কবিতা
দু টাকার নোট
য শো ধ রা রা য় চৌ ধু রী
বাঙালি নস্টালজিয়া ইজারা নিয়েছ
এত টান চোরাটান ফুঁকে দিচ্ছ
বাথরুমের ঢেউটিন, ফাঁক ফোকরে চোরা সিগারেট?
লাল দুটাকার নোটে মেয়েটি সেদিন লিখে দিল
এত্তোগুলো সংখ্যা তার।
ফোন নং ফোন নং
জানো, মেডিকাল শপ থেকে তুমি
আঙুর থোলোর মত বেদনা আঙুল দিয়ে
টেলিফোন ডায়ালটি ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে
চেয়েছ প্রণয় দিতে,
উল্টোদিকে হেঁড়েগলা জ্যাঠা...
দুষ্প্রাপ্য অধরা এক সম্মোহন করতালু জুড়ে
এই লাল দুটাকার নোটে। হৃদয় চিহ্নিত।
সন্ন্যাসী
গৌ রা ঙ্গ সু ন্দ র পা ত্র
ছোটতে একটা কাককে বারুদ খাইয়েছিলাম,
মরেনি ।
দেখেছিলাম ডিশএন্টেনায় বসে আছে চুপ করে
চোখে তার নিস্পন্দ ঝিমুনি।
সংসার ভালোবাসি?
সে কী ভালোবাসা ?
আমিও বারুদ খেয়েছি
ক্ষণকাল এসেছে ঝিমুনি
এরপরে উড়ে যাবো
চলে যাবো হাত নেড়ে নেড়ে
বলবো, এবার তবে আসি
এতদিন ছিলাম নিস্পন্দ হয়ে তোমাদের মাঝে
কেউই বোঝোনি গৃহী নই, আমিও সন্ন্যাসী।
সাঙ্গিন কাল হেঁ
সু জি ত মু খো পা ধ্যা য়
ই সময় ট বড সাঙ্গিন কাল হে।
বছর ভর কাল পাহাড় গড়হারে ভাইঙ্গে
পায়ে লাল ধূলা ম্যাখেছি হা ভ্যাল।
ফ্যুটারা লদি থ্যেকয়ে জল বয়ে ক্যাকালে কড়া।
তবু শ্যালা ই সময় ট ই ঘঘরা বুকট ও হুঁদকায় মাতাল কাঁড়ার পারা।
বুঢ়া সাঁড়া মুরগী র লড়তে পারা সাধ হয় আইজ্ঞা।
ই সময় শ্যালা গটাই জৌলুস,
বুড়াঞ্চা কাঠ শিমুলেও নুনহু কচিপাতা।
ডেঙ্গুয়া পলাশ টাও চখ রাঙায় ,
বুকের ফফাস তন্নিক সামাই যায় রঙ্গে।
কুলি ধারে ভীরুল হাওয়া,
উলফা দিয়ে সিন্ধ্যায় যায় রঙ।
লাল মাটি, রুখু পলাশ, সক্কালে উগলানো মহুল---
সবকার ফফাসে সিঁধায় হেঁ।
সাঁঝ রাতে চাঁদ উঠলে আরো মাতাল পারা লাগে,
ই সময় মহুলের লেসা আর ধামসা ডাং এর বোল---
সব ভুলায় দিয়ে তকে জড়ায়ে চুমতে বলে---
হাঁ টারেশ্বর এর কিরা, পেঁন্দায় লই।
ই সময় লাচ পায় দমে,
দরা চালের ভবক লিয়েও,
তোর ব্যাতে ভাবরী ফুলের বাস।
চ কেন্যে চুমে লিয়, লাচে আর বাঁচে লিয়।
উদল কাঁধে, উদমায় বাঁচে আছি---
চ বাবু ঘরের বৌ বিটি গুলানের পারা তকেও সাঁজাই দি---
পাছা পেড় শাড়ি, কানে কৈলকার দুল,
খপায় টুকচা পলাশ।
আপনা দের ত কুছুই নায়
শুধু ফফাঁস তক চাঁদ আগলানো তড়া জমি----
রাঙা মাটি, কালো পাহাড়, বাঁধ, ব্যহাল,
হ্যাঁ শুন ককিল ডাকছে ঝুড় গ্যাঞ্জাড়ে---
ই সময় জাড়ের হুড়কা টা ফুঁটাই দিয়ে দৌড়ে চলে আয়।
হ্যাঁ ভাল, উয়ারা বাঁচতে নাই জানেক---
বাঁচে আছি আমরা, শালের ফুলের পারা,
সবুজ গাছের পারা---
ফ্যুটারা নদীর পারা।
চটরা গাছের হলুদ চামে---
ভেলকা কাঠবিল্লি র দৌঁড় বাঁচে থাকা শিখাই আমরাকে---
ই শ্যালা ফাগুন সাঙ্গিন কাল---
বলে বাঁচে লে ম্যায়া মরদে।
সব দড়ির গিরা ছেদরায়ে, মহুল আর হাঁড়িয়া ম্যারে
ডুব্যে যা জোছনার রঙ্গে আর ঢঙে।
হ্যাঁ ভাল---
আসথ গাছ পাতা খসায়ে কাঁথা পাতেছে বাসর ঘরে।
।।আমার বুকের ভাষা, আমি অহংকারী আমি এই রাঙামাটি-র ভূমি পুত্র।। এখানে ফাগুন আমাকে ভালোবাসতে শিখিয়েছে।। আজ ও বাঁচি, ভালোবাসি।।
পাললিক জীবন
র ঙ্গ ন রা য়
হাতিরা দাঁড়িয়ে পড়ছে জঙ্গল চিরে যাওয়া
সিঁথির মতন অপূর্ব রেল লাইনে,
শুকনো পাতা দুমড়ে-ছড়িয়ে পড়ে থাকছে মৃতদেহ
যেন রোজকার ভেঙে যাওয়া রুবারু সম্পর্ক।
মহাকাল মন্দিরের পাশে পৈতে নদীর জল
চিৎকার বহন করে চলে আবহমান কাল।
মাঝে মাঝে ইচ্ছে হয় তার কাছে রেখে যাই
এ-যাবৎ লিখিত সমস্ত কবিতা...
কোথাও না কোথাও গিয়ে সবাই ফিরে আসে
পাললিক জীবনে; স্তরে স্তরে সঞ্চয় করে— ভালবাসা
ভালবাসার কথা এলেই 'আপনি' শব্দটা প্রিয় হয়ে ওঠে,
আর আপনি ছেড়ে চলে গেছেন ভেবে
ট্রেন লাইনের সাথে জঙ্গলের বিস্তারিত স্মৃতিচারণ খুঁজে পাওয়া যায় না
কেন ফাগুনের দিন
ম ধু প র্ণা ব সু
এখনো ফাল্গুনী ভোরে ঠোঁট ভীষণ উষ্ণতা চায়।
রুক্ষ ফাটা গোড়ালি, খসখসে চামড়া লোভী হয়ে খোঁজে বেবি লোশানের মতো পুরুষালী ওম,
কি ভয়ঙ্কর অন্যায়, বয়েস কাঁটাতারের বাধা রক্তাক্ত দুহাতে ছিঁড়ে ফেলে ব্যাকুল হয়ে খুঁজছে বেহায়া অনুভবের আগ্রাসী সুখ...
আমার হাতেও ছুঁয়ে গেল কার্ণিশের রোদ, উত্তাপ ক্রমশঃ সরে যেতে যেতে গোধূলির আলোয় মরণের মতো শীতল,
দুই গালে স্পর্শ দিয়ে গেল হিমঘরের শৈত্য, তারপর হেঁটে যেতে যেতে জিরিয়ে নেয় একলা সাদা দেওয়াল,
বরফের নদী এগিয়ে এসে জীবনের চোদ্দ আনা গিলে নিচ্ছে অনায়াসে...
তবুও অন্ধ, বন্ধ করেনি মন! এখানে পলাশ, রক্তাক্ত হয়, ফাগুনের বাতাসে ওড়ে ভালোবাসার আবীর, হলুদ বসন্ত পাখি এসে বসে মনের বারান্দার গ্রীলে।
সোনাঝুরির পথে সেই সাঁওতালি কালো মেয়ের কালো চিকন শরীরে করবী ফোটে থরে থরে...
অমলতাসের সবুজ ইশারায় বসন্ত এসেছে আবার, তার অপ্রতিরোধ্য নিয়মেই।
গল্পের উপসংহারের মুহূর্তে আমার বসন্ত এসেছে আবার, আরও...আরও একবার।
বসন্ত এসে গেছে
ক বি তা ব ন্দ্যো পা ধ্যা য়
হারিয়ে যাওয়া নীল খামটা আবার পেলাম;
রঙটা বিবর্ণ অনেকটাই,
একটু ভাঁজও পড়েছে,
গীতবিতানের ভাঁজে রাখা ছিল যে...
মনে পড়ে গেল সেদিনের সেই সুগন্ধি বিকেল!
নীল খামটা যেদিন হাতে এসেছিল;
নুয়ে পড়া অমলতাস, পলাশের আগুন, মনে করিয়ে দিয়েছিল ফাগুনকে,
দুর্বার হাওয়া আমাকে সম্পূর্ণ বিবশ করার আগেই খামটা রেখে দিয়েছিলাম গীতবিতানের ভাঁজে...
আজ আবার প্রায় দু-যুগ পরে খামটা মনে করিয়ে দিলো কত কি!
খুলে ফেললাম খুউব সাবধানে
ভিতরে চারটে অক্ষর এখনও জ্বলজ্বল করছে...
হঠাৎই এলোমেলো হাওয়ায় বিস্রস্ত আঁচল সামলাতে সামলাতে যেন শুনতে পেলাম "বসন্ত এসে গেছে"
যুক্তিতর্ক
সো না লী ম ন্ড ল আ ইচ
কাব্যগ্রন্থ কথাটা কাব্য সমবায়
পাঠোদ্ধার না করার জন্য সাতখুন মাপ।
শরীরে তিলতত্ত্ব নিয়ে সবার মাথাব্যথা নেই
আদর একটা ইতিবাচক কথা করা যায়।
ঘট ও কলস দুটোই পূজা পার্বণ উপলক্ষ্য
সেখানে ধর্মীয় বিশ্বাস ধোঁয়া ধোঁয়া ঘনত্ব।
হার্টসেপ ডায়াস্টোলিস সিস্টোলিস ঘেরাটোপ নির্ভর
যা স্পর্শ করা অসম্ভব ওপেন সার্জারি ছাড়া।
তুমি দেখি এই শীতে হাঁসকে শেখাও ডুব সাঁতার
জল দেখলে আমার ভয়ে বিসর্জন মনে পড়ে।
এইসব গল্প বলতে ভালো লাগাকে জিইয়ে রাখ
সজারু দৌড়াক ঝুম ঝুম ঝুলন্ত কাঁটায়।
ভালোবাসা একেবারে বিশ বাও নয়
অতএব কল্পনা হোক সাত ঘাটের ঘোলা জল।
দু'চোখের তারায় থাক কৌণিক অরোরা।
শেকড়ের অরণ্য সৈকতে
অ সী ম দা স
শেকড়ের অরণ্য সৈকতে কিংবা
প্রবাল সাগরের আশ্চর্য উপত্যকায়
আমরা বড্ড বেমানান বহিরাগত
পূর্বাশ্রমের স্মৃতির সীমান্ত ডিঙোতে পারি না
ক্রুজের কাঁধে চড়ে এক দ্বীপ থেকে
ভিন্ন দ্বীপে যাই
সুন্দরের বৃষ্টিআয়ু পদ শুকনো বিদ্যুতের মতোই
বিচ্ছু আর বোহেমিয়ান
অনুভূতির নক্ষত্র নয়নের ঢালে
কেবলই ছলকে যায়
দিগন্তের আঁতুড় আশ্রমে
সূর্যের ভুশভাসা প্রসব দৃশ্য দেখে
এক থেকে দশ সেকেন্ডের কবিতার জন্ম হয়
যৌগিক জীবনের ঘামদৃষ্টি নিয়ে
তবুও মৌলিক ভাবনার খোঁজে
সূর্যের সমাধি তীর্থে বারবার ফিরে ফিরে আসি
গোলাপ দিবস
জা রা সো মা ব ন্দ্যো পা ধ্যা য় (সো ম প্র ভা)
গল্পে চরিত্রের বুনোন জড়িয়ে রাখে মেঘসুতো
পৃষ্ঠা থেকে পরবর্তীতে যাওয়ার সম্মোহন
নাভির ভেতরে সংলাপ লিখতে ভাঙে অক্ষর
তারপর একেকটা বিশেষ দিনের শুরু হয় বাণিজ্যকরণ
বোকা গোলাপ বুঝতেই পারে না
কখন তার জন্য ঘোষণা হয়েছে একটা গোটা দিন
যেখানে প্রেমের আয়ু মাটির ভাড়ের মতোই পলকা
কেবল বৃন্ত থেকে ছিঁড়ে নেওয়া হন্তারক ক্ষত
ছেড়ে যায় আজীবনের দাগ।।
হাত পেতে রাখি
দে বা শী ষ ভ ট্টা চা র্য্য
হাত পেতে রাখি, প্রবল ইচ্ছে বুকে চেপে,
প্রবল সুখে, সান্ত্বনায়,
আশায় বেঁচে থাকে শহর, বেঁচে থাকে খিদের ফুটপাথ- মাঠ,
এভাবেই কতোশত ভীড়ে, একদিন কেউ খুঁজে পাবেনা আমায় জানি,
স্রোতের শব্দহীন রাতে, পাহাড়ের চাবুক হাতে সকালের যানবাহনের ডাকে,
ফেসবুকের অন্ধকার থেকে গুগল পর্যন্ত এই পথে,
ভাইরাল থেকে একাকী কমেন্টহীন কবিতার কাছাকাছি,
কিবোর্ডের মৃতদেহে আমার আঁতুড় হবে লেখা,
নেশার মুঠোফোন আর আত্মবিশ্বাস,
যে পাখি উড়ে গ্যাছে দূরে- কিংবা মরে আছে টাওয়ারের তাড়নায়,
বেসরকারি প্রহসন চেপে রেখে,
আমায় খুঁজে পাবেনা আর বইমেলা এলে,
দেখা হাঁটা গানের প্রহর- হারিয়ে যাওয়া সভ্যতার কাজের ভিত্তিগুলো, মিলেমিশে আমার মতো দেখতে হবে,
আমি রয়ে যাবো কবিতার দুর্বোধ্য চিতায়,
ভালোবেসে- মানুষের পাশে, অবহেলায়...
অপ্রকাশিত
চৈ তা লী না থ
কবেই তো লিখেছি সে লেখা...
ছিলো না তো কোনো অনুভব,
ছিলো না শব্দ...
ভাবনা অথবা কল্পনাও!
হতে পারে, প্রত্যাশিত আলিঙ্গন পায়নি বলেই...
হতে পারে, প্রয়োজনীয় উষ্ণতা পায়নি বলেই
প্রকাশ হতে চায়নি!
তবুও আঁকা হলো সে এক বাতাসিয়া আলপনা...!
তাতে মেঘ এলো, দমকা হাওয়া এলো, সাগর এলো, পাহাড় এলো, নামহীন পথিকের কথাও আসতে বাদ গেলো না!
এলোমেলো...
কাহিনীর আগেই উপসংহার,
প্রচ্ছদে দিশাহীন দিক নির্দেশ!
লেখা হলো না একটাও সত্য কাহিনী...
সবটাই ভাবনা
আর,
নিছক রূপকল্পনা!
...বাকি রয়ে গেলো পরজন্মের প্রাপ্তির আরেকটা গল্পও।
আজি এ বসন্তে
জ বা ভ ট্টা চা র্য
চেতনায় মেশা গাঢ় সবুজ
তারসাথে টকটকে লাল মিশিয়ে
আঁকা ছবিটা আজ বসন্তে তোকেই দিলাম ।
আমার অকূলের সুবাতাস
আলোর ডানায় লেগে থাকা গোপন আঁধার
মোমের মতো রূপকথা ছোঁয়া নরম মেঘ চোখের পাতা
তোকেই দিলাম।
কবুতরী বুকে একফালি চাঁদ,
পদ্মপাতায় জাফরানি রোদ,
স্নায়ু ও শিরার আজীবন টান,
হাওয়া ওড়া চুল, প্রাণের প্লাবন
জল ছাপিয়ে ছোট্ট নদী, কূল না দেখা সমুদ্দুর
এই বসন্তে তোকেই দিলাম, তোকেই দিলাম।
তীব্র বসন্তে কি যে হয়!! মানুষ কি বোঝে সব???
মানুষের মতো কেউ বোঝে!! কেউ তো বোঝে।
চিঠি
ত নু জা চ ক্র ব র্তী
এখন আর আগের মত চিঠি লিখিনা,
মনেও পড়ে না শেষ চিঠিটা লিখেছিলাম কবে!
মনটাকে মেলে ছিলাম গোটা পাতায়
নাকি, টুকরো কাগজ ছিল?
হয়তো তোর কাছে আজ'ও রাখা আছে;
শব্দগুলো ভীষণ এলোমেলো।
লিখছিলাম কালি পেনে
অভিমানী মন বৃষ্টি হয়ে
তখনই পড়ল ঝরে!
ভিজে গেল শব্দগুলো, মুছে গেল টিপ;
কপাল জুড়ে লেপ্টে গেল ভালোবাসার রঙ।
আগের মত লিখিনা আর চিঠি
বলেই দিবি জানি,
আদিখ্যেতাও করতে পারিস বটে;
আবারও যদি চিঠির ভাষা
বদনাম তোর পাড়ায় পাড়ায় রটায়---
তবে মনে মনে লিখি
পাঠাই'ও রোজ গোপন খামে ভরে
রাণার ছোটে বস্তা পিঠে নিয়ে
ডেকে বলি তাকে, সময় বড় কম
ওহে, ছোটো আরো জোরে।
ঋতুরাজ
ম ধু মি তা ধ র
ছিঁড়ে রিক্ত বাহুর বন্ধন ডোর, রঙে রঙে আজ একি হুল্লোড়
দীপ্ত তোমার চোখের চাহনি, ওহে মম ঋতুরাজ-
তোমার নয়ন শান্ত নিবিড়
চলন তোমার নির্ভীক ধীর
সাদা ক্যানভাসে রাঙালো তোমার অঙ্গের কারুকাজ।
বিরহী কোকিল কার তরে বলো
তোমার দু'চোখ বারি ছলো ছলো
কুহু কুহু ডাকে পরাণ আমার আপনারে যায় ভুলে-
পলাশের রঙে সেজেছে আকাশ
কৃষ্ণচূড়া রাঙা চারিপাশ
নব পল্লবে সবুজের মেলা সাড়া ফেলে তরুমূলে।
ঝরাপাতাদের মর্মর ধ্বনি
আম্রমুকুলে নতুনের বাণী
পূর্ণতা দিয়ে শূণ্য ভরাও তোমার যাদুর স্পর্শে-
আগুনের রঙে ভরে অঞ্জলি
আবিরে, গুলালে ঢাকে পদধূলি
সব ব্যথা আজ মুছে গেছে বুঝি বিপুল মধুর হর্ষে।
আজ চারিদিকে ভরা উৎসব
আলোয় হাওয়ায় সাজো সাজো রব
দখিনা বাতাসে বকুল পারুল জাগায় প্রাণেতে সাড়া-
দু'টি চোখ জুড়ে স্বপ্নের মায়া
নেই দাবদাহ শৈত্যের ছায়া
মাধবী-বিতানে গন্ধে বিভোল, বাতাসও যে দিশাহারা।
এই বসন্তে
ম ঞ্জি রা ঘো ষ
কোন ইশারা ডাক দিয়ে যায়, ঝুমকো লতার চিকণ পাতায়---
ফাগুন আবীর রাঙিয়ে দিল, তোমায় আমায় এই অসময়,
এক নদী ঢেউ, শুনছি ধ্বনি আপনমনে, ছলাৎ ছলাৎ
আসছি আমি, সবুর করো, দরজা খুলে দেখবে হঠাৎ।
প্রস্ফুটিত হৃদয় নিয়ে, শিমূল পলাশ কৃষ্ণচূড়া
সেই সোহাগে রাখবো খোঁপায়, তোমার দেওয়া রাধাচূড়া।
আকাশ আলোর থেকে নেব, একটু খানি আলো চেয়ে---
ঝরা পাতার দল ছেড়েছি, এখন আমি কিশলয়ে।
দোয়েল, কোকিল ডাক দিয়ে যায়, তোমার আমার কানে কানে
হয় নি বলা, মল্লিকা বন উপচে ওঠে কুসুম ঘ্রাণে।
শিরীষ বকুল উতল হাওয়ায় হিন্দোলিত যখন তখন
তার আবেশে আসছে মনে হারিয়ে যাওয়া সোহাগ স্মরণ।
বাসন্তী রঙ যাবার বেলায়, রাঙিয়ে দিল এই অবেলায়
গন্ধে আকুল মুগ্ধ ভুবন, ফোটা ফুলের হরেক মেলায়।
ভাবছো বোধ হয়, এই বসন্তে বেড়ে যাবে একটি বছর
তাব চেয়ে তো, অনেক বেশি স্বপ্ন দেখার দৈর্ঘ্য বহর।।
গজরা
কা বে রী বো স নী ল বৃ ষ্টি
কাল রাতের শেষে চুলের ফাঁকে তুমি
মুখ রেখে বলেছিলে, তেরী হুসনো সে ভি
যাদা চাহতি হু তেরী ইস গজরে কো...!!!
অনেকে আসে এই ঘরে তোমার মতো
কিন্তু কেউ তুমি হতে পারেনা...
শরীরের মাংস খুবলে নিয়ে যায়
যন্ত্রনা দেখেনা...
কিন্তু যেদিন তুমি আসো আমি সাজি
মনকে সাজাই যত্ন করে; পায়ের নূপুর
সেদিন আমার আনন্দ বুঝতে পারে;
তুমি কি শুধু আমার হতে পারোনা!!!
বলতে সাহস হয়না; তার চেয়ে এই ভালো
তারপর আর আসোনা তুমি; দিন যায়
রাত আসে; সবাই আসে শুধু তুমি ফেরোনা;
শরীরের মাংসে পচন ধরে; গন্ধ আসে নাকে
তবু মনটাকে সাজিয়ে রাখি যত্নে তোমার জন্য...
তারপর এক টুকরো কাগজ আসে হাতে
তাতে লেখা; উ চীজ হী কেয়া যো রাত মে
গজরা বন যাতি হ্যায়!!!
নশা তো হামে উসসে মিলি যো বেবাফা মে
ভী বাফা কর যাতি হ্যায়...
গজরে মে আখির রাখখা হী কেয়া হ্যায়
যো বাজারো মে হর রাত খুশবো বন যাতি হ্যায়!!!
বসন্ত রঙ
বী থি কা ভ ট্টা চা র্য
দখিন তোরণদ্বারে, অনুভবে বারে বারে,
ডেকে গেছে দখিনা বাতাস,
চোখে চোখে চোখাচোখি, খুশি রঙ মাখামাখি,
লাজে রাঙা শিমুল পলাশ।
সেজেছে ধরণী আজ, বধূ বেশে নব সাজ,
সীমন্তে সিঁদুরের দাগ,
সুরভিত ফুল কলি, মুখরিত বনে অলি,
হরষিত হৃদি, এলো ফাগ।
জীবন পথের বাঁকে, আনমনে ছবি আঁকে,
খুশী মাখা শত অভিলাষ,
ভালোবাসা হাসি গান, কোকিলের কুহুতান,
প্রেম রাঙা বসন্ত বিলাস।
ফাগুন দিনের হাসি, ফোটে ফুল রাশি রাশি,
রঙে রঙে হৃদি রাঙা আজ,
পলাশ শিমুল রাজি, রক্তিম রূপে সাজি,
কুসুমিত হলো ধরা মাঝ।
এলো কেশে তরু দল, সুরভিত পরিমল,
এলায়িত ধরণীর বুকে,
পূর্ণিমা জোছনায়, নীপবীথি বনো ছায়,
লজ্জায় হাসি রাঙা মুখে।
আবির আদরে মাখা, লালিমা চাদরে ঢাকা,
রঙে রঙে রাঙা বনোসাজ,
হৃদয়ের আঙিনায় ঘন নীল নীলিমায়,
কত সাজে এলো ঋতুরাজ।
জীবন প্রান্ত শেষে, গোধূলির রঙ এসে,
মিলে মিশে একাকার আজ।
বসন্তে প্রেমের খেলা, রঙে রূপে সারা বেলা,
মধু মাখা পূর্ণিমা সাঁঝ।
সাত সুরে থাক ভরা, হৃদয়ের তানপুরা,
পুলকের গীতি আলাপন।
অনুরাগী বাতাসে, আবেগের উচ্ছ্বাসে,
ভরা থাক হৃদি প্রাণ মন।
অন্তর্মুখী
সু ন ন্দা চ ক্র ব র্তী
মেসোমশাই মাকে বললেন - মেয়েকে একটা
পঞ্চমুখী রুদ্রাক্ষ দিও ,
ওর ভালো হবে ।
সেই পঞ্চমুখী রুদ্রাক্ষ কতোটা ভালো
করেছিল জানি না
খারাপ হয়েছিল অনেক বেশী ।
জানি না আরও ভালো কি হতো ?
এক হতাশার দিনে
রাগে, শোকে ছুঁড়ে ফেলেছিলাম
সেই পঞ্চমুখী রুদ্রাক্ষ।
তখন পৃথিবীর সব মুখগুলো
মুখোশ,
মিছরির ছুরির আঘাতে আঘাতে
রক্তাক্ত, বিধ্বস্ত।
পঞ্চমুখী দূর কোনো মুখই
তখন অসহ্য।
আজ শুনি আমার ভালোবাসা
শুধু একমুখী,
তুমি ভালোবাসনি কোনোদিন,
শুধু কৃপা আর করুণায়
সম্পর্ক বাঁধতে চেয়েছ?
তাহলে আর কেন
মুখোমুখি হতে চাওয়া?
আজ সম্পূর্ণটাই হোক আমার---
আমি অন্তর্মুখী।।
ঘর হলো না
ম নো জ স মা দ্দা র
ধ্বস ধ্বসে, ধ্বসে পড়ে...
নদীর কূলের ঘর।
কখনও বা মানুষ মরে, কখনও গবাদি...
শূণ্য জমি বাড়ি।
পথের ধারে অধিক জনম, কুঁড়ে জড়াজড়ি।
এদিক সেদিক বালি খাদান,
বৃক্ষ কেটে ছাপ।
শাসক কোথায় ? পুলিশ কোথায় ? কোথায় প্রশাসন ?
নোটের গুঁতোয় পকেট মোটা,
নারী কোমর বিছা।
এই মানুষেই লাইন দেবে,
দলাদলির পারদ ছলনায়, ভাসবে আবেগ যমুনায়...
ভোটে হবেই বলিদান।
পাঁচশো হাজার বড়োই হলো, বিবেক খুনে লাল..
একটা জনম বৃথাই গেল,
ঘর হলো না ঘর।
প্রকৃতির সাজ
শি খা না থ
ফুলের চাউনিতে রঙের আবেশেতে প্রকৃতি অপরূপা সাজে।
রোদের সুবচনে আলোর হাসি গানে, হৃদয় নানা কথা বলে।
আকাশ প্রেমে ভাসে জোছনা আবেগেতে বাতাসেবাঁশী সুর
ভরে,
তোমার মুখে চেয়ে করুণা প্রেম ভরে, চোখেতে চোখ মেলে ধরে।
ফাগুন লালে বিভা বাসন্তীর নিভা, ললিতা বিশাখার সাজে,
পায়ের রূপ রেখা, নূপুর পায়ে শোভা, বসন্ত হৃদয় মাঝে।
আবিরে আবিরেতে মেতেছে উৎসবে আয়োজনে প্রকৃতি
মাতে।
মানব প্রেমে ভাসে, দোলায় মন জাগে, কত ভাবে পূর্ণ
ধরা।
বসন্ত বাতাসে আনন্দ ভরেছে সুখেতে অতৃপ্ত হিয়া।
এইখানে কর বসত
সু জ ন প ণ্ডা
এসো,
এইখানে কর বসত
শিমুল আর পলাশে।
যেখানে নদীর কাঁখ থেকে
জল চুরি করে কিশোরী।
এসো,
এইখানে কর বসত
শাল আর পিয়ালে।
যেখানে পিরামিড শ্রমিকের মতো
অজস্র বেদনার দাগ শরীরে।
ক্ষণিকের অসংলগ্ন বাতাস
আর আভরণহীন মহাকাশ,
ঝুরো কাঁচের মত
নক্ষত্রপুঞ্জ।
এসো,
এইখানে কর বসত
তারায় আর তারায়
নদীতে আর নদীতে।
ভালো থেকো
অ র ণ্য র হ মা ন
চলো একবার
হাতে রেখে হাত রঙ মশাল জ্বালো৷
বলো একবার
ভালো আছি, তুমি থেকো ভালো৷
দেখো একবার
বসন্ত আজ সেজেছে ফুলে ফুলে।
নির্ঘুম চাঁদ
ফুটেছে আকাশে সকল দুঃখ ভুলে
শুধু ভাববার
তোমার আমার আগামীর যত দিন
ভুলো অভিমান
পুরাতন পাপ ধুলোয় হোক মলিন৷
জপমালা
ঊ ষা গ রা ই
কপালে ছিল রসকলি, হাতে খঞ্জনী
মাপতে পারিনি গহরের মতো
যন্ত্রনার এক বাঁও... দো
বাঁও...
হেঁটেছি হাঁটবার জন্যই
কখনো বা একটু জিরোতে কোনও গাছ
দগ্ধ দিনে ঠোঁট ভেজাতে একফোঁটা প্রাণরস
সন্ধ্যের শঙ্খ একলা কেঁদে ঘুমিয়ে পড়েছে।
আঁকজোক যতই জটিল হোক
তবু নিজস্ব ছাঁদের জীবন আছে
চতুর্মুখী ব্রহ্মা বিষ্ময়ের আলো আঁধারিতে
একান্তে মালা জপতে ব্যস্ত
কালো নদীর ডাকে সাড়া দিয়ে
নিশিরাত অতিক্রান্ত
লবকুশ মেঘ ওড়ে বাল্মিকীর বাগানে
নিষ্ফলা ঈশানী ব্যর্থ চোখে চায়
একঘেয়ে আর্তনাদ শুষে নিচ্ছে জীবন...।
খঞ্জনী বুকে চেপে ধরেও
আমার রাধা হওয়া আর হলনা
সমগ্র সত্তায় নীল বিষ জড়িয়ে
মীরা হতেও আমি পারিনি
এত কাছে এসেও কি তুমি বোঝোনি, শ্যাম?!
ধামসা-মাদলের দেশে
টু লা স র কা র
জীবন এক অনন্য আনন্দভূমি
যাদের মুঠোয় থাকে আনন্দ,
দুঃখের মাঝেও বসন্ত সাজে
মন-প্রাণ সাজে ভরপুর সানন্দ।
ভেসে যাওয়া পূর্ণিমার আলোকে
বসন্তের রঙিন কৃষ্ণচূড়া পলাশে,
ধামসা-মাদলের নিত্য তালে
জীবন আবৃত ভালোবাসার আবেশে।
ছন্দে ছন্দে ওঠে ঢেউ গগনতলে
শাল, পিয়াল, ছাতিমের তলে,
দলে দলে দলবদ্ধ পুরুষ-নারী
বাঁচছে কেমন দুঃখ ভুলে।
কূটনীতি জটিলতার ঊর্ধ্বে উঠে
সহজ জীবন কাটাতে জানে,
শহুরে হুল্লোড় হতে দূরে
জীবন খোঁজে জীবনের মানে।
আজি এ বসন্তে
রি না রা য়
ফাগুন হাওয়ায় বইছে প্রেম,
নদীর বুকেও লাগে শিহরণ,
তাই, জলে তিরতির কাঁপন,
চোখ আমার,খোলা জানালার ধারে,
যেখানে,
বাগানে, রংবাহারী ফুলে,
প্রজাপতিরা আসে দলে দলে,
ফুলের বুকে বসে, ভালোবাসার ছলে,
উড়ে উড়ে ঘুরে ফিরে
বারবার আসে,
মধু খায়, চলে যায়।
পুরোন ফুল ঝরে, আবার
নতুন ফোটে আগামী ভোরে।
প্রকৃতি ব্যস্ত হয় সাম্যতা রাখায়।
এমনি করে,
কত বসন্ত আসে, কত বসন্ত যায়,
বসন্তসুখের সংক্রমণে,
কখনো ধরিত্রী ভাসে,
কখনো মরে যন্ত্রনায়।
বাসন্তিকার সুরে
র ত ন পা ল
কৃষ্ণ কলির স্বপ্ন গাথায় ভরাই যখন প্রাণ,
অসীম আকাশ ছন্দ ছড়ায় বাজায় মধুর তান।
প্রাণপরাগে রাগরাগিণীর উচ্ছলিত সুরে,
ডাকছে কোকিল ভরদুপুরে আপন মনে দূরে।
উদাসী মন প্রেমের তালে লালের আবীর মাখে,
বাসন্তিকার পলাশ শিমুল সবটা রঙে চাখে।
হৃদমাঝারে গভীর আবেগ কেন এত ওঠে?
ছন্দে মন্দে শুভের আশে পরাণ কেন ছোটে?
কনকচাঁপা গন্ধ বিলোয় ফুলের শোভায় চয়ন,
দিকবিদিকে অশোক ফুলও ভরায় স্নিগ্ধ নয়ন।
তপোবনেও চঞ্চলতার ঢল পড়েছে দেখি,
তিতলী ওড়ে পাখা মেলে বাঁধন হারা সেকি!
উড়ছে ভ্রমর ছন্দ তালে আশ মেটেনি তারও,
কলির নেশায় অলিও দু'চোখ চাই যে তারো আরও।
সুরের বাণী রবির কিরণ দীপ্তিমানের ভাষায়,
ভুবনজুড়ে আলোর ছোঁয়া জাগে মনের আশায়।
কল্লোলিনী স্রোতের তোড়ে দুকূল ভাসায় ভরে,
উচ্ছ্বাসে বৈভব নিয়ত সুরঝংকারে ঝরে।
হালের পানি পাইয়া মাঝি উদাস বাউল গীতে,
সুরের তালে ভরায় আরো লোকগীতের রীতে।
ভিসুভিয়াসের সন্ধি
মৌ সু মী মু খা র্জী
জন্ম দিতেই হবে এক বিদ্রোহী কবিতার, কাটিয়ে শোক,
ভিসুভিয়াসের গলিত লাভায় আজ বর্ণিত হোক।
নরক গুলজার ক্রমশঃই ধরিত্রী বিদীর্ণ করে, কোটি কোটি অর্থ আত্মসাৎ,
দরিদ্র মধ্যবিত্ত, ক্রমশঃ দরিদ্র, চোর-ডাকাতের বাটপাড়িতে কুপোকাত।
হানাহানি রেষারেষির চরম পর্যায়ে মনুষ্যত্ববিহীন, অমানবিকতা,
অক্ষরের নীল রক্তে মানদণ্ডে দণ্ডিত আজ বসুমাতা।
খুন, ধর্ষণ, সর্বোপরি পাষণ্ড পামর মানব হস্তে খণ্ডিত দেহ, ছত্রিশ বা ছাপ্পান্ন,
মন্দির মসজিদ ধর্মযুদ্ধ, অজ্ঞাত.... রাম রহিম যে অভিন্ন।
ধনদৌলত পরম আদরে কুক্ষিগত ধনীর লকার, কাসকেট, শস্যপূর্ণ আড়ত,
লিটার লিটার দুধে পরিশুদ্ধ হয় শিবলিঙ্গ,
গড়িয়ে পড়ে নয়ানজুলি, ব্যঙ্গের হাসি হাসে স্বয়ং ঈশ্বর,
...তোমারই সৃষ্টি কিছু নরকের কীট!
অভুক্ত কিছু প্রাণ খুবলে খায় ডাস্টবিন--- উদরে খিদে, একমুঠো ভাতের গন্ধ।
কেউ তো শোনো ওদের কান্না, বাঁচার বলাৎকার,
দুর্ভিক্ষের নাগপাশে বন্দী, শিশুর দুর্বল লাশ মায়ের হাহাকার।
ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি নয়, বিস্ফোরিত গলিত লাভায়, দাউ দাউ জ্বলুক...
ভিসুভিয়াসের সন্ধি, নিপীড়িত অসীমে,
বিদীর্ণ বক্ষে আত্মশ্লাঘা, বাড়ন্ত সুখ,
লিখিত হোক বিদ্রোহী কলমে,
এক জ্বলন্ত কবিতা,
উদ্গীরিত লাভায় আত্মা উন্মোচিত করুক।
বিদীর্ণ বক্ষে আত্মশ্লাঘা, বাড়ন্ত সুখ,
লিখিত হোক বিদ্রোহী কলমে,
এক জ্বলন্ত কবিতা,
উদ্গীরিত লাভায় আত্মউন্মোচিত হোক।
সংযোগ
অ রি ন্দ ম ভ ট্টা চা র্য্য
আমি শহর ছাড়ার আগে তুমি শেষবার যেদিন বৃষ্টির দিনে পাশে এসে বসলে-
আমাদের সমস্ত জোয়ার ততদিনে তুচ্ছ জমাজল হয়ে গেছে।
একটা সুদীর্ঘ নীরবতা বাতাসে পুরোপুরি মিলিয়ে গেলেও আমরা সাহস করিনি চোখে চোখ দিতে, মনে আছে?
তুমি বৃষ্টির দিকে তাকিয়ে বলেছিলে, অনন্ত পলকহীন দৃষ্টিতে তোমার চোখে বন্যা আসে- নিঝুম সম্মতি ছাড়া আমার কোনো শব্দক্ষরণের স্পর্ধা ছিল না সেদিন।
সেদিন তোমার আঙুলের ফাঁকে আমি ভয় দেখেছিলাম- শেষ ট্রেন প্ল্যাটফর্ম ছেড়ে যেতে যেতে যে রঙের ভয় রেখে যায়, তেমনই।
আমাকে যেতে হতো সত্বর বহুদূর আর তুমি বেঞ্চের এক কোণে স্তব্ধ রোববার হয়ে বসে ছিলে, মনে আছে স্বপ্নীল?
সেদিন চলে যেতে যেতে আমি একটা আস্ত পাহাড়কে গুঁড়ো গুঁড়ো হতে দেখেছি প্রথমবার। যে শেষটুকুর ভূমিকায় তোমার মধ্যে ইলশেগুঁড়ি বৃষ্টি ছিল আমি চলে যেতে যেতে তোমাকে প্রায় ঢেকে দিয়েছিল শীতল তুষারপাত, দেখেছি।
স্বপ্নীল তুমি কি তবে আমাদের শেষ পৃষ্ঠায় শরৎ হয়ে এসেছিলে?
তাই কি তোমার থেকে বহু দূরে এই এডিনবার্গের শরৎ রাস্তায় এযাবৎ আমি একটিও কাশফুল দেখিনি,
তাই কি প্রতি শীতের আগে আমার ভিতর পেঁজা পেঁজা মেঘ দেউলিয়া হয়... স্বপ্নীল?
নির্বাসন মাত্রই বিদায় নয়
উ জ্জ্ব ল চ ক্র ব র্তী
নিঃশব্দে ঘাসের বুকে মুখ গুঁজে সয়েছি ভাঙনের ক্ষত, যতো ছিল গ্লানি
যদি নির্বাসনে যাই...
খুঁজবে কি বিস্মৃত আকীর্ণ পথে?
বেজে উঠলে ভায়োলিনের সুর---
অন্ধকার রাত্রির শরীর ভিজিয়ে
বুকফাটা যন্ত্রনায় চাঁদ-কে জাগিও না,
ভেজা সবুজের অংশীদার হয়ে গোলপাতার ছাউনিতে রিমঝিম শব্দে ডুবে আমি,
সন্ধে নামলে আকাশের নিচে মাদুর বিছিয়ে জাবর কাটছি
ফেলে আসা ভালোবাসার স্মৃতি...
বেলকুঁড়ি ছাওয়া পথে আহ্বান করলেই
হুইস্কির গ্লাসে চুমুক লাগিয়ে বলবো---
নির্বাসন মানেই বিদায় নয়,
একদিন ভালোবাসায় ভরে থাকবে পৃথিবী।
আলাপচারিতা
প্র কৃ তি দ ত্তা
সারাদিন সৌরতাপে পুষ্ট জলাভূমি শীতেও দেয়
যথেষ্ট উষ্ণতা। উত্তপ্ত সমুদ্রবায়ু সন্ধ্যার আলোয়
ফিরবে শীতল স্থলভাগে। দিগন্ত বিস্তৃত জলরাশি
ঈষৎ লবনাক্ত হৃদয়ে তোলে ছোট ছোট ঢেউ
পান্না সবুজে বেলাভূমির সাথে বাড়ায় কন্ট্রাস্ট।
দিন শেষে সবার ফেরার পালা--- ঝাঁকে ফেরে
পরিযায়ী পাখি, খুরের আঘাতে ধুলো ওড়ে আকাশে,
আসে গোধূলি বেলা। অপূর্ব সে সন্ধিক্ষণে
সমুদ্রবায়ু সাথে চলে আমার আলাপচারিতা।
বেলা শেষের বিষাদমাখা আলোয় বাজে করুণ সুর,
এরপর টুপ করে জলে ডোবে সূর্য্য, তার শেষ লোহিত
রশ্মি নিয়ে বিদায়, দেখা হবে এক দিন পরে।
সাঁঝের তারকা আমি হারিয়েছি পথ ঘোর কালো
অমাবস্যা রাতে, চিলিকার জলে চিকচিক করে
আমার সঙ্গীটি, দূর বহু দূরে, মৃদু কম্পমান।
কত কথা হয় তার সাথে, দীপন প্রাবল্যের মাত্রায়
অনেক আলোকবর্ষ পেরিয়ে এক নিভৃতলোকে
সাক্ষী শুধু ঘন কালো চিলিকার নোনাজল।
সফেদ নিস্তব্ধতা
সা য় ন্ত ন ধ র
স্ফটিক বরফ কণা সাদায় রাঙিয়ে রেখেছে সবুজ নিডলগুলিকে
জমাটবাঁধা প্রকৃতি মুখরিত নিস্তব্ধতায়
ছাঙ্গু লেকের বুকে টলটলে বরফের আস্তরণ
আর একটানা মেঘেদের মসৃণ যাতায়াত।
রহস্য ঘনীভূত হয় লাল নীল কটেজের দেওয়ালে
ম্যাস্টিক কালো রাস্তায় ট্যুরিস্ট গাড়ির ভীড়
পাহাড় গিয়েছে মিশে ব্লার আকাশের সাথে
ভীষণ ঠাণ্ডায় প্রজাপতি মেলে না ডানা।
রাত নামে, পূর্ণিমা চাঁদ আলো ঢালে, দীপন প্রাবল্য অজানা
চরাচর যেন ফুটে থাকা নাইট কুইন
কালো রাত্রির ক্যানভাসে সাদার রঙীন ছবি
নেচে ওঠে রাতচরা পরী, গল্প বলে সফেদ নিস্তব্ধতার।
হাওয়ার ফানুস
প ল্ল ব ভ ট্টা চা র্য অ ন ন্ত
কেইবা জানে কি ব্যথা কে লুকায় কোথা
আমরা কেবল বিচার করি নিজের মতো
বুক পকেটের নিচেই কারো দগদগে ঘা
জহর কোটের বোতাম এঁটে ঢাকছে ক্ষত।
হরবোলা কেউ যার কথাতে মেজাজ চড়ে
গল্প কে তার শুনতে বসে ধৈর্য্য ধরে!
মূক হয়ে যে গুমরে মরে একলা ঘরে
কেমন দেখ সব কুতুহল তাকেই ঘিরে!
বুকের কান্না লুকিয়ে যেজন সদাই হাসে
নিত্য সুখের আলপনা দেয় চোখের জলে
কেউ কি বুঝি তার দুঃখ উঠোন জুড়ে
সব দরজায় খিল দিয়েছে খেলার ছলে।
সব দোষে সে দোষী, যেজন স্বীকার করে
শিকার হয়েও অস্বীকারের বইছে বোঝা
সেই তো কেবল চরকি কাটে অন্ধকারে
বঙ্কিম তার চলার পথই নয়কো সোজা।
সব হারিয়ে নিঃস্ব যেজন ফুটপাতে ঠাঁই
বুটের আঘাত তার বুকেতেই হচ্ছে জমা
প্রতিকারের প্রার্থনা যার কাঙ্খিত নয়
সেই পেলনা নিদেনপক্ষে একটু ক্ষমা।
আমরা সাজি বিচারপতি, করতে বিচার
মান, হুস এর অধিকারী আমরা মানুষ
আসলে সব মিথ্যুক আর দিচ্ছি ফাঁকি
আমরা শুধু রঙবাহারি হাওয়ার ফানুস।
প্রশ্ন চিহ্ন আঁকা
সু ব্র ত ন ন্দী
আলোর রোশনাইয়ে নিজেকে যাচাই করো,
তুমি কী ওদের মতো?
শুধুই আলোয় স্বচ্ছতা খোঁজো!
উৎসকেই ভুলে গেলে অবিরত।
আঁধারির তীব্র শূন্যতায় নিজেকে প্রশ্ন করো,
তুমি কী ওদের মতো?
শুধুই ছায়ায় আশ্রয় খোঁজো!
মনের চরিত্রের নিঃসঙ্গতা যত?
আয়নায় নিজেকে দেখে অভিসম্পাত করো,
তুমি কী ওদের মতো?
আসল নকলের পার্থক্য খোঁজো!
প্রসাধনীর প্রলেপে ঢাকছ ক্ষত?
শুধু একটু---
স ন্দী প কু মা র মি ত্র
উদারতাটা তোর কাছেই শেখা
অনেক ডিগ্রী আছে তোর সাথে---
পথে ঘাটে চরে বেড়িয়ে জীবনের
আসল সময়টাই পার হয়ে গেছে
তাই লেখাপড়া শেখা স্বপ্ন হয়ে রয়ে গেছে।
সেদিন কিন্তু বুঝিনি এই উদারতায়
এত অবহেলা মিশে থাকে---
বুঝিনি জটিলতার জ্ঞান না থাকলে
সরলতাকে বোঝা যায় না।
প্রথম প্রথম মনে হত
এটাই বুঝি স্বাভাবিক।
কিন্তু অবজ্ঞা আর অবহেলা যখন
মথিত করে তোলে মন প্রাণ
বুকের ভেতর থেকে একটা বোবা কান্না
ঝলকে ঝলকে বেড়িয়ে এসে
দিশেহারা করে তোলে---
তখন জল ভরা চোখদু'টো সুদূর
নীলাকাশে মেঘ খুঁজে চলে
একটু ছায়ার জন্য
শুধু একটু ছায়া---
পোড়া ধূপ
শা ন্তা ল তা বি শ ই সা হা
---বলো তো একটা নদীর নাম?
---হতাশা।
---বেশ, এবার বলো একটা পাহাড়ের নাম।
---দীর্ঘশ্বাস।
---এবার যে কোন একটা গাছের নাম বলো।
---বেদনা।
---'সহজ প্রশ্ন, পারলে একটা ফুলের নাম বলো।
---অশ্রু।
---ঐ ভেসে আসা একখণ্ড মেঘের নাম বলো তো?
---ক্লান্তি।
---তোমার ভবিষ্যৎ আমার কাছে স্পষ্ট হয়ে গেল, শুনবে?
---বলো।
---আগামীর দিনগুলি তোমার সুখের হবে।
সাতমহলা বাড়ীতে;
সোনার পালঙ্কে গা এলিয়ে দেবে,
স্ফটিক জলে স্নান করবে,
দাসীরা চন্দনের সুগন্ধী ছড়িয়ে দেবে সারা অঙ্গে,
মালিনীরা ফুলহার পরিয়ে দেবে গলে,
খোঁপায় দেবে ঝুমকোলতা,
স্বপ্নালু আলোয় নর্তকীর নৃত্য ভঙ্গিমার সাথে
তানপুরায় বাজবে মিলনের সুর।
শ্বেতপাথরের মেঝেতে পাতা কার্পেটের উপর,
তোমার আলতা রাঙা পা পড়বে...
---তারপর?
---বুকের পাঁজর খুঁড়ে বেরিয়ে আসবে
বালুচরি নকশাওয়ালা
বিষাক্ত এক সাপ,
মুক্তো দানার মতো হাসি,
করুণ নহবতের বিষ নিয়ে
আষ্টেপৃষ্টে আলিঙ্গন করবে তোমায়।
তোমার স্বর্ণালী রঙ,
মধুর হাসি,
মখমলের বিছানা,
সব তামাটে পানসে হলুদ হবে।
---সে কি তুমি?
---তা কেন!
---তবে?
---তোমার অতীত।
বিবাহবাসরে যাওয়ার আগে,
যাকে তাচ্ছিল্য ভরে
পোড়া ধূপ ভেবেছিলে।।
বসন্ত
অ ন্ন পূ র্ণা দা স
আমার ভালোবাসা শুধুমাত্রই তুমি...
চারিদিকে তাকাই আর দেখি তোমারই ছবি
তোমার কোন ছবি নেইতো আমার কাছে, তবে...
এতো স্পষ্ট তবে কেন দেখি?
আমার সমস্ত ভাবনায় শুধুই তুমি,
তাহলে এ কোন তুমি?
যা আমার দূর্বলতা, ভয়,
ভালোবাসার অভাব দূর করে,
জীবনকে রঙিন করে সবসময় পূর্ণ করে রেখেছে!
অবাক হয়ে ভাবি, তাহলে কি বসন্ত এসে গেছে?
কোথায় সে...
হয়তোবা আমার মনের গোপনে ছিল সে,
আমি দেখতে পাইনি...
স্পর্শে পলাশ
নূ পু র রা য় (রি ন ঝি ন)
এই ফাগুনে স্পর্শে পলাশ
হৃদয় কোণা পূর্ণ,
রাঙিয়ে চোখ কৃচ্ছ্রসাধন
হলাম নিজেই ধন্য।
ভরে থাক বসন্ত সুধা
যত্নে মণিকোঠায়,
অপেক্ষা এই পৃথিবীতে
বাঁচার রসদ জোটায়।
বেঁচে থাকার ইচ্ছেটাই যে
দিন দিন হয় ফিকে,
আমিত্বহীন এই জীবনটা
বদ্ধ জীবন সিন্দুকে।
রোমাঞ্চ বাঁক
বি উ টী সা ন্যা ল
কিছু কথা না হয় না বলাই থাক।
কিছু কথা না হয় না শোনাই থাক।
অনুমান করে না হয় মন হাঁটুক কিছুদূর।
একা ঢেউয়ের তালে ভাসতে ভাসতে পেরোচ্ছিলাম নদী,
হঠাৎ করেই বাঁকের মুখে পেলাম তোকে,
শুধুই কি দেখা!
পেলাম তোর ঠোঁটের রোমাঞ্চ ঘেরা মোহনার বাঁক।
সোজা ভেসে চলা হোল না আমার,
মিশলাম একটা স্নিগ্ধ সাগরে।
যে কথাগুলো না হয় না বলাই থাক বলেছিলাম,
সেই কথাগুলো আর কোনদিন বলার দরকার হোল না।
মিশে গেলাম একে অপরের সুখে পাঁচমেশালি মন খারাপে।
তোর একঘেয়েমী জীবনে সঙ্গী হলাম আমি।
তোকে দেখে বুঝেছি, কেউ কেউ গোপন প্রেমের সোপান চেনে।
তাই এতোগুলো বছর পেরিয়ে গেল তোরই হাত ধরে,
তোর উঠোনের তুলসী তলার প্রদীপ জ্বালতে জ্বালতে।
বেলা শেষে
নি ভা চা ক লা দা র
পড়ন্ত বেলায় সোনালী রোদ্দুর ও পশ্চিমে ম্লান
আবছায়া খেলে বেলাতেও আতপ স্নান।
দিন রাত্রির হাড়ভাঙ্গা শ্রম হারায় মূল্যবোধ
দিগন্তে নির্বাসন ভগ্ন মন।
অনাদর,অবহেলার পাহাড় বুকে চেপে বসে
অক্সিজেন নাই চারপাশে।
হাতুড়ির ঘায়ে ক্ষত বিক্ষত
কেউ কি দেখে, বোঝে কতো গভীরে ক্ষত!
অন্তঃসলিলপ্রবাহে ডুবে থাকা
বুঝে কেবল সেই।
নেই নেই তবুও কোথা পরিত্রাণ।
মরিচার আস্তরণ ভালবাসার মনে লেপটে আজ।
উর্দ্ধে অসীম আকাশ আজও নানা রঙের মেলা,
নুতন নুতন সৃষ্টি বুকে ধরে বসুন্ধরা।
বলাকা ঝাঁকে ঝাঁকে ডানা মেলে সাঁঝ বেলায়
বসন্ত আসে যায়।
পলাশ শিমুল আগুন রঙা
শুধুমাত্র বেলা শেষে
পোড়াকপালির হৃদয় ভাঙ্গা ।
ওপারের তরী ভিড়বে ঘাটে কবে
কেউ কি অগ্রিম খবর রাখে?
সবুজ মনটা তবুও রাখে পণ
বাঁচার তাগিদে সব পায়ে দলে
প্রতিবাদের ঢেউ তুলে।
বাসন্তী রোদ্দুর
প্র তি ম সে ন
লাল পলাশে লালের সারি মহুল ফুলে মৌ,
লাল চেলিতে লাজে রাঙা সাঁঝবিহানে বৌ।।
ঝুমুর গানের ধিতাং বোলে চইড়গা গাঁয়ে ছৌ,
শাল-পিয়ালের অশোকবনে খেলছে রঙিন ঢেউ।।
উড়ছে আঁচল মেঘ বিজরি ঝলমলিয়ে হাস,
বাজ্ রে মাদল শোন্ ময়ূরী, সুর লহরি ভাস।।
ফুলেল মাঠে গুনগুনিয়ে দোলে হাওয়া-গান।
ফাগুননামা আগুনপুরা আলোয় ভরা প্রান।।
ফাগুনের ওই রূপ আগুনে চল্ না তুই-আমি,
বাসন্তী রোদ্দুরে পুড়ি একলা কেনো থামি।।
পারবি কি তুই বাসবি ভালো,
জ্বালবো আমি আলো।
কাঁটা নয় তোর ফুলই হবো,
শ্যামশায়রে ভাসবো।
তুই হবি রাইসোহাগী শোনাবো বাঁশির সুর,
ও-ই চেয়ে দেখ অপেক্ষাতে বাসন্তী রোদ্দুর।।
ও-ই চেয়ে দেখ অপেক্ষাতে বাসন্তী রোদ্দুর।।
সুখ
স ঞ্চি তা ভ ট্টা চা র্য্য
সবুজ মনে বনে বনে
খুঁজে বেড়াই সুখ
সবুজ পাতা তোদের দেখে
মন যে হলো অবুঝ।
কি অপরূপ রূপে তোদের
হাওয়ায় দোলা আহ্লাদেতে
দুলতে দেখে মন যে জ্বলে
নিরুদ্দেশের কথা বলে
মনে হয়, যেন যাই হারিয়ে,
শুকনো পাতায় পা মাড়িয়ে…
হঠাৎ, কখন তাকিয়ে দেখি
কোথায় কেউ কাঁদছে নাকি!
ঘাসেরডগায় ছোট্ট ফুল-
কেঁদে যেন করছে আকুল
ঘাসের উপর টুক করে কে
পড়লো হেথায় ঝরে।
আমি, তখন অবাক চোখে
দেখতে পেলাম তারে।
এ যে আমার হারিয়ে যাওয়া,
এক নিমেষে খুঁজে পাওয়া,
শৈশব নামের সুখ পাখিটা
কুড়িয়ে পেলাম ঘাসের 'পরে।
সচেতনতা
প্র তি ম ঘো ষ
অসীম আকাশ মেঘাবৃত সমীরণ ঘেরা-
গগন তলে ধরণীতে জ্ঞান শূন্য অন্তরে,
আছি ভেসে, নিরক্ষর হয়ে স্বাক্ষরের স্তরে।
তিমিরে হাতড়ে বেড়াই কল্পনাকে বাস্তব করতে।
প্রখর সৌরকিরণে, ঝমঝম বর্ষনে, প্রভাত, গোধূলিতে,
আঁধার আমবস্যা নিশি রাতে, পূর্ণিমায় চন্দ্রালোকে,
রাস্তার আলোয় অবলা প্রাণীতে, রুগ্ন জীর্ণ স্বভোজীতে,
চলার পথে কর্ম মাঝে সুন্দর কে হৃদয়ে বপন করে,
এক অদক্ষ কালাকার রূপে, নিপুণ কলম তুলিতে,
অতল মন থেকে সচল মনে এনে, নিত্য গড়ি সৃষ্টিকে।
সকলে আমার কান্ড দেখে অবাক হয়।
আমি নির্ভীক, আমার প্রেম রক্ষার্থে মগ্ন শরীরে।
অতীত পানে চেয়ে দেখি কত কলম প্রেমিক রয়ছেন
তাদের সৃষ্টির মাঝে নামের সৌগন্ধ ছড়িয়ে বেঁচে।
তারা অতি সাধারণ হয়ে অসাধারন কান্ড ঘটিয়েছেন।
আমি সেখানে তাচ্ছিল্যের বর্ম পরে তুচ্ছ হয়ে সৃষ্টি করব সগৌরবে।।
দেখেছি পদ্মার শোভা
প্র দী প ম ণ্ড ল
ঐ ধানসিঁড়িটি ঠিক কোথায় জানি না
ইচ্ছে জাগেনি মনে কখনও খোঁজার
তবে পা ঝুলিয়ে ভঙ্গুর পাড়ে একান্তে
বসে অপরূপা শোভা দেখেছি পদ্মার।
পশ্চিম পারে রবিকে হারাতে দেখেছি
সোনালী জলে দেখেছি হাঁসের খেলা
বিস্তীর্ণ চারণভূমিতে ঘোষেদের খুশি
দেখেছি পেলব সবুজ ঘাসের মেলা।
দেখেছি অরুণের উদয় স্নিগ্ধ ভোরে
শিশিরে ভেজা পা শুকিয়েছি রোদে
পাড় বরাবর সর্পিল রাস্তায় হেঁটেছি
জিরিয়েছি বাবলা ছায়ায় চক্ষু মুদে।
সবুজ ধানে সোনালী প্রলেপ দেখেছি
হারিয়েছি বারবার ধান ফুলের গন্ধে।
কাশ ফুলের ঢেউয়ে তলিয়ে গিয়েছি
বুঝিনি কিভাবে দুপুর হয়েছে সন্ধ্যে।
গামছা-জালে খেলা ছলে মাছ ধরেছি
মাঝি সঙ্গে প্রাণ ভরে মিলিয়েছি গলা
পাখির সঙ্গে মনের কথা বলতে গিয়ে
শিখেছি ছোট্ট ছোট্ট পা'য়ে হাঁটা চলা।
চাষের শুষ্ক জমিতে জীবন খুঁজেছি
স্নেহ-হাত বুলিয়েছি বলদদের গলে
মন-সুখে নদীর বুকে খুশি খুঁজেছি
সাদা চোখ রাঙিয়েছি পদ্মার জলে।
ধানসিঁড়িটি ঠিক কোথায় জানি না
পদ্মা নদীটি রয়েছে মনের কোণে
পদ্মার শীতল জলে জীবন দেখেছি
মনের মানুষ সনে হেঁটেছি গোপনে।
আর কত চাই
সু বা ই তা প্রি য় তি
ক্ষুধার উসকানিতে খেয়ে
ফেললাম-
দীর্ঘ ব্রত ভেঙে-
এক রেলগাড়ি- বস্তাভর্তি আনার-
মৃত কাক-ট্রানজিস্টার
এসবই ভক্ষণ করে
নিলাম রাক্ষসের মতো।
আরো খেলাম বায়বীয় কামনা-পাঁচিল-পালাবার ইচ্ছে-ঘোমটা।
তৃপ্তি হয় নাই তৃষাও মেটে নাই।
যত দেখি চরাচর শুধু খাই খাই,
যে গৃহে ঘর নাই-
খেয়ে ফেললাম একদিন তা-ই,
শুভাশুভের পরও-
ঈশ্বরও ক্লান্ত-
শুধান, 'আর কত চাই?'
বসন্ত আমার মিতা
সু মা গো স্বা মী
ভোরের লজ্জায় রাঙা আকাশ
শিমুল- পলাশের সাথে মিতালি
বলছে, "আমার মনের দ্বারে
"বসন্ত এসে গেছে"।
কোকিলের কুহু সুরের মূর্ছনা
মৃদু রোদেলা সকালের উষ্ণতা
জানিয়ে রাখলো আমায়
বসন্ত, আমার মিতা।
শ্বেত-শুভ্র কাঞ্চনের অনুরাগ
আমের শাখায় মুকুলের দুষ্টুমি
সগর্বে ঘোষণা করেছে আজ
"বসন্ত এসে গেছে"।
পয়লা ফাগুনের চাঁদনি রাত
মৌমাছির সেই গুনগুন সুর
দখিনা বাতাস গাইছে গান
বসন্ত, আমার মিতা।
বসন্ত উৎসব
হা মি দু ল ই স লা ম
ফুল ফুটছে হৃদয়ের উদ্যানে
ফুল ফুটছে নাবাল জমিনের বুকে
পাথরেও ফুটছে ফুল
হৃদয়ের উঠোনে আজ বসন্ত। আলপনা আঁকা দুরন্ত জীবন।।
কারা আসে
কারা যায়
পড়ে থাকে কতো স্মৃতি
নিরালায় নিভৃতে অঙ্কুরিত হয়ে ওঠে বসন্তের বাসন্তী।।
দু'হাতে মাখি আশা
প্রদীপের আলোয় আঁকি রাতের সুবাস
প্রদীপের আলোয় ফিরে আসে অনার্য পৌরুষ
হৃদয়ের অতলান্তে সারারাত জেগে থাকে অনিঃস্ব বসন্ত উৎসব।।
জলে জলে বেড়ে ওঠে ছায়া
বেড়ে ওঠে ছায়া শরীর
ক্লান্ত বিকেল ফিরে আসে উলুবনে
আমরা দুহাতে সাজাই উৎসব কবিতা ও গানে।।
বসন্তের আহ্বানে
পা পি য়া গো স্বা মী
মনে আছে তোর সেই পলাশ
গাছটার কথা---
যে পলাশ পথে একদিন হেঁটে যেতাম আর তুই থাকতিস আমার পাশে---
সে পথ এখন লালে লাল।
জানিস তো, বহু বছর সে পথে আর হাঁটিনি---
শুধু দূর থেকে দেখি।
আজ মনটা বড্ড উদাস করে আছে,
মনে মনে বেজে উঠছে একতারার সুর বাউলের মতো।
এই বসন্তে কোকিল এসেছে আবার---
মনের ভেতরটা কেমন হু হু করে উঠছে,
কখন যেন আনমনে হারিয়ে যাই---
পুরনো স্মৃতির হাত ধরে।
মনে পড়ে?
তোর দেওয়া ভেলভেটের মতো
সেই লাল গোলাপের গাছটা---
কত্তো ফুল ফুটত---
গাছটা আজ আর নেই।
বুকের মাঝখানে কেমন অশান্ত হয়ে উঠেছিল সেদিন---
কোন কিছুর বিনিময়ে ওকে আমি
হারাতে চাইনি,
ও যে আমার প্রথম ভালোবাসা---
সারাটা রাত ঘুমোতে পারিনি,
দুচোখের জলে ভিজেছে বালিশ।
লাল গোলাপকে যেদিন হারিয়েছি---
বোধহয়,
সেই দিন থেকেই তোকে হারালাম।
অনেক খুঁজেছি---
তোর আর কোন খবর পাইনি।
কেজানে কোথায় কেমন আছিস?
ভালো থাকিস, ভালোবাসা।
আজি এ বসন্তে
ত ন্দ্রা ম ন্ড ল
আজি এ বসন্তে দূর আদিগন্তে
পলাশে পলাশে বন সাজে,
দখিনা সমীরণে ওই বুঝি ক্ষণে ক্ষণে
মনোবীণা গুন গুন বাজে।
ভ্রমরের গুঞ্জনে কোকিলের কুহুতানে
শিমুল রাঙা হলো লাজে,
উদাস বাউল মন শূণ্য দু'নয়ন
মন লাগে না কোনো কাজে।
রিক্ত কলেবরে বৃক্ষ বিরহ জ্বরে
ঝরা পাতার দীর্ঘশ্বাসে,
ফুলে ফুলে মনোহর সাজলো চরাচর
স্বপ্নের এই মধুমাসে।
অন্তর কি যে চায় বুঝি কি নিজেই ছাই
অকারনে খিল খিল হাসে,
এলো রে এলো দোল রাঙিয়ে মাটির কোল
ভালোবাসা ঝরে পড়ে ঘাসে।।
দেহ
শা ন্ত ম য় গো স্বা মী
দেহ ক্রমশ দীর্ঘ হলে
খাট বদলায়।
জানালার মতো একটা চাদর… আর তার
ওপরে বেশকটা মোটাসোটা বালিশ পেতে দিলেই
সময় সর্ষের ঘুরঘুর…
আদিম শব্দের স্মৃতি ঘুরিয়ে ফিরিয়ে
ঢেলে দিচ্ছে হাল্লা বোলের গান।
পাড়ানির হিসেব…
অস্পষ্ট কড়ি খেলা ফেলে
খাটে উঠে আসে।
না-ছোড় বিচ্ছেদের পর
ভাষা বদলায়
খাটের পায়ায় লুকিয়ে থাকে নক্সা কাটা সুখ
আলোয় ফুটতে চাওয়া এক একটা দিন-
সংক্রান্তির পর
দীর্ঘ ছায়ায় সীমারেখা আঁকে।
খাট ছাপিয়ে যায় দেহ।
বৃষ্টি নামুক আরেকবার
সৌ মে ন দ ত্ত
প্রাপ্তির দুরাশা কখনো বিচলিত করেনি,
তাই বলে ভেবো না শিরদাঁড়া জড়।
কুয়াশার চাদর কখন পাঁচিল তুলেছিল... বুঝতেই নিঃশ্বাসে পাথর চাপা।
জানি, ভাববে... পাষাণমূর্তি।
নাহ... তা হয়ত নই।
আচ...ছা তোমার রবীন্দ্রনাথের সেই বিখ্যাত লাইন গুলি মনে আছে..."নদী স্রোতে কোটি কোটি মৃত্তিকার কণা/ভেসে যায়,সাগরে মিশায়/জানি না তারা কোথায় যায়..! "
আমারই জন্য বেঁধে ছিলেন মনে হয়।
ধারণ করেছিলাম শুধু,বহন হয়তো করতে পারলাম না।
রাত দুপুরে হঠাৎ ঘুম ছেড়ে যখন বিছানায় আমায় খোঁজো..
মুঠোফোন জোনাকির মতো জ্বলে ওঠে আর তারপর..শব্দের বুনানি.. " পাচ্ছি না কেন ছুঁতে তোমায়..! কোথায় হারিয়ে যাচ্ছো..!!"
তখন মনে হয় শরীরের চেয়েও মন কাছে।
মনে আছে... এক গ্লাস জল দিয়ে বলেছিলাম... "কতটুকু চায়..?"
ছোঁ মেরে গ্লাসটা নিয়ে এক চুমুক, দু চুমুক, তিন চুমুক, থামছিলেই না, শেষও করছিলে না।
অবাক হয়েছিলাম সেদিনের উত্তরে।
মনে আছে কি বলেছিলে..."হারাতে চায় না তোমায়.."।
সত্যি তাই হয়তো মেঘলা আকাশেও আড়ালে লুকিয়ে চাঁদ আমায় উষ্ণতা দেয়।
গোধূলির আলো
জ য়ী তা চ ক্র ব র্তী আ চা র্য
মুখোশের অন্দরে
রঙিন চশমার আড়ালে
ঝড়ের দামামা।
শরীরের নির্জনতার অন্তঃপুরে
খুঁজি তোমায়, শুভ সন্ধিক্ষনে,
অসতর্ক বসন্তে–
ধুলোবালি, ছাই
জমাট সংসারে
দু'চোখে ঘনিয়ে আসে পরাজয়…
ভাললাগার রঙ তুলি...
দিনান্তে গোধূলি ছায়া
অতৃপ্ত হৃদয়ে, জাগে... বাসনার স্বাদ।
অবৈধ
স বু জ জা না
প্রতিটি মেয়ের কামনার বিষ দাঁতে বৃন্দাবন
বুকের বোতাম খোলা ঘিয়ে বাদামী শার্টের ভেতর দিয়ে
সাঁওলা পুরুষের বুক দেখার পর
বুড়ো কদমের মাতাল গন্ধে মজে
ঘর বিমুখ নদীরা বনবীথিকায় শুয়ে থাকে সারারাত
ঝরে পড়া পাতার শব্দে বাঁশি বেজে ওঠে
অন্ধকারে নদীদের কোন নগ্নতা নেই...
এক নদীতো সকালে স্বীকার করে গেল
প্রিয়তম,
আমার শরীরের সকল চিহ্নই তো কৃষ্ণ
সে আমার একান্তই ব্যক্তিগত
এমন গোপনীয়তা পবিত্র ও রহস্যময়।
ভালোলাগার বিনিময়
কে দে ব দা স
বকুলতলায় তোমায় দেখেছিলাম প্রথম যে দিন,
দৃষ্টি বিনিময় হয়ে ছিল, লাজুক সে দৃষ্টি, ফাগুনের প্রথম সে দিনে।
কালের গতিতে, পরস্পর আবিষ্ট হয়েছি, হয়েছি অনুভূতিপ্রবণ----প্রতিদিন।
তখনও জানি না সে প্রেমের পূর্বরাগ না শুধুই অনুরাগ, না কি
শুধু ভাবাবেগে ভেসে চলা!
তুমি জানতে, কখন তোমার বাড়ির সামনে দিয়ে যাবো আমি,
তুমি হয়তো অকারণেই দাঁড়িয়ে থাকতে, আমার আশায়।
সময় গড়িয়েছে---- পরস্পরের প্রতি প্রেমানুভূতি হয়েছে প্রকট।
তবু 'তোমায় ভালোবাসি' ---বলার অপেক্ষায় থেকে গেলাম আমি আজীবন।
লাবণ্য শুনছ তুমি
সু দী প্ত রা য়
আচ্ছা লাবণ্য!
তোমার আজ বিকেলটা ফাঁকা হবে!
চলো না, আমরা আবার ফিরে যাই ঐ দীঘির পাড়ে!
তোমার হাতে থাকবে ’শক্তির কবিতা’, আমার হাতে সুনীল সমগ্র।
আমরা পড়ব একসাথে বসে ঐ গাছের নীচে!
আরে! ঐ লাল কৃষ্ণচূড়া।
যে গাছে,
কেটেছিল আমার- তোমার অনেক সুন্দর বসন্ত।
যে গাছ,
আজও দাঁড়ালেই বলে উঠবে আমাদের স্বপ্নের প্রেম কাহিনী।
হুমম ! চলো না আবার প্লিজ!
লাবণ্য শুনছ!!
শুনতে পাচ্ছ তো আমার ডাক!
যাবে, ঐ দীঘির পাড়ে একটু হিমেল বাতাস নিতে!
ঐ দীঘিটা গো!
যেখানে চারিদিক ভরে থাকে পদ্ম আর লাল শাপলাতে।
তুমি না বলতে আমায়-
তোমার খুব পছন্দের ফুল পদ্ম!
আজ না হয় আবার একসাথে প্রাণ ভরে দেখব ঐ রূপ।
তোমার জন্য না হয় এবার তুলে আনব তোমার প্রিয় পদ্ম।
কোনোবার হয়ে ওঠেনি দেওয়া।
এবার আর খামতি রাখব না- কথা দিলাম।
আসবে তো তুমি!
ও লাবণ্য !
চিনতে পারছ তো আমায়!
বলছি, লজ্জা পাবে না তো!
ধরো- আজ যদি আবার ছুঁতে চাই তোমার হাত দুটি!
যদি আবার বলে ফেলি “তোমাকে আমি খুব ভালোবাসি”।
ছুঁতে দেবে তো তোমার ঐ নরম হাতটা!
যেই হাতে হাত রেখে কেটেছিল আমার রঙিন বিকেলগুলি।
দেখেছিলাম, স্বপ্নের সূর্যাস্ত; আর হয়েছিলাম তোমাতে বিভোর!
কী গো লাবণ্য !!
কে? লাবণ্য নাকি !
যাক! শুনেছ তাহলে।
বেশ বলো তবে, কি বলার আছে!
এই লাবণ্য… কি বললে তুমি!!
অনেকটা দেরি করে ফেললাম আমি?
আজ-
আর তোমার আসার কোনো উপায় নেই হাতে!
তোমাকে অনেক দায়িত্ব পালন করতে হয় একা হাতে!
স্বামীকে খেতে দেওয়া, ছেলেকে আর শাশুড়িকে সামলানো, রান্নার জোগাড়, বাজার ফর্দ তৈরি ,ফুলগাছে জল দেওয়া-
বাপরে বাপ! বলো কী! সংসারের এতকিছু কাজ!
না না-
থাক তবে, লাবণ্য! তোমাকে আজ বিরক্ত করব না আর।
আমিই বরং একাই যাই।
একটু হিমেল বাতাস না হয় খেয়েই আসি।
তুমিও খেও- তোমার এত্ত কাজের ফাঁকে কোনো এক বিকেলে-
আমাকে অনুভব কোরো-
তোমার শহরে-
আমার অচেনা কোনো এক দীঘির পাড়ে, নির্জনে একা বসে।
অনুভব করো আমার ভালোবাসাকে।
প্রেম-অবসর
স্বা তী ঘো ষ
রঙীন গুলাল বাতাসে ছড়িয়েছে রঙের নেশা
এখানে পাতারা কান পেতেছে
ফুল সুগন্ধের ষড়যন্ত্রকে ঘনিয়ে তুলেছে
এখানে চুপ হাওয়া ফিসফিস করে
কথা বলে যাচ্ছে মৌমাছির কানে
আর ছোট ছোট যত কীট পতঙ্গ
ঠোঁট টেপা হাসিতে
একে অপরকে ইঙ্গিতে ইশারা পাঠাচ্ছে
সাদা মেঘ রূপোলী চাঁদের মুখের পাশে
আলপনা দিচ্ছে
ধ্যানগম্ভীর পর্বত ঈষৎ ষ্মিত মুখে
কঠিন বরফকে অনুমতি দিয়েছে
ঝরণা হয়ে ঝরে পড়ার
উচ্ছল সাগর ঢেউ ডিঙিয়ে এসে
রূপোর কুচি বিছিয়ে দিচ্ছে
বালুরাশির উপর
এখানে প্রেম বসত পেতেছে
অখন্ড অবসরে -
উনিশ বসন্তে
অ শো ক স র কা র
উনিশ বসন্ত ছুয়ে দেখতে চাস না
উনিশ বসন্ত বিনাশী
নিজেকে সামলে রাখা দায়
দহন যদি লাগে পোড়ে ও পোড়ায়।
এ পোড়া বসন্ত এলে কি যে হয়-
উনিশের কামিনীর দেহ ঘিরে
শুধুই উত্তাপ সকাল সন্ধ্যায়।
সে উত্তাপে দেহ পোড়ে মন পোড়ে
ফাগুন আগুন হয় বসন্ত বাতাসে
কামিনীর চোখে লাগে শঙ্খিনীর ঘোর
শঙ্খচূড় খোঁজে রাতভোর, শঙ্খের আশায়।
তুই যেন ভুল করে শঙ্খচুড় হতে চাস না
উনিশ বসন্ত এলে শঙ্খিনী বড়
সর্বনাশী
পাকে পাকে সোহাগের টান সর্বগ্রাসী।।
বিচার
সু শা ন্ত সে ন
বিচারের রায় কাঁদে সঙ্গীতের মত উদাসীন
শোনা বা না শোনা নিয়ে বিস্তর তর্কাতর্কি
কখন আসবে কাছে কখনো বা দূরে সরে যাবে
সময়ই কি তা নির্ধারণ করবে !
পশুর মত আচরণ করি প্রতিনিয়ত
রাঙা ভাঙ্গা চাঁদ সরে যায় তফাতে।
এক দিনের জন্যও যদি হই সম্রাট
বদলে দিতে পারবো কি রায় গুলি
না সম্মুখ সমরে মৃত হবে প্রাণ ।
তিন পুরুষের ভিটা
ত প ন কু মা র পা ল
ওই দেখা যায় টিনের চালা মোদের ছোট্ট গাঁয়ে,
লতায় পাতায় জড়াজড়ি মায়ের আঁচল ছায়ে।
সবুজ ঘেরা ওই গ্রামেতে তিন পুরুষের ভিটা,
ধন্য জীবন জন্ম সেথায় বাঁচার যে সাধ মিঠা।
কামার কুমোর জেলে তাঁতি আরো আছে মুচি,
নেই ভেদাভেদ মোদের মাঝে একই জলে শুচি।
পাখির গানে ভোরবেলাতে সবাই জেগে উঠি,
সবাই মিলে মন খুশিতে নিজের কামে ছুটি।
সন্ধ্যা প্রদীপ জ্বলে ওঠে পল্লিবালার হাতে,
উলুধ্বনি পড়তে থাকে প্রদীপ জ্বালার সাথে।
দূর থেকে ওই আজানের সুর ভেসে আসে কানে,
মুমিন ছোটে মসজিদে ভাই নামাজ পড়ার টানে।
কর্ম থেকে আসে সবাই নিজের গৃহে ফিরে,
গল্প-আসর জমে ওঠে চাঁদ মামাকে ঘিরে।
হিন্দু মুসলিম বৌদ্ধ খ্রিস্টান সবাই সবার সাথী,
সবাই মোরা সবার জন্য খুশিতে হায় মাতি।
জোনাক জ্বলে থোকা থোকা বাঁশ বাগানের তলে,
চাঁদের কিরণ ঝিকিমিকি মরা নদীর জলে।
পুঁথি হাতে খোকাখুকি ব্যস্ত পুঁথি পাঠে,
শিয়াল ডাকে হুক্কা হুয়া তাল দীঘির ওই মাঠে।
তোমার সুখই আমার সুখ
হী রা ম ন রা য়
তোমার মনে না থাকারই কথা,
আমায় ভালোবাসতে চেয়ে চেয়ে।
নদীর ধারে সেকি ব্যাকুলতা,
শ্যামলা বরন গ্ৰাম্য যে এক মেয়ে।।
সেসব কথা সেই বছর কুড়ি আগের,
সেসব দিনতো মনে থাকার নয়।
তাইতো তুমি সেসব গেছ ভুলে,
আজ শহরের নামি কেউ বোধ হয়।।
যবে গ্ৰাম ছেড়ে ঐ রঙিন শহর গেলে,
আমি সেদিন বড়ই তোমার পর।
নিজের ঘরে বন্দি আমি ভালোবাসার জেলে,
তোমায় পাবার তরে পুড়ায়নি কাঠ খড়।।
শুনতে পেলাম শহুরে এক জন ,
তোমার আপনজন, আমি না হয় পর।
ঠাকুরকে ডাকি কয়েছি অনুক্ষন,
তার সনে বেঁধো স্বপ্ন সুখের ঘর।।
আঁখির কোনে গড়িয়ে পড়ে জল,
এতোদিন পর তোমায় যখন দেখি।
মনভরে যায় তোমার পিছে রাঙা পায়ে মল,
ঘোমটা পরা একটুও নয় মেকি।।
তোমার খুশি আমার স্বর্গ সুখ,
স্বর্গ সুখেই তুমি সুখী হও।
নাইবা তুমি দেখলে আমার মুখ,
সুখে কর ঘর যাও তুমি যাও যাও।।
একটা কিছু
প ল্ল ব সে ন গু প্ত
একটা কিছু আছে যেটা
দরজা খুলে দেয়
একটা কিছু আছে যেটা
দরজা এঁটে রাখে
ঐ একটা কিছুই খামতি পেলে
নীরব চোখে চায়,
শব্দহীন বিরক্তিতে
মনের কানে বকে।
ঐ একটা কিছু কোথায় থাকে?
কোন কোণে তার বাস?
হঠাৎ করে এমনভাবে
কেন আনে ঝড়?
হঠাৎ করে চমকে উঠে
হিসেব ফেলে রেখে
সংসারী মন পথিক হয়ে
খোঁজে আপন-পর।
ঐ একটা কিছুই গোলকধাঁধায়
লক্ষ্য দেখায় স্থির
এড়িয়ে চলি বুঝিই না সে
ছড়িয়ে ভিতরছায়ে,
একটা কিছু ঠিক রেখেছে
সব হিসেবের খাতা।
গভীরতম খুঁজতে মরি
গভীরতরর পায়ে।
অকাল
অ নি মে শ বি শ্বা স
চৈত্রর বেলা না ফুরাতেই মেঘের ঘনঘটা
দীপ্তকিরণ না ঢলাতে গুপ্ত আলোকছটা
আকাশ ভারি চতুর্দিকে কেবল ঘন ছায়
গুরু-গুরু গাজন হাঁকে মেঘের মদিরায়।
আকাশপুরে সুদূরকোণে রবিদরুনহাসে
ঢেকে রাখে মলিনজালে একি সর্বনাশে!
নিত্যপ্রভাত নিত্যউদয় নিত্য ঝলক উঁকি
ঝলমলিয়ে দিক ছেয়ে যায় মধ্যনভে ঝুঁকি।
কেবল মোরে গুপ্তে রাখে যখন মেঘ চাই
জ্বলার পড়ে কালোছায়া যখন ঢেকে যায়।
দারুণ দিনে করুণ দশা বিনাশ করে কাল
হর্ষ প্রাণে ঘেরে ঝাঁকে,ছাড়ি না আমি হাল।
আমার কদর নিত্যদিনে, বৃষ্টি যখন ঝরে
বৃষ্টি নীরব চলে গেলে আমায় কদর করে।
আমি দেখি মেঘের ফাঁকে কান্ড বড়ো বড়ো
ঝঞ্ঝা হাওয়ায় কম্পিত হয়, চিত্ত ভয়ে থরো।
হে পৃথিবীর সেবিকা
শু ভা শি স সা হু
আমি ক্রমশ খুঁজে যাচ্ছি তোমাকে।
কোথায় পাব তোমাকে?
এখনও আমি খুঁজে যাচ্ছি তোমাকে;
তারায় তারায়,
সমুদ্রে সমুদ্রে।
পাব বলে পথের দিকে পা
বাড়াই। খুঁজেছি অনেক সন্ধ্যা,
অনেক রাত্রি,
অনেক হাজার বছর তোমাকে।
সেই অমৃত ভালবাসা
পাব বলে আমি ডাক
দিয়ে যাই।
আমি পথের দুধারে গলা
ফাটাই, তুমি কি শুনতে পাওনা?
হে প্রেমিকা!
হে পৃথিবীর সেবিকা!
একটু জল দিও
রা জ রু ল ই স লা ম
যেখানে আমার মৃত দেহের কবর হবে,
সেখানে পারলে একটু জল দিও
যদি জীবন্ত গাছ হয়ে উঠে দাঁড়াতে পারি।
অসময়ে কিছু ফুল ঝরে পড়ে যায়,
নব বসন্তের পোড়া মাটির উপরে।
তুমি অসময়ে এলে তাই বলছি
আমি গাছ হয়ে উঠতে পারি।
পারলে একটু জল দিও।
যেখানে আমার মৃত দেহের কবর হবে।
সেখানে যেন চাঁদের ম্লান আলো এসে পরে
আমার মৃত দেহের বুকের উপর ।
তবুও ভাবছি একটি কবরের উপরে
গাছ হয়ে কিছু পাখির মতো তুমি যেন বাসা
বেঁধে বেঁচে থাকতে পারো।
যেখানে আমার মৃত দেহের কবর হবে
পারলে একটু জল দিও।
যদি জীবন্ত হয়ে বেঁচে উঠি।
দূরত্ব
কৌ শি কী ঘো ষা ল
তোমার আমার মধ্যে থাকা
বাঁধন গুলো ছিঁড়তে হবে
মাঞ্জা সুতোয় গিঁট লেগেছে
কাটছে সবই ভীষণভাবে।
দু'যুগেতে বহু বহু
ক্ষোভ জমেছে ভেতর পানে
ক্ষোভগুলো সব পাথর হয়ে
বুকের ভেতর আঘাত হানে।
পাশাপাশি থেকেও জানি
আজকে মোরা যোজন দূরে
পাশে থাকা দূরত্বটা
আঁচড়গুলো গাঢ় করে।
তোমার আমার মধ্যে থাকা
ফাটল গুলো বাড়বে রোজই
সেই ফাটলে রোজই নতুন
অভিযোগের গল্প খুঁজি।।
বসন্তের রাগ রাগের বসন্ত
সু খে ন্দু ভ ট্টা চা র্য
ফাগুন এলো রং ও মাখলে, এ যেন এক বিজ্ঞাপন।
----- নানা না- নৈসর্গিক নৈসর্গিক সাময়িক তবু উপশম।
জানি জানি, এমনই বলবে তুমি-
“এটাই বা কম কী সে”
--রিনিক ঝিনিক ঝালিয়ে নেওয়া বসন্ত বাতাসে!
ভাবছ বসে 'বিবেক নোঙর' ওই পারে ঠিক যাবে,
বলি, ডাইনে বাঁইয়ে মজা নদী-কোথায় ঘাম-ঝরাবে!
মাইক্রোফোনেই ভরা নদী বাচিক-ভাঁজে তরণী
কোন মাটিতে ক্ষয় রোধে- আশঙ্কা হাতছানি।
রাতজাগা এই কুপি, যোগ্য হতে পারি!
‘যোগ্য’- সে তো আদারই কারবারি। রাস্তা মহামারী।
প্রজন্ম বীজ ভুগছে! গব্বর ওই দাঁড়িয়ে-
'এই হাঘরে ব্যাটার ছেলে’–
যৌবন দেবে মাড়িয়ে।
বসন্তের এই তুরন্ত সফর, আপাত এই অনুভব
অঙ্গহানীর অঙ্গে রয়েছে ‘ফ্যান্টম’ যত অবয়ব।
আজীবন এই “খেয়ে পরে বাঁচা”– উড়িয়ে নেবে কি ঝড়ে?
মন বসন্ত সবার আগে এ প্রেমেরই দাবি করে।
মরীচিকা বিভ্রমে
ড রো থী দা শ বি শ্বা স
বসত তোমার ঊষর মরুস্থলীর পাশে---
তবে কেন বাড়াও হাত
মরূদ্যানের আশে?
পুড়ছে তপ্ত বালুর মাঝে পায়ের পাতা
তবুও তোমার আকাশে আজ
হাতদু'খানি পাতা।
আঙুল-স্পর্শে অক্ষরবৃষ্টি মধ্যযামে---
তৃষ্ণাবারি বিনে পথিক
মরে মরীচিকা-বিভ্রমে।
ক্লান্ত বাতাস ঝিমোয় ঘোড়ানিমের পাতায়
ছন্নছাড়া মেঘ আসেনা
আকাশ পরিক্রমায়।
চারদিকেতে শুধুই ধূ ধূ বালিয়াড়ি,
সম্পর্কের সবুজ উধাও
শূণ্য হৃদয়-বাড়ি।।
ফিরে যাবো সূচনায়
শ্যা ম ল খাঁ
স্বার্থের বোঝা পড়া চুকিয়ে
যে যার গুটিয়ে নিয়েছে একদা দরাজ হাত।
হাজার চেষ্টাতেও---
বরফ মুষ্টি আর খোলে না।
যেদিকে তাকাই, দেখি, শুধুই শূণ্যতা,
শিরা উপশিরা বেয়ে
কেবলই নেমে আসছে অকাল যুদ্ধের দামামা।
অমানবিকতার হিংস্র কামড়ে ওঠা গোঁঙানির সুর
দরজায় দরজায় প্রতিফলিত হয়ে ফিরে আসছে।
সব কিছু লুকিয়ে রাখার জন্য
এখন শুধু কুয়াশাই ভরসা।
তাই, স্মৃতি আর রঙীন গল্প গুলো টুকরো টুকরো করে
ভাসিয়ে দিলাম মেঘের সমুদ্রে।
যদি কোনোদিন চেনা মেঘ
ভেসে আসে অচেনা দেশ থেকে বৃষ্টির উৎসাহে
আর একবার--- ভুল করে, ভুল পথে,
অপেক্ষায় থাকি।
তখন দ্বিধা দ্বন্দ্ব দূরে সরিয়ে রেখে
আবার সারা গায়ে মাখবো আশার কুয়াশা।
উপসংহার থেকে উত্তরণ ঘটিয়ে---
ফিরে যাবো আর একটা নবীন গল্পের সূচনায়।
মা আসে বার বার
শ্যা ম ল খাঁ
গর্ভের অন্ধকার গৃহে
তিল তিল পুষ্টির জোগান দিয়ে
মা গড়ছে তার কাঙ্খিত সন্তান।
সব আঘাত থেকে বাঁচিয়ে
নিজে অনাহারে থেকে,
রক্ত শূন্য হয়েও...
নাড়ি ছেঁড়া ধন যত্নে আগলে রাখে বুকে।
কুমোর পাড়ার অন্ধকার ঘরে
তিল তিল মাটির প্রলেপ
নাওয়া খাওয়া ছেড়ে
দিন রাত এক করে
চলছে মা গড়ার কাজ।
মা গড়া সম্পূর্ণ হলে,
কুমোরের নাড়ি ছিঁড়ে মা চলে যায়
অজানা অচেনা ঘরে।
পড়ে থাকে অন্নপূর্ণার বিনিময় মূল্য
মা বিক্রির অন্ন বস্ত্র আর বাসস্থানের কাঠামো,
সেই মা আর ফিরে আসে না।
ফিরে আসে চিরন্তন কঙ্কাল
বার বার বিসর্জিত হয়েও
আবার মা হবার এক বুক আশা নিয়ে।
অরুন্ধতী
অ মি তা ভ দে
অরুন্ধতী তুমিও জেগেছিলে
অনাবৃত অহঙ্কারের রূপে
নিশির ডাকের সুরে
এসেছিলে পাশে।
তুমি জেগেছিলে সেই রাতে
শরীরের সব স্রোত খুঁজে
ভিজে ছিলে কামনায়,
জেগেছিলে বিপদ ঘনাতে।
অরুন্ধতী তুমি কাঁদো
একা নারী সঙ্গমের নয়
তুমি আছো হাহাকার সাথে
তুমি কাঁদো জোছনায়।
তুমি জাগো রোজ রাতে
রোজ সেই অলীক আশায়।।
ঝরা পাতা গো
অ মি তা ভ দে
সবুজের শেষে হায়!
ধূসর ছায়া পড়া পথে
একরাশ দুঃখ নিয়ে ঝরা
কবিতার দিনে মুছে যায়
যত প্রেম ছিল এ ধরায়।
আজও সেই সুখের দিনের
সবুজাভ সুখ ঘিরে বাঁচা
তোমার আমার আছে
যত অভিমান... সবটুকু ঝরে
সবটুকু হেলায় থাকে পড়ে।
উলঙ্গ ডালের মতো কবিতা
একঘেঁয়ে আবেগের স্রোত
নীচে পড়ে ঝরা পাতা
তোমার অতীত আমার অতীত।
নীরবে জ্বলে পুড়ে খাঁক
পাতা ঝরা পৌষের গান
পৌষের দিনের হিসেব...
রাখেনি সময় কোনোদিন,
বিলিয়ে দিয়ে সব ভালোবাসা
সব ঋণ শোধ করে যায়।।
জোনাকি
নী ল আ কা শ
জোনাকি? সমস্ত অন্ধকারের মধ্যে ফুটে আছে আলোফুল... সমস্ত স্বপ্নের মধ্যে শুধু জোনাকি... জোনাকি... জোনাকি... আলো নিয়ে খেলা, এই ললিতকলা, এই বিস্ময় কবে শুরু হয়েছিল জানি না তা... সন্ধে নেমে আসে আর তখন অন্ধকারটা খুঁড়ে খুঁড়ে দেখি ... টিমটিম করে জ্বলে ওঠে, ছুটোছুটি করে, জোনাকি... জোনাকি... জোনাকি... আকাশের নিশ্চুপ তারা হয়ে যাবে নাকি... জোনাকি...জোনাকি তাকে বুকের উঠোনে রাখি...
কুশল
নী ল আ কা শ
দিন কি এভাবেই যাবে?
যাবে কি দিন এভাবেই?
দেখো
নিজেকে নিপাট গুছিয়ে রেখেছি
আলমারিতে।
কেমন আছো?
এই বিমূঢ় বাঁচা ন্যাপথালিনে?
সমস্ত ছোঁয়াচ বাঁচিয়ে?
কুশল লিখো...
বনবিথীপ্রাণ
আ শ রা ফ হা য় দা র
তুমি আমার নতুন ভুবন
সূর্য ওঠা ভোর
তাই জীবনে এত আলো,
এত হাসি গান
ফাগুন সমীরণে বনবিথী প্রাণ।
জীবন ভেলায় দেখি
পৃথিবীময় কত-যে আলো
কত-যে ফাগুন বসন্ত
কত-যে প্রেম ভালবাসা
সবুজে সবুজে কত আনন্দালো।
তুমি আছো তাই জীবনে দেখি
কত-শত আকুল নদ-নদী
পিয়াসী ব্যাকুল করা তেপান্তরের মাঠ
রূপে অপরূপ সুখের স্রোতে জীবন ভেলা।
তুমি আছো তাই আমার আকাশ অনেক বড়
বাতাসের সুরে সুরে আলোর বাঁশি বাজে
সকাল-দুপুর-রাতে
তাই খুশির সীমানা পেরিয়ে
সুখের পাল তুলে ভেসে যাই
আলোর পথে এক সাথে।
তুমি আছো তাই
আমার এ ভুবন এত সুন্দর
জীবনে এত ছন্দ, এত সুর, এত গান
রঙে রঙে আমার এ হৃদয়প্রাণ।
তুমি- যে আমার নিত্যদিন প্রেম আর ভালবাসা
কত-যে আলেয়ার আলোয় স্বপ্ন আশা
তোমার জন্য এ ধরার বুকে আসার আবেগ ছড়িয়ে কিছু কথা বলে যাওয়া
সুরে সুরভিত হযে প্রেমে যাওয়া আসা।
তুমি জীবন নদীর তীরে আছো তাই
কিছু দিন, কিছু কাল থেকে যাওয়া
আনন্দ বসন্ত গানে গানে বয়ে যাওয়া
সারা রাত জেগে দোল পূর্ণিমা দেখে যাওয়া
আকাশ মাটির নির্মল প্রেমে হারিয়ে যাওয়া।
তুমি-যে ত্রিভুবণ আমার এক পুষ্পসজ্জা
তাই প্রেমে এত আলো দেখি
সন্ধ্যারাতের আকাশে শুকতারাটি দেখি
আর ভালবাসায় তারার মালা গাঁথি।
তুমি আছো তাই আমার জীবন এত সুন্দর
তুমি আছো তাই আমার আকাশ এত সুন্দর
তুমি আছো তাই আমার জীবনে এত আনন্দ এত বসন্ত এত হাসি এত গান।
তুমি আছো তাই আমি আছি
আছে আমার এত সুন্দর পৃথিবী
তুমি আমি প্রেম ভালবাসায় রব
অনবদ্য একাল-সেকাল।
আমার প্রেমের ভুবন এত সুন্দর মোহিনী হাসি
সারাবেলা বাতাসের সুরে বাজে আলোর বাঁশি।
বসন্ত
আ শ রা ফ হা য় দা র
বসন্ত যায় আবার বসন্ত আসে
সৃষ্টির শুরু হতে বসন্ত চলমান
চলমান থাকবে অনন্তকাল
শুধু থাকবেনা স্রষ্টার সৃষ্টি প্রাণীকুল।
শীতের শুষ্কতা আর হিমেল হাওয়া
কুয়াশামাখা মলিনতা পেরিয়ে
ঝরাপাতার মর্মর কান্না শুনে
সব জরাজীর্ণ শীর্ণ মলিনতা দূর করে
ঋতুরাজ বসন্ত সবুজ পল্লব অরণ্য
জেগে উঠেছে সবুজ বৃক্ষ তরুলতা
রূপ রস লাবণ্য ঘিরে।
বসন্ত ছোঁয়ায় জাগ্রত হয় মানুষ
ফিরে আসে মানব দেহে নবপ্রেম
বৃক্ষের ডালে ডালে জাগে কচি পাতা
আমের মুকুলের সুবাস মুখরিত হয় বাড়ির আঙিনা
সজনা ফুলের ঘ্রাণে ব্যাকুল করে হৃদয়
বাতাবি লেবুর সুগন্ধে হৃদয় হয় উর্বর
দখিনা বাতাস ছড়ায় প্রেমের সুরভী।
ঋতুরাজ বসন্ত রঙে রঙে আহ্বান করে প্রেয়সীকে
কোকিলা কুহু কুহু বাঁশির মিষ্টি সুরে
খোঁজে প্রাণের প্রিয় সঙ্গীকে
প্রেমিকা খোঁজে তার প্রেমিকের
জাগ্রত মনে চলে একে অপরের প্রেমের নিবেদন।
এ এক ভালবাসার ঋতুরাজ
প্রেম নিবেদনের ঋতুরাজ
প্রেমে সজীবতা জাগরণে ঋতুরাজ
নদী হয় যৌবন জলতরঙ্গে টলমল
প্রেমে খুঁজে পায় প্রেয়সী প্রিয়জন।
বসন্ত এসেছে, প্রকৃতি সেজেছে রঙ বেরঙে
হৃদয় জেগেছে আনন্দ উদ্ভাসিত হয়ে
হৃদয়ে প্রেম এসেছে,বসন্ত ফুল ফুটেছে
হৃদয়ের রঙে রঙে প্রেমিক প্রেমিকা দোদুল দুল।
কাব্য মনের ছন্দ
কা বে রী রা য় চৌ ধু রী
শৈশবে অস্ফূট বুলিতে
সোনালী সেই দিনগুলো...
নানা ভঙ্গিতে সুরে সুরে
দোলা দেয় মনে ছন্দ!!
সফেদ কাগজে কলমে আঁচড়
ভাবনাগুলো কল্পনা ডানায়...
এলোমেলো মনে হেলেদুলে
মিঠে সুরে ছড়া আনন্দে আত্মহারা!!
পরিণত মন ভাবনা দিশেহারা
ব্যস্ততা ভিড়ে ছেদ চিন্তার জগৎ
গতিময় জীবন দৈনন্দিনতায়
মনের ছবি আঁকি আখরের মুক্তধারায়!!
লিখেই চলি অনুভূতির আল্পনায়
কান্না, হাসির জলছবি আয়নায়!
অন্তরের গোপন দুয়ার খোলা আঁধার ঘরে
আলোর রোশনি সুখের ঠিকানায়!!
স্মৃতির আয়নায়
কা বে রী রা য় চৌ ধু রী
যতদিন শ্বাস, ততদিন আশ
স্মৃতিগুলো ঝিনুক বুকে ব্যথা..
লুকায়িত মনে একান্ত মায়ায়!
চোখ বুজে হৃদয়ে পাই সাড়া
স্বপ্নে দেখা, সাক্ষাৎকার...
মর্মে আশাবরী ধ্রুপদী আলাপ!
ভালবাসি হৃদয়ের ছোঁয়ায়
বৃষ্টিমুখর দিনগুলোতে সিক্ত প্রেমের ক্যানভাস...
জ্যোৎস্নারাতে স্বর্ণালী হাসিতে মধু চন্দ্রিমা রাত!!
পদ্মপাতায় টলমল জলে মুখের ছাপ...
শিশিরভেজা দূর্বাঘাসে আলতা পায়ে লাল...
ফিনিক্স পাখি পুণর্জন্মের আশায়!!
বসন্ত পূর্ণিমায়
র ত্না দা স
ষড়জ ছুঁয়ে ছুঁয়ে পরজ বসন্তে উচাটন মন
গুলবাগিচায় বুলবুলি সুর। চিত্ত বিমোহন।
বাসন্তী ভুবনমোহিনী হয়ে কিরণমাখা পাখা তোলে
কপোত কপোতি উচ্চ বৃক্ষচূড়ে মিলনসুখে দোলে।
কুহু কুহু কোয়েলিয়া কুহরে শিহরে মহুয়াবনে
নীলদিগন্তে লাগে ফুলের আগুন। ছড়ায় মনে মনে।
নিটোল পায়ে রিনিক ঝিনিক বাজে নূপুর ছন্দে
বেণুবনে মর্মরে দখিনা বাতাস। বহে কী আনন্দে।
সারা সকাল বসে গাঁথা মালায় লেখা কার নাম!
তরুলতায় লাগে কাঁপন। চঞ্চল অমৃতধাম।
ফোটা ফুলের মেলাতে, আবির গুলাল খেলাতে
তন্দ্রাহরণী চন্দ্রবদনী, মোহিনী আট্টমে বঙ্কিমী ঠাঁটে ।
চৈতালী চাঁদিনি রাতে, মালতী কলি বিহ্বল ঢলোঢল
দিগঙ্গনার অঙ্গনে দোলে পুষ্পসাজ। ওড়ে আঁচল।
তখন কুসুমে কুসুমে জাগে চরণচিহ্ন আকাশ ভরে আলোয় আলোয়
বাজে গো বীণা কোন সুরে, শিবরঞ্জনী ঝঙ্কার তার নিবিড় মায়ায়।
আরুণি ডাকছি তোমায়
র ত্না দা স
আরুণি তুমি কোথায়!
দেশ মারণ খেলায় উজাড় হয়
আজ শুধু আল নয়, হাল ধরো আরুণি
একা নও সহস্র হও।
দেশ বড় কাঁদছে। তার পাশে দাঁড়াও।
দেশের হালহকিকত তোমার উপরেই বর্তায়
আরুণি তুমি কোথায়!
বিভাবসু তার রুদ্র তেজ জ্বালুক
বনে বন্দরে, গুহা কন্দরে, মনের অন্দরে
শুদ্ধসত্ত্বা ম্লানিমায় ভেসে যায়
আরুণি তুমি কোথায়!
এ মৃত্যুর দরজা তুমি রুখে দাও
ঢাল হয়ে দাঁড়াও
আজ শতসহস্র আরুণি চাই
দেশ রক্ত মেখে ঘেমে গেছে
শান্তিবারি ঢালো।
আরুণি তুমি কোথায়!
অন্ধকার থেকে আলোয় এসো
আলোকময় হোক দিগ্বিদিক
গভীর বোধ থেকে, গহন চেতনা থেকে
উঠে এসো আরুণি
শক্ত হাতে মৃত্যুবাঁধের জল রুখে দাও
বলাকা ভাসবে আকাশের গায়ে
পারাবতের ডানার গন্ধ মেখে তারা উড়ে যাবে।
আরুণি তুমি কোথায়!
১.
সেই গন্ধটা
র থী ন পা র্থ ম ণ্ড ল
পারফিউমের গন্ধটা অনেক দিনের চেনা,
দক্ষিণের দরজাটা আজ বোধ হয় খুলে গেছে
নিঃসঙ্গতায় ভরা মনে
চাপা অন্ধকার বয়ে বেড়ায়
অনুভবে অস্তিত্বের স্বাদ
আজ যেন পেয়ে বসেছে
রক্তপলাশের রক্তিমতায় ভরে ওঠে মন
এখন এক ঝলক ঠাণ্ডা বাতাস চাই
এক মুঠো ঝরাপাতা নিতে নিতে
শয্যায় আঁকিবুকি খেলে আলপনার ছন্দ
কে যেন বসন্তের আবির রং মাখিয়ে দেয় মাথায়
ছুঁলো মনের প্রান্তর, উঁকি মারে আকাশে
চোখে অশ্রু জলের বন্যা বয়
তবুও দেখি পরশপাথরের ছোঁয়া লাগে
তুমি এসেছো আজ এখানে
তাই চন্দনী পারফিউমের গন্ধটা
আজ ফিরে এসেছে ঘরে।।
২.
মনে পড়ে
র থী ন পা র্থ ম ণ্ড ল
পথ চলতে চলতে বড্ড ক্লান্ত হয়ে পড়েছি
মাঝে মাঝে ভালো লাগে না পথ চলতেও
তবুও চলতে খুব ইচ্ছে করে
ইচ্ছে করে সামনের দিকে এগোতে
ইচ্ছে করে পিছোতেও
তোমার সাথে হাতে হাত রেখে পথ চলতে
মাঝে মাঝে খুব ইচ্ছে করে
কিছু কিছু সময় হারিয়ে ফেলি পথও
আসলে ফেলে আসা কালের পথে
আজও খুঁজে পাই নিজেকে
খুঁজে পাই তোমাকে
এই পথের কাছে রোজই কত কিছুই না শিখি
তবুও কেন জানি না মাঝে মাঝে বড্ড
অচেনা লাগে এই পথকে
একলা চলার পথে
পথের সাথে কথা বলতে বলতে
কানে কানে বলে যায়–
কাঁকড় বিছানো পথে হাঁটার অভ্যাস রাখো।।
স্নানঘরে
মা লা চ্যা টা র্জ্জি
রেখে যাওয়া লাল টিপটা সোপকেসে
সেই কবে থেকে দেখে আসছি স্নানঘরটায়,
দুঃখে কাতর হলে মাঝে মাঝে দরজা খুলি,
‘মা ’বলে ডাকতে আসি জলের ধারার শব্দ আসলে,
বাড়ির অন্য লোক জানত না
তেলের সুবাস গড়ায় স্নানঘরে,
কাউকে বলতে ভয় পেতাম
যদি সরিয়ে দেয়!
রাতের বর্ণমালাতে ভিজব
মা লা চ্যা টা র্জ্জি
রাতপরীর সৌন্দর্যের ছটা কখনও দেখেছো তুমি?
যে রাত নিঃশব্দে কথা বলে গেছে এই জনপথের
প্রত্যেক রাস্তাতে। রাতকাব্যের গাটাতে রোজ-রোজ
তারার বসতি,
তার মাঝে চাঁদ জ্যোৎস্না ছড়িয়ে হাসে!
রাতের আপাত লোপাট শহরের কথা ভাবছ?
দীর্ঘ রাস্তাতে গয়না খোলা চাঁদের কি লাবণ্য ভরা মুখ!
একলা রাতটা শব্দবিহীন ভেসে যায়.....
রাতের বর্ণমালাতে ভিজব। সীমাহীন সৌন্দর্যটায়....
দিবসের প্রেম
দে বা র তি গু হ সা ম ন্ত
রঙ রূপ রং রুটে চলে যাচ্ছে,
ইংরেজি ঢঙে প্রেম দিবস আজ ভ্যালেন্টাইন।
লাল বেলুন, টেডি, চকোলেট,
প্রমিস, হাগ, কিসের মোড়কে মোড়ানো।
গোলাপজলে ভাসছে লজ্জার আভা,
গোধূলি আলোয় চোখে চোখে কত কথা।
ভালোবাসার রঙ তখনো ছিল লাল,
কিন্তু ছিল না কোন প্রেম দিবস।
চিঠি, টেলিগ্রামে প্রিয় মানুষের উষ্ণতার গন্ধ,
শাড়ির খসখসে, নূপুরের রিনরিনে ধ্বনিতে,
ভালোবেসে তাকানোয় প্রেমিক মনের পূর্ণতা,
তখন কোথায় ছিলে তুমি, প্রেমদিবস??
মিমাংসা
দে বা র তি গু হ সা ম ন্ত
দু'টুকরো রান্না করা মাংস,
বোনলেস, ছিবড়ে ছিবড়ে,
অতিরিক্ত সিদ্ধ, এক্সেস খাবার,
অপ্রয়োজনীয়, তাই আলগোছে ফেলে দিলাম রাস্তায়।
ভেবেছিলাম কুকুরে খেয়ে নেবে,
ভুল ধারণা, টের পেলাম পরদিন সকালে।
ডাস্টবিন গাড়ির হুইসেলে হুশিয়ারি আমি,
নোংরা বর্জন করতে তৎপর, সিঁড়িতে নামলাম তরতর।
গেটের কাছে এসে থমকে থ,
মাংসের টুকরোয় লেগেছে লাল পিঁপড়ে,
কুকুরের লেজের টিকিটিও নেই,
অপমানিত ব্যথিত মাংস ব্যঙ্গ করছে তখন আমায়...
ব্যাপারটা আজও অমিমাংসিত, আমি খলনায়িকা।।
হোল হোলি
দে বা র তি গু হ সা ম ন্ত
আংশিক নয়,
হোল হোলি খেলতে চাই আমি,
হোল, যার অর্থ গোটা, পুরোটা,
শূন্য নয় মোটেও।
রঙ মাখামাখি, ভাঙ ঘাঁটাঘাঁটি,
নেশায় বুঁদ, অন্য জগত,
সাদা জামায় রঙের ছিটে,
রক্ত লাল আবিরে লজ্জিত মঙ্গল গ্রহ।
হোল হোলি খেলা সার্থক,
মিস করিনি কিছুই,
ফ্রম হুলি টু হোলি,
পুড়ছে ন্যাড়া, পুড়ছে বুড়ির ঘর।
ফাগ গুলালে পরিপূর্ণ বৃন্দাবন,
রাধা কৃষ্ণের ডুয়েট যুগলবন্দী, হোরি হ্যায়।।
কবিতার অন্বেষণে
প লা শ বি শ্বা স
( ৩৫ )
সময় পেলে ভেবে রাখো বেশ আমার চঞ্চলতা
তোমার লঘু মস্তিষ্কের পিছনে
জাতক গল্পে খুঁজি আমি তোমার আমার কথা
হয়তো বা কোনো প্রবাল দ্বীপে আছে দু'জনের অস্তিত্ব
লক্ষ লক্ষ বছর ধরে মহীসোপান ছুঁয়ে
( ৩৬ )
স্মৃতির সরণি বেয়ে তুমি খুঁজে নাও ফুল
আর আমি সুপ্ত কুঁড়ি
পরিচর্যার প্রয়োজন নেই সেথা
এখন এক বুক ফিরে চাওয়ার শূন্যতা
নীরবে ফেলে যায় অশ্রুজল
( ৩৭ )
একটু হলেও আজ আমায় নিয়ে ভেবেছো তুমি
রৌদ্র রক্তাভ হয়েছে
দৃষ্টি দিয়েছো গুরুত্ব বুঝে
আরও একটু ঝরঝরে সময়ের পথ চেয়ে থেকেছো
উদাস সমীরণ শুনেছে তোমার গান
( ৩৮ )
বৃষ্টি ভেজা শিউলি মৃত্তিকায় শিশিরের গন্ধ খোঁজে
শালিক পাতার স্তুপে অনায়াসে খুঁটে খায় কীট
পদ্ম যোনি পরশ মাখিয়ে রাখে অপরা প্রকৃতিকে
আর তোমার নাভি ভিজে যায় অজান্তে
এক উলঙ্গ স্যাঁতসেঁতে সকালে
( ৩৯ )
আমার এক চোখে খানাখন্দ সরু আলপথ
আরেক চোখে পাহাড়ি উপত্যকা সিন্ধু সাগর
বিশ্ব ভুবন দেখি বিস্ময়ে তোমার অবয়বে
জীবন নদে যাই ভেসে
সাধ আর সাধ্যের সমতা রেখে
( ৪০ )
ভাবছো ফেলে যাচ্ছি মায়া রাস্তার পিছনে
অথচ ওই কায়া নিয়ে ফিরে ফিরে আসো
মুঠো ভর্তি আলো নিয়ে ফিরতি পথে
কীট নড়ে ওঠে মাথার ভিতর
এখন সাথে থাকি আমিও
কবিতাগুচ্ছ---
আ র তি ধ র
জ্ঞান
জানতে চাওয়ার আকাঙ্ক্ষা
জন্ম নেয়, জন্মকালেই।
জানতে চাইলে জানতে
হয় সঠিক ভাবেই।
-নয়তো অসংখ্য হিজিবিজি
দগ্ধ করে মস্তিষ্ক।
কর্ম
আমার সমস্ত শ্রদ্ধা
নিবেদিত হোক কর্মে।
হৃদয় উজাড় হোক,
কর্ম নামক ধর্মে।
আমি শক্তি খুঁজি,
খুঁজি মুক্তি'ও.. কর্মে।
জীবন
প্রতিদিন শিখে চলেছি,
জীবন থেকে শিক্ষা।
আমার ন্যায়-অন্যায়,
বাস্তব বোধ ও বুদ্ধি।
জীবন আমাকে দেয়
জীবিত থাকার দীক্ষা।
প্রকৃতি
বড় স্নেহময়ী জননী
রৌদ্র, ছায়া, মায়া।
সবারই জন্য বিছিয়ে
রেখেছেন তার আঁচলটি।
কথা দেওয়া আছে,
ফিরব তার'ই বক্ষে।
অমোঘ
পারছি কোথায় কেউ,
নিজের খেয়ালে চলতে!
বেঁধে রেখেছেন তিনি
এক অমোঘ বাঁধনে।
সাধ্য কার, একটি
দিন বাড়ায়-কমায়!
সূর্য
নিয়মে নেই ছাড়,
ওহে শক্তির আধার।
সময়ে আগমন, সময়ে
ফিরে আসার নির্দেশ।
মাঝের সময়টা শুধুমাত্র
জীবনের ওঠানামা দেখা!
কবিতাগুচ্ছ
মৌ সু মী পা ল
(১)
উদগীরণ
খুলবো না চোখ---
ভাঙাবো না ধ্যান
সভ্যতার বিষ আমি উগড়ে দিতে চাই
মৃত সৈনিকের এই পোশাক খুলে দিয়ে
যদি পারো আমায় তোমার কাছে রেখো অরণ্য
আমি মানুষ হতে চাই বরাবরের মতো
ঠিক যতটা তুমি একেবারে খাঁটি বনজ।।
(২)
আগামী
আজ ঝরাপাতা দিনে
মন প্রসন্ন হতে চায় মানিয়ে নেওয়ায়;
নির্লিপ্ত চেয়ে থাকা
সিদ্ধান্তের বাড়াভাতে মাছি মশা প্লেগ ছড়াক্
কসরৎ ওরাই করে নেবে সময়ের হাত ধরে।।
(৩)
বোধ
নির্দিষ্ট খোপে মেপে দিয়েছো দু'মুঠো মাটি
দায় ছিল তোমারই...!!
কি অসহায় তাপে দাউ দাউ জ্বলে যাচ্ছে তাদের দেহ
কচি দেহে একটু জল পেলেই তারা হেসে উঠতো
সবুজের শিকড়ে!!
মানুষ!!
মৃত্যুর আগে শুধু নিজেকে একবার দেখো।।
(৪)
প্রত্যয়
তুমি সম্মান দিতে পারো বলেই
আমি এত সাহসী
তোমার সুগভীর প্রত্যয়ে আমি
রোজ মানুষ হয়ে উঠি!!
(৫)
গলদ
মন খারাপের জানিনা কারন
সব কিছুতেই কতো মেকি
আসল নকলে আসল হারাই
নকলেতে ভাই আসল দেখি।।
(৬)
সম্পদ
রাত্রি বলে ঘুমিয়ে পড়ো
অন্ধকারের বেড়া জালে।
প্রভাত বলে রবির তিলক
এঁকে দিলাম সবার ভালে।।
কল্পনার রং
ঋ ষি
বিন্দাস কিছু একটা কল্পনা করো
আমি তো কল্পনায় রংতুলি নিয়ে এঁকে ফেলতে পারি একটা জীবন,
তুমি না হয় প্রফেসর শঙ্কুর ডাইরি খোলো
খুঁজে পেতে জানতে চেষ্টা করো নিউটন কে?
আমার কল্পনায় নি উ টন কখনো একটা বেড়াল হতে পারে না,
বরং তুমি ঈশ্বর খোঁজ।
সার্বিক দুনিয়ায়
জিন্দেগী কুছ গমকি চিঠি লেকে আতি হ্যা
লেকিন গলতি এহি হ্যা কি
জিন্দেগিমে সির্ফ গলতিয়াহি রেহ যাতি হ্যা
ওর সির্ফ কুছ পল ।
জানি তুমি পাগলের প্রস্তাবে ত্রস্ত
কিন্তু পাগলামির আকাশে যে রামধনুর রংগুলো মানুষের বুকের ক্যানভাস
ঠিক করে ভাবো
প্রতিটা রং আসলে সৃষ্টির দরজায় নজর কাড়া,
আবিষ্কার
আনন্দ
আর ধৈর্য্য।
হা ঈশ্বর, আমার এই কবিতায় তুমি অর্থ খুঁজছো
বরং তুমি খুঁড়ে ফেলো হরপ্পার মাটি
কিংবা কোনো বৃহন্নলার শাড়ি তুলে দেখতে পারো ইভোলুশন,
না না প্লিজ সলুইশান খুঁজো না
বরং তুমি খুঁজে দেখতে পারো হৃদপিণ্ডের স্পন্দন।
চুপ
কেউ যাতে শুনতে না পায়,
কল্পনার রং।
কবিতা গুচ্ছ
সু মা দা স
(১)
ফাগুন মাখি চল
ফাগুন মেখে সই
চল বসন্তের গান গাই,
আবির ছোঁয়ায় সাজাবো তোকে
যেমন বৃন্দাবনে রাই।
দোলের ধুলা মাখব গায়ে
আর পিচকারীতে জল,
শ্রীকৃষ্ণ আর রাধিকা সনে
গোকুলে গোপিনীর দল।
হোলীর যাগ জ্বালবো সবাই
জ্বালবো মনের ত্রাস
দহন জ্বালা মিটবে সবার
প্রফুল্লমন উচ্ছ্বাস।
(২)
দক্ষিণা বাতাস
দক্ষিণা বাতাস ফাগুন আভাস
ইচ্ছেনদীর ঢেউ,
কুহু কুহু কোকিল কুজন
শিমুল বনে মউ।
আগুন রাঙা পলাশ ডাঙা
প্রেমরঙা ভুবন,
বাসন্তী রঙে সাজলো অঙ্গন
কৃষ্ণচূড়ার কোমল আলিঙ্গন।
উদাস হাওয়া অনুরাগের ছোঁয়া
অলির গুনগুন গুঞ্জন,
মাতাল মন উষ্ণ আয়োজন
জড়িয়ে প্রিয়জন।।
(৩)
বসন্তের লুকোচুরি
বসন্তের লুকুচুরি
আহা মরি মরি
তোমায় খুঁজে মন,
বাসন্তীকায় রাঙিয়ে দাও আমায়
ছুঁয়ে দাও দক্ষিণা পবন।
শিমুল পলাশ ভালোবাসার আশ
নেশাতুর আম্র মুকুল,
গুন গুন ভ্রমর গুঞ্জন
কৃষ্ণচূড়ার বাহারি আয়োজন
ফাগুন হাওয়া তোমায় পাওয়া
হৃদয়ছোঁয়া ঢেউ
বসন্তের এই পূর্ণমাসে
তুমি ছাড়া আমার নয় কেউ।।
(৪)
ভালোবাসার গান
সপ্তসুরের রাগিনী
মন নাচে তাতা থৈ,
ভালোবাসার গান বাজলো সুরে
শিমুল-পলাশ বনে ঐ।
মহুয়ার ঘ্রাণে মাতাল প্রেম
রঙ মেখেছে লাল,
আবির ছটায় গোধুলী মাখায়
সুখের পরশ চিরকাল।।
বসন্ত আজ সমাগত
শাল পিয়ালের দেশে
ভেসে বেড়ায় বিহঙ্গম
কৃষ্ণচূড়ার আদরমাখা আবেশে।
মাতৃভাষা
আ ল্পি বি শ্বা স
(১)
মায়ের ভাষা
আন্দোলনে সামিল
অমর হতে
(২)
ওড়ে নিশান
একুশে ফেব্রুয়ারী
পুণ্য স্মৃতিতে
(৩)
রক্তপলাশ
শহীদবেদীতলে
জানে ঝরতে
(৪)
প্রভাতফেরী
পথ যে ছয়লাপ
ফুলমালাতে
(৫)
অকুতোভয়
শহীদ শফিউর
ভাষা বাঁচাতে
(৬)
লিখেছি নাম
আবদুস সালাম
মননে চিত্তে
(৭)
ফুলের নাম
আবদুল জব্বার
পেরেছি চিন্তে
(৮)
সোনার ছেলে
রফিক আহমেদ
হাসে দিগন্তে
(৯)
মন মথিত
ভীষণ বেদনায়
সাঁঝ আলোতে
দিবাবসানে
লি পি কা ডি' ক স্টা ম ন্ড ল
১
গোধূলি
সূর্যটা পশ্চিমাকাশে ঢলেনি এখনো তবু কেন ম্রিয়মান
মধুবন্তী রাগ ছাড়ি এখনই কেন ইমন কল্যাণ!
ওগো প্রিয় যায়নি অস্তরাগে মন আকাশের দিবাকর
পাখিরা ফেরেনি কুলায়, আলস্যে নিদ্রিত সব নিশাচর।
এখনি যেও না সজ্জা ত্যাজি পরে নাও উষ্ণীষ
জীবন যুদ্ধের এইতো শুভারম্ভ গরলে করো নির্বিষ
এ সোনালী গোধূলি বেলা আসুক নিয়ে অহর্নিশ।
২
অপরাহ্ন
ধূসর চাদরখানি পাতি' কে তুমি অদৃশ্য পুরুষাকার
ক্ষণেকের তরে ধরো চূর্ণ করো দিবসের অহংকার!
হেথা জীবনের কোলাহল যায় থামি', সূর্য বিপথগামী
পৃথিবীর কীটেরা গহ্বর ছাড়ি' পাখিরাও এসেছে নামি
খ হতে, খুঁজে নিতে যার যে নীড়,
পথ জনশূন্য হলো বুঝি আলয়ে নিলয়ে ভীড়
সন্ধ্যার আঁধার নামবে এখনি তাড়া তাই জোনাকির।।
৩
পূর্বরাত্র
একে একে জ্বলে উঠেছে নভোমণ্ডলের যত তারা
কুলায় ফিরবার লাগি ঘরণী গৃহস্বামীরে দেয় তাড়া।
একদল ফেরে, কতক বাহির পানে কিসের আহ্বানে
বন্দরে বন্দরে অস্হির জেটি বারাঙ্গনা বীরপুঙ্গবের সন্ধানে।
সচল কীটাণুরা অন্ধিসন্ধি ঘেঁটে ঘাপটি মেরে অপেক্ষায়
দিবা অবসানে গৃধ্র শিয়ালও নরমাংসের ঘ্রাণ পায়।
আকাশ কালো হলে নক্ষত্রপুঞ্জ মিটিমিটি আলো ছড়ায়।।
৪
রাত্রি দ্বিপ্রহর
ঘুমাও শ্রান্ত পুরুষ নিশ্চিত শান্তিতে প্রেয়সীর বুকে
ঘুমাক দামাল শিশু সব জ্যোৎস্না মেখে মুখে।
অদ্য প্রথমা রজনী সবটুকু দিতে যার বাকি
নির্ঘুম সমর্পণে কাটুক প্রহর দিও না ফাঁকি।
প্রহরীর প্রহরা শুরু হলো প্রতীক্ষায় জাগে তস্কর
জাগে কবি কবিতায় চিত্রকরের তুলি আর ভাস্কর
সুপ্ত ধরা সময়ের ঘড়া কালের ঘড়ি নক্তচর।।
৫
তৃতীয় যাম
কালরাত্রির করাল গ্রাসে মেদিনী ভাসে ওঠে নাভিশ্বাস
জীর্ণ মুমূর্ষুরে মুহুর্মুহু মাতৃরূপিণী ধাত্রীর আশ্বাস
শিখরে শমন জীবন মরণ কখন হবে ভোর
তঞ্চকের প্রবঞ্চনা শুরু হয় সক্রিয় হয় চোর।
মৃত্যুও চোরের মতো দুয়ারে কড়া না নেড়ে
পিশাচী আত্মা বিদেহী মন সবটুকু নেয় কেড়ে
পরাভূত বরাভয় জীবনের পরাজয় আঁধারের কাজ সেরে।।
৬
চতুর্থ... শেষযামে
সুপ্ত চরাচর মাঝে যেন শান্তির বার্তা রাজে
স্খলিত বসন পরিশীলিত আব্রুতা পায় নম্র লাজে।
গোলক অক্ষে ঘোরে, হায়নারা অতর্কিতে লাগে কাজে।
সাদা হয়ে আসে ব্রহ্মাণ্ডের কালো আঁধার জুড়ালে
আজান আরতি গীর্জায় ঘন্টা প্রতিধ্বনি ছড়ালে
সূর্যের ঘুম ভাঙে পথচারীর সংকল্পে পথের বাঁকে
দুয়ারে কড়া নাড়ি' রাঙা তিলকে ঊষা দিবা আঁকে।।
কবিতাগুচ্ছ
সু শা ন্ত সে ন
১.
রোদ্দুর
আর একটু রোদ্দুর আসতে দাও ঘরে
আর একটু রোদ্দুর।
যেন স্নাত হতে পারি সকালেই।
নাহলে পবিত্র হব কি করে।
কিন্তু এই স্যাঁতসেতে ঘরে
রোদ্দুর আসবে কিভাবে!
২.
তুমি
তুমি এলে তাই হাসিতে ফুটে উঠলো সকাল
তুমি চলে গেলে অন্ধকার নেমে আসবে
দিনমানে।
৩.
অবজ্ঞা
ও অবজ্ঞা করে চলে গেলো বলেই কি
ফিরে এসো চাকা- বলতে হবে?
পাশ ফিরে দরজায় খিল তুলে দিয়ে
কি হাতি ঘোড়া পেলে জীবনে?
তার থেকে সময়টা গান গেয়ে কাটালে
ভালো হতো না?
৪.
পিঠমোড়া
পিঠমোড়া করে বাঁধলাম জীবনটা
ঘাড়ে তুলে নিলাম।
রাত্রি আসার সময় তো দেরি ছিল
হঠাৎ হুড়মুড় করে
এসে পড়ল কেন ?
বলতো ?
কবিতাগুচ্ছ
ভাষা
অ শো ক কু মা র দ ত্ত
তবু এই উন্মাদনায় কি ক্লান্ত লাগে আজ!
নিত্য দিনের পরাজয় থেকে উঠে একদিনের জয়দ্রথ হয়ে উঠি।
পায়জামা পাঞ্জাবি সাজে বাঙালি হয়ে উঠে একদিনের সভায় তোমার ভবিষ্যত নির্ধারণ করতে বসি!
বুঝি না কেন আমারই বিমূঢ় প্রগলভতায়।
রক্তে ভেজা একুশে ফেব্রুয়ারি
মেঘনা গঙ্গায় অশ্রু ভেজা ভেজা হয়ে নীরবে ভেসে যায়!
প্রিয় ঈশ্বরকে
অ শো ক কু মা র দ ত্ত
(প্রিয় কবি জীবনানন্দ দাশ-কে জন্মদিনে)
তবু
তুমি তো ঘুমিয়ে পড়েছো আজ উদাসীন শব্দের নির্জন প্রান্তরে
পথভোলা একলা শালিখের মতো অথবা সেই
নির্জন ছাতিম গাছের মতো একক বিষাদ বুকে নিয়ে!
বারবার
এক পথভোলা একাকী পাখি ডাকে আমাকে!
নিশ্ছিদ্র দুপুরের মতো অমল
মগ্নতায়--- প্রবল বৃষ্টিতে একলা গাছের ছাতিম পাতায়!
তুমি সেই একলা নির্জন পথিক ভাস্কর হয়ে আজও
ফুটে আছো ঈশ্বর হয়ে আমার
কবিতায়!
ছায়াবৃত্ত
অ শো ক কু মা র দ ত্ত
দিন--- প্রগলভ দিন তার সব আলো দিয়ে গেছে সন্ধ্যার কোটরে।
হাওয়া--- শুধু শব্দময় অফুরান হাওয়া আমার চারপাশে ভীড় করে!
শীতকাল হয়তো এসে গেছে---
আমার হাটখোলা মাটির টালির খোলায় জামরুল গাছের পাতার শিরায় শিশির নেমে আসে!
আমাদের গরীবের ঘরে এভাবেই গরম ও শীতকাল পালা করে যায় ও আসে।
আজকাল হ্যাঁ আজকাল শুধু শব্দময় ভাষণের হাওয়া আমাদের ক্লান্ত করে!
শুনতে শুনতে কখনো শব্দ কখনো শব আবার কখনো কখনো অফুরান হাওয়া আমাকে নিয়ে যায় পরপারে!
কথন
অ শো ক কু মা র দ ত্ত
খুব জরুরী নয় সব কথা অভ্যাসে ইঙ্গিতবাহী হওয়া।
মানুষকে নিজের কাছে স্বচ্ছ হতে হয়।
খুব জরুরী নয় প্রচুর বিত্তবান হওয়া
চিত্তের পূজারী যারা তারা সঠিক জানে একদিন সবাইকে
সবকিছু ফেলে চলে যেতে হয়।
মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে জীবনের এই লাভটুকু ধরে রাখে শুধু জন্মদিন,
যা শুধু মৃত্যুর দিকে এক পা এগিয়ে যাওয়া।
ছু মন্তরের বাজ পাখি কখন যে কি করে!
কথন-৭
অ শো ক কু মা র দ ত্ত
হাওয়া নেই!
সুবাতাস চুরি হয়ে গেছে চারিদিকে!
চারিদিকে শুধু চুরি চুরি হাওয়া-- কে যেন গোপনে
চুরির সুললিত বাতাস মাখিয়ে রেখেছে চারিদিকে।
আমি মুগ্ধ তাপস সাক্ষী গোপাল সেজে
শ্রী মুখ করে বসে থাকি!
যদি কুন্ডল কবচ ছিন্ন করে
যদি অভাবনীয় কিছু বলে
যায় কানে কানে!
ওদিকে সাতশো দিন হয়েছে
কি পার?
আমাদের চুরি হয়ে যাওয়া মেধা-- মিথ্যে জল রঙের
ফানুস নিয়ে স্বপ্ন বুনে আছে?
তবু---
প্রলাপ মগ্ন বুদ্ধিজীবি নয়---
সাধারণ মানুষ হিসেবে স্বপ্ন দেখতে বড় সাধ
জাগে--
কোচর ভরা সাদা ফুল নিয়ে বালক
একমনে বসে আছে বাক দেবী শুভ্রার পায়ের কাছে!
দেবী অশ্রুভরা চোখে
বলছেন রুদ্ধ স্বরে---
শিক্ষার মগ্ন পলাশ ফুল আজ কি বদ্ধ কারাগারে?
কথা
কৌ শি ক গা ঙ্গু লি
জীবনের অনেকটা পথ পেরিয়ে
চিতাকাঠ এড়িয়ে...
বলতে ভুলে গেছি
যে কথা বলার ছিল,
নীল, লাল, সবুজ, গেরুয়া
স্বপ্নগুলি মিথ্যা তাই লজ্জায়
ধূসর আকাশটাকে বড্ড অচেনা লাগে,
দিশেহারা মানুষের মতো।
কথা ঊর্ধ্বমুখী হলে
দী প ঙ্ক র স র কা র
কথা ঊর্ধ্বমুখী হলে ফিরে যায় হাওয়া
কুশল সংবাদে পড়ে ছেদ, বিস্ময় বোধক
চিহ্নে বিস্ময় জাগে ধূসর রঙের ছায়া
অবিকল হেঁটে যায় জলের ওপর, জন্ম
দাগ কিছুতে মোছে না।
কথা ঊর্ধ্বমুখী হলে এমনই বিপত্তি ঘটে
কোনো অজুহাত ধোপেও টেকে না।
অশরীরী কায়া নৌকার মতো ভেসে যায়
যেন বাধাহীন অনন্ত ঠিকানা।
কথা ঊর্ধ্বমুখী হলে পালক পাতায় লাগে
ঢেউ, ঢেউয়ে ঢেউয়ে খেলে রোদ উছলে
ওঠে প্রসব বেদনা।
স্বপ্ন
ম হা জি স ম ণ্ড ল
শব্দগুলো পেরিয়ে
হেঁটে যাই একা অবিচল
সময়ের দরজা খুলে
অন্ধকার জড়িয়ে আসে
দু'চোখের গভীর পাতায়
তখন আলোর নৌকা দেখি
জীবনের ঘাটে ঘাটে স্বপ্ন ছড়ায়...
বসন্ত বিহীনতায়
শু ভা শী ষ গো স্বা মী
যতবার তুমি হেরে গেছো
ভালবাসি কথাটা বলতে,
ততবারই তোমার চোখ থেকে
নির্গত হয়েছে অশ্রুকণা ।
কত কথা বলতে চায় এ হৃদয়
তবু বোবামুখ বলতে পারেনা !
মধ্যরাতে ঘুম ভেঙে যায় হঠাৎ
গলার কাছে দলা পাকিয়ে ওঠে যন্ত্রণা ।
দুটো হাত এক হয়েও অন্যদিকে চলে যায়
তারপর তাদের আর কেউ মনে রাখেনা ।
তোমার পাড়াতে রোজ যাতায়াত
কই তোমার তো চোখে পড়ে না ।
গুমরে গুমরে মরে যাই আমি
তোমার তাতে যায় আসে না ।
সেই ফেলে আসা গলিপথ
আর আমাকে খোঁজেনা ।
তুমি এ শহর ছেড়ে চলে যাবার পরে
এ শহরে আর বসন্ত আসেনা ।
কুয়াশারা
লি ট ন শ ব্দ ক র
স্বপ্ন অনেক,
অপেক্ষারা ম্লান হতে হতে
জীর্ণ, প্রতিটি বিশেষ দিন
কুয়াশায় প্রাপ্তির ঘ্রাণ খুঁটে খুঁটে-
গভীরে
ঘনত্ব ফুরিয়ে ধূ ধূ বালি
কথারা উড়েছে গলিপথ ভেসে
স্ফুলিঙ্গের রমণী শত
ঘুমঘরে সকাল হাঁকে
কয়েকটি ঋজু গাছ
তুলসী জাগা উঠোনের কোনে উনুনে স্নান
একটি শুদ্ধ দিন, নিকোনো
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন