কবিতা
ঋতু যখন বসন্ত
সো না লি ম ন্ড ল আ ই চ
সন্ধাবাতি জ্বলছিল তাতে চমক ছিলনা।
অতি ধীরে লুকিয়ে পড়ছিল বিকেলটুকু।
পাখিদের ডানার উড়ানে লেখা নীড়।
তিথি মেনে কিছু পরেই চতুর্দশী চাঁদের
পূর্ণ যৌবন গলানো সোনার ঝলমল ছটা!
মহল্লার ভাঙাচোরা গলিতে রোজ কারা জাগে।
ঝকঝকে গেরস্থালি আনমনা খাট পালঙ্ক।
কৃষ্ণচূড়া মদির অবাক হয়ে দেখছে ।
কিংশুকের লাল ভরাট আগুনে চোখ ।
জ্যোৎস্নার চাদরে মুখ ঢেকে আহ্লাদী-
শোক লুকিয়ে আসে নীরবে ফিরেও যায়।
নীল তারা খসে শৈলচুড়ার স্বপ্ন বাসায়
ঘর বেঁধেছিল বা বাঁধবে ভেবেছিল যাঁরা
তারা নীল আলোর অপার্থিব অর্জুন
চোখে জোড় সংখ্যার দোতারা সন্ধিক্ষণ।
মাভৈ! বয়স যা হোক কুন্ঠা ঝেড়ে প্রাসাদ গড়ুন
একটা নগর পত্তন হোক, আর হ্যাঁ শুনুন
দুজন দুজনের পাশে ও বশে থাকুন!
বিষাদ-মুক্ত পথ
পা র্থ রা ণা
জানি, আজ ফুরিয়েছে সব প্রয়োজন।
কত সহজেই--- করা যায় বিয়োজন।
নতুন গল্পকথা-- নতুন আয়োজন!
এভাবেও বদলানো যায় প্রিয়জন?!
'সেরা চরিত্র'-কে সস্তায় নামিয়ে---
ছুঁড়ে ফেলা যায় জঞ্জাল-স্তুপে?
চেনা সংলাপ--- মাঝ রাস্তায় থামিয়ে
গলা টিপে খুন--- করা যায় নিশ্চুপে!!
ভিজে আসে চোখ--- আজ তা নাটক?!
যদিও বা গলা বুজে আসে,---
সমবেদনারা সব হয়েছে আটক---
হারিয়ে গে'ছে উচ্চাশার ফাঁসে!
ভাঙা হ'ল ডালপাতা--- ঘা কত-শত!
দাগিয়ে দেওয়া হ'ল আপাত-মৃত।
শরীর কিছুই নয়, মন তো নিহত---
পেছন থেকে ছুরি দিয়ে গেল ক্ষত!!
একদিনে ফেরা--- যাবে না, ঠিকই,
আসব ফিরে তবে, জেনো একদিন।
মধুর প্রতিশোধে আস্থা রাখি।
বিষাদ-মুক্ত পথ--- হবে মসৃণ।
অঞ্জলি ভরা প্রীতি উপহার
ম ঞ্জি রা ঘো ষ
খেয়াঘাট চুপ, নিঝুম দুপুর
বসে আছি যেন আনমনে---
কে বাজায় বাঁশি, বসন্ত্ বাহার
মন ছুটে যায় সুর শুনে।
আকাশ আলোয় সোনা রোদ ঝরে
পরাগে পরাগে প্রজাপতি রেণু,
ফুটেছে বকুল, উদাসী হাওয়ায়
ভেসে ভেসে আসে, ভালোবাসা বেণু।
এমনি দিনে তারে, বলি যে কী করে
ভাসাও তোমার সুরের লহরী
যত শোক তাপ ধুয়ে মুছে যাক
আনন্দ থাক উপর্যুপরি।
আকাশে আকাশে এত আয়োজন
পলাশে শিমূলে রঙের বাহার,
মল্লিকা বনে সাড়া ফেলে দিল
অঞ্জলি ভরা প্রীতি উপহার।
দখিনা বাতাসে বসন্ত আসে
কোকিলের স্বরে কুহু কুহু তানে,
আমের মুকুলে, অশোকের ঘ্রাণে,
শুষ্ক হৃদয়ে ঋতাভরী টানে।
সময়ের সাথে লুকোচুরি খেলা,
বলিরেখা হ'ল কবে টানটান---
হৃদয়ে লেগেছে আবীর সোহাগ
কে মোছাতে পারে, প্রকৃতির দান!
আততায়ী বিষয়ক
ন ব নী তা
"বিবাদের বিষয়রূপে ভালবাসা" এমন সরস বিষয়ে
রচনা লেখবার সুযোগ তো সকলের ঘটে না, জানি।
আত্মা ক্ষতবিক্ষত হিংস্র নখরের দুরন্ত আঘাতে, অথচ
আঘাত গোচর হয় না, রক্ত ঝরে না একটি বিন্দুও,
এমন নিয়তি তো সকলের জোটে না, জানি।
জানি তবু পড়ে থাকি প্রাণহীন প্রস্তরখণ্ডের মতোই
ন্যায়নিষ্ঠ সমর্পণটুকু নিয়ে।
আমি যাকে ভালবাসি অস্তিত্বের সবটুকু দিয়ে
সে আমায় হত্যা করবে নিপুণ ষড়যন্ত্রে—
যেমনটা সে করে এসেছে বারবার---
আততায়ীর মতন গোপনে, সুচতুর কৌশলে,
আয়ুরেখার জটিল জ্যামিতিক বিন্যাসময় চলনে
একথা জেনেছি স্বতঃসিদ্ধেরই মতো, তবু
প্রত্যাঘাতে প্রেমই তো ঢেলেছি বারংবার উজাড় করে
একমুখী আনুগত্যে!
শাপগ্রস্ত অহল্যার মতোই পড়ে থাকি প্রতিরোধহীন নিষ্প্রাণ এক শিলাখণ্ড হয়ে
কারণ জেনেছি, বিধাতার অমোঘ অঙ্গুলিহেলনে
একদিন বিবদমান কোন এক পক্ষ স্তব্ধ হয়ে গেলে
ভাগশেষ হয়ে অনিকেত নির্জনতা শুধু পড়ে থাকে
ধূ ধূ আয়ুষ্কাল জুড়ে।
ঈশ্বরের আর্তনাদ
পা ভে ল ঘো ষ
অনেক তপস্যা করে মন জিতলাম।
ঈশ্বরের...
ঈশ্বর মুচকি হাসলেন।
নকুলদানা মুখে নিয়ে ছুঁড়লেন ফুল...
শুরু হলো পুষ্প বৃষ্টি..
ঋষভদের ক্ষুরে রক্তে রাঙা হলো রাজপথ।
আমি, অমলকান্তি রোদে পুড়ি নিঃশব্দে...
পোড়া চামড়ার পথ মাড়িয়ে বলাকারা ওড়ে।
শব্দগুলো ফিসফিসিয়ে জড়ো হয়...
সাপ হয়ে ওঠে...
ঈশ্বরের আর্তনাদ নেমে আসে পৃথিবীতে...
তাই শুনে ঘুম চোখে মুচকি হাসে মানুষ...
দৈববানী শুনি... "এটা তোর পূর্বজন্মের ফল..."
নীলচে চোখের নেশা
অ মি তা ভ দে
হঠাৎই একটা প্রেম এসেছিল
একটা জম্পেশ জবরদস্ত প্রেম,
একটা নীলচে চোখের নেশা
আমার দিনরাত হয়ে...
আমায় সবুজে ভরে দিয়েছিল।
একটা নীলচে রাতে প্রেম এসেছিল
সরাসরি বুকের উপর,
তার নীলচে চোখের দিকে তাকিয়ে
কেঁপে উঠেছিল আমার শরীর
তারপর অকৌতুকে আমার নিবিড় আলিঙ্গন।
খামচে ধরে নীলচে চোখের নীল অভিমান
রক্তে দুঃখ জাগায়,
খসে পড়ে সব মিথ্যে দিয়ে বোনা
পোশাকী অহংকার
সেই নগ্নতা আকণ্ঠ পান করি আমি।
দুঃখবিলাস আমার জন্য কোনো শব্দ নয়
নীলচে চোখের নেশায় নতুন করে দুঃখ আসে,
আমার বরফশীতল মন উষ্ণতা খোঁজে
একটা নীলচে শরীর আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরি।
নীলচে চোখের মায়া কাটিয়ে ওঠা দায়
সেই তো আবারো প্রেম হারাবার ভয়, একটা জবরদস্ত প্রেম এসেছিল হঠাৎ...
একটা অভিমানী নীলচে চোখ চিনেছিল আমায়।।
বসন্তের ‘ডাক’
সু খে ন্দু ভ ট্টা চা র্য
লিখেছ অনেক চিঠি
পাঠিয়েছ ক’টা
যত শব্দে শব্দ, উত্তেজনা
ততোধিক তার নীরবতা।
প্রকাশে ঝরনা নামে
হৃদকমলে পলাশের ডাক
নিবু নিবু রুদ্ধ নিবে
ভাঙা সেতু, দূরত্বের বাঁক।
বর্ণ ছিল সমাহিত বর্ণ মোহ মেঘের ওপারে
প্রকাশ আড়ালে চিঠি
বসন্তেই আজও ঘোরে ফেরে।
যে মালা গেঁথেছ- বড় মায়া
যে মালা হয়নি গাঁথা- সেও ঢের
বসন্তেরই মায়া।
নিজেকে ভালবেসে
ম ধু মি তা ধ র
এক পা এক পা করে
রোদ্দুর মাড়িয়ে এসে দাঁড়াই
অস্তমিত সূর্যের দরজায়।
নরম আলোয় ভিজতে ভিজতে
একবার ফিরে দেখি পলাশিয়া দিন।
ফাগুনের আগুন লেলিহান হয়ে
কতবার পুড়িয়েছে কলজে।
অথৈ শ্রাবণ জলে ভেসেছি আকন্ঠ।
আজকাল হাত বাড়ালে ব্যাবধান ক্রমশঃই
বাড়তে থাকে।
তাই গুটিয়ে রাখি মন।
চোখের সামনে দুরন্ত হাওয়ায়
ভেসে যায় স্বপ্নেরা।
অসময়ে এসে আর আঁচল টেনো না।
বড় মেঘ জমে, বৃষ্টি হতে চায়।
ভেতরে কুঁকড়ে থাকা নদীটা
বড় উত্তাল হয়ে ওঠে।
ভেসে যায় সম্পর্ক গুলো।
মুখোশের আড়াল থেকে বেরিয়ে এসে
রঙচঙহীন কদর্য মুখগুলো
শিখিয়ে দেয় কঠিন কিছু
অধ্যায়ের পাঠ।
ঋতুরা ফিরে এলে এবার দূরে দাঁড়িয়ে
তাদের আলতো আদর করব।
এতদিন বুঝিনি
নিজেকে ভালবাসায় কী ভীষণ অনাবিল সুখ!!
সে
পূ র্বা মা ই তি
পদ্যে রাখিনা তাকে
গদ্যেও লিখিনি তার নাম-
কাজল হয়ে বুঝিয়ে দিলো
দুটি চোখের কী যে দাম।
স্বপ্নে দেখিনা তাকে
মিটিমিটি জ্যোৎস্নায় ছিল-
থৈ থৈ জলে ভাটিয়ালি গেয়ে
রাতকে নিজের করে নিলো।
ফাল্গুনে কবরী বাঁধেনা সে
কিংশুকে মন রাঙেনা যার-
সেই নিয়েছে আমার কলম
আমার কবিতা লেখার ভার।
জোনাকি ও এক টুকরো পলাশ
শ্যা ম ল কু মা র মি শ্র
বড় রাস্তার বাঁকে
যেখানে পিচ ঢালা রাস্তাটা শেষ হচ্ছে
তারপরে মাঠের বুক চিরে কাঁচা রাস্তাটা এগিয়ে গেছে
ঐ রাস্তা ধরে একটু এগোলেই ঝাঁকড়া তেঁতুল গাছ
তার তলার পোড়ো বাড়িটা জোনাকিদের।
ফ্রকপরা কিশোরী
ঠোঁটের দু'কোণে লেগে থাকত হাসি
দুক্রোশ দূরের সত্যভামিনী বালিকা বিদ্যালয়ের ছাত্রী,
ফ্রক ছেড়ে একদিন সালোয়ার কামিজ ধরল জোনাকি
শীতকালে স্কুল থেকে ফিরতে ফিরতে সন্ধ্যা নামে...
মাঝে মাঝে বড় ভয় করে জোনাকির
বুকের মাঝে বই খাতা চেপে রেখে
ধীর পায়ে গোষ্ঠতলা পেরিয়ে যায়...
সেদিনটা ছিল এমনি এক ফেরার দিন।
আকাশে ঘনিয়ে এলো মেঘ
হঠাৎ করে যেন সন্ধ্যা নামল।
ঘুটঘুটে অন্ধকার
ইলেক্ট্রিসিটির বালাই নেই
দ্রুত পা চালায় জোনাকি
হঠাৎ একটা জোরালো টর্চের আলো এসে পড়ে মুখে
দু'হাতে মুখ ঢেকে নেয়
হাত থেকে বইগুলো পড়ে যায়
কেউ যেন দোপাট্টাটা খুলে নেয়
তারপর আর জানেনা জোনাকি...
দূরে সবুজ মাঠের প্রান্তে
পড়ে থাকে অর্ধনগ্ন জোনাকি
জোনাকির আলো ধীরে ধীরে হারিয়ে যায়...
সেই থেকে আর কথা বলত না জোনাকি
বিষণ্ণ বিকেলের রোদ্দুর মেখে বাড়িটা দাঁড়িয়ে থাকে
একা, ভীষণ একা
জানালার পাশে একাকী বসে থাকে জোনাকি
দৃষ্টি হারিয়ে যায় দূরে অনেক দূরে...
অনন্ত ওর খেলার সাথী, স্কুলের বন্ধু
প্রতিদিন আসে
হাতে ধরা থাকে এক টুকরো পলাশ
গন্ধহীনের গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে
অনন্ত ফুলটুকু তুলে দেয় ওর হাতে
দুচোখ বেয়ে গড়িয়ে পড়ে অশ্রু
শূন্য এক দৃষ্টিতে চেয়ে থাকে জোনাকি...
অনন্তরও মন কেমন করে ওঠে
দু'হাতে জড়িয়ে ধরে জোনাকিরে
মৃদু স্বরে বলে ওঠে--- তুমি আবার আলোকিত হও জোনাকি!
ক্লান্ত অবসন্ন দুটি মন হারিয়ে যায়
দূরে বহু দূরে কিংশুকের আলয়ে...
প্রচারে নয় সৃষ্টিতে থাকো
শ্যা ম ল খাঁ
আত্ম প্রচার নয়, সৃষ্টিতে হয়ে থাকো মশগুল
কিছু হবে ঠিক, বাকিটা না হয় হবে ভুল!
আঁধার কাটাতে তবুও তো চাই একটা আলো
ফোকাসটা থাক বিপরীত দিকে, সেটাই ভালো।
ছন্দ মাত্রা তালজ্ঞান, যদি নাই বা থাকে
ক্ষতি নেই তাতে, বার্তাটা থাক কথার ফাঁকে।
সংখ্যাটা হোক নগন্য, ক্ষতি কি বা তায়
উর্বর জমি যত্ন পেলেই ফসল ফলায়।
ভাষা হোক আরও সহজ সরল মাটির গন্ধে
সহজপাচ্য মর্মকথা থাকুক কথার রন্ধ্রে রন্ধ্রে।
অট্টালিকা থেকে নেমে এসো--- এই ধুলার 'পরে
শব্দেরা সব খেলতে থাকুক পর্ণকুটিরে।
এতো কথা এতো সবুজ আছে প্রকৃতির মাঝে
কত ফুল পাখি চারপাশে, দেখো সদাই বিরাজে।
তবু ছুটে যাই দুর্গম স্থানে, মান যায় যদি যাক
প্রচারের কবি, শুধু ভরাডুবি নিষ্ফল পরিপাক।
পরিপাক হলে খুব ভালো কথা, নইলে বাড়ে বিপদ
গ্যাস অম্বলে বুকে চাপ হয়, হ্রাস পায় সম্পদ।
রুচিশীল পদ থাকতে নিজের পাকশালাতে
কিবা প্রয়োজন বদ হজমের ঢেকুর তোলা-তে!
গোপনে রেখেছি খাপে ভীরু তরবারি
অ সী ম দা স
আগুন আহ্লাদ পেতে পতঙ্গ সুখে
ছুটে যাই, নিয়ে ফিরি অচেনা বিষাদ।
কী এমন যাদুছায়া মেখেছো ও মুখে
ভানুমতী, বলো বলো ভেসে যায় চাঁদ।
এ কোন অ-সুখ দিলে হরমোন হূলে
দিন দিন বেড়ে চলে শিরাতে শেকড়!
সময়ের জল দিয়ে হাড়মাটি ধুলে
অলিন্দে উড়ে বসে বীজেদের ঝড়।
গোপনে রেখেছি খাপে ভীরু তরবারি
'সুজান' সাহস কই? "বেশ করিয়াছি"!
পরকীয়া পদে নেই ডাল তরকারি
আড়ালের ঘি ঢেলে আঁকি কানামাছি।
---পকেটে প্রকাশ ছিলো, করে দিলে ফাঁস?
তড়িঘড়ি ভানুমতি কেটে করি নীলা।
যত কাটি স্থির নাম ফেলে নিঃশ্বাস
পূর্ণিমা ঠিক ফোটে হলে রাসলীলা।
বসন্ত স্বপ্ন
গী তা লি ঘো ষ
আজকে সহজ কথায় বলি,
বসন্ত থাক সবার মনে।
ফাগের আগুন জড়িয়ে ধরুক
সকল মনে, সংগোপনে।
পলাশ শিমুল কৃষ্ণচূড়ার
রঙিন নেশায় ভরে উঠুক,
মানুষজনের গোপন আশা,
স্বপন আলোর তারা ফুটুক।
হে ঋতুরাজ, তোমার টানে
সকল হৃদয় নাও গো ভরি---
এ বসন্তে সকল প্রাণই
বাইতে পারে জীবন তরী।
পলক সুখের ছোঁয়ায় আজি
সকল প্রাণে খুশির আবেশ।
বিচিত্র এই জীবনটাতে
বসন্ত মন করুক নিবেশ।।
মুগ্ধতা
সং ঘ মি ত্রা ভ ট্টা চা র্য
আমি সেদিন মেঘরঙা শাড়িটা পড়েছিলাম।
চোখে এঁকেছিলাম কাজল,
চুলের খোঁপায় দিয়েছিলাম জুঁই ফুলের মালা, সারা অঙ্গে মেখেছিলাম চন্দনের সুবাস।
তুমি সেদিন এক অদ্ভুত মুগ্ধ দৃষ্টিতে আমায় দেখছিলে।
আমিও কখন যেন নিজের অজান্তে তোমার চোখে বন্দী হয়ে গেলাম।
হঠাৎ যখন বৃষ্টি নামলো আমি তখন চকিত হরিণীর
মতো তোমায় জড়িয়ে ধরলাম।
বিদ্যুতের আলোয় তোমার মুখে তাকিয়ে আমি, লজ্জায় রাঙা হয়েছিলাম কৃষ্ণচূড়া ফুলের মতোই।
বৃষ্টি ভেজা মাটির গন্ধ আর সিক্ত বাতাস সেদিন
আমার দেহে মনে এক অদ্ভুত কাঁপন ধরিয়েছিল।
দুরন্ত ফাগ
মে খ লা ঘো ষ দ স্তি দা র
আঙুল ছুঁয়ে ফাগুন এলো
বসন্তের পরশ পেলাম না---
ধূধূ সিঁথি পথ শূন্যতা আঁকে---
মন চায় বসন্ত সুখ
অভিমান-আড়াল-নিঃসঙ্গতা এড়িয়ে কাঙ্ক্ষিত প্রেমের রং সাগরে ভাসতে---
এক বিস্ময়কর অনুভব!
অনুভূতির রন্ধ্রে রন্ধ্রে বসন্তের বহুরূপতা দোলা দেয় দোলের এলোচুল;
দুরন্ত ফাগ ভৈরবী বাতাসে আখর বোনে অনুচ্চারিত শব্দের
জোড়া শালিখ ডানায়;
গোধূলির অস্তাঙ্গন পেরিয়ে ইচ্ছেরা
সবুজ দিঠি ফেলে গোলাপি তিয়াসায়,
চাঁদের বাঁধভাঙা
জ্যোৎস্নার আলোকে অন্তর চমকে ওঠে অন্য শিহরণে;
স্পর্ধার আলিঙ্গনে বসন্ত রাঙিয়ে দেয় সিঁথি-পথ
ফুলেল খুশবুর লাল আবীরে,
রাত বাড়তে থাকে সাঁওতালি মাদলে দ্রিমিক দ্রিমিক তালে,
ভিতরে-বাইরে বর্ণিল অনুরাগ...
নির্জন হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জ জুড়ে ওষ্ঠ-অধরের যুগল ভালোবাসার ঝিলমিল সপ্তরঙিন ঢেউ
ভাষাময়।
হারাবি না তো পথ?
স ন্দী প কু মা র মি ত্র
একটা স্বপ্নময় জীবন তুই অনায়াসেই পারতিস দিতে
না না আধুনিক জগতের ভেসে যাওয়া
স্বেচ্ছাচারী জীবনের কথা বলিনি
ভাবিওনি তেমন পরশ্রীকাতরতা বা
স্বার্থপরতাময় জীবনের কথা
বলতে চেয়েছি সম্পর্কের সৌহার্দ্যপূর্ণ সহাবস্থানের কথা
যে সম্পর্কে থাকবে চোখে হারানোর কষ্ট
বোঝাপড়ার স্বচ্ছতা
রাগ-অনুরাগের পরাগ মিলন
সহানুভূতিপূর্ণ শ্রদ্ধা মাখা মনের বিচরণ
যেখানে থাকবে কপটতা জড়ানো
শিশু মনের অস্তিত্বে
প্রাণখোলা হাসি,
ভাবুক মনের মেঘ দেখা অভিমানি ঝগড়ার
পরে আত্মিক সমর্পণ
খুব কি কষ্ট পেতিস, এই অত্যাধুনিক উচ্ছলতাকে হারাতে হলে!!!
ফাগুন আঁকে
ত ন্দ্রা ম ন্ড ল
আগুন আগুন শিমুল পলাশ ফাগুন আঁকে
ঝরা পাতা কেঁদে বেড়ায় পথের বাঁকে।
যাপন কথার বিরহ ব্যথা বৃক্ষশাখে
সবুজ পাতার হাতছানি যে বাঁচিয়ে রাখে।
উতল করা দখিন হাওয়া মনের কোণে
আনমনা এক মন কেমনের ছন্দ বোনে।
স্মৃতির পাতায় অশ্রুফোঁটা প্রহর গোনে
অন্তর আজ ভবিষ্যতের গল্প শোনে।
আকাশ জুড়ে আবীর আবীর পুবের দোর
সুবাসিত আমের বোলে নেশার ঘোরে।
কোকিল ডাকা সুরেলা এক মিষ্টি ভোর
হৃদয়বীণায় বসন্ত রাগ বাজুক তোর।।
অসমাপ্ত
উ জ্জ্ব ল চ ক্র ব র্তী
যদি প্রেমার্দ্র চোখের জল গড়িয়ে নামে প্যাস্টেলে আঁকা ছবির মতো,
বুকের অসমাপ্ত কথা জাগিয়ে রাখে উৎকণ্ঠার চোখ---
মেলানকলি ভালোবাসা বুকে জড়িয়ে জেগে কাটিও উৎকণ্ঠার রাত,
তবু প্রেমিক হতে যেও না।
যে মন শব্দের প্লাবনে ভেসে বেড়ায়,
অনুভবে জ্বালিয়ে তোলে তীব্র বাসনা,
নগ্ন শরীর নিয়ে খেলা করলেও
মগ্ন হওয়া যায় না তার প্রেমে,
অনন্ত কাল পাড়ে আছড়ে পড়ে নির্জন ঢেউ...
আর রোদেলা বেলায় একপশলা বৃষ্টি সবুজ প্যালেট ঘষে দ্যায়।
পাঁচ-দশ-বিশ বছর পর কখনও অসমাপ্ত ইচ্ছে জেগে উঠলে
যদি দেখতে ইচ্ছে হয়...
বরং দুয়ার খুলে দেখো,
যতোই প্রিয় হও---
কথা শেষে ফিরে গেলে কথা হয় না আর।
মধু গন্ধে ভরা
ম ধু প র্ণা ব সু
সারাদিন মেঘের সাথে সঙ্গমে নেমেছে মন,
শরীরে সঞ্চারী দুচোখের কাজল ধোয়া বারিষ
ধুলোট উঠোন ঘিরে নীল শাড়ি ছড়িয়েছে রাগ
দুপুরের নিস্তব্ধ শান্ত বুকে বেজেছে বৃষ্টি জন্মের চেতনা
সে তীব্র গাঢ় সুখের নিঃশব্দ উচ্ছ্বাস,
ভুলে গেছে তার কাজ পড়ে, তার অবিন্যস্ত আঁচলে
টলমল এলোপাথাড়ি কুসুমাঘাত,
ছটফটে জলের ফোঁটা
দেউল সান্ত্রী শূন্য, এই সুযোগ!
পরাগের রেনু স্থাপন অবশ্যম্ভাবী।
তার পাতালপথ সরস সুগন্ধিত; শঙ্খ লাগার অপেক্ষায়,
সবুজ বীথির কোমল গান্ধার সুর বুকের পাঁজরে গাঢ় সুখের স্পর্শ
আজ নির্ঘুম মধ্যদিনের চোখ রোমাঞ্চের শিখরে জলের রেখায়
আমোদিত, কোমরের বন্ধনীতে করবী ভার
খসিয়ে দেয় বেঁধে রাখা সোহাগজল।
তাকে অপলক দেখেছি চেয়ে, যেন টইটই পুকুরের আরশিতে
প্রথম দেখেছি এক নির্মল আলোক কণা।
অচলাবস্থা
সু বা ই তা প্রি য় তি
টানা বাঁচবো যে জন্ম থেকে
কতোখানি ফুয়েল জরুরি জানা আছে?
অযান্ত্রিক হলে রাবারের দিন
টেনে টেনে ঋণী রাখবে কালের দুয়ারে।
গদাইলস্করী চাল অর্থই নগরীতে ব্ল্যাকআউট
দোকানের মোম ফিরে গেছে মৌ'য়ের থলেতে
অনিবার্য জাগৃতি ঘুমের মূলে
যে বিষ রেখে গেছে, শরীরের
কলে দূষণ- আর লেবার সব ছুটিতে।
পূর্ণতা
ম নি রু ল হ ক
কতশত ঘুরে বেড়াই আশাহত বেকার যুবক
সোনালী আকাশে যেন একদল তৃষ্ণার্ত সাদা বক।
লক্ষ্যভ্রষ্ট উল্কাপিন্ডের মত ভেসে ধুক-ধুক করে
জ্বলতে-জ্বলতে হারিয়ে যায় যেন, দূর অজানায়।
গাছের প্রতিটি সবুজ শিরা আজ হলুদ, যন্ত্রণায়!
শহর থেকে দূরে প্রত্যন্ত পাড়াগাঁয়ে ছটফট করে
জীবনের সবকটি আগ্নেয়গিরি, যেন প্রসব বেদনায়।
মৃত্যুঞ্জয়ী স্বপ্নগুলো আমার শুধুই দেখছে স্বপন।
ক্ষনিকের আকাশ ভেঙে ঝরে পড়েছে মাটিতে।
আগুন জ্বলেছে ঈশাণকোণে, মধ্যরাতে জলসা ঘরে।
শানিত বিবেক দগ্ধ করেছে পুরো রাত্রি জুরে।
বিস্ফোরণে প্রকম্পিত দেহের প্রতিটি বিন্দু, রক্তকণা।
এভাবেই চলতে থাকে দেহের শতবছরের সালোকসংশ্লেষণ।
আমি কতশত নিষিদ্ধ রাতে
একবুক ভালবাসা নিয়ে একটি বটতলায় বসে অন্ধকারের সাথে আগুন জ্বেলেছি।
প্রকান্ড গাছটি একটি শুকনো পাতা দিয়েও সাহায্য করিনি।
করেনা কোনোদিন।
গাছের পাকা ফলগুলো পাখিরা খায়। পায়না শুধু
গাছের ভিতরে বসবাস করা মানবেতর জীবগুলো।
কনকনে শীতে একটা উদোম বালক শুকনো এক ডাল ভেঙে শীতের চিতা জ্বালায়;
প্রতিবাদে মাথা উঁচু শাখাগুলো লাগাতার হরতাল ডাকে।
কফির চুমুকে খুজে ফিরি তোমার মৌণতা
জানিনা কখনো জবাব পাব কিনা, পূর্ণতা।
গোধূলি বেলা
প্র জ্জ্ব লি কা ক র
একটি রত্ন কপালে নিয়ে এলো গোধূলি, নিজেকে পুড়িয়ে পুড়িয়ে খাঁটি করে।
দিনের অন্তিম কালে ছায়ের ভেতর ক্রমশো নিজেকে লুকিয়ে যাচ্ছে,,
তুমি হাসছো?
তোমার হাসির তেজে সারাদিনের পাপ আত্মহত্যা হয়ে বৃক্ষ শাখায় গলায় দড়ি দিয়ে ঝুলছে দেখো, জিভ বেরিয়ে আছে খোলা চোখ গুলি ভয়ঙ্কর, তা দেখে কূজন শেষে পাখিরা বাসায় ফিরছে, গরুরা গোয়ালা ঘরে
বাইরে থাকার সাহস নেই মোটেও এবারও তুমি হাসবে?
ওরা যে নিষ্পাপ
রঙ্গ হাসি কি তোমায় মানায়!
ঘাড় ঘুরিয়ে কিছুক্ষণ চেয়ে থাকি নিষ্পলক
ওই দেখো ওই দেখো
চাঁদ ও তারাদের সঙ্গে এলো রাত্রি তুমি কি এবার পুরোপুরি অস্তে গেলে
শুনেছি চাঁদ নাকি তোমার আলোয় সমুজ্জ্বল
দিনশেষে পদ্মপাতায় নিজের চন্দ্রমুখ আবৃত করে, পারিজাত ফুলের মালা গলায় দিয়ে আরো একটি প্রভাতের অপেক্ষায় রইলো বলে।
স্বপ্নের বুনন
ই লা সূ ত্র ধ র
অনেক দিন রং না করা ঘরের মতন
ক্রমশ ফিকে যাচ্ছে তোমার অস্তিত্ব।
এরপরেও ফুলদানি সেজে সেজে ওঠে -
অনাহুত আমাদের ফুলের বাসর,
তুমিও থেকে যাও মোবাইলের স্ক্রিনে!
প্রতিদিন হেরে যাও অনুভূতির কাছে,
প্রতিদিনই ছিঁড়ে যায় স্বপ্নের বুনন।
কৃত্রিম ভালোবাসার দক্ষ অভিনয়ে-
চাতুরীও হোঁচট খায় মসৃণ পথে!
অথচ আমরা'ত শ্বাশত জানি,
কবিতার কোটরে লুকানো আছে -
স্বযত্নে আমাদের প্রাণভোমরা।
ঋতুরাজের আগমনে
স্ব প ন কু মা র ধ র
হে ঋতুরাজ বসন্ত,
তোমারি আগমনে আজ,
ধরায় লেগেছে দোলা
আনন্দে মাতোয়ারা সাজ,
পলাশের ডালে আগমনীবার্তা,
বুঝিয়ে দিচ্ছে তোমার সত্তা,
কৃষ্ণচূড়ার ডালে পা ঝুলিয়ে দিয়ে,
দোল খাচ্ছো তুমি, সুগন্ধি কে নিয়ে।
হে ঋতুরাজ বসন্ত,
তোমারি আগমনে আজ,
ধরায় লেগেছে দোলা,
যেন আনন্দের উৎসব মেলা,
অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় সবাই,
খেলবে রং, সাজবে গৌর-নিতাই,
ভেদাভেদ সব যাবে ঘুচে,
মিষ্টি মুখ ও করবে সবে।
হে ঋতুরাজ বসন্ত,
তোমারি আগমনে আজ,
ধরায় লেগেছে দোলা,
যেন তুমি নিজেই আত্মভোলা,
প্রকৃতি নবরূপে নিজেকে সাজিয়ে,
গাছে গাছে নুতন পাতা গজিয়ে,
বাড়িয়ে চলেছে নিজেরই শোভা,
প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষার তাগিদে।
বন্ধু
প ল্ল ব সে ন গু প্ত
দয়া চাই নি তোমার,
জানি আমি তিন দিন না খেয়ে আছি,
জানি আমার খুব ক্ষিদে পেয়েছে,
পাশে মা আমার যন্ত্রণায় কাতর,
ভাই ডুবে যাচ্ছে অন্ধকারে,
আর বোন আরোও গভীরে।
তবু দ্যাখো এই প্রতিটা নেই তো এক একটা পাওয়া,
এই আজন্মলালিত পাওয়াগুলো জমে আমার ঘর ভরে গেছে।
দয়া চাই না তাই।
দয়ায় একটা দূরত্ব আছে যা কাঁটার মত বেঁধে।
বেশতো ছিলাম শীতের রাতে
ঘুমের ঘোরে গায়ে প্লাস্টিক জড়িয়ে
ঐ যে তুমি নেমে এলে,
গায়ে আমার জড়িয়ে দিলে চাদর,
আমি ভাবলাম দয়া।
আকড়ে ধরলাম ঐ গা কুটকুটে স্বার্থপর নিজস্বতা,
তারপর কি জানি কেন হঠাৎ করে মাথায় বুলিয়ে দিলে হাত,
তোমার আঙ্গুলগুলো আমার চুলে
কথা কয়ে উঠল, অশ্রু ঝরালো।
ভাঙল আমার দয়ার শেকল।
বুঝলাম কবি কেন বলেছেন,
'তোমার প্রেমে আঘাত আছে নাইতো অবহেলা।'
সর্বাঙ্গে একটা ভাবনা ছড়িয়ে পড়ল,
গা থেকে চাদর খুলে উঠে পড়লাম।
এ প্রেম ছড়িয়ে দিতে হবে আশপাশে,
উত্তরে দক্ষিণে, পূবে পশ্চিমে।
বন্ধু, আর শীত করছে না আমার,
প্লাস্টিকও লাগছে না।
তুমি যদি ফিরতি পথে ঘুরে যেতে,
তবে দেখতে
আমায় দেওয়া তোমার ভালবাসা
গায়ে জড়িয়ে নিশ্চিন্তে ঘুমোচ্ছে
উলটো ফুটের বাচ্চাটা।
পথের সৃষ্টিতে
প ল্ল ব ভ ট্টা চা র্য অ ন ন্ত
জনহীন পথে কান রেখো
তুমি শুনতে পাবে পথের হাহাকার---
নৈঃশব্দ্য ভেদ করে কেড়ে নেবে
তোমার একাকীত্ব।
মুহূর্তে তোমার শরীর কালো হয়ে যাবে
নীল দ্যুতি কেড়ে নেবে পথের কালো।
মাথার উপর হয়তো ঝরে পড়বে
উদাসী মেঘের টিপটিপ বৃষ্টি দু'এক ফোটা।
প্রহর গুনে গুনে---
একসময় ক্লান্ত হবে যত অপেক্ষারা;
আর তোমার মন বিধ্বস্ত হবে
বাসযোগ্যহীন মোহময় পৃথিবীর
একলা পথের নির্জন প্রান্তসীমায়---।
তারপর থমকে গিয়ে কিংবা হোঁচট খেয়ে
পথের বুকে পড়ে থাকবে তোমার কান।
শুনতে পাবে---"আমায় নিয়ে স্বপ্ন দেখ---"
আমায় ছেড়ে যেওনা---! ছেড়ে যেওনা---!
তোমার চোখের বৃষ্টি মিশে যাবে--- পথের বৃষ্টিতে---
পথের সব হাহাকার শুষে নিয়ে
তুমি আবার উঠে দাঁড়াবে পথের সৃষ্টিতে---।।
ধ্বংস হোক
স র ব ত আ লি ম ণ্ড ল
প্রত্যেকটি শিশুর মধ্যে লুকিয়ে আছে-
আল্লাহ কিম্বা ঈশ্বর।
অথচ যুদ্ধের নামে করা হচ্ছে
শিশুদের হত্যা!
এই যদি হয় মনুষ্য সমাজের মস্তিষ্ক,
এই যদি হয় রাজনীতিতে ফায়দা তোলা
তবে তার মৃত্যু ঘন্টা অনেক ভালো।
এ ধরাধামে অনেক মানুষ আছে
যে সমস্ত মানুষের রূপের জেল্লা থেকেও
গুণের গুণ লেশমাত্র নেই।
আবার যার রূপ কদর্যময়,
অথচ সে গুণে গুণান্বিত।
ঠিক তেমনি, কেউ চায়না অপমৃত্যু
রাষ্ট্র দখলের নামে।
যারা একাজটি নীরবে করে যাচ্ছে সমাজের বুকে
তাদের ধ্বংস হওয়া অনেক শ্রেয়।
স্বপ্নের বেলাভূমি
হী রা ম ন রা য়
এই বেলা একটি কথা শোন,
তুই কি আমার স্বপ্ন হবি?
তোকে নিয়ে গড়বো বৃন্দাবন,
তোকে নিয়ে লিখবো, লিখে হব কবি।।
এই বেলা দেখ চেয়ে, কান পেতে তুই শোন,
ফাগুন হাওয়া লেগেছে বনে বনে।
পলাশ রাঙা হয়েছে তোরও মন,
প্রেমের ফাগুন লেগেছে কোণে কোণে।।
উচাটন মন হাওয়ায় ওড়ে চুল,
পাতা খসার সময় হয়েছে দেখ।
বেআব্রু দেখ ঐ যে শিমুল পারুল,
ফুল বাহারে দেয় বসন্তেরই ডাক।।
এই বেলা এসব কি তোর চোখে ধরেনা,
ফাগুন হাওয়ায় তোর মনে কি আগুন লাগে না।
পলাশ রাঙা মুখেও কেন আমায় দেখিস না,
কুহু কুহু ডেকে পাগল করবো তোকে, লুকাতে দেবনা।।
স্বপ্নেই তোকে জড়িয়ে রব স্বপ্নে করবো খেলা,
বেলা শেষে বেলা ভূমিতে এসে দেখিস চেয়ে বেলা।।
আমায় ছেড়ে দূরে দূরে, থাকবি রে তুই যত,
স্বপ্নেই তুই মমতাজ হবি তাজমহল শতশত।।
তোমার শরীরের অন্ধকারে
শু ভা শি স সা হু
রূস্মিতা তোমাকে আমি আজও
ভালোবাসি এই অন্ধকারে।
আমি এখনও এক জীবন্ত শব,
আমি এই রাত্রির চারিদিকে ঘুরছি।
তুমি সেই কবে চলে গেলে
একা একা,
আমি এই আকাশকে প্রশ্ন করি;
তোমার উত্তর তারা দেয় না।
তুমি হয়তো চলে গেছ
সেই রাত্রির গভীরে,
মায়াবী অন্ধকারে;
রাত্রি যতদূর যায়
ততদূর তোমার শরীর যায় রূস্মিতা।
রূস্মিতা তোমার রূপ
মিশে যায় না এই অতল
গভীর অন্ধকারে, তোমার স্বপ্নে বিভোর
আমি, তোমার প্রেমের অন্ধকারে
আমার শরীর।
আমি রাত্রির শরীরে
তোমার শীতলতাকে করেছি
অনুভব।
তবু জানি রাত্রি যতদূর যায়
ততদূর তোমার শরীর;
আমার শরীর আজও
তোমার শরীরের অন্ধকারে।
অবচেতন
শি খা না থ
ভালোবাসার রঙে রঙিন উড়ছে ধুলি,
দিনের শেষে গোধুল রাগে সুরটি তুলি,
বসন্ত বায় নিজের মতো সাজায় রঙিন
কৃষ্ণচূড়ার দোল ছুঁয়ে যায় মন জমিন।
আয়না বসে গল্প করি সুখ দরিয়ায়,
পলাশ বনের লালের বিভায় মন ছুঁয়ে যায়।
উড়ছে পাখি মনের মতো স্বপ্ন দোলায়।
বদ্ধ ঘরে ঢুকলো আলো জানলা খোলায়।
চলনা ছুটে নৌকো ভাসাই রঙের জলে,
হাজার রঙের নক্সা তুলি কোল আঁচলে,
আকাশ ঘিরে স্মৃতির দোলা দেয় যে মনে,
দে না বাতাস একটু দোলা সংগোপনে।
অন্ধ রাতের ঘোর কালো রঙ চাইনা ছুঁতে,
উষ্ণ বালু চাইনা নিতে হাতের পাতে,
চাইনা ধরা দিতে আমার মনের ঘরে,
বসন্ত রাগ যাকনা বেজে জীবন ভরে।
কি যায় আসে ভাবনা যখন নিজের মতো
থাকনা সাথে মনের মাঝে যত ক্ষত।
বসন্ত তোর সুখ ক্ষনিকের সে তো জানি
প্রেমের বানে মন ভেসে যায় তাইতো মানি।
আয় ছুটে আয় ধরবি যে হাত নিবিড় ভাবে,
রঙ বদলের খেলা সে তোর সঙ্গে যাবে,
থাকবো আমি আমার মতো আবেশ ঘিরে,
শূন্য হয়ে থাকবে খাঁচা জীবন নীড়ে।
আমি যে নারী
প্রি য়াং কা নি য়ো গী
আমি যে নারী,
ধৈয্যের সারসত্তা নিয়ে জন্মেছি আমি,
সমাজের নিরঙ্কুশ চিন্তার সাথে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হয়।
আমি যে নারী,
সংসার ধরার দায়ে যে দায়ী,
হকের স্বাধীনতার জন্য চলে মোচড়ামুচড়ি,
কলঙ্কের ভাগীদার এর বেশী শতাংশই যে নারী।
বোবা আচরণে লক্ষ্মী প্রমাণ করা,
প্রতিবাদীতে দুর্গার রূপ ধরা,
সবেতেই নিজেকে প্রমাণ করা।
আমি নারী,
আমি পারি,
পারার অদম্য ইচ্ছে প্রতিনিয়ত ঘূর্নিপাকের মতো
পারার ইচ্ছেতে মনোবল বাড়ায়।
আমি জেদি,
কাজ পরিসমাপ্তির মানসিকতা
শেষ লগ্নে পৌঁছে দেয়।
আমি অগ্নিশিখা,
প্রয়োজনে দুর্গা।
আজ আমি উপার্জনী,
নিজের সামর্থ্যে গড়ি ফ্ল্যাট বাড়ি,
উপার্জনে কিনি স্কুটি, গাড়ী।
আমি মমতাময়ী,
হাজার কিছুর পর
মমতা দিয়ে পরিস্থিতি সামলে রাখি।
বাসন্তী রঙে রাঙাই
ন ব কু মা র মা ই তি
উৎসবের আঙিনায় দোলযাত্রা এলেই
মনটা বাসন্তী রঙে রাঙা হয়ে ওঠে
বিহঙ্গরা উড়ে যায় সুনীল আকাশে
ডানায় উদাসীন পৃথিবীর মায়া
বৈরাগ্যের বিশল্যকরণী মন্ত্রে কিছু শব্দকল্প
জড়ো হয়ে প্রসব করে অমৃত রসায়ন
চরিতামৃত-শোক আর শ্লোক কখন
যেন মিলেমিশে এক হয়ে যায়
বিবাগী মনের দরজায় কড়া নাড়ে ভালোবাসার
সুর ও সঙ্গীত, ক্রমশ মুছে যায়
আত্মবিলাপ, অন্তর্গত দুঃখ ব্যথা
অগণিত যাপনচিত্র, অনিত্য বিষয় বৈভব
ফিঙে পাখি দোল খায় যজ্ঞ ডুমুরের ডালে
মুকুলিত কামরাঙ্গা রঙে নবীন কিশলয়
অনতিবিলম্বে কৃষ্ণচূড়ার ডালে বসে
সুখ -সারি গায় আত্মগত হৃদয়ের গান
'হোলি খেলে হরি উন্মাদ রঙ্গে'
রাধ্যতে রাধা- পরমাহ্লাদিনী শক্তি
বেঁধে বেঁধে রাখে সত্তার বাঁধনে
অকৃত্রিম ভালোবাসা মানবতা প্রেম সখ্যতা
একটা আসক্তির গাঢ় চুম্বন
তবুও মনের অজান্তে কখন ভাব রাজ্যে
উঁকি মারে ভাঙ্গনের প্রশ্ন চিহ্ন
পুলওয়ামা হত্যাকাণ্ডে নিহত জোয়ানের রক্তঋণ, আত্ম বলিদান
সীমান্তে ধ্বনিত রণভেরী ছাড়িয়ে
আসবে কি একটা নিষ্পাপ নির্মল ফাগুন
ভালোবাসার সত্যিকার আত্মিক নৈকট্য
প্রেমের রঙিন আবির কতখানি নিখাদ?
এসময়
অ ঞ্জ ন ব ল
এসময় ফুল ঝরিওনা বাতাসে
এমন নিঃশব্দ এখন পালে হাওয়া বইছে
পাহাড়ের কুঁজে জমে আছে মেঘ
সে যেন বলে আসে... গুটি গুটি পায়ে,
টুপ টাপ পদশব্দে ঘুম ভেঙে যায় ত্রিযামার
এসময় ফুল ঝরিওনা বুকঝিম বাতাসে।
এসময় পাতা ঝরিওনা শরীরে
ছাই মেখে বিরূপাক্ষ চাঁদ হয়ে আছে
হবিষ্যান্নের ভাত খেয়ে ডুবু ডুবু চোখ
নিষ্পাপ জড়তায় ঘুঙুরের কিনি কিনি...
বায়স দুপুরে নাতিদীর্ঘ জারুলের ছায়ায়
চিৎপাত রাখাল কানাই,
এসময় পাতা ঝরিওনা চিৎপাত শরীরে।
এসময় রক্ত ঝরিওনা মাটিতে
মাটির শেকড়ে এখন সুপ্ত ভ্রূণ দশা
তরল আবেগ--- উদ্গম এখনো বাকি,
উদগ্রীব ভালোবাসা--- শস্যের প্রতিটি কণায়
---ঝিনুকের প্রতিটি চুমুক
নিবিড় অপেক্ষায় নিষ্পাপ শিশু হয়ে আছে,
এসময় রক্ত ঝরিওনা নিষ্পাপ মাটিতে।
বসন্ত বিলাপ
খ গে শ্ব র দে ব দা স
বসন্ত বহিলো সখী হৃদয় গগনে।
চিত্ত আকুল হলো ফাগুন-পবনে।
উদাসী হলো আজি হৃদয়বীণা-
ঐ-বেখেয়ালী, কৌকিলা-কুহুতানে।
মন হলো না, রঙ্গিন সখী-সখার বিহনে।
ওরে ও, উতল হাওয়া-
বল্ না আমায় বল্ না, দোলে কেন আমার হৃদয়বীণা সখার বিহনে।
মর্মরীয়া উঠে আমার হৃদয়খানি কোন সুদূরের পানে।
পলাশের রঙিন রেনু ছড়িয়ে গেল নীল গগনে।
চমকিয়া দেখিনু সই দুয়ার পানে,
ঐ-বুঝি এলো সখা- ফাগুনে-পবনে।
হৃদয় মোর দহে সখী পলে পলে-সখার বিহনে।
ফুলরেণুর দিন
শ র্মি ষ্ঠা মি ত্র পা ল চৌ ধু রী
বসন্ত, তুই পক্ষপাতি;
আমার শহর সবুজ।
কারোর মনে আগুন ধরাস,
কাউকে করিস অবুঝ।।
বসন্ত, তোর রূপের দেমাক;
কৃষ্ণচূড়া পলাশ!
ফাগুন বেলায় গুলাল ছড়াস,
মাতাল করিস বাতাস।।
বসন্ত, তুই কোকিল কুহু;
প্রেমিক হৃদয় উদাস।
ঝিরিঝিরি ঝরে পাতা,
তারাও কি আজ হতাশ??
বসন্ত, তুই মহুয়া নেশায়,
ধামসা মাদল নাচিস।
বিহুর টানে উথাল পাথাল,
চোরা স্রোতে বাঁচিস!
বসন্ত, তুই ঝাপসা বিকেল;
মন আজ কাপাস তুলো-
দিনটা ভীষণ প্রেম কাতুরে;
বল্--- আমার চোখে জল না ধুলো??
জলগান
মি ষ্টি বৃ ষ্টি
যে গান নেমেছে জলে তার
এখনো জড়ানো কাঁটাতার
দীর্ঘ চুলে শাপলা শালুক,
বুক-ভরা রক্তগোলাপ।
রোজ় ডে আসে ও চলে যায়,
অন্য দিন, ভালোবাসা দিন...
ক্যালেন্ডার পাতা ওল্টায়,
বিরহেরা শীতের হাওয়ায়
উড়ে যায় ভিন্ন শহর।
এখানে অনেক নীল দোর
বন্ধ ও ঘিরে রাখে পার্ক
ভবিষ্য বোধহয় ডার্ক---
অন্ধকারে পার্টি-শার্টি হয়
চোখ ধেঁধে যায় আপাত আলোয়
আলোকিত আলোচনা হয়
আলোচনা আলোকিত খুব,
শতকরা চোনা কতো ভাগ?
জোনাকিরা ভেসে থাকে, মুখ
জলে ফুটে আছে ফুলতুক্
তুকে, তার স্নেহ অহেতুক
ভালোবাসা ভাঙে, ভেঙে যায়!
ভালোবাসা এপার-ওপার
ভাঙে ধর্মীয় বুল্ ডোজ়ার
জলে তাই ডুবে গেছে গান
সোনারং, সাতটি রাজার।।
প্রেমের বসন্ত
চ ম্পা না গ
তার কাছে সমর্পিত সুর, তাল, লয়,
সেতারের তার জুড়ে সমাদৃত আঙুল।
ধ্বনি জুড়ে প্রতিধ্বনি হৃদয় কোণে,
ভালবাসা নিভৃত যতনে সজায়ে চলে।
বসন্তের ফুল বনে ভ্রমরের গুঞ্জন,
মনের গভীরে প্রেমের আগমন।
আনমনে ঠোঁট ছুঁয়ে যায় রাগ ভৈরব,
বসন্ত বাতাসে জাগে প্রেমের
উৎসব।
বসন্ত রঙে রাঙানো দিগন্ত
মুঠো ভরা সুখ সাজে অনন্ত।
আকাশে বাতাসে কে যেন আজ
আবীর দিয়েছে ছড়িয়ে,
কৃষ্ণচূড়ায় সে রঙ পড়ে গড়িয়ে।
অশোক পলাশ শিমুল কেউ
যায় নি বাদ,
রাধাচূড়া মিটি মিটি হাসে।
অমলতাস যেন ঝাড়বাতি
অপরূপ সাজে!!
মাধবী লতার মুখে কথা নাহি সরে।
আম্র মুকুলের ডালে সোনারোদ ঝরে,
পিক আর পাপিয়া গান গেয়ে ভাসে
বসন্ত বাতাস ক্ষণে ক্ষণে জড়িয়ে
ধরে উতলা প্রেমে।
রাত যখন নিঃঝুম
লি পি কা ডি' ক স্টা ম ণ্ড ল
রাতের নকশিকাঁথার নিচে অর্ধযাপন
পড়ন্ত শীতেও বর্ষা নামে যখন তখন
স্বপ্ন দুঃস্বপ্নেরা হাত ধরাধরি করে আসে
অলীক সুরমূর্ছনায় দিনের গুঞ্জন ভাসে।
জান্তব আর্তনাদ ঘোষণা দেয় রাত্রির যাম
মস্তিষ্ক অ্যালার্ম বাজায় মন তুই এবার থাম।
সুদূর প্রসারী মন শোনেনা বারণ জাল বুনে চলে
অধরা স্বপ্নগুলোর মুখে মুখে শেখানো কথা বলে!
অব্যক্ত ইচ্ছেগুলির শুধুই অর্গল ভাঙার চেষ্টা
স্বল্প সময়ে বাসনা মেটে না, দেখার অপেক্ষায় শেষটা।।
অন্য বসন্ত
অ রু ণি মা চ্যা টা র্জী
বাসন্তী মেঘ ছুঁয়ে
বনজ বাতাস দোলে
কৃষ্ণচূড়ার ডালে।
পলাশ শিমুল রোদের অভিমান ভাঙাতে
এক মুঠো আবীর ছুঁড়ে দেয়
দিনান্তের সূর্য শরীরে।
মেঠো বুকে অভিমানে
প্রজাপতি স্থির বিন্দু,
পলাশ শিমুল মধুমতি ফুলের ঠিকানা জানেনা!
রোদ সরে,
গোধূলি পাণ্ডুলিপি সাজায়
বালুহাঁসের ডানায়।
সোনালী ডানায় চিকন রোদ মরে মরে,
প্রাগৈতিহাসিক অন্ধকার
একটু একটু করে জেগে ওঠে।
একটি আহত জোনাকি
মৃত নক্ষত্রের দায়টুকু বুকে নিয়ে
পৃথিবীকে শেষ আলোটুকু দিয়ে
শহিদ হয়!
পরিযায়ী পাখিরা প্রাগৈতিহাসিক অন্ধকারকে মাড়িয়ে,
ইতস্ততঃ উড়ে বেড়ায়।
তাড়া নেই কোনো,
নেই কেউ প্রতীক্ষায়!
সামুদ্রিক নোনা বাতাস
ঝিম ধরা রাতের আয়োজনে যখন মগ্ন,
আধখানা হলদেটে চাঁদ
নিস্তরঙ্গ জলে, নিঃসঙ্গ চরাচরের ছায়া ফেলে।
বালুহাঁস প্রাগৈতিহাসিক অন্ধকারে
হাতড়ে বেড়ায় তার সঙ্গিনীকে।
এ অন্বেষণ নিরন্তর!
অভ্রান্ত কৌতুহল
স ঞ্জ য় কু মা র ক র্ম কা র
কত বারই নিষ্ঠার সাথে এগিয়ে গেছি,
চোখের নিচে ছিল ঘনমেঘের অলসতা,
তুহিন কুয়াশায় ছিল শুধুই অন্ধকার,
তবুও কত অভ্রান্ত কৌতুহল...!
দুর্ভেদ্য দুর্গে বসে কবিতার জন্ম দেওয়াটা অসম্ভব হয়ে ওঠে...।
প্রত্যক্ষ নিদর্শন নিয়ে যন্ত্রণাতে মূর্ত হয়ে যাই...!
তমসা নিবিড়ে ফুলেরও কী অপূর্ব আড়ম্বর!
প্রতিটা মুহূর্তে যেন অজানা বিস্ময় হয়ে থাকে...!
অতীতের কোনো উষ্ণতা যেন এগিয়ে নিয়ে চলেছে...!!
শুধু তুমি
অ মি ত চৌ ধু রী (সি ন্টু)
সকালে উঠিয়া দেখিলাম শুধু দুইটি নয়ন,
যে নয়নে হয়তো হবে শুধুই মোর ভ্রমণ।
তবু জানি জীবনটা অতি সহজ নয়, কঠিন ও নয় বটে!
যদি পথ চলার সাথে মোর হস্তে সময় থাকতে,
পাই এক সুন্দর সময়ের সাথী!
এ জীবনে যত হাসি যত খুশি যত আনন্দ যতই উল্লাস সর্বস্তরে জ্বলবে,
শুধুই উজ্জল বাতি।
অভিশপ্ত প্রবন্ধ
সু দী পা চ্যা টা র্জী
আমি দেখেছিলাম তাকে দুচোখ ভোরে,
দেখেছিলাম মিষ্টি মধুর এক সন্ধ্যায়।
একাকী এখন মনমরা আমি,
সেই চোখ ভিজেছে অশ্রু ধারায়।
হঠাৎ করে তার সেই চলে যাওয়া,
আমায় করেছিলো স্তব্ধ।
ভুল কি ছিল আমার তা জানিনা আজও,
আমি যেনো এক নির্বাক প্রবন্ধ।
যে প্রবন্ধ হওয়ার কথা ছিল
হাসিখুশিতে ভরা,
সেই প্রবন্ধই যেনো আজ নিস্তব্ধে মোরা।
বুঝবে যেদিন ফিরবে সেদিন
তুমি আমার কাছে ,
সেদিন তুমি হাজারো কাঁদলে,
পাবেনা আমায় সাথে।
দুনিয়ার মায়া ত্যাগ করবো,
এটাই হবে আমার শেষ যাত্রা।
মেনে নেব এটাই আমি,
তোমার অভিশপ্ত প্রবন্ধে আমি ছিলাম,
কেবল বাক্যহীন এক মাত্রা।
এসো ফাল্গুন
ম নী ষা ব ন্দ্যো পা ধ্যা য়
পলাশ শুধু কী রঙঢালে দিকে দিকে
রূপের নেশায় মাতাল করে এ মন!
বিষাদ গুলোকে ছয় মেরে ঠেলে দিতে
এসো ফাল্গুন, তোমাকেই প্রয়োজন।
শীত অবসানে ঝরাপাতা ফেলে রেখে
গাছেরা কাঁদে উদাস শূন্যচোখে
এমন দিনই বসন্ত এসে বলে -
রাঙাও নিজেকে, কেঁদোনা সূর্য শোকে।
এক কথাতেই গাছেগাছে আলোড়ন
নৈঋতে বাজে শিমুলের সঞ্চারি
কাঞ্চন তার পসরা সাজিয়ে নিয়ে
আসরেতে নামে, সাথে রাগ দরবারী।
ওরা বলে যায়, ভালো করে চেয়ে দ্যাখো
দুঃখ বিষাদ সবকিছু দূরে রেখে
বাঁচারমন্ত্র প্রতি পাপড়িতে রাখি,
যদি কেউ তার স্বরলিপি পড়ে শেখে।
শূন্য উঠোন ভরে ওঠে মুঠো সুখ
পাতায় পাতায় নব আনন্দ জাগে
শেষঋতু তার সবটুকু রং দিয়ে
রাঙায় পৃথিবী নেশাতুর অনুরাগে।
এসো ফাল্গুন অশোকে পলাশে নেমে
দূর করে দাও হিংসা ও বিদ্বেষ
এই পৃথিবীর সব কোণে ঢালো রঙ
ফাগুন! সেতো আলোময় পরিবেশ।।
বসন্তের দোসর
বি দি শা ব্যা না র্জী
ধূসর ঊষর শীতের বুকে
ধূলায় মলিন পথ---
সেই পথ বেয়ে ছোটায় ফাগুন
আপন বিজয়রথ!
তার জাদুকাঠির অবাক ছোঁয়ায়
সবুজ হল ধরা,
নতুন রূপে সাজল প্রকৃতি
নবযৌবনে ভরা।
ফাগুন! সে তো একা আসেনা
হাজারটা তার দোসর..
শিমুল, পলাশ, কৃষ্ণচূড়ায়
উপচে পড়ে কোঁচড়।
তার আসার খবর পেয়ে
জুটল কোকিল পাখি
কচি পাতার আড়াল থেকে
দেদার ডাকাডাকি।
আগুনলাল ফুলের মধু
গুনগুন কালো ভ্রমর,
সাঁঝবাতির দেউল ঘিরে
জুঁই বেলীদের বাসর!
কানে কানে ফিসফিসিয়ে
বলে দখিন হাওয়া---
এবার শুধু বসন্ত রাগ
এবারে গান গাওয়া!
কামরাঙ্গা বসন্ত
বি ল কি শ বে গ ম
কোকিলের কুহুতান
বসন্তের আগমনী বার্তা বয়ে আনে
সোনালী ফাগুন
মিঠেল হওয়া সুড়সুড়ি দেয় প্রাণে
পলাশের নেশা মাখি
তুমি আমি দুজন
মনে ভাসে কতো কথা
কবিতা ও গান
তুমি সুর হয়ে থেকে যাও আমার গানের ভেতর
গোধূলি আসে
নদীর ঝিনুক তুলি
লাল পলাশে খুঁজি জীবনের ফাগুন
বিষন্ন রাত্রি
বুকে দলাদলা ঘাম
তোমাকে দূরে রেখে কী করে থাকি আমি
এসো দুজনে হই ফাগুনের আগুন
হই কামরাঙা বসন্ত
দুহাতে বসন্ত মেখে হই ভোরের সোনালী সূর্য
বসন্ত
ম ধু মি তা ভ ট্টা চা র্য
...শুনেছি সাঁওতালি মাদল
বেজে ওঠে স্নায়ুবৃক্ষ বুকে?
শুনেছি পাতাদের ফিসফিসানি
নাকি কথা বলে যায়!
প্রজাপতিরা নাকি বাহারি রূপে উড়ে বেড়ায়?
আকাশ নাকি লাল হয়ে যায়!
পলাশরা নাকি আকাশকে সাজায়?
বকুল নাকি পথ চেয়ে থাকে?
পাহাড়ে পাহাড়ে বসন্ত হেঁকে যায়?
এখন পাহাড়ে বসন্ত।
পাহাড় থেকে গড়িয়ে পড়ছে
সমতলে... ঝর্নার মত করে,
নদী যেনো নারী হয়ে গেছে
বসন্ত সৃষ্টি ধরে।
এখন বসন্ত
আবীরে রাঙ্গা হয়ে।
অমরাবতী
মা লা ঘো ষ মি ত্র
দখিনা বাতাস ঢুকে পড়ে
জানালা দিয়ে,
ঢেউয়ের মতন ফুলের সুবাস
আমের মুকুলের গন্ধ ছড়িয়ে যায়।
অন্তহীন আকাশে রঙের খেলা
খুব কাছে এসেও, আসতে পারে
প্রগাঢ় চুম্বন লেগে থাকে ঠোঁটে
বাসন্তী হাওয়ায় সব এলোমেলো
বিরহ আর পেতে কার ভালো লাগে
ফাল্গুনীর আধফালি চাঁদ---
বৃক্ষ অমরত্ব চাই
নবপল্লবে ভরে যায় হৃদয়
মুকুলিত হতে থাকে---
তুরীয় আনন্দ---
সমতলে নেমে এসে,
পাহাড়ের চূড়া স্পর্শ করে।।
সুক্ষ্মদর্শী সময়
অ মি য় ম ল্লি ক
চাওয়ার ভঙ্গিমাই স্পষ্ট বলতে পারে
কে কাকে কেমন ভাবে পেতে চায়
শ্লীল অশ্লীল অনেক কথাই তর্কবিতর্কের কেন্দ্রবিন্দু
অথচ চোখ জানে সে কতটুকু স্বচ্ছ
কল্পনার চেয়েও দ্রুত কিছু নেই
তবু সেই রঙের খোঁজে এত যে ভাবনা ও উতলা হয়ে উঠি
তা' কি শুধু অযাচিত আবেগ
নাকি হৃদয়ের একান্ত চাহিদা
প্রেম মানে শরীর নয়
আবার শরীর ছাড়া প্রেম বড় আলুনি
দেহ ও হৃদয় সমান্তরালে চলতে পারাটাই জীবন
যে জীবন আমাদের সুক্ষ্মদর্শী সময়ের দর্পণ...
জীবন
অ নি ন্দি তা না থ
জন্ম মাত্র জীবনের ইতিহাস শুরু।
বৈচিত্র্যময় জীবন, দুঃখ-কষ্ট, সুখ-অভিমানের কাহিনী পর
কাহিনী জমে।
নিজে যখন অভিভাবক,
আকাশ ছোঁয়া আকাঙ্ক্ষা মন ভরা।
কিছু পূরণ হয়, বাকি কিছু
শূন্যতায় ভরা।
নদীর স্রোতের সম জীবনযাত্রা
মানব জাতির।
বোঝে সবাই মায়াময় জীবন!
তথাপি কর্ম ব্যস্ত মানুষ ছোটে
নিজস্ব তাগিদে।
মৃত্যু তো চায় না কেউ
ভীত মানুষ।
খড়কুটো আঁকড়ে ধরে
বাঁচার আশার।
হায় রে! সে আসবে নিঃশব্দ চরণে।
দেখা হোক তবে একদিন
সু দী প্ত রা য়
লাবণ্য...
কোনো এক...
রক্তিম ভোরের সোনালী সৌন্দর্যে দেখা হোক আমাদের, যেখানে- শূন্যতায় শোনা যায় পৃথিবীর মধুর সুর।
যেখানে- কুুুহুধ্বনি গেয়ে ওঠে পার্থিব জীবনের গানের বোল
যেখানে- দেখা যায় ক্লান্তির লেশহীন কেকার উদ্দাম নাচ...
যেখানে -প্রকৃতি সহজাত ছন্দে নব প্রেমিকের মনমাঝি...
যেখানে- সমস্ত স্বপ্নের রঙ হয়ে ওঠে লাল কৃষ্ণচূড়ার মতো...
সেই রঙিন স্বপ্নের-
মায়াবী সূর্যকিরণের প্রতি কিরণে--- লাবণ্য
তুমি আমার রানি, তুমি আমার প্রেমিকা।
দেখা হোক তবে... হুমম দেখা হোক এমন এক রঙিন দিনে...
ভালো থাকা আর হয় না
উ প মা বে গ ম
নিজের ভালো থাকা যদি অন্যের হাতে তুলে দাও,
তবে বুকের রক্তক্ষরণের জন্য তৈরি হয়ে নাও।
কষ্টগুলি গিলতে না পেরে দম বন্ধ হয়ে ছটফট করতে,
হাসিমুখে চোখের জলগুলো নিয়েও সবাইকে বুঝাতে,
তুমি কত সাহসী, কত সুখি।
কত অপমান, অবহেলা তুমি অবলীলায় পাশ কাটিয়ে যেতে পারো।
বুঝিয়ে দাও, 'তোমার কিছুই যায় আসে না'।
আসলে কি তাই?
তোমার কষ্ট, একাকীত্ব, বিরহ আসলে কেউ ছুঁতেই পারে না।
তুমি সবার ধরাছোঁয়ার বাইরে- ঠিক যেন অমরত্বের কাছাকাছি।
সঙ্গী
উ প ম ন্যু মু খা র্জি
চল আজ রাতে যাই
তোকে নিয়ে ঘুরতে
দু জোড়া ডানা খুঁজি
কাজে লাগবে উড়তে।
স্মরণীয় করি চল
হই পাশাপাশি
শর্তটি শুধু থাক
ভালোবাসাবাসি।
স্বপ্নের জাল বোনা
মন নীল কল্পনা
সব ছেড়ে চল যাই
নিশিরাত খুঁজতে,
গন্ডীটা ভাঙবো না
বুদ্ধি ও আনবো না
শুধু একসাথে দাঁড়াবো
নীরবতা বুঝতে।
রঙ তুলি হাতে নে
স্মৃতি কিছু আঁকতে,
কালকের ভোর
হয়ে যাক তোর
রোদ্দুর রাখি কাল
তোর মন মাখতে।
জীবনটা হিসেবের
চল বৃষ্টিতে ধুই,
সব রুট ছাড়িয়ে
নিয়মকে মাড়িয়ে
কবিতায় থেকে যাই
আমি আর তুই।
বেজার বাউল
প্র তী ক মি ত্র
বেজার বাউলের কপালে জুটছে না বেশি কিছু।
তার সুরেলা গান ঘুম ভাঙাতে ব্যর্থ সুখী যাত্রীদের।
জানলায় সত্যির কাটাছেঁড়ায় হাজির সূর্য্য।
অবশ্য পর্দা টানা বলে খেয়াল নেই কারো।
যাত্রাপথে নাটকীয়তার অবশ্য কিছু কম নেই।
বাচ্চার চিৎকার, বয়স্কদের বকবক, অল্পবয়সী যুগলের
সোহাগ সোহাগ অভিমান।
মাথার ভেতর খালি খালি থাকলে ভালো হত বেশি।
গতরাতের ভারে ডুবে এখনো যেন চিন্তা, দুশ্চিন্তার ভীড়েই।
স্মৃতিরা অবশ্য ফিকে, রাজি নয় আসতে সেইসব চিন্তার পিছু।
সূর্য্যের মুখোমুখি হয়েও দেখলাম, তেমন কিছু নেই সামলানোরও।
বেজার বাউলের কপালে জুটছে না বেশি কিছু।
ফাগুন মুখ
লা ল ন চাঁ দ
কথাগুলো সব ঝরে পড়ে
যেনো ফোটা ফুল
মুখরিত সুবাস। বুকের ভেতর ঢেউ তোলে রঙধনু ফাগুন
মাছরাঙা দুপুর
নিঃশব্দ কথার মফস্বল
ঝরাপাতায় রেখে আসি প্রাচীন শৈশব। বাসি কথার ভুবন
অরণিদহে ভাসে নদী
দূরে মোহিত ফসলের ঘ্রাণ
তিরতিরে হাতে আজও তুলে রাখি বিকেলে ভোরের ফুল
কথা ছিলো
কথার আলপনায় আঁকা ছিলো মন
হাজার ঝড়েও নেভে না নিরালা ফাগুনের ণিজন্ত আগুন
স্নিগ্ধ শিশির ভেজা রাত
দুচোখে গলে পড়ে ক্লান্ত জোনাক
কোমল হাতে আমরা তখনো শিউলি কুড়োই। কুড়োই নির্যাস
স্মৃতির ঘাটে চিতল হরিণ
জল নেই জল নেই
তবু থাকে জল। অনন্ত জলে গড়ি ফাগুনের নির্জন বসত
প্রিয় বান্ধবী ! তুমি এলে ফুল ফোটে
তুমি গেলে খরা
বসন্তের বুকে আমি এঁকে রাখি তোমায়। তোমার ফাগুন মুখ।
এভাবেও ভালোবাসা যায়
র ঞ্জ না বি শ্বা স
আমাদের গল্পটা রূপকথা নয়
রোজকার ঝাঁঝ মেশা
দিন আর রাত,
কবিতার ছন্দে সুর তোলা নেই
গদ্যের রুক্ষতা ভীষণ রকম।
আমাদের বাড়ি নেই
ছোট দুটি ঘর-
তেল নুন চাল ডাল হিসেব নিকেশ!
এখন মাসের শেষ পাঁচ দিন বাকি, ঘাড় গুঁজে বাজারের থলি এককোণে।
পরিপাটি সুখী সুখী আমরা তো নই, কথায় কথায় তাল ঠুকি দুই জনে!
ভয় পেয়ে কাক চিল উড়ে চলে যায়,
থালা বাটি ছোঁড়াছুঁড়ি বাদ নেই কিছু;
তারপরও আছে কিছু, সারাদিন পরে ঘরে এলে
ফিক করে হেসে ফেলি যদি
চোরা চোখে বারবার আমাকেই দেখ, আমিও হঠাৎ
করে ঠিক যেন নদী।
মিশে আছি তোমাতেই আজীবন ধরে....
আমাদের গল্পটা রূপকথা নয়
তবুও বকুল ফুল টুপটাপ ঝরে।
বসন্তের ডাক
শা ন্তা ল তা বি শ ই সা হা
আবারও রঙ ধরেছে শরীরে মনে,
রোদ পোহানোর অজুহাত ফিকে হচ্ছে ধীরে ধীরে।
প্রিয় মানুষদের গন্ধ ধুয়ে ফেলে,
গরম জামাকাপড় ঠাঁই হবে অন্ধ কুঠুরিতে।
কদিন আগেও আলো হয়েছিল যে ডালিয়ারা,
ওদেরও বুঝিবা ফুরিয়ে আসছে দিন।
শুকনো পাতারা এখনও চিনে উঠতে পারেনি নতুন বসত,
ফুটপাতে উদ্বাস্তুর মতো পড়ে আছে অবহেলায়।
যে হাওয়ায় কদিন আগেও মিশে ছিল বিষাক্ত ছোবল,
সে আজ সদ্য বয়ঃসন্ধিতে পা রাখার কিশোরীর মতোই প্রাণবন্ত।
সদর দরজা পেরিয়ে মোড়ের মাথা পেরোনো অবধি,
প্রাক্তন প্রেমিকের মতো
শীত শেষবারের মতো মুখ ফিরিয়ে তাকাবে,
তারপর বড় রাস্তায় মিলিয়ে যাবে বিন্দু হয়ে।
অনেকদিনের বিরহ কান্না ভুলে,
প্রকৃতি আবার আয়নার সামনে দাঁড়াবে,
শীতের মলিনতাটুকু ঝেড়ে ফেলে সেজে উঠবে
নতুন অভিসার লগ্নে,
গর্ভবতী নারীর মতোই অভিসার নিয়ে বসন্ত বাতাসে।
বিষুব ঘ্রাণ
কা বে রী রা য় চৌ ধু রী
যদি প্রেম থাকে মনে অনন্তের পিপাসায়
মেঘের কালো চোখের কাজলে এঁকে সঁপেছি মন উজানিয়া কূলহারা মাঝদরিয়ায়।
ডুব সাঁতারে শুধু একূল ওকূল পারাবারের নেশায় মাতন হিয়া
মঞ্জুরীত প্রেম নিকষিত হেম সুধাসিন্ধু আহরণে সুপ্তির খোঁজে আকুলিয়া।
জ্যোতির্ময় পুরুষের বিষুব ঘ্রাণ স্বপ্ন মদিরায় মানস সরোবরে শীতল স্পর্শে বন্দিত
সূর্যমুখীর সূর্যতপা মন উন্মেলিত দৃষ্টি আবেগে নন্দিত।
মন যে মাটির মতো নরম আবেষ্টনীতে চিরন্তন বিলিয়ে সুখের ভিত
তোমার গাঢ় নিঃশ্বাসে দখিনা সমীরণে বকুল সুবাসিত।
হৃদয়ে তব স্থান আত্মিক মেলবন্ধনে গভীরতা সুনীলে ঢেউ তোলা মায়াডোর
তটিনী মায়ায় ঢেউয়ের দোলায় স্বপ্নিল আঁখি স্ফটিক জলে তোমারই ধ্যানে বিভোর।
ছায়াপথ ধরে হেঁটে যেতে যেতে নিত্য সঙ্গী পাশাপাশি
তোমার অঙ্গে কস্তুরী সুবাসে কানীন হয়েও জন্ম জন্মান্তরের প্রণয় তিয়াসী।
সুনিবিড় বন্ধনে অন্তর্মুখী গাঢ়তা অন্তরাত্মায় ব্যঞ্জিত অনুরণন
কোমল গান্ধারে সূচিত অনুরাগে সিঞ্চিত কুসুমিত হৃদয়ের উষ্ণতা সংবেদন।
পার্থিব সুখের খোঁজে অহরহ ঝড়ে তছনছ বাবুই পাখির নীড় বাঁধার শিল্পকলা
শুক সারি মনের গোপন দুয়ার অলিখিত সুপ্ত বাসনা।
নিভৃত প্রাণের দরদীয়া প্রণয় পরিণতির উর্ধ্বে মধুময় পরাগমিলন
মম অন্তরে পূর্ণতা প্রেম বৈজয়ন্তী কেতন উড়িয়ে পলাশ রঙে ফাগুনিয়া আবিরে ললাটলিখন।
রাধাচূড়ার প্রেমে আবেগী আলাপ হলুদিয়া পাপড়িগুলো কৃষ্ণচূড়ায় লালিমা আভায় হলুদে বিচ্ছুরিত
ভাবের ঘরে বৈঠা বেয়ে আকুল দরিয়ায় যমুনায় প্রেমাবেগে স্ফীত।।
দহে প্রেম কালিয়া দহে
র মে ন ম জু ম দা র
অধরা অসুখ এক,-- নাম প্রেম বারি;
ডুবে সবে সেই জলে,- সর্বদা তাহারি
অনলে পুড়ে! ধরণী তলে; বিষ-সুধা;-
করে পান, (মিটে তার-'আশিকের ক্ষুধা')।
যেমতি সুখ-সেমতি দুঃখ! তবু চায়,
অবোধ মানুষ জনে; পেয়েও হারায়...
হারানোর কষ্ট দহে 'দগ্ধের- চিতা্গ্নি,!!
ঐশিক চিরন্ত-জ্বালা!- বিধি দেয় বাণী।
দোঁহে প্রেম দহে সুখ; সুমিষ্টি যন্ত্রণা-!
প্রেমে-পোড়া দেশে যেতে নেই কোন মানা।
যাও, খাও, মরো, পুড়ো! বেদ বাক্য সত্য...
ডুবিলে মিলিবে তবে,-- অমৃত-মাহাত্ম্য।
এ'ছন্দ রমেন রচে ভাবেতে পড়িয়া-
ভাব ছাড়া বৃথা জন্ম সংসারে আসিয়া।।
বেবাক বিস্ময়
দী প ঙ্ক র স র কা র
সবটা দহন আমি একা একা সয়ে
গাছের তলে জুড়াই হৃদয়। চলার
পথে কত না চড়াই উৎরাই পেরিয়ে
তবে না স্বস্তির আশ্বাস! মগজে ধরে
না সবটা, কারা যেন আকথা কুকথা
বলে নিজেকে জাহির করে রোয়াবে
উল্লম্ফন দেয়- জানিনা তাদের কপালে
কী লেখা? সোনার চামচ মুখে জন্মেছে
ওরা! শুধু জ্ঞান মারে আমি ও আমরা
কেবল পাপ কুড়াই, জানি না কবে শুরু
হবে আমাদের নতুন অধ্যায়!
অভিমান
উ ৎ প লে ন্দু দা স
যে কয়েকটি শব্দ সংগ্রহ করেছি আমি নদীর কূলে
আর যে কয়েকটি মাত্র শব্দে কলমে ছবি আঁকি আমি
উড়ে যাক তারা দিগন্ত ছাড়িয়ে পাখা মেলে
এসেছিল মেঘ থেকে, আবার মিশে যাক নীলে
যদি চায় খুঁজে নিক অন্য হৃদয়;
যদি ফিরে আসতে চায় আমার কাছে
আসুক যখন শূন্যতার রেশ ঘিরে থাকবে আমায়
শোনাক অন্তহীন গান নিদ্রাহীন নক্ষত্রদের সাথে
বিদায় নিলে, বলুক সোনালী আকাশ আমাকে জড়িয়ে
ভালোবাসা হারায় না কখনো পলাশের হাতছানিতে ভুলে।
তুমি এখন ব্যস্ত অন্য কোনো সংজ্ঞায়
আ ল তা ফ হো সে ন উ জ্জ্ব ল
তোমায় আদর করে,
বুকে টেনে নিতে চেয়েছিলাম,
নিয়েছিলাম বটে!
তোমার চতুরঙ্গ ছত্রছায়ায়।
তোমার ঠোঁটের স্পর্শ
করতে চেয়েছিলাম,
ঠিক আগের মতো!!
অপূর্ণ ইচ্ছের ভালোবাসা
ছিলো বলে!!!
তোমার হাত ধরে
হাঁটতে ইচ্ছে করে ঠিক
আগের মতো-
পরমানন্দ অনুধ্যানে।
তোমার গা-ঘেঁষা গন্ধে
এখনো মন আকুলতা করে-
কোন বসন্ত উৎসবে
তোমার চলবার নতুন পথে।
আমার সবকিছু থমকে গেছে!
ঝগড়া বিহীন শব্দে!!
তোমার,
আনন্দ ছন্দ আমাকে ব'লে দেয়-
এখন সবকিছু তোমার
অন্তিম শয়নে।।
ভালোবাসা শব্দটা এখন,
ভালো লাগে না-
অমাবস্যা অথবা
পূর্ণিমা রাতে!!!
তুমি নামক যে প্রিয় বন্ধু-
ভালোবাসার আঙিনা
সাজাতে চেয়েছিলাম!!
সেই তুমি
এখন অন্যজনের আঙ্গিনায়
দাঁড়িয়ে!!!
বলোতো, আমি এখন ব্যস্ত-
দিগ্বিদিকশুন্য মানুষ ভীড়ে!!
শুকনো বুকে শিশিরে ভেজা
উড়নচণ্ডী দশায়।।
নারী শক্তি
স হ স্রাং শু মা ই তি
আর্যাবর্তে আর্যদের আগমনকালে আর্যরা বেদ রচনা করেন। বেদ পৃথিবীর প্রাচীনতম সাহিত্য। বৈদিক যুগে নারীদের প্রভাব যথেষ্ট পরিলক্ষিত হয়। বেদ রচনায় বহু বিদুষী নারীদের নাম পাওয়া যায়। গার্গী, লোপমুদ্রা, অপালা, লীলাবতী, বিশ্ববারা, খণা, সর্বজ্ঞানী নারী। উপবীৎ, বেদ রচনা ও পাঠ, যজ্ঞ, নারীদের বিচরণ সর্বত্র ছিল। বেদের অন্তিম লগ্নে বা পরবর্তীকালে পুরানো সাহিত্য রচিত হয়। রামায়ণ, মহাভারত- এই দুই মহাকাব্য উল্লেখযোগ্য। আজকের দিনে যে রামায়ণ ও মহাভারত আমরা পেয়েছি তা দীর্ঘদিনের ধাপেধাপে পরিবর্তন, পরিবর্ধন, পরিমার্জিত রূপে রূপান্তরিত। যা ভারতভূমির সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ভৌগোলিক, সভ্যতার পরিবর্তনশীলতার প্রেক্ষাপটে যে বিধান উঠে এসেছে তার নির্যাস সাহিত্য রসে প্রকাশ ঘটেছে। এই দুই মহাকাব্যে যে কোন চরিত্রের অবতারণা হোক না কেন সে কোনো কাল্পনিক চরিত্র বা ঘটনা হোক না কেন, সাহিত্য রচনার প্রয়োজনে উপস্থাপনা করা হয়েছে। যা তৎকালীন সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে কাহিনীর প্রয়োজনে। সমাজকে যতোই পুরুষতান্ত্রিক তকমা লাগাইনা কেন মহামানব, মহাপুরুষ, মহানঋষিগণ, মহাজ্ঞানী,পণ্ডিত যুগে যুগে আবির্ভাব হয়েছেন- যারা নারীমহিমাকে উজ্জ্বল ও চির ভাস্বর করেছেন।
নারীকে হীন, অসম্মান, অমর্যাদার ফলস্বরূপ একটা সমাজ, জাতি, নগর, জনপদ, এমনকি একটা যুগের বিনাশ ঘটেছে। রামায়ণ, মহাভারত সেই বার্তা সমাজকে দিয়েছে। নারীর অসম্মান কোন যুগে কোন কালে কোন স্থানে কোনভাবে মেনে নেওয়া হয়নি ও মেনে নেওয়া যাবেনা। নারীত্বের যোগ্যতার স্বীকৃতি বরাবর।
দুই মহাকাব্যের "মহারণ" নারীর সম্মান রক্ষায়। সীতার অসম্মানে রক্ষকুল বিনাশ হয়েছে। দ্রৌপদীর অসম্মানে কৌরবকুল ধ্বংস হয়েছে। পুরুষ যা অর্জন করে নেপথ্যে নারীদের ভূমিকা থাকে।
মা, ভগিনী, ভার্যা, কন্যা যে দেবী থাকুক না কেন সে প্রকৃত দেবীর আসনে অভিষিক্তা। তাই জ্ঞানের দেবী- সরস্বতী, বেদ মাতা- গায়ত্রী, ঐশ্বর্যের দেবী- শ্রী মালক্ষ্মী। শক্তি স্বরূপিনী দূর্গতিনাশিনী- দূর্গা, কালি, চণ্ডিকা। প্রকৃতি - নারী, শক্তি- নারী, সৃষ্টিতে-নারী। কুষান ও গুপ্তযুগের আরাধ্যা দেবতা নারীরূপে পুজিতা। নারী পুরুষের অর্ধাঙ্গিনী। ভারত আমাদের মাতৃভুমি। ধরিত্রী ও মা। প্রকৃতি- মা। গঙ্গা মা। ভুমি ও মা। জীবন্ত নারী পূজিতা- কুমারী পূজা।
প্রসঙ্গতঃ বলি- মহাভারতে শান্তনু ঘরণী গঙ্গা নিজ শর্তে সাত সন্তানকে জলে বিসর্জন দেন। শান্তনু নীরব। স্ত্রীকে সেই অধিকার দিয়ে ছিলেন শান্তনু। বিচিত্রবীর্য মারা গেলে, মা সত্যবতীর ইচ্ছায়-
বিধবা পুত্রবধূদ্বয় এর গর্ভ সঞ্চার করেছিলেন - সত্যবতীর কুমারী কালে পরাশর ঋষির ঔরসের সন্তান ব্যসদেব। জন্মায় ধৃতরাষ্ট্র, পাণ্ডু। সে সময়ের নিয়োগ প্রথা। ভাবাযায়!! কুমারী কালের সন্তানকে রাজদরবারে আনতে সাহস রেখেছেন। যে আবার বংশ রক্ষার দায়িত্ব পালন করেছেন।
বর্তমানে বিদ্যাসাগর বিধবা বিবাহ উদ্যেগ নিয়েছন। পূর্বে অর্জুন বিধবা বিয়ের নজির রেখেছেন উলুপীকে বিয়ে করে। ভানুমতি, মন্দোদরী আদর্শনারী। দুর্যোধন, রাবণের পাপাচার বন্ধ করতে পারেনি। তাই রাবণ দুর্যোধনের বিনাশ ঘটেছে। সর্ব ধর্মকার্যে স্বামীর সহচর স্ত্রী। তাই সে সহধর্মিনী। দ্রৌপদীর পঞ্চস্বামী।দ্রৌপদীকে দিয়ে প্রমাণিত পঞ্চ পুরুষ কে আয়ত্ব করা যায়। এটাই পুরুষদের বহু বিবাহের বিরুদ্ধে জেহাদ। নারী ও পারে! হিমালয়ের পাদদেশে এখনও এমন জনজাতি আছে যেখানে পাঁচ ভাইয়ের এক বৌ। সেখানে প্রায় প্রতিটি পরিবারের অনেক ভাইয়ের কয়েকটি বৌ। বার বার অগ্নি পরীক্ষা সীতা মেনে নিতে পারতেন। কিন্তু আত্ম মর্যাদায় সীতা তা মেনে নেন নি। সকলকে ত্যাগ করেছেন।
হে নারী ! যোগ্য সম্মান, মর্যাদা নিজেই অর্জন করো। নারী নিজের ক্ষমতায় প্রতিষ্ঠিত বহু ভাবে বহু স্থানে। নারী দুর্বল নয়।প্রতিটা নারী প্রতিটা ঘরে গর্জে উঠুক, কোন বাঁধনে আর নয়। ভুমিষ্ট হওয়া থেকে প্রতিপলে প্রতিপদে বেড়ে ওঠাতে বুঝুক সে দুর্বল নয়। প্রতিটা পরিবার, সমাজ কাঠামোয় নারীদের প্রতি অবজ্ঞা তাচ্ছিল্য আর মানায় না। কোন ক্ষমতার প্রলোভনে আর বশীভূত নয়।
হে নারী! নিজ ক্ষমতায় জাগ্রত হও। নারীকে দমিয়ে রাখার অপচেষ্টার বিনাশ ঘটুক। কোন বাঁধনে দমন নয়। নারীশক্তি, নারী মহিমার জয় হউক। নারী দিবস শুধু বছরে একটি দিন নয়। প্রতিটা দিনই নারীদের দিন।
রঙিন আকাশ
মৌ সু মী মু খা র্জী
শীতের প্রকোপ ধীরে সরে যায়,
আদুরে রোদ ক্রমশ কড়া হয়।
ঠাণ্ডা আমেজ হাওয়া দেয় বাঁশ বনে,
ফাল্গুন মাস বসন্তের আগমনে।
জানান দিলো ঝরা পাতার ক্রন্দন
সাঁওতালী সুরে জেগে ওঠে মহুল বন।
রঙে রসে ভরা গাছেদের প্রেমের বাহার
লাল নীল সবুজে মুগ্ধ কান্তার।
ঝরে গেছে পাতা ভরেছে নবপল্লবে
বসন্তে জাগে রঙের তরু বিপ্লবে।
আকাশ সেজেছে আজ সাদা কালো মেঘে,
বয় বসন্ত সমীরণ দক্ষিণে আকুল আবেগে।
মেহগনি শিরীষ আম মুকুলে মৌমাছি গুঞ্জরণ,
আকুল আশ্লেষে ভাসে সোহাগী মন।
কৃষ্ণচূড়া, শিমুল, অশোক, কিংশুক লাল,
রাধাচূড়া, সর্ষের ক্ষেত, হলুদে মাতাল।
কিশলয় শাখে শাখে, শ্যামল সবুজ বনানী,
নদী গুলি পূর্ণগর্ভা, নীল হিল্লোল তরঙ্গিনী।
রং লেগেছে রাগে বসন্তবাহারে,
ভাটিয়ালি সুর তোলে মাঝি মল্লারে।
একাকী বাউল বাজায় নিয়ে একতারা,
বসন্তে বেহাগী মনের, সুর তোলে তানপুরা।
ধামসা মাদলে ভাসে বসন্তে হিল্লোল,
মহুল সুরায় মাতে সাঁওতালি দল।
দুয়ারে দাঁড়িয়ে আছে ফাগ উৎসব,
জাত ধর্ম নির্বিশেষে পালো হে পরব।
হিংসা দ্বেষ ভুলে আবীরে রাঙাও মন,
মেতে উঠুক নির্বিশেষে আদরণীয় ফাল্গুন।
মণিহারি
দে বা ঞ্জ লি সে ন
কথার কথা নয়
আতিপাতি খুঁজছে আমার চোখ
ওমনি ইচ্ছেরা মেলল ডানা
দশ হাত, মাত্র দশ হাত দূরে
অনেক রোমাঞ্চ ভরা দিনে-
সামনে দিয়ে লোক বোঝাই গাড়ী, মানুষের ওঠানামা
সাথে আমার হৃৎপিন্ডটা!
এটা কোন গল্প কথা নয়।
কিশোরীর দুই বিনুনির সাথে, শক্ত পোক্ত করে
যত্ন ভরে রাখা।
এসো, মনিহারি দোকানে যাই
একসাথে কাজলের একটা টিকা লাগাই।
না পেলে, ওই যে রাঙা মেঠো পথ
পথের ধারে পোড়া হাঁড়ির ভুসো
কপালে এঁকে নেবো।
রাত জাগা
সু প্রি য় কু মা র
অন্ধকার আকাশে সারা রাত নক্ষত্রেরা
জেগে থাকে
একটা একলা চাঁদকে ঘিরে।
বসন্ত বাতাসে
একটা লক্ষ্মী পেঁচা
ছাদের কার্নিশে এসে বসে, তাকিয়ে থাকে।
কোথা থেকে যেন
একটানা
কুকুরের ডাক শোনা যায়।
কোনো বাড়ির
নিস্প্রভ আলোর পর্দা ভেদ করে
শিশুর কান্না ভেসে আসে।
আর একটা লক্ষ্মী পেঁচা আসে কার্নিশে,
আগেরটার পাশে একটু বসে,
এদিক ওদিক দেখে।
তারপর ধীরে ধীরে উড়ে যায় একসাথে।
বসন্ত বাতাসে অন্ধকারে নক্ষত্রেরা
জেগে থাকে
আর জেগে থাকে একা চাঁদ।
পথ
দে ব যা নী সে ন গু প্ত
ও গো পথ,.........
তোমার শুরু কোথায়?
কোথায়ে বা শেষ?
আদি অনন্তকাল ব্যাপী,
চলার নেই শেষ!
শুরু হয়েছে কবে,
কে বলতে পারে,
ও গো পথ,.......
তুমি আছো বেশ,
স্বাধীন...... কারুর নহে অধীনস্থ।
সকলেই পথ কেন করে ভুল,
হারিয়ে যেতে চায়ে সুদূর থেকে সুদূরে,
পথের মায়া নয় ত্যাগের,
চেনা পথ ও লাগে অচেনা সংগ্রাম তাকে বলে।
তোমার ব্যাপ্তি দিগন্ত বিস্তৃত,
আদি মানব থেকে আধুনিক মানুষ,
সকলে করেছে তোমাকে অনুসরণ,
করেছে তোমার খোঁজ!
পথের সন্ধানে চলেছে পথিক,
হারিয়ে ঘর সম্পত্তি শেষ সম্বল।
কখনও সরু আলের পথ,
কখনও তুমি সুন্দরী,
তৈল চিকন কালো,
হিলহিলে শরীর।
কখনও বা কঙ্কালসার জীর্ণতা,
হত দারিদ্র্য অভাবের স্বাক্ষর,
মেঠো পথে কত গাভী ছাগ, বনের বাঘ,
আসে যায় বাউল একতারা বাজায়ে,
কলসি কাঁখে গৃহরমণী
জল ছলকে ছলকে চলে,
পায়ের নুপুর কোমরের বিছা দোলে।
কচি সবুজরঙা পাতা পথের দু ধারে,
বনফুলের আবরণ শুকনো পাতারা ফিস ফিস কথা বলে।
অন্ধকার ঘুপচি পথে!
জীবন যেখানে শেষে এসে দাঁড়িয়েছে!
বীভৎস গন্ধযুক্ত কালো নর্দমার,
পাশে দাঁড়িয়ে থাকা রাতের পরী,
শরীরের বস্ত্র একটানে খুলে ফেলে সে,
পেটের ক্ষুধা নিবারণের জন্য,
হাসি দেয় সঙ্গে....
ও গো পথ,........
দু হাত বাড়িয়ে আমি আছি দাঁড়িয়ে,
হারিয়ে যেতে চাই গো,
এই ভুবনে।।
তুমি আসবে বলে
বি কা শ গুঁ ই
তুমি আসবে বলে-
হিমেল পৌষে একমুঠো ওম রাখি,
তুমি আসবে বলে-
খোলা জানালা সোনারোদে মাখামাখি।
তুমি আসবে বলে-
কফি হাউসে পাশের সিটটা খালি,
তুমি আসবে বলে-
সেলাম ঠুকেছে রহমত, বনমালী।
তুমি আসবে বলে-
গঙ্গার ঘাটে নৌকাটি আছে বাঁধা,
তুমি আসবে বলে-
খাদে,পঞ্চমে ভাটিয়ালি সুর সাধা।
তুমি আসবে বলে-
এক্কা গাড়িটা দাঁড়িয়েছে ক্ষণকাল,
তুমি আসবে বলেই-
আমার অপেক্ষা আদি, অনন্তকাল।
অভিমানী পিতা
উ ত্ত ম ব নি ক
জানো, বাবা আজ চলে গেলো।
না না রাগ করে নয়, অভিমানে।
কোথায়? ওই যে উপরের কালো বাগিচায়
যেখানে একে একে সবাই চলে যায়।
কিছু প্রাপ্তি, অনেক অপূর্ণতা, বিফলতা সঙ্গী করে
বাবার পেশায়, আমার নেশা। হয়েছিলাম ভবঘুরে।
থাকতে বেঁচে দিলাম না কদর, লেখা পড়া বাদ,
দিবা রাত্রি ঝগড়াঝাটি মিটল আমার সব সাধ!
আশীর্বাদের ঝুলি নিয়ে উজাড় করে ঝুলি,
অবুঝ আমি! উপহাসে ফিরিয়ে দিতাম গালি।
বাবা তুমি স্বার্থপর! একাই গেলে চলে,
একটি সুযোগ দিতে যদি, আমি যে তোমার ছেলে।
বড় শূন্য এই পৃথিবী তুমি ছাড়া হে পিতা,
বুঝতে অনেক করলাম দেরি, তুমি ছিলে যে আমার বিধাতা।
নারী
অ ভি জি ৎ দ ত্ত
আমি নারী
সব পারি
তবে মানুষরূপী পশুদের কাছে
কেন আমরা হারি?
দেখোনি মা দুর্গার দানবদলনীরূপ
পড়োনি দশভুজা হয়ে উঠার কাহিনী
তবে কেন নিজেকে ভাবো অসহায়?
চাই শুধু আত্মবিশ্বাসী ও নির্ভীক হওয়া
দেখবে কখন যেন বদলে গেছে পৃথিবীটা।
নারী তোমাকে শ্রদ্ধা করি
তোমার থেকেই সৃষ্টি সকলেরি
তোমাকে যারা করে হেয়, অমর্যদা
বৃথা তাদের জন্ম নেওয়া।
যেখানে তুমি পেয়েছো সম্মান আর শ্রদ্ধা
সেই সমাজের হয়েছে অগ্রগতি
পেয়েছে সকলেরই প্রশংসা।
তবে আর দেরী কেন নারী?
এখনই উঠে দাঁড়াও
সব বাধা, বিপদকে হারিয়ে
পৃথিবীকে বদলাও।
বসন্তে ভালোবাসা
ব দ রু ল বো র হা ন
বসন্ত বাতাসে লাগে ভালোবাসার ছোঁয়া,
কৃষ্ণচূড়ার রক্ত-রঙে মন গিয়েছে খোয়া।
আউলা বাতাস বাউলা মনে জাগায় প্রেম ও প্রীতি,
বাসন্তী রঙ শাড়ির খোঁপায় হলদে গাঁদার সিঁথি।
মন হয়ে যায় উদাসী আর কাব্যে পাগল-পারা,
নৃত্য-গানে, রঙ-তুলিতে ফাল্গুনী ভাব ধারা।
দূর্বিনীত ভালোবাসা শ্যামের বাঁশির সুরে,
কোন অজানায় যায় হারিয়ে, অচিন সমুদ্দুরে?
বসন্তে হয় উদাস উদাস শিল্পী এবং কবি,
প্রকৃতি হয় ঘোমটা টানা লজ্জাবতী ছবি।
বসন্তে পাই ভালোবাসার উষ্ণ-মধুর গীতি,
মন হয়ে যায় খুব সাহসী, নেই কোনো তার ভীতি।
প্রয়াস
আ ন ন্দ শি কা রী
চেষ্টা করতে গিয়ে সব সীমা আজ লঙ্ঘন করেছি।
অন্তিমের পথে এখনও দাঁড়িয়ে,
ব্যর্থ, ব্যর্থ, ব্যর্থ
ক্রমশ সংকীর্ণতা গ্রাস করছে।
মুখোমুখি হওয়ার সাহস নেই আজ আর।
তবে কি সময় নেই আর!
কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে লড়াই,
ভাবমূর্তি, বিচক্ষণতা সব একে একে দিক পাল্টাচ্ছে।
কমছে সময়, বাড়ছে প্রহর
মনে হচ্ছে কেমন যেন হেরেই গেলাম।
ভাবনারা আজ সন্ধি করতে ব্যস্ত,
কেউ যদি একবার হাত'টা এসে ধরতো
ঠিক মা যেমন ধরে।
আবার তাহলে পারবো আমি,
শূন্য থেকে শুরু করে
একেবারে একশো'তে পৌঁছাবো ধাপে ধাপে।
এ বসন্তে
শি খা দ ত্ত
এই নাগরিক কোলাহল ছেড়ে
কিছু সময় যেতে চাই নিরুদ্দেশে,
যেখানে আলো হয়ে ফুটে আছে
কাঞ্চন ফুল আর বোগেনভেলিয়া,
যেখানে আরণ্যক ঘ্রাণ আর মাদলের সুর,
হলুদ বনে জেগে থাকে হরিণীর চোখ,
লাল ঝুঁটি মোরগের ডাক, নিকানো উঠোন,
সেখানে দাঁড়িয়ে দেখি আর পথ নেই।
আজএই নিজেকে ভাসাবো,
আমার আমিকে ভাসিয়ে দেবো ভরা জ্যোৎস্নায় একান্ত গোপনে এই পলাশ বসন্ত স্নানে।
স্বরলিপিটুকু বাকি
দু র্গা প দ ম ন্ড ল
পাঠিয়েছিলাম গুটিকয় কথা,
বলেছিলে সুর দেবে;
রাত্রির অনুভবে।
কথার পিঠেতে সাজিয়েছিলাম
কিছু উড়ন্ত পাখা,
আগুনের আঙরাখা!
মহুয়ার ফুলে ভরে গেছে মাটি
রেঙেছে উত্তরীয়---
চেয়ে দেখো নি কি প্রিয়?
ভরা বসন্তে সেই সব কথা
এখনো উড়ছে নাকি!
এসে ফিরে গেল কত ফাল্গুন
স্বরলিপিটুকু বাকি।।
বসন্ত এসে গেল
ছো ট ন গু প্ত
বিগত শীতের ছায়া পথ হারিয়েছে
কবে যেন পাখিদের ফুলেদের ছবি
বিহ্বল বাতাসে ভোরে আলো আনিয়েছে
কাল মধুমাস বেলা ছড়ানো সুরভি
উচাটন ভ্রমণের দিনলিপি লিখে
পলাশের দেশ যাকে ডেকে চলে গেল
অভিমানী রোদ্দুর ছায়াপথটিতে
নদী বন পাহাড়ের ঢালে এলোমেলো
কথা ছিল খোলামাঠে হাতে হাত রাখা
অনুরাগ অভিমান মুছে দেওয়া যাবে
গুরুভার নেমে গেলে ফেলে দিয়ে ঢাকা
একটা নতুন গান তুমিও শোনাবে
বসন্ত এসে গেল তবু এই একা
উঠোনে ঘরের কোণে ম্রিয়মান আলো
সময় তো দায়হীন তাই সীমারেখা
মুছে দিয়ে রাত্তিরে জেগে থাকে কালো।
কই, কোথায় সেই কবিতা?
প্র দী প সে ন
দিনের পর দিন
কম তো লিখিনি কবিতা।
শব্দভাণ্ডারে ঢু মেরে মেরে
শব্দচয়ন করে করে ভাবের মালা গাঁথি।
লেখা শেষ করে ভাবি-
এই তো, এই সেই কবিতা যা লিখতে চেয়েছিলাম।
নিজেকে মনে হয় যেন দক্ষ শব্দকারিগর।
এরপর তৃপ্ত মনে নিজের সৃষ্টিতে চোখ রাখা।
কিন্তু এ কী!
ক্ষণস্থায়ী উদ্বায়ী আনন্দ আর তৃপ্তি মুহূর্তেই উধাও!
যা লিখতে চেয়েছিলাম তা তো এ নয় !
মূর্তিতে প্রাণসঞ্চারই যে হচ্ছে না কিছুতেই।
তাই শব্দ প্রতিমা গড়ে আর সাজিয়ে চলেছি,
সাজিয়েই চলেছি দিনের পর দিন।
কিন্তু কই, কোথায় সেই কবিতা
যাকে সৃষ্টি করে বলা যায়-
এই তো, এই সেই সৃষ্টি যাকে নিয়ে স্রষ্টার অহংকার চিরস্থায়ী হয়?
কে জানে, সেই সৃষ্টি আদৌ সম্ভব হবে কিনা কোনোদিন!
তুমিই ছেয়ে আছো
প্র দী প শ র্ম্মা স র কা র
সারামুখে তৃপ্তির শান্তচ্ছটা,
মধুবন্তী ছায়া মেখে যেন গোধূলি চিত্র!
প্রকৃতির রূপ রস স্পর্শে জড় করা চিন্ময়ী।
ছল-প্রসাধনী সেধে সেধে চলে গেছে,
কালোর মুখে আলো ফোটাবার উদ্দেশ্যে।
এখানে কিন্তু আকাশ চেয়েছে সরলরেখায় চুমকি–
ছিটকে আসা মেঘের গায়েপড়া লজ্জা,
চন্দন ত্বকে বট পাতার শ্যাওলা স্নেহআদর–
তোমার ঠোঁটে তোতা-ময়নার অনর্গল ভাষ্য,
হাঁটা চলায় হরিণী লাস্য,
লজ্জার গোলাপী ছোঁয়া চিবুকে,
পালকের মত স্পর্শসুখ জাগানো বুকের ভিতর
বিশ্বাসের দামাল পাটাতন।
তুমি কোন বিদ্যার খই ফোটানো যন্ত্র নও,
সহবতের সংস্কারে সীমন্তিনী সাধ্বী।
ঠোঁটকাটা বিজ্ঞাপনের কুশীলবের চোখে
নেহাতই শূন্য।
কালের চালচিত্রে ভাস্বর সেই অনাবিল তুমি।
প্রেম ডোরে
র ত ন পা ল
সুন্দরী নারী আহা রূপ তারি ছলনার ঢালে সাজি,
দোলা দিয়ে মনে সদা ক্ষণে ক্ষণে রিনিঝিনি সুরে বাজি।
সে এক পলকে পুরোটা ঝলকে তনু মনে মোহে ভরে,
আরো আশা জাগে তারি দিকে ভাগে আঁখিপাতে হৃদে হরে।
দেখার তাড়নে সেই সে কারনে চোখে চোখ রেখে খালি,
অভিসারে যাই মন ভাবে তাই সোহাগ পরতে ঢালি।
লাভ ডুব হৃদে দ্রুত ওঠে সিধে ধুকপুক করে হায়,
প্রেমের সাগরে হয়েছি হাঘরে তীর বেঁধে পাখি তায়।
অব্যক্ত ব্যথা লেখা কোথা কথা কোন্ গহীনের পারে,
কোন্ সে তিমিরে আঁধার নিবিড়ে সে কোন্ অচিন দ্বারে।
মন ছুঁয়ে চলে সেই ধরাতলে মন ঘুরে ঘুরে মরে,
হা মোর প্রেয়সী কোথায় শ্রেয়সী গাই গুন গুন করে।
এ কোন্ খেলা রে প্রেমের মেলা রে রচি গাঁথা মালা রূপে,
ইতিকথা এই মনে ধরেছেই রাঙায়ে কিরণ ধূপে।
ছোট আশা দিয়ে রঙ রূপ নিয়ে বেড়েছে যে প্রেম শত,
সেকি বাঁধা মানে সদা থাকে শানে খিলখিলে অবিরত।
নিভৃত চারণে শোনে কে বারনে উদ্ধত এই আশা,
আশার সায়রে প্রাণপ্রিয় করে ভালোবাসা খেলে পাশা।
আজ চারিদিকে বুক চিরে চিরে চিতিয়ে মারছে মোরে,
নয় আনকোরা কই মুখচোরা খুঁজে যায় প্রেম ডোরে।
বসন্ত হতে পারো
জ য় না ল আ বে দি ন
তুমি ভীষণ অভিমানী হয়ে উঠছো দিনদিন
বলা কথার হেরফের সহ্য করতে পার না,
চলে যাওয়া বসন্তকে ফিরে পাওয়া যায় না-
এই কথাটুকু বোঝাতে পারে না তোমাকে।
পলাশ, শিমুল রঙিন অভ্যর্থনা শেষ করেছে
কোকিল বসন্ত ছাড়াও মনের খুশিতে
মধুর ডাক ছড়ায়।
তুমি বকুল গাছের তলায় ঠায় দাঁড়িয়ে
অপলক তাকিয়ে দূরের পানে-
আমি জানি, তুমি ভুল ইচ্ছে পূরণ করতে
অপেক্ষায় আছো,
সবকিছু মনের মত হয় না- কিছু মতকে
মেনে নিতে হয় স্বেচ্ছায়।
তুমি তো পার এখন বসন্ত হতে
শিমুল-পলাশের ঘ্রাণে-
আমাকে আজ ভরিয়ে দাও না হয়,
ফুলের মত তুমি ফুটে ওঠা আমার
মনের আঙিনায়...
বসন্ত এলে
বি জ য় শী ল
ঝরাপাতা, ন্যাড়া ডাল, মরা গাছ
কার ঘাড়ে দায় চাপাবো আজ?
সব কি ফাটা-চাম বুড়ো থুত্থুরে
শীত-শীতল জ্বরে পুড়েই মরে?
রোদন ভরা এ বসন্তে আগুন কত
পোড়ে মানুষ মরে মানুষ কত শত
মৃত্যুদায় নিতে চায় না এ সংসার
তবু তুই এলেই মিলন-শীৎকার
কৃষ্ণচূড়া পলাশ শিমুল যত ফুল
লাল! সেসব কি রক্ত বিলকুল?
নাকি নতুন পাতায় ফুলে মুকুলে
প্রেমে বসন্ত হাসে মিতা তুই এলে
কতো মন লাল হয় আবির-লালে!
নাম
আ স গ ড় আ লি মি দ্দ্যা
স্বাচ্ছন্দ্য বজায় রাখতে-
উপলক্ষ্যের উপলব্ধির তারও আগে রাখো, নামকে?
আত্মবিশ্বাস রাখি, অহংকারকে রাখি না শরীরে?
তবুও নামকে রাখে বিরুদ্ধতার- দূরত্বে
উচিত অর্থে প্রশ্ন ওঠে-
প্রসঙ্গের প্রাসঙ্গিকতা আসবে
তবুও "মানুষকে" রাখো মানবিকতা, মনুষ্যত্বের সঙ্গে?
নামের তাৎপর্য রেখো শরীরে
পদমর্যাদা পাবে পদে পদে
তবুও আবেগ আর একবার আসে দেখতে
বিবেকের কাছে পরাজিত হয় সহজে
আবেগেই সীমান্তের সীমাকে অতিক্রম করে,
আজ উচ্চতার উত্তীর্ণতাকে দিয়েছে ছুঁয়ে,
বিবেক মানতে পারেনা বিশ্বাসে!
জাগ্রত শরীরের স্মৃতির উপস্থিতি শরীর আর কত'দিন?
দূরত্বের স্মৃতি ক্ষয়ে যেতে থাকে
দুর্লভ তবুও দুর্বলে স্মৃতিকে শরীর বলে উঠে?
বিরহের বসন্ত
ঊ ষা রা নী স র কা র
বসন্ত আসে বসন্ত যায়
বিরহের কোকিল শুধুই গায়।
পোড়া মন বোঝে না কেনো
চির যৌবনা হতে চায় যেনো।
পলাশ শিমুল ফোটে বনে
ভ্রমর ছোটে মধু আহরনে।
ফাগুনে আগুন দহন হিয়া
জুড়াই বলো কোথা গিয়া।
শান্ত নদী পথ ভোলা
প্রেম বুঝি থাকে তোলা
অবুঝ মনের আনাগোনা
মানুষটা যে চির চেনা।
আকাশটা অভিমানী হলেই
ছ ন্দা দা ম
আকাশে মেঘ ঘনালে বা সম্পূর্ণ চরাচরটা অভিমানে মুখ ভার করে বসে থাকলে আমি...
আমি খাতা কলম নিয়ে বসে পড়বার একটা অছিলা খুঁজি,
কথাগুলো শাওন বারিধারার মতো কলমের জানালায় যেন ঝেঁপে আসে...
কারো মুখ, বিক্ষিপ্ত কিছু কথার কুচি, কাঁচ ভেঙ্গে পড়া হাসির শব্দ...
আর কিছু স্মৃতির কুউউউউ ঝিকঝিক রেলগাড়ি... আমাকে দিকশূণ্যপুরের পথে হারিয়ে যেতে বিবশ করে তোলে!
একটুকরো আকাশী জানালা তখন আমার চিঠির
পাতা হয়ে কথা তুলে দেয় আমার কলমে,
রবিঠাকুর এসে বসেন আমার কাছটায় যেন...
বলে উঠেন... তোমারেই যেন ভালো বাসিয়াছি শতরূপে শতবার,
আমার শতচ্ছিন্ন মন, আগোছালো ঘরদোর, আমার খেলনাবাটির সংসার....
সব সওওওওব এক ছুট্টে গিয়ে লুকিয়ে পড়ে!
আকাশটা ছোট্ট মেয়ের মতো অভিমানী হলে...
আমি রবিঠাকুর হয় যাই, আমি শান্তিনিকেতন হয়ে যাই,
আমি মুহুর্তের মধ্যে গীতাঞ্জলি হয়ে যাই!
কি আশ্চর্য তাই না!
আমি থাকবো
সু মা গো স্বা মী
বসন্তের আবীর মাখা বাতাসে
যখন তুমি রঙিন ফাগ খুঁজবে উথালপাথাল হয়ে,
আমি তখন সেখানেই থাকবো
এক আকাশ নীল হয়ে।
বসন্তের সবুজের সমারোহে
যখন তুমি দখিনা হাওয়ার খেয়ায় সুরের মূর্ছনা তুলবে,
আমি তখন সেখানেই থাকবো
এক অরণ্য সবুজ হয়ে।
বসন্তের রোদে ভেজা দুপুরে
চোখ ধাঁধানো তাপে তুমি যখন বড্ডো কাহিল,
আমি তখন সেখানেই থাকবো
কাঞ্চন রেণুর হলুদ হয়ে।
আমি থাকবো, আমি থাকবো
বসন্ত প্রকৃতি জুড়ে।
পলাশের পথে
সু মা দা স
বসন্ত এখন নব যৌবনা
লাল পথের পলাশের বাঁকে
শিমুল যেন তারই সাথে
মনের ছবি আঁকে।
কৃষ্ণচূড়া আহ্লাদে অটখানা
বসন্ত বুঝি তারই প্রেম মোহে
বিছিয়ে দিয়ে মখমলী চাদর
পলাশ সুন্দরী তোমারই অপেক্ষায় রহে।
এসো তুমি ধীর পায়ে
লাল পলাশের রঙিন পথে
রাঙিয়ে দেবে তোমায় রক্তিম সাজে
ভরে নেবে আপন মনোরথে।
ইচ্ছে করে
গৌ রী স র্ব বি দ্যা
দুপুরের নির্জনতা মনকে মাঝেমাঝে অস্থির করে
খাঁ খাঁ রোদের স্পর্শ শরীরে উত্তাপ ছড়ায়
নিস্তব্ধ আকাশে তাকিয়ে থাকলে নিজেকে বড্ড একা লাগে
কখনো ধূসর, কখনো খন্ড খন্ড সাদা কখনো বা নীল মেঘে ছেয়ে যায় পুরো আকাশ!
এমনটা নয় কখনো কখনো চোখে আরাম মেলেনা!
মাঝে মাঝে একটা দু'টা পাখি উড়ে যেতে দেখি, তাদের ডাক শুনি।
কখনো কখনো তাদের খুব পিপাসার্ত মনে হয়! তাদের খুব একা মনে হয়!
তারা কি আপন কাউকে খুঁজে বেড়ায়!
তাদের একটা সুন্দর মন আছে,
আর মন আছে বলেই তারা মানুষকে খুব বিশ্বাস করে, কেউ কেউ পোষ মেনে যায়!
একবার যদি মনে ঢুকে তাদের মনের কথা জানতে পারতাম!
খুব ইচ্ছে করে! একবার....... !
একবার যদি এই জন্মে পাখি হতে পারতাম!
রঙিন বসন্ত
ব র্ণা লী মু খা র্জী
বসন্তের রঙিন মেলা
প্রাণের মাঝে জাগায় দোলা,
আরবার আসুক এই বসন্ত
সুরের ফাগুন ঢেউ তোলা।
লাল হলুদে একাকার অনন্ত আকাশ
বাণী বন্দনায় মুখরিত আকাশ বাতাস।
আগুন রঙা বসন্ত এসে রাঙিয়েছে বারবার,
শেষ হয়েও হয় না শেষ বসন্তের বাহার।।
শিমুল পলাশের রক্তিমাভা মনকে করে পাগলপারা,
বসন্তের উদাস বাউল একতারা হাতে দিশেহারা।
অশুভ শক্তির বিনাশ করে
হোলিকা দহন উৎসব,
মনের কালিমা দূর করে
সবে মিলে খেলি বসন্তের দোল উৎসব।।
ফাগুনের রঙে রাঙিয়ে দিয়ে মেতে উঠি নব ছন্দে,
কোকিলের কুহুতানে মন ভেসে যায় মদির আনন্দে।
চির বসন্ত নেমে আসুক মনের গোপন অলিন্দে,
এটুকুই তো চাওয়া পাওয়া মিথ্যে মায়ার শহরে।।
বিড়ম্বিত দায়ভার
কা ক লী পা ল
বন্ধকী ভাবনারা এলোমেলো চৈত্রের দহনে উদাসীন,
আতিশয্যের জৌলুসহীনতায় প্রকট;
স্মৃতির সরণী বেয়ে পরাজয়তার গ্লানি,
এ যেন এক আলাদা অসম্পূর্ণ জগত।
নিখোঁজ ভালোবাসার মায়ায় হারানো প্রেমিকের আবছায়া অবয়ব,
আমার শহরে নিষিদ্ধ অনুপ্রবেশ ঘটায় বৃষ্টি!
যেন নিঃসঙ্গ গাছের নীরব কান্না।
সেই শহরের স্বজনহারা নির্বাক পথিক আমি;
এক পশলা অবিশ্রান্ত বৃষ্টির ধারাপাতে বয়সের ভারে নুব্জ্য দালানের কড়ি-বরগায়,
মাটির সোঁদা দীর্ঘশ্বাসে নামহীন এক ঘাসফুলে,
জৈবিক নিরুত্তাপ জীবনপঞ্জীর হিসেবের খাতায়;
যোগফল শুধুই শূণ্যতা।
নিভন্ত সূর্যের বাড়তি আলোকবিন্দু শুষে বাঁচার আকাঙ্ক্ষা!
মৃত্যুর ঘ্রাণ শোঁকে অদৃশ্য রাতের শুকতারা।
পঞ্চমী তিথির মরা চাঁদ জেগে কাব্য বোনে আমার নিদ্রাহীন দু'চোখ।
জীবনের দায়ভার সঁপে দেবো অবসন্ন চৈতি দহনে,
বিগত জন্মের ব্যর্থ অহমিকারা পুড়ে ছাই হবে;
নয়তো কয়েদীর মতো অতিবাহিত হবে জন্মান্তরে।
স্রোতস্বিনী
অ রি ন্দ ম চ ট্টো পা ধ্যা য় ভৈ র ব
বাইরে দূরে বেড়ায় ঘুরে হৃদি ভ্রমণ সুখে
লাবণিভরা শ্রাবণী নদী দাঁড়ালো পথ রুখে।
এ নদী এতো স্রোতস্বিনী তার যে এতো ঢেউ
দেখিনি আগে নজর করে বলেনি ডেকে কেউ!
নজর ছিলো সমাজভীরু বাঁধা গতেই যেতো
অথচ সেই পথের পাশে দাঁড়িয়ে ছিল সে তো!
চোখ পড়েনি চোখে কানেও শুনিনি তার বাঁশি
শাঁওনসাঁঝে আঁধার ফুঁড়ে ছলকে গেল হাসি!
কি অকারণ পুলকে মন ডাকায় ঠোঁটে বান
স্রোতস্বিনীর গভীর জলে কিসের এতো টান!
বঁধূয়া সাজে
নে পা ল সূ ত্র ধ র চ য় ন
অলক্ষ্যে হাসিয়া যাও
হৃদয়ে তুলিয়া বাও
নুপুর নিক্কনে শুনি
মনকাড়া সুরধ্বনি।
আঁখিতে সমুদ্র নাচে
অন্তর তাহারে যাচে
হস্তে রেশমি বাজে
ঘোমটা টানিয়া লাজে।
বসন্ত এসে গেছে
বিরস ধরনী মাঝে
ভ্রমরের গুঞ্জন
প্রেয়সী বঁধূয়া সাজে।
আমার অপেক্ষায় থাকিস শুধু তুই
সৌ মে ন দ ত্ত
স্নায়ুর দ্রুত গতি এখন আর অবাক করে না,
স্বপ্নেরা পাল তোলে, ঝিনুক গোমরায়,
আঙুলের কালবৈশাখী তবু থামে না, থামে না,
বসে আছি এখনও নক্ষত্রের টিমটিমে ভাঙাচুরো,
আলোর পাঁচিলে তোর রেখা ধরে আছি,
বাকি সব কিছু আঁকাবাঁকা, ফাঁকা।
শব্দকে আদর করা পুরনো অভ্যাস,
আড়াল করে রাখাটা বেশ কঠিন,
আড়িপেতে বসে থাকে শিরায় শিরায়।
ডুবে থাকি নিঃশব্দ শব্দের সাগরে,
তুই শুধু থাকিস আমারই অপেক্ষায়।
তোর আমার যতখানি দূরত্বের ব্যবধান,
কবিতারা নিয়ে আসে তোর কাছে,
তোর বুকে আছড়ে ফেলে শিকল বেঁধে,
সারা শরীরে তোর লিখে দিই ভালোবাসার শব্দগুচ্ছ, ভালোবাসার কবিতা।
শব্দ ভাঙার শব্দে ঘুম ভাঙে প্রতিদিন,
চোখে মুখে বানভাসি আমি তোর ঐ ধরাধামে।
তুই ভাবিস নিছক অভিনয়,
তোর আমার যতখানি দূরত্বের ব্যবধান।
হারানো শব্দের ভীড়ে জানিস কি চাই...?
তোকেই চাই, শুধু তোকেই চাই, হাত বাড়িয়ে তোকেই চাই।
কান্নাগুলোকে টাঙিয়ে রাখি ভেজা জানালায়,
ভীষণ জ্বরে হাত দুটো আড়ালে তোরই চাই,
তোকেই চাই আমার কবিতারা মৃত পোষাকে শহরের বুকে একটু উষ্ণতার খোঁজে এগিয়ে যায় বারবার বারবার।
মধুচন্দ্রিমা
সু র জি ৎ চ ক্র ব র্তী
আমি রাত খুঁজি তারাদের নিয়ে
গোধূলির মরা আলোয়,
কিম্বা বুড়ো বটের ঝুরি বেয়ে
নেমে আসা শিরায় উপশিরায়,
ছড়িয়ে পড়ি আশ্লেষে প্রেমিকার করতল ছুঁয়ে।
পিরামিডের গান শুনিয়ে জাগিয়ে তুলি
ফিনিক্স পাখিটাকে- যে কিছুক্ষন আগেই আত্মবলিদান দিয়েছিলো
ভালবাসায় রক্তিম হয়ে,
বিকেলের সোনালি রোদে
ম্যানিকিওর করা তোমার হাতে
রাত আসে, রাত নামে।
আমি রাত খুঁজি তারাদের নিয়ে...
আসলে যদিও কোন মধুচন্দ্রিমা ছিলনা আমাদের।
একটা উপহারের খোঁজে
কৌ শি কী
একটা উপহার দিতে চাই
এমন কিছু যা শুধু তোমাকেই মানায়
তোমার হাতে সে উপহার তুলে দিলে
তা, তোমার সঙ্গে মিশে যাবে তোমার মত হয়ে
কি দিই
ভাবতে ভাবতেই
বেলা বেড়ে গেলো
সকালের আধো আলো
মধ্য সকাল ঘোষণা করলো।।
তুমি বোধহয় উপহারের আশায়...
এই আশার কথাটা আমার অনুমান মাত্র
তোমার মনে কেনোদিন কোনো আশা
অঙ্কুরিত হয়েছিলো কিনা
তা আমার অজানা।।
সে যা-ই হোক
কিছু শব্দ কিছু মানুষের আগে বসালে
মনের মধ্যে কিছু সুগন্ধি ছড়িয়ে যায়
তুমি তেমনই একটা মানুষ
যার গায়ে ঐ আশা শব্দটা বসালে
অকারণ আমার মনে কিছু সুগন্ধ
ছড়িয়ে পড়ে।।
এসব থাক
সেদিন
সেই কতদিন আগের কথা
তুমি হাঁটা দিলে অন্য এক রাস্তায়
আমিও আমার নিজের জাঁতাকলে
ঘুরতে লাগলাম
দিন মাস বছর পেরিয়ে
জীবন কত ভালো মন্দ গল্প শেনালো
এ গল্পগুলো শুনতে শুনতে
তোমর কথা, তোমার জন্য সেই অসামান্য
উপহার খোঁজার কথা
একরকম ভুলেই গেলাম।
শুধু এক একটা অত্যন্ত
তপ্ত দিন পার করার পর
আকাশের বুকে যখন ঠান্ডা
চাঁদ পায়চারী করতো
তখন বুকের অনেক অনেক গভীরে
একটা না ভোলা চাউনি উঁকিঝুঁকি দিত।।
সেই না ভোলা সরণি বেয়ে
আমি আজও খুঁজে চলেছি একটা উপহার
যা শুধু তেমাকেই মানায়
যেদিন খুঁজে পাবো
রেখে আসবো তোমার চৌকাঠে।।
কিছু অনুভূতি, কিছু প্রলাপ
শু ভ জি ৎ দা স দাঁ
ভেবেছিলাম দেখা হবে পলাশী বিকেলের অকপট বসন্তবেলায়,
আলোর শৃঙ্গারে সোহাগী হয়ে উঠবে কিছু অনুভূতি, কিছু আদুরে প্রলাপ,
তারপর ছুঁয়ে দেখবো কখনো না-ছোঁয়া অনাবৃত সন্ধ্যার সৌখিন মুহূর্ত।
কথা ছিল বসন্ত ফিরে এলে লেলিহান আগুন হবো,
মর্মরে লিখে যাবো ঝরে যাওয়ার গান,
শিরায় ছড়িয়ে দেবো বেসামাল উত্তাপ,
গোধূলির অস্তরাগ...
যদি বলো বড্ড শরীরী এই চাওয়া- তবে তাই,
আটপৌরে মনও যে কখনো কখনো ভীষণ অবাধ্য হতে চায়,
বাঁধভাঙা জলোচ্ছ্বাসের মতোই...
প্রযুক্তি
শু ভ জি ৎ দা স
বিজ্ঞান আশীর্বাদ নাকি অভিশাপ?
নাম্বারটা হেব্বি আসবে
একটুকু নেই চাপ l
পাতার পর পাতা লিখে যাই
ফ্রিজ, টিভি বড়ো প্রিয়
ওয়াকম্যান, এসি, কাজের জিনিস,
আরামে স্বয়ংক্রিয়
দিব্যি ছিল আশীর্বাদে
পরোক্ষতেও অভিশাপে,
ক্যাসেট শোনার দিন ফুরিয়ে
বাজারে সিডি এলো,
দুটি বছর যেতে না যেতে
মাইক্রো উদয় হলো l
চুকলো ল্যাঠা এসডি কার্ডের
ভ্যানিশ টেলিফোন বুথ,
তারবিহীন স্মার্টফোনে,
বিনে পয়সার ব্লুটুথ
বাক্স টিভির মৃতদেহ আজ
পচছে ভাঁড়ার ঘরে,
বাঁকানো-সাটানো ঝুলছে এলইডি
ঘরটি আলো করে।
কম্পিউটারেও বিবর্তনবাদ
সফটওয়ারে আলোড়ন,
এসেছে বন্ধু মারণমুখী
এ আই নামের ডন।
ভবিষ্যতের ভাবনা-চিন্তা
এআই নাচবে তা-ধিন-ধিন-তা,
আবৃত্তি বলো নাচ বা গান
হিরো আলম আর দেব সমান,
মৃত শিল্পীর হুবহু গলায়
গেয়ে দিচ্ছে গান,
গাইবে রফি- আর দেবে সুর
এ আর রহমান!
লেখ কবিতা যা পারো ভাই,
ছন্দ গড়বে বন্ধু এআই
সুক্ষ্ম মাথার সুক্ষ্ম কাজে
হবে না এটুকু ভুল
এআই হবে উগ্রপন্থী
আইনের চক্ষুশুল।
খেলনা এআই, খেলাবে হাতে
মনে করিয়ে বাপ্,
তখন না হয় লিখবোরে ভাই
বিজ্ঞান অভিশাপ।
আজ বসন্তে
কৃ ষ্ণা গু হ
শরীর জুড়ে শীতল ছায়া উন্মুক্ত কোমলতায় শোভিত তুমি!!
অব্যক্ত কথারা মুক্ত হয়ে ঝরে পড়ছে
আবহমান কাল জুড়ে দাঁড়িয়েছ নৈশব্দের আড়ালে।
আজ মুখোমুখি পলাশ কৃষ্ণচূড়া শিমূলে।
বসন্ত দোলায় সুখ পাখিটা ওড়ে আ-দিগন্ত সুখে!!
ধুলোকণায় মিশেছে হলুদ প্রেম রাশি রাশি,
তোমার ছায়া শরীরে জল তরঙ্গ সেজেছ লাল চেলিতে!!
ইচ্ছেরা ডানা মেলে মেতে উঠুক বসন্ত আলিঙ্গনে।
শিল্পী
দী ন না থ চ ক্র ব র্তী
তুমি পাথর ছুঁড়েছো একটার পর একটা
তাকে তাক করে করে
ঝরিয়েছো কত রক্ত
যুক্তি তর্কের মুখে ঝামা ঘষে।
ও কিন্তু কুড়িয়েছে পাথর
কোঁচড় ভরে
পৌষের হিমেল শীতে
সজনে ফুল ভেবে।
রক্ত ঝরেছে
সেই রক্ত মশলা পীযূষ করে
গেঁথেছে জীবনকে ঘিরে
একটার পর একটা পাথর।
আগুন ঝলক চোখে
দেখনি তখন
হয়তো দেখতে চাওনি ইচ্ছা করেই
প্রতিটি পাথরে হারিয়েছো ঘনত্ব।
ঘনত্ব হারিয়ে মানুষ শূন্য
শূন্য মানুষ বেগার বোঝা
যত সুন্দর যত স্পন্দন
এমনকি সেদিন নিজের কাছেও।
ও সেদিন পাথরের ছাদের ওপর
জ্যোৎস্না কণ্ঠে সুর মিলিয়ে গান ধরেছে:
এই পৃথিবীর জলসাঘরে
তুমিই কেবল শিল্পী যে এক...
শেষ পরিণতি
চ ন্দ ন দা শ গু প্ত
ঝরা পাতাগুলোর গায়ে লেখা আছে,
ভেঙে যাওয়া সম্পর্কের বেদনামাখা গন্ধ,
সেই সব নিস্তব্ধ প্রতীক্ষার স্মৃতি,
আজও সন্তর্পণে কড়া নেড়ে যায়,
সেই ব্যর্থ ফেরিওয়ালার মতো,
যার নেই কোনও চালচুলো,
প্রতিমাসে বদলে যায় ঠিকানাটা,
তারপর একদিন শেষ হয়,
আজীবন হকারির অভিশাপ,
বেওয়ারিশ শরীরটা টেনে নিয়ে যায়,
বিরক্ত কোনও সরকারী ডোম,
ওর তো প্যান কার্ড নেই,
তবে ছিল বটে একটা আধার,
সেটাও থেকে যায় বেওয়ারিশ হয়ে...
তার জীবনের মূল্য ছিল না কিছু,
তার থাকা-না থাকায় কারো কিছু আসে যায় না,
তবে, তার ভোটের কার্ডখানা কারা যেন হাতিয়েছে,
ওরা সেটা খুব যত্ন করে রাখে,
সেটা যে 'বিশেষ কাজে' লাগে!
হায়... সম্পর্কের স্মৃতিগুলো এই যত্ন পায়না,
ওরা চিরকাল নিঃশব্দেই ঝরে যায়,
ঝরে পড়া পাতারই মতো...
মীমাংসা
ডঃ সু চ ন্দ্রা মি ত্র চৌ ধু রী
ভেবেছ, ফাগুন এসেছে তাই
করবে, আবার ভালোবাসার ছল!
একটু খানি না পাওয়ার ব্যাথায়
দু’চোখে দেখবে, অশ্রু টলমল!
না না, ভাবছ এসব বলছি বৃথাই
সব থাকবে সেই আগের মতো?
ঘোর কেটেছে, বেশ আছি বেঁচে
মায়া, মাৎসর্য- এসব কিছু ছাড়াই।
তাহলে শুধু শুধু কেন এই বিলাস ব্যাসন—
কি করে ফিরে পাবে সেই আগের আসন?
উদাসীনতার ছায়া ঘিরেছে চারিধার
মোহাবিষ্টের ভুল হয় নাকো বার বার।
তর্ক ভালো লাগে না আর
মীমাংসাও বোধ হয় অন্ধকার
প্রস্তর ফলকে লিখেছ নাম যার
সেই তো আজ প্রতিনিধি তোমার।।
কামনা
প্র তি ম ঘো ষ
ওরা কে--- মানুষ, দেবতা না অসুর।
ওরা মানুষের একটি জাত প্রতিবন্ধাসুর।
ওরা মানে না নিজ প্রতিবন্ধকতার বেরসিক সুর।
ওরা জীবনের বাজি রেখে জীবনে আনে ছন্দাসুর।
ওরা নীরব রাতের অতিথি, ওরা মানবাসুর,
ওরা পারে করতে এমন কর্ম যা দেখে হবে তোমাদের চক্ষুস্থির।
ওরা না দেখে কথা না বলে হতে পারে জীবনে মহাসুর।
ওরা ভালো ভাবে না চলেও জীবন যুদ্ধে জয় করে।
ওদের জীবনের লড়াই তোমায় আশ্চর্য দেবে করে,
ওরা জানে না হারতে, ওরা যারা পুরো অক্ষম তারা
জীবনে বিষাদ নিয়ে বেঁচে আছে।
মানব বলতে পারো এই জাত কেন পৃথিবীতে আসে!
দয়া, মায়া, ক্ষমা চাইনে। যুক্ত হস্তে মুক্ত কন্ঠে নিবেদন করি,
এ জাতকে দাও পৃথিবী করে অবলুপ্ত!
হে স্বাভাবিক জাত! প্রতিবন্ধী জাতের থেকো পাশে কামনা করি।।
পলাশ
প্র ণ ব কু মা র ব সু
পলাশ তোকে কেন সবাই ভালোবাসে
রঙের এমন বাহার কেন চৈত্র মাসে-
শুকিয়ে গেলেই পড়ে থাকিস পথের ধারে
তখন কি আর আগের মতন নজর কাড়ে!
ধামসা-মাদল নিয়ে যারা নাচে ঘোরে
দেখিস কি তুই রাখে তোকে মাথায় করে!
সারা বছরে অল্প কদিন কেন আসিস
সত্যি করে বলনা আমায় ভালোবাসিস
কবিতার জন্য
ক বি তা ব ন্দ্যো পা ধ্যা য়
কতগুলো সম্যক শব্দের অভাবে
জন্ম হল না একটা পূর্ণ কবিতার,
মাঝপথেই হাবুডুবু খেতে খেতেই তারা তলিয়ে যেতে লাগল জরায়ুর অতল গহ্বরে...
কিন্তু হার না মানার বাসনায় একটা জেদী শব্দ গোঁত্তা মেরে ক্রমশই উপরে উঠতে লাগল,
আর বিষণ্ণ শব্দরা হাঁটু মুড়ে মুখ গুঁজে নীচে...
নিজের গায়ে তকমা মেরে অবাধ্য সেই শব্দটা
বেরিয়ে এলো বাইরের খোলা হাওয়ায়,
আকাশে তখন কালবোশেখীর আভাস!
শুকনো পাতা জড়ো হয়েছে মেঠো পথে,
কোকিলের একটানা ডাক বিবশ করে দিচ্ছে মন!
লাল আগুনে আত্মাহুতির আহ্বান জানাচ্ছে
পলাশ আর কৃষ্ণচূড়া...
থেমে থাকা অসম্ভব যে!
অতএব নাছোড়বান্দা, অবাধ্য সেই শব্দের আশ্লেষে
একে একে ধরা দিতে লাগল অনেক, অনেক শব্দ!
জন্ম হ'ল কবিতার
সৃষ্টি হ'ল ভালোবাসা
অবাধ্য শব্দটা নিজের নাম রাখলো 'ইচ্ছে '...
বসন্তের ছোঁওয়া লেগেছে
চা য় না ম ন্ড ল
গাছে গাছে বনে বনে
বসন্ত এসে গেছে মনে মনে,
এসেছে দখিন হাওয়া
শিমুল, পলাশ, কৃষ্ণচূড়ায় রং লেগেছে
কোকিল কুহু কুহু করে গান করছে,
ও বন্ধু রে, আমি শান্তিনিকেতনের সাঁওতালের বেটিরে
তুই আই কেনি, লাল মেঠো পথে
আমি তোর লেগি খুব সাজবো কপালে টিপ পরবো,
গলায় হার, কানে দুল, নাকে নোলক পরবো
তোর লাগি গান করবো,
মাদুলের তালে তালে তোকে নাচ দিখাবো।
তোর গ্লাসে মদ ঢালবো
তোর লেগি মালা গাঁথবো
তোর গলায় পরাবো,
আমি তোকে বিহা করবো
আমি তোকে আবির মাখাবো
তুই আমাকে আবির মাখাবি,
এই দোল পূর্ণিমার রাতে আমরা
দুজন দুজনকে ভালোবাসবো।
মহাপয়ার
ঊ ষা গ রা ই
ছেলেটি কাগজের নৌকো ভাসাতো
অতল গভীর তার চোখ দুটিতে
উজানী বেলা কিংবা স্বপ্নময় অবেলায়
শ্রাবণে অথবা প্লাবনে,
ভালোবাসা ঝরে পড়ে তার
ঠোঁটের মিতব্যয়ী হাসিতে
চোখের কোমল দিঠিতে
তার শ্যামলা মুখের শিশিরচূর্ণী ঘামে।
ওই মাদকতাময় চোখ দুটিতে
ডুব দিয়েছিলাম একদিন
জৈষ্ঠের ভরা দুপুরে যখন
ঝিমধরা উদাসী গাছের শাখারা
ক্লান্ত শ্বাস বহিয়ে দিত
তখনও বহে যেত দুটি মনে
প্রেমের নিভৃত জোয়ার
সে অনুভব লুকিয়ে এসেছি
নূপুর বোষ্টমীর কুঞ্জে
সে এক উতলা ফাগুনে, ফাগের আগুনে
রাঙা সিঁথিতে স্বীকৃতি পেয়েছিল
আমাদের ভালোবাসার মহাকাব্য।
পলাশের রঙ তখন আমাদের সারা শরীরে,
আচ্ছন্ন তখন মন এক নিষিদ্ধ নেশায়
সেকথা বলবো অন্য কোনও দিন
কদমফোটা সন্ধ্যেয় অন্য কোনও খানে.....
সেদিনের সেই বাসন্তী পূর্ণিমার চাঁদ
ঢেলে দিয়েছিল সমস্তটা আশীর্বাদের ঔজ্জ্বল্য
আমাদের মাথায়।
তারপরের কাহিনীটা একটু অন্যরকম
হয়তো কাহিনীকারের মনে ছিল
অন্য কোনও ভাবনা।
আমি চলে গেলাম সাতসমুদ্র তেরো নদীর পারে,
জাদুকরী আস্তানায়, আর ---
সে চলল সুখ কিনতে হাটে-বাজারে
পশরা সাজানোই ছিল, হল কিছু বিনিময়
তারপর সে উজানে বেয়ে চলল কত নদীপথ
খবর পাই, আজও সে পৌঁছোতে পারেনি মোহনায়, তার কাগজের নৌকো নিয়ে,
আমি বন্দীদশায় কাটাই দিনরাত।
আজ দীর্ঘ বছর পরেও
আমার আকাশে একটাই ধ্রুবতারা জ্বলে
সে স্নিগ্ধ আলো বুকে ধরে
পথ খুঁজে ফিরি
তবু আমার একার অতিক্ৰম করা পথ
বারবারই থামিয়ে দেয়
সেই আবীর গুলাল ভরা বাসন্তী দিনে
বারবারই আহত পাখির মতো
ডানা ঝাপটাই নিষ্ফলা প্রয়াসে
নির্ঝরের মতো ঝড়ে ভেঙে পড়ে
স----ব অভিলাষ।
তাই আজ বিষন্ন দুপুরে
হাহাকার ভরা মনে একলা বসে
কাগজে কলমে অন্ত্যমিল খুঁজি
মহাপয়ারের... মহাসময়ের
মহাপ্রয়াণের অন্ত্যমিল।
ফাগুনের ছোঁওয়ায়
ঋ ত ম পা ল
আকাশে আজ রঙের নেশা,
ঋতুরাজের ঘটলো বুঝি আগমন;
কৃষ্ণচূড়ার ওই কোমল আভায়,
মিললো দুটি প্রেমিক মন।
চুপকথার শহরে এসেছে বসন্ত,
রঙে রঙে উঠলো সেজে তিলোত্তমা;
কোকিলের কুহুতানে মুগ্ধ চারিপাশ,
ফাগুনের ছোঁয়ায় বিরহ যে আর সয় না।
কবি নীরেন্দ্রনাথের প্রতি
প্র তী ক ব ড়ু য়া
হে কবি তোমার উলঙ্গ রাজা আজও
ঘুরে বেড়ায় যেথায়-সেথায়
রাজবাড়ি থেকে রাজপথে
আজও আছে সভাসদ সাথে।
হাত তালি দিতে হবে কবে কখন
তাই ওরা আছে পাছে, মুচকি হেসে,
হাততালি দিতে হবে অনেক
বন্ধক রেখেছে ওরা নিজের বিবেক।
তোমার শিশুটিকে আমিও খুঁজে বেড়াই
যেথায়-সেথায়, বলবে কখন আবার এসে---
"রাজা তোর পোশাক কোথায়?"
হে কবি খুঁজে দাও তারে উলঙ্গ রাজার দেশে।
তারতম্য
ভা স্ক র বো স
তোমার ভালোবাসা অন্তহীন নয়-
আমার সঙ্গে হাঁটতে হাঁটতে ক্লান্ত হয়ে যাও।
তোমার মনে চেপে ধরে ভয়!
ওই ভালোবাসা আমার জন্য নয়।
রাতের বেলায় আকাশ পানে চেয়ে থেকে-
কোন তারাটার কি নাম আমি যখন বোঝাই।
তুমি তখন অকাতরে ঝিমোও!
কিম্বা যখন নিজেরে আমি শান্ত রেখে-
কত রকম গল্প বানিয়ে তোমায় যখন শোনাই,
তুমি তখন নিশ্চিন্তে ঘুমোও!
ওই ভালোবাসা আমার জন্য নয়।
তোমার ভালোবাসা অতটা গভীর নয়-
যতটা আমায় একলা বসে, সন্ধ্যাকাশে—
নীরবে- নিজেকে, আমার গ্রহ খুঁজতে হয়।।
মধুমাস যাপন
নূ পু র রা য় রি ন ঝি ন
মধুমাস জ্বলজ্বল ক্যলেন্ডারের পাতা
শীতের বিদায়শেষে বসন্ত সমাগম
আনন্দময় পরিবেশ অতি মনোরম
সকলের প্রিয় মার্চ কবিতা উৎযাপন।
মার্চ মনোহর ভ্রমণের যুগোপৎ
প্রকৃতি প্রেমীর কাছে স্বর্গসম ঋতু
ফুলে ফুলে ভরা পাহাড় ও সমতল
কুয়াশা চাদরে ঢাকা পাহাড়ের ঢাল।
রঙের উৎসব সাজে, সাজে বৃন্দাবন
শিমুল পলাশ রাঙা, রাঙা হয় মন।
রঙে রাঙা লালমাটি মহুয়ার নেশা
কোমর দোলায় ওই শান্তিনিকেতন।
তালিকা প্রকাশ হয় দিবস অনেক
একলা মার্চ তাই শূন্য বৈষম্য দিবস
আট'ই মার্চ নারীদিবস অন্তরজালে
নিত্যদিন জোটে যার অসাম্য কপালে!
এই মার্চের একুশ কবিতা দিবস ফলাও
উৎযাপন চলুক কাগজ কলমে ঢালাও।
এসো বৈশাখ এসো
প্র তি ম সে ন
এসো বৈশাখ এসো...
উড়ন্ত ঝড়ের গতিতে এসো।
পাখির দূরন্ত ডানায় উড়ে এসো।
প্রতিবাদে মুখর হয়ে এসো।
নিষেধের গন্ডি পেরিয়ে এসো।
এসো বৈশাখ এসো এসো।
ভালোবেসে এসো, ভালো রেখে এসো,
পরিবর্তনের প্রতিশ্রুতি নিয়ে এসো।
এসো বৈশাখ এসো এসো।
রোদের পিঠে চড়ে এসো
মেঘের ভেলায় ভেসে এসো
রবির কিরণ ছটা মেখে এসো।
এসো বৈশাখ এসো এসো।
মানবতার উষ্ণতাকে আলিঙ্গন করো,
আমাদের দুঃখ বুঝতে এসো,
যন্ত্রণার ঝামা ইঁট ভাঙতে এসো।
দেখে যেও আমরা কেমন করে বাঁচতে শিখি
কেমন করে মরে মরে বাঁচি,
এসো বৈশাখ এসো এসো।
আমাদের বঞ্চনার পাহাড়ে তুমুল বৃষ্টি নিয়ে এসো
নিষ্প্রান পাথরের বুকে আঘাত হানতে এসো
কবিতার অক্ষরে মালা গাঁথতে এসো।
গাঙচিলের গাঙে দখিনায় ভেসে এসো।
এসো বৈশাখ এসো এসো।
এসো বৈশাখ এসো।
চৈত্রের চল্লিশ
স ম্পা পা ল
তোমার চোখে এত পিপাসা!
তুমি কি বিশ্বায়ন থেকে অনেক দূরে?
কিন্তু কত দূরে!
আচ্ছা আজ চৈত্রের কত তারিখ?
আজ কি চল্লিশ ডিগ্রিকে চুমুক দেওয়া যাবে?
আজ কি শব্দের বাইরে থাকা যাবে?
শব্দগুলো ক্রমাগত স্তব্ধ হয়ে আসছে
রিং মাস্টার মিলিয়ে যাচ্ছে
আমি তখনও দাঁড়িয়ে অহেতুক আবদারে।
কিছু ভুলচুক, শান্ত দুপুর, অলৌকিক স্টেশন-
এসব যাপন লিখে কতদূর পৌঁছোনো যাবে?
এই মার্চেই
ধী রে ন্দ্র না থ চৌ ধু রী
এই মার্চেই ..... কৃষ্ণচূড়া, রক্ত পলাশ,
এই মার্চেই ......কার বুকেতে কি দীর্ঘশ্বাস।
এই মার্চেই ......বুকের ভেতর দগ্ধ ফাগুন,
এই মার্চেই ......সারা দেহে ভীষন আগুন।
এই মার্চেই ..... তোর আর আমার ফুচকা খাওয়া,
এই মার্চেই .... বদলে গেছে প্রেমের হাওয়া।
এই মার্চেই .... গত সালে কান্নার সুর,
এই মার্চেই..... তোর সিঁথিতে অন্য সিঁদুর।
এই মার্চেই .... যৌবন আজ উথাল পাতাল,
এই মার্চেই..... হাতটা খোঁজে তোর দুটো গাল।
এই মার্চেই ..... মন ভেঙেছে, মেঘলা আকাশ,
এই মার্চেই.... আমি হলাম "জীবন্ত-লাশ"।
পুড়ছে বসন্ত
ছা য়া মু খা র্জী
প্রখর আঁচে পুড়ছে চতুর্দিক
অস্তরাগে বসন্তের উপস্থিতি
নদীর ধারে বটের গভীর ছায়া
বাউল সুরে ভাসে লোকগীতি।
সঙ্গীহীন ক্লান্ত বিষন্ন এক ঘুঘু
জারুল গাছের ঝাঁকড়া ডালে
মনকেমনের হাওয়া, দুপুরবেলা
তপ্ত রোদে দীর্ঘশ্বাসে,গাছপালারা।
মাটির দাওয়ায় কুকুরগুলো ধোঁকে
প্রবল তাপের আগুন আঁচে
বসন্ত শেষে সব ভুগছে শোকে
শোক বুঝি এক ছোঁয়াচে ব্যাধি?
দুপুর শেষের পড়ন্ত বেলায়
শোক হয়ে যায় মৃদুমন্দ নদী।
ভোরের আলোয় অরুণিমার বিভা
চৈতি রোদে নিঃস্ব ফাগুন দ্যুতি
কৃষ্ণচূড়ার আকুল বিহ্বলতায়
চিরদিনের প্রেমের প্রতিশ্রুতি।
মাটির মানুষ
ই কা বু ল সে খ
সময় হেঁটে যাচ্ছে সময়ের পথে
আমাদের কোনো ভ্রূক্ষেপ নেই
সূর্য প্রতিক্ষণে ক্ষয়ে যায়
আলোকরশ্মিগুলো বৃষ্টির জলে ধুয়ে যাচ্ছে
যে মেয়েটা নদীর জলের মতো স্বচ্ছ স্নিগ্ধ সুন্দর
আমি তার প্রেমে পড়েছি
আমার অস্তিত্ব বিপন্ন প্রতিদিন।
মাটির তৈরি মানুষ কতকাল আর নিজের অস্তিত্ব ধরে রাখবে।
পাহাড়
অ শো ক ব ন্দ্যো পা ধ্যা য়
দূর থেকে এ কি দেখি--- সমুদ্র সুনামী!
না কি অতিকায় প্রাগৈতিহাসিক ম্যামথের পিঠ?
না কি বাধা পায় দৃষ্টি সামনে উত্তুঙ্গ দেওয়ালে?
তোমাকে পাহাড় বলবো না কি নগাধিরাজ?
সে তুমি যেই হও---
পাঞ্চেৎ পাহাড় বা পঞ্চকোট গিরি---
তোমার নীলাভ সমুদ্রের মতো বিশাল শরীর
আকাশটাকেই এনেছে পেড়ে তোমার ললাটে।
অগ্নির সঙ্গী ধূমের মতো
অরণ্যও সঙ্গী যে তোমার---
তা সে পৃথিবীর যেই প্রান্তে হোক।
আসলে হে পাহাড়---
তুমি নিজেই সম্রাট এক নিজস্ব সাম্রাজ্যের
যেখানে শুধুই অরণ্য থাকে না---
থাকে অরণ্যচারী পশু পক্ষী, যুথবদ্ধ কতো জীব যুগ যুগ ধরে---
তোমারি আশ্রয়ে প্রশ্রয়ে শীতল ছায়ায়।
বুকে ধরে আগলে রাখো আশ্রিত যে তোমার।
হে অচল অদ্রি মহারাজ!
তোমার গাম্ভীর্য আর মহান বিরাটত্বের সামনে
আমরা যে অতি ক্ষুদ্র মানুষ,
মাথা তুলতেই পাই লাজ।
সগর্বে উন্নত শিরে করে যাও রাজ।
যে যার করুক কাজ, বিদায় নেবো আজ।
বসন্ত-রাত
প্র কৃ তি দ ত্তা
বারুদ নেই আমার মধ্যে
নেই চারপাশে একটুও অক্সিজেন
হাইড্রোজেনও নই আমি
কার্বন মনোক্সাইডে নিস্তব্ধ চারিপাশ
সূর্যের দক্ষিণায়ন শেষ
দখিনা বাতাসের আমন্ত্রণবার্তা চারিদিকে
শুষ্কতাকে রিপ্লেস হিউমিডিটির
রোটালার বসন্ত বিলাসে বেগুণী ধানের ক্ষেত
বুকের ভেতর চিনচিনে এক ব্যাথা
আপেক্ষিকতার দোলাচলে ভেসে যাওয়া
ফার্স্ট প্রেফারেন্স? সে তো সোনার পাথর বাটি
রাত বাড়ে, সারমেয়-ডাক, কীর্তন মিলেমিশে একাকার
সময় হয়
ড রো থী দা শ বি শ্বা স
সত্যি, সময় তো সে দিয়েছিলো
প্রথমে বলেছিলো--- আমাকে জানতে
হলে আমার লেখা গল্পগুলো পড়তে হবে,
সবই যে আমার জীবন থেকে নেওয়া।
সে জানতো--- প্রত্যেকটি ভালোবাসার গল্প
শেষ হত সততায়, বিরহে, চোখের জলে।
এমন গল্প পড়লে পাষাণ হৃদয়ও
গলে হবে জল।
তারপর যা হয়!
নিঃসঙ্গ মন সেই বিশ্বস্ত আশ্রয়টাই চেয়ে বসে।
আবার একটি নতুন গল্পের প্লটের নেশায়
হাতটা ধরে সে।
দিন যায় রাত যায়
মাস যায় বছর যায়
আবেগে, আশ্লেষে, মান-অভিমানে
অধিকারবোধে, অনধিকার চর্চায়
অরণ্য হর্ণবিল ডিএসএলআর ফটোশ্যুট অ্যাডভেঞ্চার---
সব নিয়ে
অনুচ্ছেদের পর অনুচ্ছেদ---
গল্পের কলেবর বাড়ে।
তারপর---
নেশা কেটে যায় পলাশের
বিশ্বস্ততার দরকারই বা কি?
সুধা-সাগরের তীরে বসে
অশ্রূ মোছানোর দায়ভার সত্যিই কারো থাকে না
এভাবে কোনো কোনো গল্পের শেষ পরিণতি অজানাই থেকে যায়।
একটা গ্রামীণ সূর্যাস্ত
সা য় ন্ত ন ধ র
মালগাড়ি দাঁড়িয়ে আছে সিগন্যালের আশায়
সিগন্যালের সাথে ক্রমশঃ লাল হচ্ছে ডুবন্ত সূর্য
ওভারহেড তারে নিশ্চিন্তে বসে আছে দুটি শালিখ
কুলায় ফেরার আগে, একটু প্রেম...
দূরন্ত শৈশব খেলে বেড়াচ্ছে পাশের মাঠটিতে
কৈশোর বন্ধুর কাঁধে হাত রেখে রেললাইনের ধরে বসে
ব্যস্তসমস্ত পায়ে অফিস ফেরতা ক্লান্ত প্রৌঢ় ধরেছে মেঠো শর্টকাট।
ছোট পুকুরটি থেকে নাম না জানা নদীটি চলেছে গন্তব্যে
ঠিক যেন 'বৈকাল' থেকে ঘুরতে বেরোনো 'আঙ্গারা'
লাল জলে দখিনা বাতাসের তিরতির কাঁপন।
মালগাড়িটি সিগন্যাল পেয়ে গেলো
জনশূন্য হলো প্রান্তর,
শুধু হাসি ছড়িয়ে রয়ে গেলো অ্যাজারেটামের দল
আমিও ফিরছি সাইকেল নিয়ে গ্রামের পথ ধরে।
কোন এক বাড়ি থেকে ভেসে আসছে সান্ধ্য সঙ্গীতচর্চার সুর...
"সাঁঝের পাখিরা ফিরিল কুলায় তুমি ফিরিলে না ঘরে..."
একটু দূরে আবার শুনি...
"সাঁঝের তারকা আমি পথ হারায়ে এসেছি ভুলে..."
পথ হারিয়েছি আমিও, মেঠো পথে আঁধার রাতে
হাইওয়ের রোমাঞ্চকর আওয়াজ কানে আসে
কত দূর দূরান্তে ছুটে চলেছে নাইট বাস, নিশিট্রাক
চাঁদের আলোয় আলপথ দিয়ে চলেছি শব্দভেদী বাণের মতো।
ওই তো হাইওয়ে... একটু এগোলেই আমার শহর...
একটা গ্রামীণ সূর্যাস্ত... আজকের উপহার।
এপ্রিল
আ ল্পি বি শ্বা স
গভীর শীতল সমুদ্রে ডুব ছেড়ে
ভাসতে চেয়ে উষ্ণ স্রোতে গা এলানো
এমন একটা বাঁক নিয়ে সেই বিন্দু খুঁজে
সরস আর্দ্র গ্রীষ্মে ধীরে পা মেলানো
রুক্ষ জরাগ্রস্ত দীর্ঘ সময় পেরিয়ে
ঝকঝকে রোদ মেঘের ছায়ায় আকাশ হাসে নীল
অমলতাসী সোনা রঙ আর গুলমোহরী লাল
মাদার অশোক শিমুল নিয়ে হাজির এপ্রিল
কে বলে গো এই মাসেই হত নতুন বছর শুরু?
কোন্ সে প্রাচীন কালের কথা কে মানে তা আজও?
বোকা দলে নাম লিখিয়ে হয় এপ্রিল ফুল
রঙ-বেরঙের ফুল ও পাতায় যতই তুমি সাজো।
বসন্ত এসে গেছে
দে ব যা নী ঘো ষা ল
পর্ণ মোচনে উঠোন পরিপূর্ণ।
গর্বিত তাই শীত শেষের আঙিনারা।
শুকনো উঠোন নিস্তার পেয়েছে
অবাঞ্ছিত উষ্ণায়নে..!
পরিতৃপ্ত আজ সমবেত জীর্ণ আলিঙ্গনে...
বছর ভোর সবুজের ছায়ায়
উচ্ছাসে কেটেছে বসন্ত ছোঁওয়ার
উৎসবের আশায় আশায়।
ফিরে পেয়েছে তাই ফাল্গনীর মুঠো পলাশের আগুন।
কৃষ্ণচূড়ার ফাগুন।
নারী...
সে তো প্রকৃতি...
সুখ দুঃখ হাসি কান্না ভেজা কালগুলো খুশি বিতরনে মত্ত।
আপণ সাজে রঙিন করে নিজেকে সে...
তা কি কেবল নিজেরই তাগিদ??
না, সে যে রঙিন...
সে যে চির বসন্ত...
তাই প্রকৃতির রঙিন উন্মত্ততায় ভাসে বসুন্ধরা...
তাই ফাগুনকে বসন্ত বিলাসিতায় পূর্ণ করে নারী...
সুগন্ধে মাতোয়ারা তাই বসন্তের বিলাপ...
ফুল সজ্জা আর লাল হলুদ আবিরী ছোঁওয়ায় অপেক্ষারত তার প্রেমিকের আগমন বার্তায়...
জয়ী হবার আকাঙ্খায়...
ঢলে পরা গোধুলী লগ্ন আজ তাই শিহরিত বংশী বাদকের সুরে...
অনবরত ভোরের কুহুতানে আবেশ মেশানো
মিলনের আবাহণে...
হরিণী নয়না এলোকেশী আজ...
বাঁধন হারা প্রাণে।।
ঋতুতে আবেশে
দে ব যা নী ঘো ষা ল
বৈশাখের প্রারম্ভিক প্রভাতী স্নিগ্ধ রোদের ছটায় আবেগী তুলিতে সাজিয়েছিল রঙিন গ্রীষ্মকে।
গ্রীষ্ম বলেছিল, কি চাও তুমি আমার কাছে?
উষ্ণ আবেগ বলেছিল, রংধনু আঁকতে চাই, তার আসন্ন ঝিরঝিরে ভোরে...
বলেছিল সে...
সে তো অনেক দেরি...!
উষ্ণতার ছোঁওয়া খিলখিলিয়ে হেসে বলেছিল, ভিজতে চায় সে ঐ তরল রঙিন রামধনুতে, যে তার অনুভবে আছে বৈশাখের উষ্ণ ভোরের আবেশেই...
প্রভাতী বর্ষা জানতে চাইলো কি চায় সে...?
আদরে ভিজে উষ্ণ ভোর বলেছিল, আষ্মীনের প্রথম ঝরে পরা শিউলি শিশিরে ভিজে, আলতা রাঙানো পায়ে সিক্ত সবুজ কচি ঘাসে কাশের চুম্বনে ভাসতে চায়...
সেও তো অনেক দেরী...!
বলেছিল সে...
পেজা পেজা তুলো দিয়ে অঝোর ধারার ব্যর্থতা আড়াল করতে চায়...!
শরতের ভোর তাই প্রতীক্ষায় হেমন্তের প্রভাতী সোনালু ফসলের ছোঁওয়া পেতে...
জড়াতে চায় কুয়াশা মুক্ত
হৈমন্তী ঘন অঘ্রাণের আশাবরীতে...
চাঁদমালিকার সুগন্ধীর আবেশে ফিরে ফিরে চায় পৌষের বাসন্তী গাঁদার শিশির ভেজা খুশিতে...
অপেক্ষার আশায় বসন্ত লাল পলাশের
নতুন ভোর...
না পলাশ না...
খোঁপায় গুঁজবে কৃষ্ণচুড়া আর রাধাচুড়ার কচি শাখা...
ছন্দে ছন্দে উল্লাশে কূহুতানে সুখ আহরনে মাতোয়ারা হবে সে...
পরে থাকবে ফেলে আসা রাসের কমলা হলুদ কলঙ্কিত চাঁদের হিমেল স্নিগ্ধতা...!!
চৈত্র
টু লা স র কা র
ভেবেছিলাম চৈত্র রেখে যাবে
কিছু স্মৃতিমধুর ঘটনা।
বলেছিলাম চৈত্র তোকে ভালোবাসি।
তুই যে নতুনের আবাহক।
তোর দখিনা বাতাসের সাথে কিছু উষ্ণতা
রেখে যাস পরিমন্ডলে।
তোকে নিয়ে আজ শেষ বেলায় লিখবো
কিছু পাওয়া না পাওয়ার কথা।
জলন্ত পৃথিবী জ্বলছে অমানবিক রোষানলে।
তুই কি রেখে গেলি ভাবতে বসি শেষ বিকেলে।
তোর এসেছে সময় চলে যাবার,নতুনকে পথ ছেড়ে দিতে।
আজ শুধু তোর কথাই লিখবো, তোকেই ভাববো।
তুই আছিস তাই পাই নতুনের বার্তা।
আজ সমস্ত দিনটা তোর সাথেই থাকবো।
ভালো থাকিস তুই পরের বার আসিস সেজে নতুন
আলোকিত পথ ধরে।
রেখে যাস তোর উজ্জ্বলতাময় স্মরণীয় অধ্যায়
অনুসরণ করি,রেখে যাওয়া কর্মের আগামী পথ শ্রদ্ধায়।
ফেব্রুয়ারি
টু লা স র কা র
তোমাকে নিয়ে লিখবো কিছু কথা।
মাঘের শেষ, ফাগুন শুরু যথা।
প্রকৃতি সাজছে ধীরেধীরে।
প্রেমের গোপন অভিসারে।
মাঘ মাসে শ্রী পঞ্চমী
শুভ্রবসনা বিদ্যার দেবী।
গোলাপের সাথে প্রেমের মিল।
ভালোবাসার রঙ স্বপ্নিল।
শীতের হালকা পরশ।
প্রকৃতির উৎফুল্ল হরষ।
দিবসে রঙিন এই মাস।
অনন্য শীত-বসন্তের বাস।
ভালোবাসা হৃদয়ে জাগে
আবেগে বিরহে রাগ,অনুরাগে।
লেখান্তে
দে বা র তি গু হ সা ম ন্ত
লেখাগুলো ঠিক জমছে না
মানে...
জমে ক্ষীর হয়ে যাচ্ছে না
কেমন একটা জোলো ভাব।
একটু কি মসলার অভাব?
নাকি সুযোগ আর আবেগ মিসিং?
টপ টপ করে কল থেকে জল পড়ে যাচ্ছে...
ভেজা পিচ্ছিল মেঝেতে ঢেলে দিলাম লেখা।
অক্ষরগুলো নাচতে নাচতে
এগিয়ে গেল কলের মুখে,
তারপর হারিয়ে গেল কলের গহ্বরে,
শুধু একটা ক্ষীণ আলোর রশ্মি...
ভেদ করল আমায়, আমি নীরব!
কাল সকাল
দে বা র তি গু হ সা ম ন্ত
আনাগোনা তো
লেগেই থাকবে;
তাই বলে কি
চৌকাঠে
আলপনা দেব না?
সময় আসতে
এখনো অনেক দেরী,
ক্ষনিকের অতিথি;
তাই উপভোগ করছি
প্রত্যেকটা লহমা।
ঘড়ির কাঁটার টিকটিক,
আবার একটা রাত..
বাটিতে শুকনো চালগুড়ো।
কাল সকালে এসো সক্কলে,
আমি ততক্ষণে বাসি হয়ে গেছি।
ছুঁয়ো না আমায়,
স্নান করতে হবে ফের
কুয়োর ঠাণ্ডা জলে!
শব্দ এবার জব্দ
দি ব্যে ন্দু বি শ্বা স ঝ ল ক
দেখ চেয়ে দেখ
দেখনা তোরা
উপরওয়ালার খেলা,
বুঝবো মানুষ
বুঝবো সবাই
বুঝছি এবার ঠেলা।
রেষারেষি
দলাদলি
কোথায় গেল দূরে,
এই বুঝি ভাই
মারণ ভাইরাস
আসলো বুঝি উড়ে।
উঠতে বসতে
টাকার গরম
গরম গরম ভাব,
ছাড় পায়না
গরীব হলেও
অমানবিক চাপ।
কথায় কথায়
যুদ্ধ জিগির
আসল কথা ভোট,
বিপদ এলে
সব ভুলে তাই
হচ্ছি মহা জোট।
কোথায় গেলো
হম্বিতম্বি
কোথায় হারায় শব্দ,
উপরওয়ালার
ক্ষুদ্র লীলায়
আমরা নিমিষে জব্দ।
অবক্ষয়
দি ব্যে ন্দু বি শ্বা স ঝ ল ক
এ রূপতো তোমার নয়
রূপের বড়াই করো
যাদের রূপে তোমার রূপ
তারাই সবচেয়ে বড়ো।
'পিতামাতা'ই জগত শ্রেষ্ঠ
ভালই তুমি জানো
শিক্ষা পেয়েও অবুঝ তুমি
সত্যিটা তাই মানো।
দেখতে দেখতে বড় হলে
কাদের স্বার্থ দানে
তুমি জানো নাইবা মানো
ঈঁশ্বর কিন্তু জানে।
তোমার ভাল করতে গিয়ে
মাথার ঘাম পায়
কষ্ট করেও তবু তোমায়
সুখী দেখতে চায়।
তোমার জন্য ভাবনা অগাধ
ছিল কত আশা
তাদের খোকার জন্ম নেবে
গভীর ভালোবাসা।
বড় হবে তাদের খোকা
মানুষ হবে যখন
সেই খোকার সুনাম শুনে
দুঃখ ঘুচবে তখন।
দুদিনের এই খেলা ঘরে
সবই মায়াময়
পৃথিবীটাই বদলে গেছে
শুধুই অবক্ষয়।
শেষ জীবনে তোমার উপর
অগাধ আশা তাদের
একটু ভেবো আপন মনে
নয়তো তারা বাদের।
ছোট্টবেলায় তোমার যখন
হতো তুমুল জ্বর
নাওয়া খাওয়া ভুলে যেতো
চিন্তা রাত ভর।
তুমি তখন অবুঝ শিশু
ভীষণ তাদের খেয়াল
তুমি ছিলে বীর বলবান!
সামলে নিতে বেহাল।
তোমার খাওয়ায় তোমার নাওয়ায়
সব কিছুতে মা
তোমার স্বার্থে জলাঞ্জলি
সব কিছুতে না।
বাবার কথা ভুলে গেলে?
সেদিন বিকেল বেলা
ভীষণ বায়না ধরলে তুমি
দেখতে যাবে মেলা।
বাবার সেদিন অফিস কামাই
চলনা ঘুরে আসি
আজও বাবার চোখে ভাসে
তোমার মুখের হাসি।
সেদিন গুলো হয়তো তোমার
আজও মনে পড়ে
ছুটির দিনে বাবার সাথে
কাটতো বসে ঘরে।
তোমার খেলার দাবার বোর্ডটি
শহর থেকে আনা
ভীষণ সেটি প্রিয় ছিল
সবার ধরা মানা।
বাবার সাথে দাবা খেলায়
কাটতো তোমার দিন
কী আনন্দ হারিয়ে তাকে
মুখ হতো রঙ্গীন।
সেই বাবাকে ছেড়ে গেলে
খোঁজ রাখনা তার
আত্মতুষ্টি নিয়ে গর্ব
ভীষণ বেড়েছে বাড়।
বুকের মাঝে ভীষণ কষ্ট
মায়ের চোখের জল
আত্মভোলা এমন ছেলের
হয়না ভাল ফল।
ক্ষমা তুমি পাবে নাতো
শুধুই দেখাও যুক্তি
পিতামাতার আশীষ ছাড়া
হবেনা জগতে মুক্তি।
টাকার গরম লম্ফঝম্ফ
বন্ধ দক্ষিণ হাওয়া
এক নিমিষে মিলিয়ে যাবে
সকল চাওয়া পাওয়া।
রোদ চসমার আড়াল চোখে
ওদের করো হেলা
ঝড়ের বেগে হচ্ছে জেনো
মেঘে মেঘে বেলা।
মলিন বদন নির্বাক চোখ
আড়ালে লুকানো মুখ
" বৃদ্ধাশ্রম" ডাকে ঈশারায়
কাঁদে শুন্য বুক।
সেই বাবা আজ ঘরের কোনে
একলা বসে কাঁদে
মা জননী ডুঁকরে কাঁদে
বলছি কী আর সাধে।
আসে নাতো আসেনা আর
আমার ছোট্ট খোকা
ওদের বিলাপ স্তব্ধ করে
পৃথিবী আজ বোকা!
সবশেষে তাই মনে থাকুক
বয়স সবার হবে
নিজের সন্তান বড়ো হয়ে
নিজের শিক্ষাই লবে!!!
আকাশ গঙ্গা
ক ল্পো ত্ত ম
এই বর্ষায় ঘনীভূত হই
তোমার ওপর ঝরে পড়ি
তোমাকে ভেজাই
চক চক করে ওঠে তোমার শরীর,
তোমার এই লাবন্য-বিভা
উজ্জ্বল করে আমাকেও।
তোমার ওপর দিয়ে পেরিয়ে যেতে যেতে
মনে গেঁথে রাখি তোমার অবয়ব
উতলা, উদগ্ৰীব, আকাঙ্খিত
আমারই শরীর থেকে ঝরে পড়া বিন্দু বিন্দু জল
ছোঁবে বলে তাকে।
সে জানে, কোন্ পরিপক্ক কালের এক বিন্দু জল
মেলতে পারে শেকড় গর্ভ কোষে কোষে
মেলতে পারে ডানা
সবুজ কচি পাতা আকাশ গঙ্গায়।
অহং
ক ল্পো ত্ত ম
কোনো না কোনোভাবে
প্রতিটি মানুষেরই একটি অহং থাকে
প্রতিটি মানুষেরই একটি সৌন্দর্যবোধ থাকে
নিজ অহং বসেই ছোট করে অথবা বড় করে দেখি
এ আমার স্বভাব।
এই যে গম্ভীর হেঁটে যাওয়া পশু, শৃগাল বা অন্য কিছু
যাকে খুব খুব খুব শান্ত মনে হয়,
আপাত নিরহংকার মনে হলেও
অহংকারের দানা নিশ্চুপ লুকিয়ে আছে তার মাঝেও
প্রকাশের একটা ঠিকঠাক পরিবেশ পেলেই
চলে আসবে চোখের সামনে।
প্রস্তর চূড়া, যাকে আমরা হিমের আলয় বলে জানি
সেও কি নিরহংকার?
তার মাঝেও কি বীজ নেই অহংকারের?
বীজ অথবা বীর্য
অহংকারেরই একটা আবদ্ধ বিষ্ফোরণ পিন্ড মাত্র।
পানু ও পাঠক
চি র ঞ্জী ব হা ল দা র
অবশেষে উভয়ে বাতাসে মিলিয়ে গেলেন।
অথচ আছেন কিন্তু আমল দেন না।
একজন বাদবিচারহীন রসিক।
উভয়ে কতটা তৃষ্ণার্ত গবেষনার বিষয়।
মকরদ্ধজ নামক ঘোড়া আবহানে দুজনেই সক্ষম।
একজন রম্য অরম্য গোগ্রাসেই গেলেন।
অন্যজনা দিনক্ষণ তিথি নক্ষত্র না দেখে শিকারে বের হন না।
একজন টল হ্যান্ডসাম লাজুক ঠিকানাহীন।
আর কোথাও পান বা না পান একজনকে অবশ্যই সক্রেটিসের আড্ডাখানায় যেকোন সময়ে পাবেন।
চন্দ্রমধ্যমায় কৌলিন্য ও আলাপন গতে ঘুমিয়ে পড়েন।
তুমি আগডুম বাগডুম অভাজন ও ছাইপাস পদ্যকারিগর। ওরা থোড়াই তোমার জন্য তামাক
সাজাবে। তুমি পরাজিত নদী মোহনার ঝিলিকে ঝুলে থাকবে আজন্ম কাল।
খরিদ্দার
চি র ঞ্জী ব হা ল দা র
আপনি তিন বা তিনশ তে যা পাবেন তা তিনহাজার হতেও পারে।
আপনার বারাদ্দ ঠোঁট নাভি বা অন্যখানে হলেও নিক্তি মেপে জি পে ও চলতে পারে।
তবে ভুলেও মনোলিনার আয়না দেখা নিষেধ।
পান চিবানো গাল বা চিরতা পরবর্তী অধ্যায়ে হাত বুলান ক্ষতি নেই তবে পানু না ফেরা পর্যন্ত
ভ্যজাইনা মনলগ ভুলেও ভাববেননা।
দেখবেন যত খুশি
তবে আয়না ভাঙলে তার দায় পানু নেবে না।
আগে মানুষ হও
প্র হ্লা দ কু মা র প্র ভা স
মনুষ্যত্ব আর বিবেক বুদ্ধি নয়তো তোমার এক।
তুমি মানুষ, পশুর সাথে তোমার বিস্তর ফারাক।
হয়ে মানুষ, ভুললে হুশ আচরণ পশুর মত।
পরনে দামি কাপড়, চরিত্রে পশুর আঁচোড় বলনে দম্ভ কত!
না আছে ধর্ম জ্ঞান, পড়ে রইলে অচেতন নিজেকে আবার মানুষ বলো?
বোঝো না হে মানবিকতা, আছে তোমার জ্ঞানের দীনতা টাকা পয়সাই সব হলো?
হায়রে মানুষ! হারিয়ে হুশ দম্ভ আর আভিজাত্যে ভুলিলি আপনও কর্ম।
ঈশ্বর বলে আছে একজন, বিচার হবে বুঝবি তখন মনে রাখিস তিনিই সর্বে সর্ব।
উচ্চপদ আর ক্ষমতা, হায়রে! এটা বেশী দিনের নয়, তুই দু'দিনের অতিথি মাত্র।
পদ আর টাকাই বাড়াবাড়ি, পর ধন কাড়াকাড়ি অহং এর জলে ভিজালি গাত্র।
মন আর বিবেক দিয়ে, ধর্মকে সাথে নিয়ে মানবিকতার গান গাও।
ওহে মানুষ, রাখো হুঁশ জগতের পরিবর্তন হবে, নিজে "আগে মানুষ হও"।
তোমাকে পাওয়ার জন্য হে সফলতা
প্র হ্লা দ কু মা র প্র ভা স
তোমাকে পাওয়ার জন্য হে সফলতা---
কত মানুষই রাতে ঘুমালো না।
তোমাকে পাওয়ার জন্য হে সফলতা।
কত মানুষ দিচ্ছে বলিদান নেই তা গোনা।
তোমাকে পাওয়ার জন্য হে সফলতা---
আর কত মানুষ কাটাবে না ঘুমিয়ে রাত?
কত মানুষ ঝরাবে তার দুঃখের অশ্রুপাত?
কত মানুষ দিবে তাদের স্বপ্নকে বলিদান।
না পেয়ে তোমায়, কত তরুণ দিবে আর রাস্তাঘাটে প্রাণ!
তোমাকে পাওয়ার জন্য হে সফলতা---
কত গরীব করবে আর রাতে ক্রন্দন?
কত ধনী করবে আর দরিদ্র নিপীড়ন?
কত ডাকাত করবে আর গরীবের ধন চুরি?
কত দরিদ্র করবে হায়! হায়! মরি! মরি!!
তোমাকে পাওয়ার জন্য হে সফলতা---
কত মানুষ ঘুরবে আর হয়ে দিশেহারা।।
তোমাকে পাওয়ার জন্য হে সফলতা---
কত ছেলে ছাড়বে তাদের নিজের পরিবার!
কত মানুষ দিবে বলি তার নিজের ইচ্ছার?
তোমাকে পাওয়ার জন্য হে সফলতা---
কত মানুষ জ্বলবে আর দুঃখের চিতায়?
কত মানুষ করবে চিন্তা ব্যর্থ পাওয়ার আশায়।
তোমাকে পাওয়ার জন্য হে সফলতা----।
খোঁজ
র থী ন পা র্থ ম ণ্ড ল
তোমায় দাঁড়াতে বলেছি, পালাতে বলিনি
পালাতে বলিনি জীবন থেকে
এমনকি জীবন থেকে ছেড়েও চলে যেতে বলিনি
তোমায় খুঁজতে বলেছি, হারাতে বলিনি
হারানো সহজ বলে হারিয়ে যেতেও বলিনি
হারাতে বলিনি নিজেকে অন্ধকারের মাঝে
তোমাকে খুঁজতে খুঁজতে
তোমার সাথে পথ হারাতে হারাতে
তোমার সাথে বাস করার জন্য
আমি একটা শহর চেয়েছিলাম
যা আজও আমি খুঁজে চলেছি।
আঁতেল কবি
র থী ন পা র্থ ম ণ্ড ল
এক আঁতেল কবির ডাকে যাই। সংকোচে কবিতা শোনাই। মন্তব্যের জন্য তীর্থের কাকের মতো অপেক্ষা করি। কবির কথায়---"এটা কোনো কবিতাই হয়নি, শুধুই শব্দের জাগলিং। আর এটা পোস্টমডার্নিজম নয় কেন?" ভাবি, আমাকে কি এসবের সিঁড়িতে উঠতে হবে? প্রশ্ন করি এই দুই শব্দের বিবরণ দিন। উত্তর খুঁজে পাইনি কিছুই। মনে মনে ঠিক করি আমি আমার মত চলব। রবি ঠাকুরকে প্রণাম করবো। কবির কাছে তার লেখা মণিমানিক্যের থেকেও মূল্যবান। ডিকশনারির পাতায় পাতায় ফুটে ওঠে কবির কবিতা। কবিতা এখন সত্যিই চোরাস্রোতের মতো বয়ে যায় ষড়যন্ত্রের কোষে কোষে, বয়ে যায় লাল জলের আঙিনায়। এ যেন গোষ্ঠীকেন্দ্রিক একে অপরের বাহবার হাততালি দেওয়া।।
চৈত্র মেঘ
বী থি কা ভ ট্টা চা র্য
মেঘের চোখে বৃষ্টি হাসি, আকুল অনুরাগ,
চৈত্র দিনে কাজল মেয়ের রোহিত অঙ্গরাগ।
মেঘ বলাকার উড়ান ডানা, রঙ খুশিতে ভেসে,
কে সাজালো তোমায় বলো, পলাশ রাঙা বেশে।।
আসমানী রঙ জংলা শাড়ী, রক্ত পাড় আঁচল,
চৈত্র দিনে শ্যামলা মেয়ের, চোখ কেন ছলছল?
হাত বাড়িয়ে মেঘ জড়িয়ে, মন উচাটন টান,
উজান স্রোতে ভালবাসার, আবেগ বহমান।
মেঘলা আকাশ, বাদল বাতাস, মন কেমনে রয়,
উড়ান ডানায় মন উড়েছে চোখ ছুঁয়ে বিস্ময়।।
বনের পাখি মলিন আঁখি, আকাশ পানে চায়,
ধূলোর চাদর, কাদার আদর, জড়ায় পায়ে পায়।
ঝরা পাতা যায় ধুয়ে যায়, বৃষ্টি আবেগ মন,
রোদ বৃষ্টির লুকোচুরির আঁধার আলো ক্ষণ।
মেহুল বনের খুশীর প্লাবণ, বৃষ্টি ঝরার সুর,
কাজল মেয়ে বাদল নাচে, ছন্দে পায় নূপুর।
ঝড়ের মাতন বৃষ্টি নাচন, চৈত্রে রাঙা দিন,
দিশাহারা মন দোতারা, বাজছে রিমঝিম।
আলোর হাসি উথল খুশি, বৃষ্টি মুছে গেলে,
সূর্য্য তখন প্রখর তেজে, রুদ্র নয়ন মেলে।
দগ্ধ পরাণ তপ্ত রোদে, চৈত্র নিদাঘ বেলা,
এমনি করেই চৈত্র দিনে, রোদ বৃষ্টির খেলা।
বসন্তের রঙ
বী থি কা ভ ট্টা চা র্য
দখিন তোরণ দ্বারে, অনুভবে বারে বারে, ডেকে গেছে দখিনা বাতাস,
চোখে চোখে চোখাচোখি, খুশি রঙ মাখামাখি, লাজে রাঙা শিমুল পলাশ।
সেজেছে ধরণী আজ, বধূ বেশে নব সাঁঝ, সীমন্তে সিঁদুরের দাগ।
সুরভিত ফুল কলি, মুখরিত বনে অলি, হরষিত হৃদি এলো ফাগ।
আয় সব সহচরী, হাতে হাত ধরাধরি, ফাগুনে আগুন মধু মাস,
ভালোবাসা সুর, গান, কোকিলের কুহুতান, কত রূপে বসন্ত বিলাস।
বনে বনে জাগে প্রাণ, পাখিদের কলতান, মুখরিত দখিনা বাতাস,
ধরণীর রূপে সাজে, আনন্দ মনো মাঝে , প্রেম রঙে রাঙা অভিলাষ।
রঙে রূপে উত্তাল, কচি পাতা ভরা ডাল, প্রজাপতি খুশী ঝলমল,
ফুলে ফুলে মধু খায়, উড়ে উড়ে কোথা যায়, মৌতাতে মাতে অবিরল।
উন্মনা হৃদি মোর, সিক্ত সে অনুক্ষণ, পাড় ভাঙা নদী টলমল,
উদাস এ দুনয়নে, আনমনে অকারণে, ব্যথা জল করে ছলছল।
স্বপ্ন বিভোর আঁখি, বিজনেতে ছবি আঁকি, বিরহ কাতর তৃষা মন,
দখিনা পবন বায়, হৃদয়ের আঙিনায়, কোথা তুমি এসো প্রিয়জন।
আমার আঁধার ঘরে, মুঠো খুশী দাও ভরে, ভরা তিথি পূর্ণিমা চাঁদ,
এসো গো সুজন মোর, নিশিরাত হলো ভোর, একা কাটে বিষণ্ণ রাত।
আবিরে রঙের ছোঁয়া, অনুভবে কাঁপে হিয়া, ভরে দাও মন দরিয়া,
দোলা দাও মনো বাগে, দুলবো যে অনুরাগে, রঙে রঙে এলো ফাগুয়া।
জগতের আমি
শু ভ শ্রী রা য়
আমার পৃথিবী তুমি ছাড়া নেই নাকি?
এই যে সকালবেলার সোহাগী কমলা রোদ,
এই যে কত কত পাখির ডাকের তাৎপর্যময় নিরর্থকতা,
সমস্ত সত্যি এবং আমার জগৎকে ভালোবাসায় গড়ছে নিয়মিত,
প্রতি দিনই আমার পৃথিবীকে নতুন করে লিখে দিচ্ছে মরশুমি প্রকৃতির মায়া;
বহুমাত্রিক আলোর প্রবাহ নিয়ে সকাল শুরু,
সন্ধ্যার ঘনঘোর ভাব দিনের ক্লান্তি মুছে দেয় সযত্নে
রাত নিজেকে রোপণ করে গহন আঁধারের রূপে ও কথায়
এ সবই রয়ে গেছে আমার সত্যের অন্তরে,
আমার ভেতর অবধি শেকড় ছড়ায় নৈমিত্তিক
নিজেদের সাজায় আমার জীবনে,
আমি স্বতঃস্ফূর্ত নতুন হয়ে উঠি।
চিরাচরিত এবং আমার এ সমস্ত
বরং তুমিই প্রসঙ্গবহির্ভূত অতীত আজ,
দুঃস্বপ্নেও আসো না
অথচ মনে করো, এখনো আমার জগৎ তুমিময়!
চোখ প্রার্থনা
শু ভ শ্রী রা য়
তোমার দু' চোখ শাসনে আবৃত অনেক কাল,
সেই জন্য সময়েরও কি জোর কাটেনি তাল?
বারণ যে দিক সেই দিকে তাকাতে গিয়ে ঘুরে,
হয়তো তোমার নিষ্কলুষ চোখও গিয়েছে পুড়ে,
মুক্তির প্রার্থনায় টলমল তারপরেও তৃষিত দৃষ্টি,
তোমার জন্য আমার বলাকওয়া, যথাসাধ্য সৃষ্টি!
নয়নময় পিয়াস তোমার দিগন্তকে ছাড়িয়ে যায়,
অমৃতকে চোখের বাতি দিয়েই তো সে ছুঁতে চায়;
লিখি আমি- যে সবখানে অবরুদ্ধ তোমার চোখ,
সেখানে সেখানে অসীমের নিজস্ব জানলা হোক।
মনপাখি
নী ল দি গ ন্ত
ওরে মনপাখি তুই আয় ফিরে আয়
গোধূলি নেমেছে দিগন্ত জুড়ে,
নীড় দেখ তোরই অপেক্ষায়
ওদিকে যে সতর্কতা বাতিঘরে!
আসবে তুফান নামবে প্রলয়
মনপাখি তুই ঘরে ফিরে আয়।
তুই বিনা মন লাগেনা, শুন্য আলয়
বসে আছি তোরই অপেক্ষায়।
তুমি অস্থির হলে
নী ল দি গ ন্ত
তুমি অস্থির হলে প্রকৃতি রুষ্ট হয়,
অসময়ে ঝঞ্ঝা আসে,
পাখিরা দিকভ্রান্ত হয়,
নদীও পথ হারায়।
তুমি অস্থির হলে বসন্তেও ছন্দপতন হয়,
মনে কালবৈশাখী আসে,
কলম নীরব হয়,
কবিও শব্দ হারায়।
তুমি অস্থির হলে এ মন ব্যাকুল হয়,
সৃষ্টিছাড়া ভাবনারা আসে,
চোখ ঝাপসা হয়,
স্বপ্ন হারায় অস্থিরতায়।
তুমি অস্থির হলে লিওনার্দোর তুলি থমকে দাঁড়ায়,
ক্যানভসে অশনি সংকেত আসে,
শিল্পী কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়,
মোনালিসার চোখ ভাষা হারায়।
তুমি অস্থির হলে চাঁদ মেঘে মুখ লুকায়
রাতও থমকে দাড়ায়, দুঃস্বপ্নেরা আসে,
জীবন দুঃসহ মনে হয়।
ভাবনারা পথ হারায় গোলকধাঁধায়।
বসন্ত
নী ল আ কা শ
(১)
বাতাস যতই নিজেকে লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করুক না কেন,
আমি তো দেখছি পাশের বাড়ির দেওয়ালে মাধবীলতা দুলছে।
এটা যদিও তেমন কোনো ঘটনা নয়,
তবু মোটেই অর্থহীন নয় মনে হচ্ছে আমার-
এই যে দুলছে এটা দেখে
নিজের কথা কি একবারও মনে হচ্ছে না কারো?
(২)
এমন একটা সময় ছিল বসন্ত এলেই নিজের প্রেমে পড়ে যেতাম-
মনে হতো কেউ যদি আমাকে পলাশ, শিমুল বলে ডাকতো
কিংবা লাল হলুদ কোনো পাখির নাম ধরে।
এখনও বসন্ত আসে ঠিকই
কিন্তু সেই আমিটা আর আসে না,
যাকে পলাশ, শিমুল কিংবা রঙিন পাখি মনে হতো।
কবিতার অন্বেষণে
প লা শ বি শ্বা স
( ৫৩ )
কোজাগরী পূর্ণিমার চাঁদ মেঘলা আকাশে
আমি একা রাতজাগা পাখি গান গেয়ে যাই
তুমি আজ কোন দূর দেশে
কান্নায় ভাসে ওই
নীল জোছনা
( ৫৪ )
প্রভাতের রক্তিম সূর্যও বিদ্রুপের চোখে দ্যাখে আমায়
চিরকালীন এক সুখের অব্যক্ত যন্ত্রণা
তুমি ছাড়া আর কেউ বোঝে না
সে সুখ শো কেসের তাকে জ্বলজ্বল করে
তবু নিভে যেতে ইচ্ছে করে না অকালে আমার
( ৫৫ )
জমে আছে জানালাতে ঝুল
ঘুরে বেড়াই বৃথা
হা হুতাস মন জুড়ে থাকে
যাই হেথা হোথা বহুদূর ঘুর পথে পথে
ভেঙে গেলে ভুল ফিরি সেই তোমারই দ্বারে
( ৫৬ )
আজকাল তোমায় খুঁজে পাই
অক্ষর বিন্যাসে প্রতিটি হরফে হরফে
পাহাড় সাগর অনেক দূর
বুকের পাশে বয়ে চলা নদীতে
অক্ষর মিশে থাকে শুধু তোমাতেই
( ৫৭ )
বরং একটা পথ খুঁজে দিতে পারো
ফুল বিছানো পথ
কাঁটা বিছানো পথও হতে পারে
যে পথের শেষে হাঁটতে হাঁটতে পৌঁছে যাবো
ঠিক তোমার কাছেই
( ৫৮ )
ছুঁয়ে থাকো তুমি
দিগন্ত রেখায় পাহাড় চূড়ার সীমানা
নদী হয়ে নামতে নামতে আমি ঠিক খুঁজে নেবো
তোমার বুকে সাগরের মহীসোপান
আমার শেষ ঠিকানা
কবিতাগুচ্ছ
অ শো ক কু মা র দ ত্ত
প্রেমিক
তবে কি হেমন্তের একলা ঘরে গোধূলিতে ছুঁয়েছিলাম একা একা তোমার হাত ?
দূর থেকে ভেসে আসছিল কথক ঠাকুরের শ্রী রাধার মানভঞ্জন পালা
অপেক্ষা করছিলাম কবে আসবে প্রণয়ের নতুন প্রভাত?
তারপর শীত গ্রীষ্মের ছুটি পড়াশুনা সঞ্চয়িতা আর বনলতা
নাটকের শেষ-- লক্ষণের শক্তিশেল
মেঘনাদের মৃত্যু!
পড়ে থাকে অবশেষে নির্বাসিত গোধূলির আলো আর কবিগুরুর কাঁপা কাঁপা গলায় হৃদয় উপচে পড়া
"হঠাৎ দেখা!"
পিপাসা
কোথাও কি দাঁড়িয়ে আছে? উদ্যানে অথবা মাধবীলতায়!
কোথাও কি দাঁড়িয়ে আছে পারঘাটার নির্বাসিত বিকেলে-- গোধূলির নিভৃত বারান্দায়!
বিশাল আকাশটাকে ঘরের মধ্যে টেনে এনেছি-- বাতাসের হাহাকারকে বুকের ভেতরে জায়গা দিয়েছি!
হীরক জয়ন্তীর ভালোবাসাকে বুকের ভেতরে পুড়তে জায়গা দিয়েছি!
উন্মাদের মতো শব্দ কল্প জানালা দরজা খুলে দিয়েছি-- হে নিহত ভালোবাসা আমাকে পোড়াও শব্দহীন প্রতীক্ষার আগুনে নিভৃত নৌকার চিতায়-- চন্দন কাঠের সৌরভে
সম্ভাষণে
তবু তুমি এসো--
হেমন্তের হিমের উদ্যানে কুয়াশা নয়
বসন্তের পাখি হয়ে তুমি এসো!
হয়তো
অচেনা পাখির চ্ছদ্মবেশে থাকবে তুমি-- বাগানের মৌন প্রেমিক তোমাকে চিনবে না। পরিযায়ী পর্যটক হিসেবে টুকে রাখবে গবেষকের খাতায়!
তুমি হাসবে-- প্রবাসে উড়ে যাবে লিলি ফুল হয়ে!
"চিন্তনের চিনি যোগায় চিন্তামণি!"
আমার বাহারি উদ্যানের এখনও
ফুল ঝরে যায় হিম কুয়াশায়!
ফিনিক্স
অপরূপ গোধূলির সাথে হাত ধরাধরি করে শান্ত বিকেল চলে যায়-- চলে যায় নির্জন ফেরীঘাটের দিকে!
একলা দুপুরের মতো ছল ছল চোখে আমি তাকিয়ে থাকি! চলে যাওয়া স্টিমারের বাঁশি শুনি! একা একা শূন্যে নাটকের কাগজ উড়াই
অস্তগামী বিকেলের রোদে আনমনে গোধূলির পাতা দাঁতে কাটি!
মনে পড়ে-- প্রণয় এক শান্ত নদী তীর-- সেখানে বসে আছেন এক গ্রিকদেবী!
তার পায়ের কাছে এক অপরূপ ফিনিক্স পাখি!
হে জীবন
দূরের কায়ার মায়ায় একটুকরো কাঠকয়লা জ্বেলে বসে আছে অসিত জীবন।
প্রভুর সুরের মায়া নিয়ে আজও সে মুখ আঁকে আলো না উৎসবের?
নিজেকে শুধুমাত্র নিজেকে ভালোবেসে মরে যায় চিরকাল ধুর্ত নেকড়েরা!
প্রফুল্ল জীবন সৈকত সরণীর আড়ালে বিষণ্ণ ঝাউপাতা হাসে!
উড়ন্ত বাজপাখির ডানায় কখন যে নেমে আসে বিশ্বস্ত শমন?
স্বীকার
ম ধু প র্ণা ব সু
মরণের হেফাজতে রেখেছি,
জীবন বোঝা, বইতে সন্ধ্যে প্রায়।
চোখের প্রতীক্ষা নামে লবনাক্ত
ক্ষীণ আস্তরণ সরাতে সরাতে
ঘুমের চাদর বড় প্রিয় আমার
ঢাকা দেয় সব কলঙ্কিত যন্ত্রণা।
স্মৃতি সুখ
ম ধু প র্ণা ব সু
মুখে ধোঁয়া ওঠা চায়ে সকাল
শীত ঘুমে জড়িয়েছে ভোর।
ঝিল সবুজ জল পরিযায়ী ঝাঁক
রেনু রেনু ফাল্গুনী প্রেমের পোশাক।
হারিয়েছে চিরিয়াঘর দেখা বয়েস,
স্মৃতিরা রোদেলা বসন্ত পোহাক।
ঝরা পাতা
ম ধু প র্ণা ব সু
যখন এসে বসি শিশিরের পাশে
সে বুকে টেনে নেয় অনায়াসে
মনে মনে বলে 'এসো'
যেন কবেকার চেনা অন্ধকার
খসে পড়া তারা শব্দহীন
ভুলে গেলেও ভালোবেসো।
নির্লজ্জতা
ম ধু প র্ণা ব সু
চেনা মুখ পাশ কাটিয়ে যায়, অনায়াসে
আমিও উদার ক্ষোভ রাগ অভিমান
ছেড়েছি এসব নিতান্তই অনভ্যাসে।
এখন গনগনে সূর্য পুড়িয়ে দেয় লজ্জা
সব কঠিন অঙ্কে গোঁজামিল সামিল
ভীষণ আলস্য বাটপারি ভয়হীন মজ্জা।
ইচ্ছে কথা
ম ধু প র্ণা ব সু
অন্ধকার হয়ে গেছে সব বাগান,
প্রেমের সুবাস ছুঁয়ে সমাধিস্থ হৃদয়
অপূর্ব নিঃশব্দে বসে প্রজাপতি মন
চেয়ে আছে অভুক্ত অস্থির ইচ্ছেরা-
তোমার রঙে পাঁচমিশালি হলেও
সাদা যে আর হৃদয় হয়ে ওঠে না!
যতবার
সু শা ন্ত সে ন
যতবার সেই কথাগুলো বলতে চাই
ততবারই কোন না কোন বাধা।
কেউ না কেউ এসে বলে ওঠে-
এখন কথা শোনার সময় নেই।
সময়ের অপেক্ষায় তাই গাছ ভেজা সন্ধ্যায়
সরোবরের পাশে এসেছি।
সেখানে দেখি গাছ পাতা ঝরে পড়ে
বিছানা তৈরি করে রেখেছে।
সেখানে শুয়ে আকাশ দেখবো কি না ভাবছি
এমন সময় পুপে এসে বললো
এখন সন্ধ্যা তারার ওঠার সময় হয়েছে,
এখন পুকুর পাড়ে
প্রেমিকরা ছাড়া কেউ আসে না।
তোমার ত এক কাল গিয়ে তিন কালে ঠেকেছে
তুমি এখন এখান থেকে চলে গেলে ভাল হয়।
তাই কোথায় যাব এখন- ভাবছি।
রাষ্ট্র
সু শা ন্ত সে ন
পা ভাঙা রাষ্ট্র রাষ্ট্র
সংকেত প্রজাপতি
মিলন নেই রাষ্ট্র রাষ্ট্র
এপার গঙ্গা ওপার যমুনা
বন্দী হলেন জাহাঁপনা
এগিয়ে দিলেন অন্ধ ঘুঁটি।
পা ভাঙা রাষ্ট্র রাষ্ট্র
হারিয়ে গেল ইলিশ মাছ।
আর পাব না আর পাবো না
পা ভাঙা রাষ্ট্র রাষ্ট্র।
সিনেমা
সু শা ন্ত সে ন
একটা খুন, দুটো খুন
পরে পরে আরো খুন।
গুনে দেখলাম
সিনেমাটার ভেতর
প্রায় গোটা পঞ্চাশ খুন হল।
হয় বন্দুকের বা মেশিনগান এর গুলিতে
বা ছোরা বা গুপ্তিতে
না হলে খোলা হাতেই।
এত খুন খারাপি'র পরও
দেখলাম
বেশ কিছু লোক বেঁচে রয়েছে।
পলায়ন
সু শা ন্ত সে ন
পালাবেন কোথায় ?
জীবন ত মুখ ব্যাদান করে অপেক্ষারত
তার মধ্যে চন্দ্র সূর্য্য
বৈশাখী ঝড় বৃষ্টি
সব একাকার হয়ে খাবি খাচ্ছে।
তার থেকে এগিয়ে যাওয়া ভালো।
ঝড় সামলে
প্রভাত সূর্যকে ভরে নিন পকেটে।
কবিতাগুচ্ছ
আ র তি ধ র
১.
জন্ম
একটি নির্দিষ্ট লগ্ন থেকে উৎপত্তি
সেই শুরু চারিদিকে তাকিয়ে দেখার
একটু জায়গা খুঁজে নিতে চাওয়া
একটু সোজা হয়ে দাঁড়ানোর জন্য
বড় অন্ধকার নাকি চোখে আঁধার!
২.
সুখ
খোঁজাখুঁজি করেও মেলে না দেখা
তবুও খোঁজ নিরন্তর চলতে থাকে
দিনের আলো ফুরিয়ে যায় নিয়মে
রাতে নিদ্রা এসে ডুবিয়ে দেয়
সুখের সংজ্ঞা হারিয়ে যায় অতলে।
৩.
শান্তি
গরম তালুতে তেল ঢেলে চাপড়
সন্তানের অদ্ভুত সব ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
কে যেন আত্মহত্যা করেছে সেদিন
সবেধন নীলমণি ওই মাত্র একটি
বকা, মারা কিছুই সম্ভব না!
৪.
রোগ
বালাই বটেই অভাবের এই ঘরে
কারা যেন নিয়মিত চেকআপ করে!
ধুঁকছে কদিন ধরে সাধারণ জ্বরে
সেরে যায় দিন দুয়েক পরে
ভাগ্যিস হাতুড়ে ডাক্তার আজও বসে!
৫.
মুক্তি
সহজ সরল পথ মোটেও না
কড়ায় গণ্ডায় মিটিয়ে তৈরি হও
মাঝি ভাই প্রস্তুত হবে যখন
এবার উজান নয়, ভাটির টানে
ভাটির দেশের পথে চললাম একা।
বিষাদ হরকরা
সু জ ন প ণ্ডা
১.
শুধু একটি রাতের জন্য আশ্রয় চাই
উঠোনে, যেখানে সন্ধ্যা প্রদীপ
অথবা পুকুর ঘাটের পাশে
শেষতম পায়ের চিহ্নে
শুধু একটি রাতের মতো
নক্ষত্র ও জ্যোৎস্নায় আশ্রয় চাই
২.
যাবে?
যাও। নিয়ে যাও উচ্ছ্বাসটুকু
অসংলগ্ন বুদবুদ...
তোমার প্রতিটি অঙ্গ ভীষন মিথ্যেবাদী
ওদের নিয়ে যাও
দুই বাহু
চোখ... ঠোঁট... কানের লতিতে তিল
নিয়ে যাও
যাবে?
যাও। নিয়ে যাও পুরোনো নিঃশ্বাস
আমার আজন্ম সঞ্চয় বেচে
আমি বদলে নেবো ফুসফুস।
৩.
কি শান্ত বিকেল
ধু ধু মাঠ। পাখিরাও কি
নিশ্চুপে ডানা ঝাপটায়
কৃষকের... মজুরের... পেশী
কি ক্লান্ত
কি অবাধ মৌনতা
একদিন... প্রতিদিন...
সূর্যও একটু একটু করে মারা যায়
কেমন আছেন সবাই?
উত্তরমুছুন