়ে গেছে, ঐ বুঝি সেই ডাক আসে
অসীম অনন্ত লোক থেকে- 'যেতে হবে'
আর কেন ছলচাতুরি দোঁহাকার সনে? 
একে একে ফিকে হয়ে আসছে কত বসন্ত 
প্রেমের কবিতায় প্রতিটি বর্ণের চোখে জল
হারিয়ে যাচ্ছে পূর্ণচ্ছেদ কমা কোলন সেমিকোলন ড্যাস
দু'জনের মনের অজান্তে কবেই ভালোবেসে ফেলেছি
বলতে গিয়ে বলা হয়নি আজও পরম বাঞ্ছিত 
সেই কথাটি, লাবণ্যপ্রভা ভালোবাসি তোমায়!





বিবর্তন 

স ন্দী প কু মা র মি ত্র 

তুই তো জেনেই বেসেছিস
ভাল
জানতিস সে সেচ্ছাচারী, 
তার আনন্দের স্রোত, খুশীর ডিঙা
কখন কোন স্রোতে ভাসবে, সে নিজেই জানে না, 
অকপট তো সে বলেই ছিল---
তবে কেন থমকে গেলি?
কেন নিজেকে শত প্রশ্নের সাক্ষী করছিস??
 
ঐ দেখ, ঐ দেখ তার বিরক্তি পল্লবিত হচ্ছে
বসন্তের বাতাস বহিছে তার হাসিতে
অথচ, সেটা বোধ হয়, 
সবার জন্য নয়।

এক আকাশেই, কোথাও বৃষ্টি
আবার কোথাও রামধনু তার নিজের রঙেই রাঙিয়ে চলেছে
মাতিয়ে চলেছে---

ওরে এটাই জীবন,
সে তুই মানিস আর না মানিস
কিচ্ছু যায় আসে না
ভালবাসা ভেসেই চলে
যখন যে পারে ধরতে তখন তার 

সব ভালবাসা বাঁধা পড়তে চায় না
তাদেরও তো স্বাধীনতার স্বাদ পেতে
মন চায়।

কত রাত কেটে যায় ছলনার
আমন্ত্রণ মেখে অপেক্ষাতে
নাকি সে আসবে---

কত দিন কাটে মিথ্যা 
আদর বাসার গল্পে
স্বপ্নরা আসে ঝাঁকে ঝাঁকে
বাস্তব ফ্যালফ্যাল করে চায়।

বড্ড হাসি পায় জানিস---
কটা বছর বাঁচবি বলতো
সময়টাকে আর কবে কাজে লাগাবি।

কি হবে এতো অভিমান মেখে
যেখানে পরিবর্তনশীল গোটা বিশ্ব

সেখানে আটকে যাবি? থমকে যাবি??
না কি, সহজ ভাবে 
বিবর্তনের সাক্ষী হবি???






পলাশ বসন্ত

দু র্গা প দ ম ন্ড ল 

"ক্ষণিক আলোকে আঁখির পলকে তোমায় যবে পাই দেখিতে---"

সে এক আশ্চর্য বিকেল ছিল তোমার আমার। 
আঙিনার অভিমান পেরিয়ে 
কোনো এক মহুয়া গাছের তলায় 
একেক দিন দেখা হতো।
আদুরে রোদ তখন কুয়াশার ওড়না ছিঁড়ে 
বিছিয়েছে ফুলের গুলাল। 
ফাগুনের  ক্যানভাসে আমি আঁকতে চাইছি তোমাকে,
আর আগুনের ক্যানভাসে তুমি চাইছো আমায়।

দূর পাহাড়িয়া জঙ্গলের সিল্যুয়েটে সদ্য ফোটা পলাশ,
হাত বাড়ালেই নীল দিগন্ত;
অদূরে কৃষ্ণচূড়া,--- এক রাধাচূড়ার আঙুল
ছুঁইয়ে যাচ্ছে বাসন্তী হাওয়া।
জেগে উঠছে বসন্ত-বিলাস।---
"সাত সুরো কি বাঁধ পায়েলিয়া---"
উঠে উঠি চাঁদের জোছনায় 
কার যেন পায়েল বেজে উঠে ঝনক ঝনক---

ফাগুন হাওয়ায় মন-কেমন-করা আকাশে সাঁঝতারা।

আমাদের অবয়ব গলে যেতে থাকে 
আবিরের দাগে। অস্পষ্ট স্বরে কার যেন 
পদধ্বনি ডেকে ডেকে ফেরে।
কী যেন চাই, কী যেন মেলে না;
পাওয়া না-পাওয়ার বেদনা-আচ্ছন্ন 
সেই স্বপ্নের বিকেল, সেই মহুয়ার তলা,
চেতন অবচেতনের সেই ক্যানভাস 
আঁকড়ে ধরে আছে সময়কে।
এখনো স্মৃতির গভীর অতল থেকে 
ভেসে আসে সুর,
"শাম তেরি বনসি পুকারে রাধা নাম---"

আজও বৃন্দাবনের পথে পথে 
গোপবালা কোকিলা কানে কানে শুনিয়ে যায়:
"সজনি সজনি রাধিকা লো, দেখো অবহুঁ চাহিয়া 
মৃদুলগমন শ্যাম আওয়ে মৃদুল গান গাহিয়া॥"





প্রকৃতি মনোহরা 

ত ন্দ্রা ম ন্ড ল 

মেঘলা দুপুর দূর বহুদূর 
রিমঝিম বারিধারা 
বিরহ বিধুর এ অন্তঃপুর 
মনটা দিশেহারা।

কেতকী কদম হাসে হরদম
বকুল গায় গান 
মেঘ থমথম নামে ঝমঝম 
বর্ষার অভিযান।

আকাশ জুড়ে শুধু ঘুরে ঘুরে 
মেঘের মিছিল চলে 
বৃষ্টি নূপুরে নদী ও পুকুরে 
আষাঢ় কথা বলে।

বৃক্ষ লতায় পাতায় পাতায় 
সবুজের উৎসব 
জীবন গাঁথায় মনের খাতায় 
সৃষ্টির কলরব।

এ ধরাতল হাসে খলখল
প্রাণস্পন্দনে ভরা 
জল টলমল পাতা ফুল ফল
প্রকৃতি মনোহরা।।





এই শ্মশানে অন্তহীন 

শু ভা শি স সা হু 

তোমাকে ডাকতে
ডাকতে আমি আজ
ভালোবাসার মরুভূমি
হয়ে গেছি। 
আমি আজও
তোমার প্রেমের শ্মশানে ঘুরি। 

যদি ডাকো অশরীরী
সুন্দরী, তবে তোমার
সঙ্গে প্রেম করবো
এই শ্মশানে অন্তহীন।।





শুধু তোমাকে ছোঁয়ার জন্য 

ই লা সু ত্র ধ র 

এই বৃষ্টি রাতে ভিজে যাচ্ছে গোটা চরাচর
মেঘের ঘোমটা সরিয়ে স্নান সেরে-
বেরিয়ে এলো অভিসারি চাঁদ।
জোছনায় টইটুম্বুর ভিজছে সাধের বাগান।
তাই আমি ফুলের কাছে ছুটে যাচ্ছি
তোমাকে ছোঁয়ার জন্য।

জুঁই ফুলে লেগেছে বিন্দু বিন্দু জলের ফোঁটা
মেঘের চুলে ছড়াচ্ছে গোলাপ জলের সুবাস
মন আমার জলফড়িং হয়ে জলছবি আঁকছে
জলজ বাতাস বিলোচ্ছে ডাকপিয়নের চিঠি,
তাই খোলা জানালায় পথ চেয়ে বসে আছি
তোমাকে ছোঁয়ার জন্য।

একটি তারা হারিয়ে গেল দূর আকাশ থেকে
মেঘেরা ঢেকে ফেললো নীলাভ আলো
দূরের লাইট হাউসে অঝরে সৌন্দর্যের বৃষ্টি ঝরছে
উত্তাল ঢেউয়ের দাপটে জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত চর
তাই জলাশয় পেরিয়ে বৃষ্টি নিয়ে ছুটে যাচ্ছি
শুধু তোমাকে ছোঁয়ার আশে।






অতলের আহ্বান 

কা বে রী রা য় চৌ ধু রী 

তুমি আমার বৃন্দাবনী সারেঙ্গ অথবা দরবারী কানাড়া ভালোবাসার হৃদমহিন্দার,
ঋতুরঙ্গে বৈচিত্র্যের হাওয়ায় মনে রঙমিলন্তি সুরের কারিগর।
সোনালী সূর্যের লালিমা রশ্মিছটা হৃদয়ে ভালোবাসার অলকানন্দা সুখের বিকিরণ,
আলটুসি রোদের ছোঁয়ায় ঝিকিমিকি রূপোলী চমকে প্রজাপতি মন ফুলের সুবাসিত অনুরাগ।

মেঘলা মনে মান অভিমান বুকের ভেতর ঢেউয়ের ওঠানামা বালুচরে চোরাস্রোতে সুপ্ত বেদন,
মেঘভাঙা বৃষ্টিতে নূপুর পায়ে কিশোরীর রুমঝুম আওয়াজ তোমার মনে বোল তোলে তবলায়।

শ্রাবণের ধারার মতো ঝরলো অভিমান, সবুজ মনে চিকমিক হাসিতে মুক্ত মনের দুয়ার, 
আবেগের জোয়ারে উথলে ওঠা হৃদয়ে অতল জলের আহ্বান শুনেছো কি? 
ভালবাসি মনেপ্রাণে সঁপেছি হৃদয় কোমল গান্ধারে স্বরলিপি মূর্ছনায়, 
জুঁইফুলের সুগন্ধি বাতাসে কান পেতে শুনি প্রেমের গুঞ্জন ধ্বনি!

তোমার গাঢ় নিঃশ্বাসে দখিনা সমীরণে বকুল সুবাসিত আতর, 
মহুয়া বনে মেঘমেদুর বরিষণ নৈঃশব্দে ভেজায় দুটি মনের প্রেমময় মাধুরীমা।

মেঘের কাজলা আঁখির রেখাটানে অপলক তোমার চাহনি, 
ভাললাগা থেকে ভালবাসার গাঢ়তা সীমাহীন গভীরতা অনন্তের হাতছানিতে প্রশান্তি অনুভব।

তোমার ডাকনামে লহরী তুলে দেয় শিউলি ফোটা ভোর, 
অঙ্গে অঙ্গে উপচে ওঠা ভালবাসা দেহতনু জ্যোৎস্নায় ভিজিয়ে সিক্ত প্রেমের আবেশে দোদুল। 

নিভৃত প্রেমালাপে নিমগ্ন প্রহর বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যায় সাঁঝ বাতি আলোয়, 
তুলসী মঞ্চে প্রদীপের আলোয় ভাষাহীন স্তব্ধতা নীরবে ছুঁয়ে দেয় দুটি মনে মণিকাঞ্চন প্রভা। 

নদীর কুলকুল শব্দে প্রণয়িনীর অন্তরে পুলকিত হিল্লোলে মাদল, 
প্রণয়ের সঞ্চিত নিকষিত হেম রক্তাভ গোলাপের সজীবতায় সাড়া জাগায়।






তোর আবদারে

সং হি তা ভৌ মি ক 

আবদার এতটুকুই 
অদেখা বন্ধুত্ব চাই শুধু কিছু সাজানো বর্ণমালা, 
কিছু স্বল্প টুকরো স্মৃতি ছায়া ছায়া যা ভাসে, 
ধোঁয়াশার মতো মুখ অগোছালো ভাবে তোর কি মনে আসে,
হয়তো সেদিন থেকে গেলে আজ এ মুহুর্তটা অধরা হতো।
সময় যে এখন অনেক পরিপক্ক, যদিও এক আলোকবর্ষ পাড়ি দেওয়া হয় না,
তবুও এমনটাই হয়তো ভালো-
বন্ধুত্বের দাবি কিছু না হারালো,
মন্দ কথা সময়ের সাথে এখন বধির, আড়াল নয়--- অবলোকন,
বারণ শুধুই সৌজন্যতায় কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন।
জুড়ে থাকুক শুধু কবিতায় আমাদের সখ্যতা,
অসমাপ্ত যে গল্পটা--- তোর না দেখা শেষটা।






ধ্বংসের প্রতিমা 

বি ধা নে ন্দু পু র কা ই ত 

কী অদ্ভুত সুন্দর দেখো বসন্তের রঙ
কেমন আদর করে ভোলেভালা সহচরী হয়ে
বসন্তের মতো বুঝি মৃত্যুও কাছাকাছি আসে
বসন্ত যেমন আদর করে
সে কেন প্রেয়সী হতে চায় না এমন ভরা
পলাশ ফাগুনে!
তোমাকে আদর করি সদ্য মা হওয়া যুবতীর ন্যায় 
তোমাকে আদর করি দেহাতি যুবতী যেমন তার
মরদের বুকে সঁপে দেয় দেহের কৌশল
মৃত্যুকে করেছি আপ্যায়ন 
তবুও চেয়েছ তুমি ধ্বংস হোক আমার প্রতিমা।





কথা রাখা ভারী কঠিন 

চা ন্দ্রে য়ী দে ব 

কথা রাখলে না...
সামান্য দুটো কথার ভারে
তোমার কাঁধ এতো সহজে ভেঙে পড়লো
জানো সেদিন না খুব হাসি পেয়েছিল
চোখের জল হাতেগোনা সময়ের জন্য
নিঃশব্দে পিছিয়ে নিল পায়ের ছাপ
রাতের গভীরতায় ঘর বাঁধে অলীক স্বপ্নেরা
জেগে থাকা দুই চোখের ভাঁজে
শত শত মুহূর্তের কায়ায় দৃশ্যহীন আগুনের তান্ডবে
ছাই হয়ে ঝরে পড়ে মৃত্তিকার বাহুডোরে
জোছনার আলোয় জাজ্জ্বল্যমান
তোমার আঁখির মাঝে দেখা
আমার মৃত ইচ্ছের ডালি
বলতে পারো এমন কি চেয়েছিলাম
ভালোবাসার বেড়াজালে বন্দী শব্দগুলোর অনুমতি ছাড়াই
পালটে নিলে দুজনার চলার পথ
অবাক লাগে হাত শক্ত করে ধরে বছরের পর বছর
একসাথে কাটানো বুঝি ভারী কষ্টের
সূর্যাস্তের রক্তিম আভা নির্দ্বিধায় এঁকে দেয়
প্রাণহীন ইচ্ছের জীবন্ত প্রাণ... 
শেষ শব্দের অন্তরালে 
একটা আস্ত হৃদয় মৃত্যুর পথচারী
 তুমি যদি পাশে থাকতে
একচিলতে উষ্ণতার জন্য আমি অনন্ত হতে পারতাম
দিকচক্রবালে আমি এক নীরব গোপনচারী।।






স্পিকটি নট 

স ঙ্গী তা মু খা র্জী 

তুমি দেখেছো কি? তোমরা?
আস্ত একটা  আধুনিক সমাজ গড়ে উঠছে নাকের ডগায়

সাধু সাধু...
আমি, আমরা, আপনারা... 
সব একবচন, বহুবচনগুলো
পাশ কাটিয়ে চলে যাচ্ছি বুলেট গতিতে। 

শব্দকোষের ভান্ডার শেষ
ব্যাকরনের ঘরগুলো এখন মাছি তাড়াচ্ছে

আচরণের ভাষা গড়াতে গড়াতে পাতালে প্রবেশ করেছে
হঠাৎ করে অগ্নুৎপাত হওয়ার সম্ভাবনা নেই। 

অশিক্ষার পতাকা উড়ছে পতপত করে
কান মলা খাচ্ছে উপদেশ। 

ধর্ম প্রকাশকের খাতায় মুখ গুঁজে  বসে আছে 

পেটের বিদ্যের গন্ধে যতই গা গুলিয়ে উঠুক... 
হেভি ওয়েট  মানুষের কথা হজম করলে বেশ লাভজনক 

ধর্ষক, খুনিদের পোশাক  ফুঁড়ে বেরিয়ে আসছে সিক্স প্যাক
ধর্ষিতাকে দেখলেই  গোটা মুখের জ্যামিতিক চিত্রটা বদলে যায়
নির্লজ্জ, মুখপুড়ি শরীর ঢাকতে শেখেনি

যাই হোক, বেঁচে থাকতে গেলে স্পিকটি নট 
কথা না...।






মায়ের স্মৃতি 

সু দী প ঘো ষা ল 

শীতকাল এলেই আমার মা 'পাটিসাপটা' তৈরি করে খাওয়াতেন। 
মা আক্ষেপ করে বলতেন, পাটিসাপটা ঠিকমত তৈরি করতে পারি না। দোকানে কত সুন্দর মোলায়েম পাটিসাপটা পাওয়া যায়। 

এখন মা নেই। দোকানের পাটিসাপটাই আমার বরাদ্দ। 
কত ভিড় দেখি, গিজগিজ করছে কিন্তু মানুষ কই? দোকানের পাটিসাপটার মত মোলায়েম, সুন্দর পোশাকে সুসজ্জিত নরনারী চলেছেন অজানার দিকে।
মায়ের সেই ভাঙা, বাঁকা পাটিসাপটার ভেতরে ক্ষীর আর মায়ের আদরের স্বাদ  আজও মুখে লেগে আছে। 
মা বলতেন, মানুষ দেখতে যেমনই হোক তার ভিতরে ক্ষীরের মত মনুষ্যত্ববোধ থাকাটাই  আসল কথা।






আষাঢ়

মে খ লা ঘো ষ দ স্তি দা র 

নিয়ম মেনে আষাঢ় এলো
বুকের উপর পাথর
ঝম-ঝমা-ঝম ধ্বনি কোথায়
সোঁদা গন্ধ আতর,

বিকেল সাজে পার্ক হৃদয়ে
লক্ষ্যে দুটি মন
চাতক নয়ন অপেক্ষাতে
বৃথাই কাটে ক্ষণ,

বেল জুঁইয়ের পাপড়ি পরে
মেঘলা বিহীন সাঁঝ
আখর ভরে জন্ম কথা
বাঁচাই কঠিন কাজ,

বাদল জ্বরে বৃষ্টি কাতর
সিক্ত যাপন কই!
ঘনঘটার কোরক ছবি
মরণ ডালায় ছই।






বাঁচানো দরকার 

অ নি র্বা ণ চ ট্টো পা ধ্যা য় 

আজও তোমার কথা ভাবার জন্য সবচেয়ে বেশি সময় কাটাতে পারি/
তুমি জানো না/

তোমার কথা ভাবতে ভাবতে একথালা ভাত/
খেয়ে নিতে পারি নুন ছাড়া /
যারা জীবনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করেছে /
তাদের হাসি মুখে ক্ষমা করে দিতে পারি /

সারা বসন্ত জুড়ে কোকিল ডাকছে /
বাউল গান বাতাস তোলপাড় করে দিচ্ছে /
আমের মুকুলের গন্ধ /
কত প্রজাপতি চারদিকে /


আমার মৃত্যুটি কতদিন ধরে লিখছি /
চেনা মুখগুলি হারাতেই থাকে /
পৃথিবীর দিনগুলি বড়ো অসুস্থ হয়ে পড়ছে /
লোভী, হিংস্র, ভালোবাসাহীন/

ওদের বাঁচানো দরকার, খুব দরকার...






অভিমানী সংলাপ 

সা য় ন্ত নী দা স 

অবুঝ অভিমান,বাক্যহীনতা
আকাশ ঢাকা গুমোট মেঘে।
কথা দিলাম মানিয়ে নেবো,
দুচোখ বেয়ে বৃষ্টি নামার আগে।
তারপর বলবো, কেন কাঁদিস কারণে অকারণে,
চোখের জল কি এতই সস্তা?
এই যে আমি আছি তোর সামনেই,
তুই কি দেখতে পাচ্ছিস না সেটা?
তুই বলবি, তোকে ঘিরে যতো রাগ-অভিমান,
যত অভিযোগ আর অকারণ কান্না।
তুই আমার সেই উপন্যাস,
যাকে জুড়ে আমার সকল বায়না।
আমি বলবো জীবনকে যত সোজা ভাবিস,
ততটা হয়তো তা নয়।
একটা শক্ত খুঁটি হতে গেলে,
অনেকটা পুড়তে হয়।
তুই বলবি অতশত আমি বুঝি না কিছু,
তোমার অল্প অবহেলাতেই মুহুর্ত হয় চূর্ণ।
যতই থাকুক দুঃখ হাজার,
আমার চারপাশ তুমি ছাড়া অপূর্ণ।
আমি বলবো তখন তোকে আলতো জড়িয়ে,
ভালোবাসি তোকে অনেকটা বেশি।
কান্নাগুলো সামলে নিয়ে নাহয়,
মুখে রাখিস অকারণ হাসি।
রাখতে চাই তোকে সারাজীবন কাছে,
জানিনা কীভাবে পরিস্থিতি দেবে সাথ,
তবে চেষ্টায় থাকবো তোকে শান্তি দিতে,
শত বাধাতেও ছাড়বো না তোর হাত।






তুমি আসবে বলে 

শা ন্তা ল তা বি শ ই সা হা 

তুমি আসবে বলেই  মেঘবালিকার  জলকেলি নিয়ে খেলা,
তুমি আসবে বলেই  হৃদয়বীণায় নব সংগীত মেলা।
তুমি আসবে বলেই  অভিমানী রাধা  মিলনশয‍্যা পাতে,
তুমি আসবে বলেই  কবি কালিদাস  মেঘদূত নিয়ে হাতে।
তুমি আসবে বলেই  ভানুসিংহের  অমর কাব‍্যগাথা,
তুমি আসবে বলেই   গীতমালিকায়  শতেক যুগের গাথা।
তুমি আসবে বলেই  মনের আকাশে  মল্লার গান ভাসে,
তুমি আসবে বলেই  বাদল বাউল  সুর তুলে অনায়াসে।
তুমি আসবে বলেই  বিজন ঘরে  নেমেছে শ্রাবণ সন্ধ‍্যা,
তুমি আসবে বলেই  সুবাস ছড়াল  যুঁই ও রজনীগন্ধা।
তুমি আসবে বলেই  জল ভরা মাঠে  বীজ বপনের পালা,
তুমি আসবে বলেই  সিক্ত পরানে  স্বর্গীয় রসধারা।






চিনিয়ে দেয় 

মু ক্তা রা রা ফি য়া 

কীভাবে পরিচয় চিনিয়ে দেয়
প্রিয়জনকে?

যতবার সে কথা ভাবতে গেছি 
রহস্যে আঁধার হয়েছে এই জগৎ।
অথৈ সমুদ্রে কি সাঁতরানো যায়?
 
জলছবির আড়ালে ভেসে ওঠে কোন মুখ
শুধু দেখি 
ভাবিনা কিছুই...

জলশ্যাওলায় জড়িয়ে এমন এক সুবাস পেয়েছি 
মনে হয়েছে 
এই বুঝি জন্মের আদি ঘ্রাণ?

ঝিনুকের আদরে খেলে উঠেছে অজস্র মুক্তা;

কে জানালো তাঁকে আমার ডাকনাম?

কে ডাকছে সৃষ্টির গর্ভ থেকে এভাবে আমাকে?

কোন নামে সে ডেকে উঠছে প্রতি মূহুর্তে?

সাঁতরে চলেছি কতদূর...

আরো কত দূর সাঁতরাতে পারবো জানি না
ডানা দুটি ভেঙে আসছে
সমুদ্রের গভীরতায় তলিয়ে যাচ্ছি যেন,
 আবারো ভেসে ওঠে সেই মুখ
সম্বল কেবল তাই...
চোখের গভীরে এতদূর নিজেকে দেখতে পাবো যে 
সেকথাও ভাবতে পারিনি  

পরিচয় ছিলো না 
আবার কতকালের পরিচয় যেন;

ডাকনাম ধরে 
কোনো এক কূল থেকে ডাকছে শুধুই...
তলিয়ে গিয়েও ভেসে উঠি 
গলার স্বরে তার দিক নির্দেশনা খুঁজছি...

যতবার ডাকছে 
ঝড়ে কেঁপে উঠছে হৃদয় 

সে আমার কে?

তাঁকে চিনতে  পেরেছি কি?





ঝড়ের দাপট 

দী পা লি দা স 

কিছুদিন ধরেই বাইরে কেমন ঝড় উঠছে।
বাইরেই নয়, ঝড় ভেতরেও উঠছে,
যা বাইরের তুলনায় দ্বিগুণ। প্রতিনিয়ত গ্রাস করেই চলেছে।

কোথায় পালাবো?
বাইরের থেকে বাঁচতে ঘরে?
নাকি মনের ঝড়ের থেকে   বাইরে?
বিপদ দুদিকেই!
পরিত্রাণ নেই।

শরীরের ভেতর অস্থির বাতাস বয়েই চলেছে।
কিসের অস্থিরতা??
ভেতরেই কেন বয়ে চলেছে?
এর উৎপত্তিই বা কোথায়?
কিছুই জানা নেই।

এই ঝড়ের দাপট আমাকে গ্রাস  করেই চলেছে...
 মন কেবলই অশান্ত হয়ে উঠছে।





শূন্য 

গৌ ত ম স মা জ দা র 

সময় ফুরিয়ে আসছে,
ফুরিয়ে আসছে সূর্যের আলো।
যেটুকু ছিল, তা বকের পাখায়---
নিরুদ্দেশের খোঁজে।
ফুরিয়ে আসছে একসাথে চলা,
একসাথে কথা বলা। 
প্রতিবাদের ভাষাও ফুরিয়ে আসছে, 
যা আছে শুধু বেঁচে থাকা।
বেঁচে থাকাটাও কেমন একঘেয়েমিতে ভরা!
বৈচিত্র্য হারিয়ে, ফুরিয়ে যাওয়া সময়কে ডাকছে।
তুমি, আমি, আমরা--- সবই আছে
নৈঃশব্দ্যের চোরাবালিতে।
সময় বড় অল্প। অন্তিম হয়তো!
অন্তিমের শয্যায় দিন গুনছে,
অনেক কষ্টে ঠোঁটে মেকি হাসি---
ভাল থাকার অতি অভিনয়,
সময়কে শূন্যে মিশিয়ে দিচ্ছে।






অনুভব 

শি প্রা ঘো ষ 

এ জন্ম গেলো বৃথা-
পরজন্মে যদি দেখা হয় 
তোমার সনে, 
একটা আস্ত চাঁদ থাকবে আমার কাছে।
ঝিরঝিরে বাতাসে অজানা ফুলের সুবাস মেখে 
বাতাসে ভর করে ভাসবো দুজনে,
চেয়ে থাকবো অনন্ত কাল ধরে! 
জন্ম গেলো বৃথা, কেনো এলে না 
সময়ের হাত ধরে মোর সুন্দর ভুবনে!






চিরন্তনী

আ ল্পি বি শ্বা স 

কে বলে গো নতুন দিন
নতুন সূর্য নতুন ভোর
সেই তো গেলো চৈত্রদিন
তপ্ত হাওয়া ধূলিধূসর

কালস্রোতে ঢেউএর চলন
ছন্দে ছন্দে কল্লোল-স্বর
সেই তো একই হুতাশ মনন
তপ্ত কপোল প্রলয় জ্বর

ডাকছে আকাশ, রোজই ডাকে
ভাসছে চিরন্তনী সুর
কে আসে গো নতুন বাঁকে
কে চলে যায় বহুদূর

কোর্ট কাছারী হামলা জখম
সংকটে যে বিশ্বভুবন
হাসছি দেখে রকমসকম
পুরণোটাই আজ নূতন।




 
বর্ষা প্রতীক্ষা 

ড রো থী দা শ বি শ্বা স 

এই গ্রীষ্মেই বুঝি বর্ষা চেয়েছো তুমি?
ছাইরঙা দুপুরের ক্যানভাসে 
ড্রায়পটেরিসের পাতার পেছনে
সোরাসের আল্পনা জলপানে ঝিকমিক
খয়েরী চুপড়িলতা বেয়ে 
ভীড় করে ষটপদী 
ঘোলাজল বুকে বয়ে
মেঘ ভাসে আকাশে...

তোমারই হাওয়ামহল
ঝমঝম বর্ষার প্রতীক্ষায়
টুইটুই টুনটুন পাতার আবডালে
শব্দহীন ঘোড়ানিম পাতার দোলন
সেই ছায়া আবছায়া ছুঁয়ে যায় ছাদ
তোমার হাতের যত্নে
সদ্য ফোটা বেলফুল
ঈশান কোণ ভরে গন্ধরম্যতায়...

ভিজতে চায় বুঝি
তোমার করুণ ময়ূর মন
মৌসুমী জলে
ঢেকে নিলে আকাশের নীল নীল বেদনা
শোকস্তব্ধ কালোরঙ দিগন্তের  পারে
হঠাৎ কি কোন আলো খেলবে না 
কনে দেখা মুহুর্ত আসবে যখন?





ফিরবো না আর কোনদিন 

সা য় ন্ত ন ধ র 

আবার আসিব ফিরে...
না, না, না...
আর আসবো না এই বাংলায়,
এর গায়ে কাঁটাতারের ক্ষত অক্ষত,
চূড়ান্ত অবক্ষয়, 
দেশের প্রেক্ষাপটে প্রকাশ্যে অবহেলিত।

আর নয় এ দেশেও... 
নিজেকে খণ্ড খণ্ড করে ... 
নিরপেক্ষ থেকেও চক্ষুশূল সকলের
গোড়ায় গলদের গেরোয় দিশেহারা 
জন্মেই সকলে বিদেশমুখী।

চাইনা মনুষ্য রূপ...
কি নিষ্ঠুর নৃশংস...
ঘৃণা ধরে গেছে।

শালিখ বা শঙ্খচিল? 
ধবল বক বা কৃষ্ণকালো কাক?
এ পৃথিবীতে এদের অস্তিত্ব কতদিন?
মানুষ কাউকে বাঁচতে দেবে না...
মৃত্যুভয়ে বাঁচতে আরও একবার? 
নৈব নৈব চ।

একবার যদি 
ছেড়ে চলে যাই পৃথিবী তোমায়, ফিরবো না আর--- 
তাই তো যতদিন বাঁচি, 
দু'চোখ ভরে দেখতে চাই 
তোমার আনাচ-কানাচ।





জলছবির জন্য 

শু ভ শ্রী রা য় 

হইহই করে বৃষ্টিকে ডেকে নিয়ে আয় সাথী,
বিনা শাসনে খেলায় মাতব ধারাপাতের সঙ্গে,
এত এত দিন কড়া রোদের সঙ্গে জ্বলে ও খেলে
এবার যে চাই দুষ্টু-মিষ্টি বর্ষার ছোঁয়া অঙ্গে!

বেশ কয়েকটা মাস পরে মেঘেরা ভেবেছে,
তারা আমাদের আকাশে বসাবে জলমেলা,
গাছপালাদের মাতিয়ে ঝরুক বৃষ্টি হরেক ছন্দে;
নতুন নতুন জলছবি দেখেই কাটাব বেলা।





জরানীতি

শু ভ শ্রী রা য় 

প্রথমে তো আমি অবশ্যই তাদের ঘর পোড়াই
তারপরে তাদেরকে দিই শত গোলাপ-তোড়াই,
মন্দেরা যা বলে বলুক না, নিষ্ঠুর আমি থোড়াই!
ঘর পোড়া ছাইয়ে ভরা আমার গদীর গোড়াই। 

আগ না দিলে করা কি যায় নেভানোর বড়াই?
লোকে বোঝে না শাসনের উৎরাই আর চড়াই!
গদীর গতিপথ একটি দফা সেই যে হ'ল ধরাই,
মারি যাকে তারই জন্য দু' চোখের কল ঝরাই।





আত্মসম্মানবোধ 

অ ন্ন পূ র্ণা দা স 

একটা সময় পর মনে হয় আত্মসম্মান, আত্মসমর্পণ, আত্মসাৎ, আত্মহত্যা যেন একে একে যোগসূত্র বহন করে।

আমি যেন তার দাস হয়ে পথ চলছি...
তখন জীবনবোধ বড় অসহায় মনে হয় 
বারে বারে সে আঘাত করে সেই চেনা পরিচিত দ্বারে 
আমি শুধু দ্রষ্টা শব্দের গতিবিধি লক্ষ্য করি
ভিন্ন বার্তা নিয়ে সে আসে
লক্ষ্য তার একটাই আত্মসম্মানে আঘাত করা
আমি কখনো দুঃখ পাই 
আমি কষ্টও পাই
আবার কখনো নীরবে অশ্রু বিসর্জন করি।

এই সব কিছু ঘটনা ঘটে চলে...
তবুও বারে বারে অন্তর্দীপন আমায় বলে
আলেকজান্ডার আর পুরুর যুদ্ধের ইতিহাসের প্রতিচ্ছবি...
যা দেশ, কাল, সময়কে শিক্ষা দিয়ে চলছে।





লাল ও নীল 

অ ন্ন পূ র্ণা দা স 

ইতিহাস কখনো ক্ষমা করে না 
ইতিহাস চিরকাল লাল ও নীলের মার্ক করে এসেছে; 
তাইতো এখনো মীরজাফর এর নাম লাল কালিতে মার্ক করা হয়েছে।
'বন্দে মাতরম' ধ্বনি আজকেও সসম্মানে উচ্চারিত হয়; 
সৃষ্টিকর্তা নামের সঙ্গে উজ্জ্বল নক্ষত্রের মতো।
 
বিশ্ব প্রকৃতি সব সময় সিস্টেম মেনে চলার শিক্ষা দেয়।
আমি আর তুমি বন্যার ত্রাণে রাত জেগে রই 
নতুন করে ঘর গড়ে তোলার আশায়।
সূর্যোদয় আর সূর্যাস্তের মাঝে জীবনচিত্র ঘোরাঘুরি করে।
কবিতা, গল্পের আসর হয় সভা ও সমিতির অলিখিত মঞ্চে।

দর্শন হয়ে দাঁড়ায় সময়োচিত সময় চিত্র...





ও গো মেঘ 

দে ব যা নী সে ন গু প্ত 

ওগো মেঘ,
আসছো তুমি কোথা হতে?
যাবেই বা কোন দেশে!
কালো বাদল মাদল বাজিয়ে, 
আসছে দেখ সৈন্য নিয়ে ।
বিদ্যুতের এই হাততালিতে, 
বাজের সাজে বুকটা কাঁপে,
বর্ষার বাদল মেঘে, 
ঘিরেছে আকাশখানি,
 
ওগো মেঘ, 
দিনে যে অন্ধকার আনো,
সূর্য্য গেছে কোনখানে?
তার আজ ছুটি বুঝি,
ঘুম দিচ্ছে চাদর টেনে,
টুপটুপ বৃষ্টিরা সব
হঠাৎ কেন ঝাঁপিয়ে পড়ে!
রেগে গিয়ে ভাসিয়ে দেয়, 
প্রকৃতির নরম কোলখানি।

ওগো মেঘ, বলে যাও 
তার মুখটা কি দেখেছো তুমি,
খবর কি পেলে কিছু, 
যে আছে ঐ আকাশে।
নয়নধারা যতই  ঝরুক,
আসবে না আর সে কখনও।
মায়া মমতার অমোঘ টান,
সুতোর মতন সূক্ষ্ম ভীষণ,  
ছিঁড়ে গেলে জোড়ে না আর।
 
ওগো মেঘ, ভালো আছে তো, 
ওপারের সুখ নাকি শুধুই থাকে,
তুমি, উড়ে যাও, বলো আমার  কথা।

আজও আছি পথ চেয়ে, 
ঘোচেনি গো মনব্যাথা।





ঐ ঘনাল আষাঢ় 

দে ব যা নী সে ন গু প্ত 

কালো মেঘ মাদল বাজিয়ে, 
আসছে হেঁকে  আকাশ পানে,
সারাটা গগনে ছেয়েছে মেঘে,
বর্ষা নাবল ভুবনে।
বিদ্যুত চমকায়ে ঝিলিক দেয়, 
বাজের হাততালিতে পরান যায়, 
ভয়ে শঙ্কায় ঘরে বসে রই,
প্রকৃতি আজ ভয়ঙ্করী।
টিপ টিপ টিপ বর্ষার জল, 
ঠান্ডা শীতল বায়ু বয়ে,
ঝম ঝম ঝম নাবল ঝেঁপে,
আকাশ ভেঙ্গে  বেজায় তোড়ে।
কালো বাদলের আকাশ গুরুগম্ভীর ডাকে,
দেখছি বসে হয়ে স্তম্ভিত, 
প্রকৃতির বাঁধন ছাড়া খেয়াল,
মাতাল আষাঢ় প্রাণ যায় যায় এমন মনে হয়।
পাখ-পাখালির ঘর ভেঙেছে,
উড়ছে ফুল পাতা ভাঙছে ডাল,
বাতাস বহে শন্ শন্ শন্,
বুক কাঁপে ভয়ে দেখে ভাঙ্গন।





আজকের শিশু 

অ ভি জি ৎ দ ত্ত 

আজকের শিশু ভীষণ ব্যস্ত 
সবকিছু নিয়ে
মনযোগ নেই শুধু লেখাপড়াতে।

খেলাধূলা কম করে 
মোবাইলে ব্যস্ত গেম নিয়ে।

লাইব্রেরীতে যায় কম 
দেশের মনীষীদের নিয়ে 
আগ্রহ নেই সেইরকম। 

আজকের শিশুরা ব্যস্ত 
প্রতিযোগিতা আর কেরিয়ার নিয়ে 
মানুষ আজ কজনাই বা হবে 
সবচেয়ে বেশী চিন্তা তাই নিয়ে।





বর্তমান প্রজন্ম 

অ ভি জি ৎ দ ত্ত 

বর্তমান প্রজন্ম আজ দিশেহারা
 শিক্ষিত হয়েও উপযুক্ত  
কাজ না পাবার যন্ত্রণা 
সরকারি ঔদাসীন্য আর অবহেলা 
বেকারদের মরুভূমিসম জীবনে 
কবে আসবে মৌসুমী বায়ুর ছোঁয়া?
ভদ্রতা, বিনয়, সম্মান 
আস্তে, আস্তে হচ্ছে অর্ন্তহিত 
টাকা আর  ক্ষমতা অর্জনই কি
আজকের জীবনের একমাত্র লক্ষ্য?
ক্ষণিকের ইন্দ্রিয় সুখ 
আর ভোগবাসনার প্রাধান্য 
শেষ হয়ে যাচ্ছে আজকের প্রজন্ম। 
উপযুক্ত পরিচালকের অভাব হচ্ছে অনুভূত। 
স্বাধীনতাসংগ্রামী ও  মহাপুরুষরা
আজকের প্রজন্ম দ্বারা হচ্ছে বিস্মৃত। 
নেশা ও হতাশা গ্রাস করছে 
আজকের প্রজন্মকে 
আজ পথ দেখানোর কেউ নেই 
কোথায় আছ রামকৃষ্ণ আর বিবেকানন্দ?





দেশমাতা 

গৌ রী স র্ব বি দ্যা 

মানুষ হয়ে কেন দানব সেজে বসে আছো
কারো শরীর করছো ক্ষত, রক্ত নিচ্ছো চুষে! 
কাউকে সদ্য মেরে আনন্দে যাচ্ছো ভেসে 
হানাহানি রক্তারক্তি করে কি মজা পাও!
ভাঙ্গার খেলায় মেতে ওঠা সহজ হলে...
গড়া হয়ে যায় কঠিন।
জীবনে বেঁচে থাকতে সব জাতির প্রয়োজন একতার! 
ভাঙাগড়ার খেলায় ধ্বংস হচ্ছে দেশ!
কষ্ট পাচ্ছে দেশমাতা 
এসো! সবাই মিলে গড়ে তুলি স্বর্গভূমি।
যেখানে পাখি গাইবে গান, হাওয়ায় উড়বে মন, ফুল ছড়াবে সুগন্ধ, সবাই ভালোবাসবে দেশ।
উড়বে লাল পতাকা
হাসবে আমার দেশ। 
মাতৃভূমি হবে সুন্দর, শান্তিতে ভরে যাবে, দেশ ও দেশের মাটি। 

 



ফুরফুরে সকাল 

গৌ রী স র্ব বি দ‍্যা 

আকাশটা বেশ উজ্জ্বল,
তারাগুলো জ্বলজ্বল
হৈচৈ আর গান বাজনায় 
মেতেছে মফস্বল।

পূর্ণিমার চাঁদ বউ সেজেছে
 দেখতে লাগে ভারি
হুক্কা হুয়া ডেকে শিয়াল 
দিয়ে গেছে আড়ি।

শিশু গাছের পাতারা সব
ঘুমায় শিশুর মতো
চুরি করে ইবলিশ মিয়া 
ঘরের জিনিস যতো।

বাড়ির পাশে নদী আর 
নদীর পাশে মাঠ
নদী জলের মাঝখানে 
খেয়া তরীর ঘাট।

বৈঠা বেয়ে মাঝি গায়
গলা ছেড়ে গান
টকটকে লাল দাদির মুখ 
মুখে ভর্তি পান।

গল্প বলায় মত্ত দাদি
রাত বাজে দুই 
দু'চোখ ভরে ঘুমের নেশা
কাৎ হয়ে শুই।

রাত শেষে ভোর হলে 
মিষ্টি হাওয়ার রেশ
ফুরফুরে সকালটা
লাগছে এখন বেশ।





সূর্য ঢলে পড়েছে 

আ ল তা ফ হো সে ন উ জ্জ্ব ল 

জীবন সূর্যাস্তের মত তার সব বিবরণ:
কিছু সময় আমরা আলোর শিখরে থাকি, 
অন্যদের ভালবাসা-শক্তি দিয়ে ভাসিয়ে দিই, 
কিছু মুহূর্ত আছে চুপচাপ সরে যাই,
হারিয়ে যাওয়া দিনের ছায়ায় নিজেকে খুঁজি!! 
সূর্যাস্ত শেষ হয়েছে তার জন্য দুঃখ নয় 
বরং এই ধারণার সাথে পুনর্মিলন সবকিছু পরিবর্তিত হয়:
নিজেকে নতুন করে আবিষ্কার করার জন্য সেই পরিবর্তনে নিত্যকার কাজকর্ম হয়। 
যখন সূর্যাস্তের দিকে তাকাই,  তখন শুধু সূর্যকে দেখতে পারি না, 
বরং আকাশকে বিদায় বলি...
চোখের সামনে জীবন চলে যাচ্ছে, আনন্দ, হতাশা আর প্রস্থানের মুহূর্ত....
সবকিছুর পুনরাবৃত্তি হয়, যখন সূর্যাস্ত প্রতিদিন ফিরে আসে:
সেই সৌন্দর্য শেখানোর জন্য
শেষ পর্যন্ত তার অস্তিত্ব খুঁজে পাই...
আর অন্ধকার দিগন্তের অপেক্ষায় এক নতুন 
আলোর পথ।





আমি তোমার জন্য কবি ও দার্শনিক

আ ল তা ফ হো সে ন উ জ্জ্ব ল 

আমি কোন দার্শনিক নই, আমি নই কোন কবি,
তবুও তোমার কথা ভাবতেই আমি কাল্পনিক অস্তিত্ব খুঁজে পাই, যেন আমি দার্শনিক!!  
ভালবাসা বলার মত শব্দ নেই ... তবু দুর্বলতার মুহূর্ত দৃষ্টি যেন... আমি কবি!! 
এ বন্য মন ও হৃদয় সমুদ্র পৃষ্ঠে, নীরবতায় তোমার নাম ফিসফিস করি...
কি একজন তুমি-আত্মার দেয়ালে তোমার বৈশিষ্ট্য খোদাই হ'য়ে বাতাস হয়ে গেছে, আমার নিঃশ্বাস। 
আমি তোমাকে সব দিক দিয়েই দেখি...
সকালের কফি যা তোমার মিষ্টতা অনুভব করি...
রাতের চাঁদ, যে তোমার চোখের সামনে লাজুক...
পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি...
ভাবনার বাহুতে নিজেকে বন্দি করে খুঁজি.. অবশেষে স্বীকারোক্তি:
আমি তোমাকে পছন্দ করি... 
"কেননা আমি-তোমার জন্য কবি ও দার্শনিক ভূমিকায় অবতীর্ণ...!।





কবিতার অন্বেষণে

প লা শ বি শ্বা স 

                    (৭৭)

তোমার চেতনার কিরণ
এ মরু বুকে ছড়ায় সবুজ আর সবুজ
ধূসর বালুপ্রান্তর উর্বর মৃত্তিকার ক্যানভাস তখন
শিশির ছুঁয়ে যায় সীমাহীন ভালোবাসায়
বিস্ময়াতীত তার স্নিগ্ধতা



                    (৭৮)

পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়া সূর্যের অস্ত রাগে
বেজে উঠল সঙ্গীত সেই মন পবনের হাটে 
ভাঙা হাটে পড়েছিলো আমার বুকে প্রেম আগুন
কেনা কাটার বাজারে দিয়েছি তোমায় নিঃশব্দে
 এক শীত গোলাপের চারা 
                                           


                    ( ৭৯ )

রক্তের সমুদ্রে চিনির আধিক্য হেতু
আজকাল চা কিংবা কফির কাপে চিনির স্মৃতি ভাসে 
প্লেটের চামচ খানা ফ্যালফ্যালিয়ে আমার দিকে তাকায়
বরং কিছু ফুলের গোছা তোমার ঘ্রাণ ছড়িয়ে
আমায় সুপ্রভাত জানাতে ভালোবাসে
                              
     

                    ( ৮০ )

স্বরযন্ত্রের চারপাশের বাতাস ভারী হয়ে
ফোটে না কথা আমার গোলাপ হয়ে যখন
অসংখ্য শব্দরাশি যেগুলি একান্তই শুধু তোমার
শুনে যাই তারই অনুরণন একটানা
এই পাষাণ বুকে সেই শব্দরাশিই তখন সফেন ঝরণা
                               
             

                    ( ৮১ )

রেখেছিলে চোখ যখন রঙীন পুটুসের ঝোপে
খেজুর পাতা আকাশের বুক চিরেচিরে করেছে খানখান
খুঁজে গ্যাছো সবুজ ঘাসে কখনোবা অশরীরি পায়ের ছাপ
অবয়বহীন আমি পাশের ধানক্ষেতে গড়াগড়ি দিয়েছি শুধু
মিলন পিপাসায় আমার দু'চোখে নেমেছে বিরহের গীত

                                       

                     ( ৮২ )

বরং হলুদ মেখে সেঁকে নিয়ো সারা শরীর রোদ্দুরে
বসন্তের গান গেয়ে যেতে পারো গোধূলি সময় পর্যন্ত
আমি সর্বনাশা প্রেমে ডুব দেবো সেদিন
আমার রক্তিম জিহ্বা ছুঁয়ে যাবে তোমার ঠোঁট আর নাভি
খুঁজে নেবো শ্রোণীর উষ্ণতা ঘর্মাক্ত বুকের আলিঙ্গনে







দূরত্ব 

প্র শা ন্ত ক র 

বিপরীতে সরে যেতে যেতে
আমাদের দূরত্ব বেড়ে গেছে অনেকটাই
আমি দূরদর্শী নই
তবু নৈকট্যকে পেয়ে গেলাম অযাচিত
শুধু তোকে আরেকবার 
চিনে নেবো ব'লে

কেউ কারুর অনাত্মীয় নই ব'লে
কেমন তোর পাশে বসে স্বর্গের খোঁজ করি

চিতা চিত্তে জ্বলে উঠলে
কাঠের প্রয়োজন ফুরিয়ে যাবে না জানি

তবু দূরত্ব সীমাহীন হয়ে ওঠে তখনই
যখন নিজেকে নিজেই পথসীমায় বেঁধে ফেলি





অন্ধত্ব 

প্র শা ন্ত ক র 

আলোতে দেখতে পাই
কিন্তু অন্ধ হলে
আলো জ্বলুক না জ্বলুক
প্রত্যক্ষের বাইরে থেকে যায় সব
তোমাকে একটু ছুঁতে গেলেও 
হাতড়ে বেড়াতে হয়

কখনো একটা শরীর ছুঁতে পারলে
সে তুমি নাও হতে পারো 

তোমার শরীর নকল হতে পারে
তোমার কণ্ঠস্বর নকল হতে পারে

তোমার অকৃত্রিম নকল আলিঙ্গনে
আমার বিকৃত সময়ে সহজেই
শ্বাসরুদ্ধ হতে পারি

সেই অনুভব পুরোপুরি অকৃত্রিম





ছন্নছাড়া 

প্র শা ন্ত ক র 

আমার মুষ্টিবদ্ধ হাত
এক হাতের বেশি ওঠেনি
এটাই আমার একমাত্র শুদ্ধ যন্ত্রণা
জরাগ্রস্ত আবেগ

আমার দৃপ্ত চিৎকার
দশ ডেসিবেলেই আটকে যায়
এটাই আমার কুলীন দৈন্য
অনাদৃত তেজস্বিতা

যাচ্ছি বটে
তবে অনেক কিছু ছেড়ে যেতে হচ্ছে
বড়ো অসম্মানের





স্পর্শ 

প্র শা ন্ত ক র 

জন্মাবধি কত কি ছুঁয়ে গেলো
অথচ সবই স্পর্শাতীত

হৃদয়ের আষ্টেপৃষ্ঠে ছুঁয়ে আছে দুঃখ
কোথাও প্রেম
তো কোথাও অপ্রেমের উলঙ্গ শরীর
আনন্দ প্রজাপতি হয়ে
বন্ধ্যারও গর্ভ ছুঁয়ে গেছে কতবার

একাকী জন্ম ছুঁয়ে আছে সহিষ্ণু জীবন
দৃষ্টি ছুঁয়ে আছে একান্ত পথ

আলোর গোপন অন্ধকারে কত কি ছুঁয়ে গেলো
অথচ সবই স্পর্শাতীত





কবিতাগুচ্ছ 

অ নি ন্দি তা না থ 


                    (১)
অদ্ভুত স্বাদ 

জীবনকে ছুঁয়ে দেখি 
প্রতিদিন, প্রতিটা প্রহর। 
জানি--- জীবনের স্বাদ হীরের 
চাইতে দামী, অতি মনোহর!
তবুও নিয়ত কান্না, রক্ত ঝরা ঘাম,
পিছল পথ, অস্বস্তি অহর্নিশ। 
নিচেই অতল গহ্বর, 
সাবধানে পা ফেলে মেপে মেপে চলা। 
এভাবেই বোধহয় আমাদের গর্বে বাঁচা।


                    (২)
নির্জনতা 

ঘুম নেই চোখে, 
বিনিদ্র রজনী। 
আকাশে নক্ষত্রগুলো 
উজ্জ্বল বাতি জ্বেলেছে
তুমি নেই পাশে।
জানি নদী ফেরে না তার উৎসে, 
একাকিত্বের ছোবলে 
আক্রান্ত আমি। 
রাতের অজানা পাখির 
ডাকে হৎপিন্ড চমকে উঠে!
স্তব্ধ, নির্জন বারান্দায় 
দাঁড়িয়ে আমি। 
শুধু মহাবিশ্ব সজাগ। 


                    (৩)
শ্যমশ্রী

শ্যমশ্রী কিসের এতো চিন্তা?
তোমার নিজের অবয়ব নয়,
একমাত্র পরিচয় মন।
আমার দেখা এ বিশ্বসংসারে
তুমি শ্রেষ্ঠ মানবী!
চুপ কেন-?
সত্য ও সাহসিকতায় 
একবার জ্বলে ওঠো!
তোমার নিজস্ব শক্তিতে।






কবিতাগুচ্ছ

পা র মি তা দা স চৌ ধু রী 


                    (১)

গৃহবধূর গৃহকোন,
নিজের সাথেই আলাপন।
ঠাকুরঘর সাঁঝবাতি,
নিজেকে খুঁজি আঁতিপাতি 
শাড়ি গহনার ভার,
অপূর্ণতার হাহাকার ।
কখনও মাতা কখনও জায়া,
এতো শুধুই তার ছায়া ।
সেওতো পূর্ণ মানবী,
এ তার কেমন ছবি?


                    (২)

আমার চাই একটি নীল গোলাপ,
দুচোখে কাজলের আলাপ,
চুলে সাগরের ঢেউ 
সাথে হার না মানা কেউ
আঁচলে মেঘের আনাগোনা 
দুহাতে জড়িয়ে রাখার বাহানা।
শুধু চাই একটি নীল গোলাপ 
গভীর চোখদুটো কাজলে ছয়লাপ।


                    (৩)

একলা হতে চাই না বলেই, 
তোমার হাত ধরা।
একলা হতে চাই না বলেই,
রইলাম আপনহারা।
একলা হতে চাই না বলেই,
রঙ বেরঙে সাজা।
একলা হতে চাই না বলেই, 
এতো কানে বাজা।
একলা হতে চাই না বলেই, 
রিক্ত আমি  আজ।
তোমার সাথে সকালবেলা,
তোমার সাথেই সাঁঝ।






বর্ষা হয়ে এলি 

সু মি তা চৌ ধু রী 

মনের ভাঁজে অনেক কথাই জমছে কেবলই,
তোকেই শুধু বলি।

বৃষ্টি খামে পাঠিয়ে দিলাম সেই ভেজা মনের ডালি,
পড়তে কি তুই পেলি? 

অঝোর ধারার শ্রাবণ নদী ছাপিয়েছে দুকূলই,
তুই বর্ষা হয়ে এলি।।
                             




নেশাতুর জীবন 

সু মি তা চৌ ধু রী 
  
এক অলীকের মায়ায় বুঝি
   সারা রাত কেটেছে?

বাস্তব থেকে দূরবর্তী স্টেশনে
   চোরাপথে কেউ হেঁটেছে!

অবিমিশ্র জীবন, যাপন মাঝে
   নেশায় আপনাকে বেটেছে।।
                                    




যেতে যেতে পথে 

সু মি তা চৌ ধু রী 

যত দূর যায় চোখ, ফেরারী মনের আঙিনায়,
আরব্য রজনীর বহর বাড়ে।

যত দূর যায় মন, অনুভবের আয়নার প্রতিবিম্বে 
ধরা দেয় অগুণতি ছবির কোলাজ। 

যত দূর যায় জীবন, যাপনের বারোমেসে পরিসরে
মাধুকরীতে জমায় অভিজ্ঞতার পাঁচমিশালী রত্ন।।
 




শহুরে সবুজ 
        
সু মি তা চৌ ধু রী 

এক পশলা অকাল বৃষ্টি গায়ে মাখল শহর,
জীর্ণ কিছু ধুলো পড়ল খসে।
তবু স্নান সারা হলো না গাছেদের,
তাই সবুজটা রয়ে গেল পাংশুবর্ণেই আবদ্ধ।
নিকোটিনের ধোঁয়ায় আবদ্ধ চিন্তার স্তরগুলোর মতোই, 
শহুরে সবুজটাও অসংলগ্ন, ম্রিয়মান 






অসমাপ্ত গল্পেরা 

সু মি তা চৌ ধু রী 

কিছু না বলা কথা, দাগ রেখে যায় গভীরে, 
কতো অসমাপ্ত গল্পের আখ্যানে।
কলতান যখন থেমে যায় চরাচরে,
তখনই যেন নৈঃশব্দ্য ভাঙে তারা, মন-মননে। 
ভাবনায় আঁকা সে সকল পটচিত্র, থাকে চিরকালই অধরা,
রং-তুলি, কালি-কলম, তাদের নিয়ে আজীবন, ভেবেই হয় সারা।।
                          




তোকেই খুঁজি 

সু মি তা চৌ ধু রী 

হাজার আড়ম্বরের মাঝেও 
হাজার লোকের ভিড়ে,
এ মন ভাসিয়ে নিয়ে চলে
তোর একাকী নীড়ে। 

উদাস বাউল বাতাস ফেরে ডেকে
কেবলই আজ মন উজাড়ে তোকে।।





এই দিনটিকে 

স্ব প ন ধ র (শ্রী ধ র)

আসছে পুজো, আসছে পুজো,
মনে লেগেছে দোলা,
বছর খানেক পরে এলেও,
ঐ দিনগুলো যায় না ভোলা।





সঙ্গিনী

স্ব প ন ধ র (শ্রী ধ র) 

পদ্ম পাতায় জল টলটল,
তোমারে যেন পাই, 
আজীবন থেকো আমারই পাশে,
সঙ্গীনী হিসেবে চাই। 





সুখের চুমুক পেতে 

স্ব প ন ধ র (শ্রী ধ র) 

জীবনের পেয়ালায়,
ঢেলেছি কতই না মিশ্রণ,
মিশিয়েছি সাধ্যমত সামর্থ্য, 
কৌশল ও বদলেছি সময়ের সাথে,
তবুও ব্যর্থ রয়েই গিয়েছি,
সুখের অনাস্বাদিত চুমুক পেতে।






অজান্তে 

স্ব প ন ধ র (শ্রী ধ র) 
 
দৌড়াচ্ছে সবাই স্বাচ্ছন্দ্য খুঁজতে,
পদদলিত করে অন্যকে,
শুরুর শেষ বা শেষের শুরু,
আসা-যাওয়া করে অজান্তে।





অবদান 

স্ব প ন ধ র (শ্রী ধ র) 

জীবনের মানে খুঁজতে যেও না,
রেখে যাও নিজের অবদান, 
আগামী প্রজন্ম স্মরণ করবে তা,
মূল্যায়ন করবে আর রবে অম্লান।






চলমান 

স্ব প ন ধ র (শ্রী ধ র) 

প্রাণ নিয়ে যারা এসেছে ধরায়,
ফিরতে তো তাদের হবেই, 
আসা-যাওয়ার এই চিন্তা করা বৃথা,
প্রকৃতি চলমান রবেই।






তবু 

লা ল ন চাঁ দ 

কথাগুলো সব অপ্রিয় 
তবু কথা বলি 

দুচোখে বিষাদ সিন্ধু 
তবু প্রতিদিন মৃত সিন্ধু সেঁচি 

মৃত্যুকে দুপায়ে মাড়াই 
তবু মৃত্যু কেনো যে এসে দুয়ারে দাঁড়ায়?






জ্বর 

লা ল ন চাঁ দ 

নিঃস্ব জ্বরে ভুগি একা 
পাশ ফিরে দেখি কাঁপছে জীবন 
ভীষণ অবহেলা তাও 

ভূগোলের মাঠে প্রতিদিন হাঁটি 
সবাই ছেড়ে যায় আমায় 
বিষম জ্বর ছেড়ে যায় না কিছুতেই 





বাতাস 

লা ল ন চাঁ দ 

ফিরে আসি 
কথায় কথায় কথার তরবারি শাণাই 

রাস্তায় রেড সিগন্যাল 

ধর্মের কল বাতাসে ভাসে না আর 
আজ কারা আটকায় বাতাস 

কফিনবন্দি পৃথিবী 





আমরা 

লা ল ন চাঁ দ 

আমরা আস্তিক তাই ঈশ্বর পূজি 
ঈশ্বরের খেলাঘর ভাঙে 
হাজারো নাস্তিক 

আমরা বিশ্বাসী 
তাই প্রতিদিন খুন ধর্ষণ রাহাজানি 
ভুলে যাই জীবে প্রেম করে যেই জন সেইজন সেবিছে ঈশ্বর 





বিশ্বাস 

লা ল ন চাঁ দ 

কথা দিই তাই কথা রাখি 
না রাখলে ভাঙে ভালোবাসা। নড়ে ঘরের খুঁটি  

বিশ্বাসে বস্তু মেলায় তাই তর্কে যাই না 
বিশ্বাস ভাঙলে ঘর ভেঙে পড়ে অনায়াসেই 

রাতের বিছানায় ফিরে আসে দীর্ঘশ্বাস 
ভারি হয় বিচ্ছেদের গন্ধ 





ভালোবাসা 

লা ল ন চাঁ দ 

ছেড়ে গেলে 
বলে গেলে না কিছুই 

নিঃস্ব জীবন আমার সাথীহারা 

ভালো থেকো 
যদি মনে পড়ে ভুলে যেয়ো 

জানি ভালোবাসা দুদিনের খেলাঘর






মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চতুর্থ বর্ষ || দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়েব সংস্করণ || হিমেল ও বাসন্তী সংখ্যা || ৯ চৈত্র ১৪৩১ || ২৩ মার্চ ২০২৫

চতুর্থ বর্ষ || প্রথম ওয়েব সংস্করণ || শারদ সংখ্যা || ১২ আশ্বিন ১৪৩১ || ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চতুর্থ বর্ষ || চতুর্থ ওয়েব সংস্করণ || বাদল সংখ্যা || ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ || ২৯ জুলাই ২০২৫