কবিতা
তুমি কবিতা চেয়েছিলে
জ্যো তি র্ম য় মু খো পা ধ্যা য়
দিইনি, আসলে পারিনি বা হয়নি
তুমি তো জানো ডরোথি— এ ঈশ্বরের
উপহার, যেমন তুমি— তোমার নাম
এই নাস্তিক আমি-র ঈশ্বর অবশ্য
আমি নিজেই, আমার সেই আমি
যার মুখোমুখি বসলে কথা খুলে যায়
লিখে ফেলি কবিতা, বা চুপচাপ দুজনে
দুজনের দিকে চেয়ে চেয়ে ভাবতে থাকি
কে কার আশ্রয়, কে যে কাকে লেখে
বিপন্ন অস্থিরতায়, তুমি তো জানো ডরোথি
আমি চাইলেই কবিতা লিখতে পারি না
এটুকুই আমার আমি-কার, আমার অহংকার
সেই তো আবার কাছে ডাকলে
জ বা ভ ট্টা চা র্য
ডাকলেই যদি সেই হারানো মেঘনামে
মাঝে মুছে দিলে কয়েক দশক
কেন ?
হাজার ডেসিবেলে বুকের ভেতর
আমজাদের সরোদ-- পরজ বসন্ত ধুন
প্রথম পরশ কুমারীর মতো, আরক্ত লজ্জায়
কেঁপে ওঠে শেষ গোধূলি।
পাহাড়ি পথের পাকদন্ডী
চা বাগানের প্রেক্ষাপটে
মেঘ কুয়াশার যুগলবন্দি
অবিন্যস্ত চুলের ফাঁকে, সাদা কালোর আলতো ছোঁয়া
আকাশ নীল চোখের তারায়, জিজ্ঞাসাদের জলোচ্ছাসে
প্রাচীন এ নাও টলোমলো।
আমাদের যায় নি সে দিন? সবই আছে!
প্রতিটা মেঘ জানে, প্রতিটা জলকণা
প্রতিটা প্রহর জানে, হৃদয়ের আনাগোনা
মরা গাঙে বৃষ্টি নামে
দামাল হাওয়া উথালপাথাল
মুহূর্তে সব স্বপ্ন লাগে
দু কুল ভাঙে তুমুল তোড়ে
জলছবি লজ্জারা ঝরে পড়ে
অস্থির আবেগে, আরবি ঘোড়ার
ছুট ছুট ছুট, চামড়ার ভেতর
শাড়ির ভাঁজে, আদর আতর
আবার দেখা শেষ প্রহরে
উজান ভাসায় বাঁধন ছিঁড়ে
সর্বনাশা শ্রাবণ আসে
অবাধ আকুল প্রণয়োল্লাসে।
গেরুয়া ভৈরবী
সু জি ত মু খো পা ধ্যা য়
নদী, তোকে ভালোবেসে
কতো গান, কতো কবিতা,
তোর বুকে জমা চরে।
শরৎ চড়ায় কিশোরী কাশফুল।
কাশফুলি আঁচলে চাঁদ ওঠে।
ভরা শ্রাবনে,
গেরুয়া ভৈরবী সাজ।
উৎস মুখের নুড়ি
তোর বুকে জড়িয়ে প্রেম...
উলঙ্গ ইলিশের সাথে,
মানুষের হামাগুড়ি লাশ।
তোর বাঁকে কত কথা দেওয়া,
ধুয়ে যায়...
তুই কথা গিলে হাবুডুবু।
আমার হেঁসেলে কোমর জল।
তোর মরসুমী তত্ত্ব...
ফি বছরের।
গরম খিচুড়ির হাতা মাপ ধোঁয়া...
বেনো হাওয়া মিশে
ভিজে যাওয়া বুক।
আমার চুলো জ্বলেনি...
ভালোবেসে ভিজিয়ে দে নদী...
আঁচলের গেরোয়
শুকনো চিঁড়ে গুড়....
ছেলেটা শুকনো বুকের বোঁটায়
জল শুষে নেয়...
কাল অনেকটা জল নেমে যাবে...
সম্পর্ক
পূ র্বা মা ই তি
শ্রাবণ জানে পাল্টে দিতে
তোর- আমার সবার আকাশ--
তুই শুধু মেঘ সরিয়ে
আমার দিকে একটু তাকাস।
মেঘও জানে নামিয়ে দিতে
বৃষ্টি নামের জলের ফোঁটা--
কী আর করা, মুঠোয় ধরা
বৃষ্টিমাখা বর্ষাতিটা।
কী আর করে, জাপটে ধরে
এগোয় মানুষ নানান ছুতো--
তুই শুধু বলিসনা আর...
তুই শুধু বলিসনা আর...
সম্পর্কটা অমুক তুতো।
সম্বল
নি র্মা ল্য ঘো ষ
আমার প্রতিটি লোমকূপে কে যেন বাঁশি বাজায়.... অহরহ...
আমার প্রতিটি দেওয়ালে কান্না হয়ে
ঝুলে আছো তুমি...আজও
শুনেছিলাম- প্রত্যেক মানুষের স্মৃতিই তাঁর ব্যক্তিগত সাহিত্য।
এটাও শুনেছিলাম মুগ্ধতাও একসময়
বৃদ্ধ হয়। বিশ্বাস করিনি।
বিশ্বাস করলাম...
যেদিন তুমি মুখ ফিরিয়ে নিলে। চিরতরে।
তাই, আমার ব্যক্তিগত সাহিত্যই
এখন আমার...
একমাত্র সম্বল। আর কিছু নয়।
সে ছিল এক কথা
ম ধু মি তা ভ ট্টা চা র্য
সে ছিল এক কথা,
শেষ থেকে শুরু ছিল না
শুরু থেকে শেষ
পারিনি হিসাবে নামতা আসরে।
ছেঁড়া ডাইরির পাতা।
পলাশ বকুল গন্ধ হাওয়া
বৃষ্টি স্নাত রাত পাহারা
চল না একবার গোল্লাছুটে
মিশর জেগে ছিল হারানো পথে
নিঃশ্বাসে রূপকথা।
সে হলো এক কথা।
স্বাধীনতা
প ঙ্ক জ মা ন্না
তোমার স্বপ্ন তোমারই থাক
অন্যে কি তার মূল্য বোঝে!
স্বপ্নতরী বাইছে সবাই,
কিন্তু সবাই কি যায় তীরের খোঁজে!
আমি কিন্তু তীর খুঁজি না,
ভাসতে পেলে আর কীইবা চাই!
সবাই কি আর ভাসতে জানে!
কাতর প্রাণ চেয়েছে তীরের ঠাঁই
তীরে তো সেই সোনার খাঁচা,
কোথায় পাবে অবাধ আকাশ?
ভাসতে আমার ভালোই লাগে
তাই তো করি স্বপ্নের চাষ।
শব্দ যাপন
কৃ ষ্ণা গু হ
কিছু সঞ্চিত শব্দ দিশাহীন পথে হেঁটে বেড়ায়!!
এলোমেলো ভাবনাগুলো শব্দ খোঁজে একাকিত্বের ক্ষণে ক্ষণে!!
কিছু শব্দ অশ্রু দিয়ে লেখে,
কিছু শব্দ লেখে ভালোবাসায়।
ঘনঘোর আঁধারে ভেসে যায় শব্দগুলো বেনামে।
জমে থাকা গল্পগুলো খাতার পাতায় আর নামেনা!!
অশ্রু ঝরে,
হঠাৎ জোনাকির আলোয় কিছু নতুন শব্দ সঞ্চিত হয়।
মাঝে মাঝে এলোমেলো শব্দগুলো বিচরণ করে শৈশবের কক্ষপথে।
জোনাকির উজ্জ্বল আলোয় অন্ধকার কাটে। শব্দরা ভূমিষ্ঠ হয় কবিতার খাতায়!!
মধুময় অনুভূতির আঁচড়ে।
অন্য জীবনের উৎসবের ছবি
উ ৎ প লে ন্দু দা স
অন্য জীবন বাস করে প্রাত্যহিক জীবনের ভিতরে
নিত্য যাপনের অচেনা ভিড়ের মাঝে যায় না জানা,
ঠেলে নিয়ে যায় বহমান নদীর খরস্রোত
কখনো টেনে নেয় দিগন্ত ছাড়িয়ে দৃষ্টির ওপারে।
জনপদে জগৎ জোড়া মেলায় ব্যস্ত ঘোরাঘুরি
শুধুই কালের আবর্তে অনুবর্তনে পাক খাওয়া,
নদীর সর্পিল গতি পথ খুঁজে নেয় চলার
তবুও পাহাড় পেরিয়ে উজানে দেয় না পাড়ি।
চারধারে ছড়িয়ে ছিটিয়ে জীবনের কলকাকলি
সাঁঝবেলার পাখিদের মত কুলায় ফিরে আসে,
চাঁদ ওঠে মায়ায় জড়াবে বলে আবছা আলোয়
একে একে ফুটে ওঠে রাতের রজনীগন্ধাগুলি।
জীবন জেগে রয় নিঝুম মধ্যাহ্নে, গভীর নিশীথে
ঘুমায় না বিভ্রান্তি দ্বন্দ্ব, নিজস্ব অবকাশে তবু
যদি ডাক ভেসে আসে ফেরিওয়ালার গলায়
অশক্ত পাখা চায় ভুলে যাওয়া ছন্দে ডানা ঝাপটাতে।
জীবন মরণের গল্পে নানা রঙে ছবি আঁকা থাকে
জমে ধুলো পরতে পরতে, রঙ হয়ে আসে মলিন
সীমিত ক্যানভাসে অজস্র আঁকিবুকির মাঝে তাই
অন্য জীবনের উৎসবের ছবি ক্রমাগত হাত নেড়ে ডাকে।
ঢেউ
স র্বা ণী রি ঙ্কু গো স্বা মী
তট ছেড়েছে ঢেউ যে কখন মনে তো নেই তার
ফিরবে বলে ভাবেইনি সে তাই তো হাহাকার
সাগর কিছু নেয় না নিজে নেয়নি কোনোদিন
সুদআসলে চুকিয়ে তো দেয় সে সকলের ঋণ
ঢেউ তা কোথায় জানে
মাথা কুটে মরছে যে তাই এমন অপমানে
বারে বারে ঝাঁপিয়ে পড়ে জলের বুকে জল
মিলন তবু হয় না তাদের এমন যাপনছল
জলের থেকেও হয় না জলের কেমন দেখ ফের
সারাজীবন ধরে চলে ছোঁয়া ছাড়ার জের
হার মানে না কেউ
সাগরবুকে মাথা কোটে এক পৃথিবী ঢেউ।
সমস্ত যুদ্ধের শেষে
তৈ মু র খা ন
সব ঘোলাটে হয়ে যাচ্ছে
তোমাদের বাক্যবাণের ক্ষত আর দেখা যায় না
এখন এ ঘরে আর পাখি নেই
সব পাখি মরে গেছে
অন্ধকারে জাগাবার কেউ নেই এখন
মৃত প্রদীপের কাছে আলোর গুনগুন
স্মৃতির ধুলো হয়ে আছে
পাশ ফিরছি
এপাশে ওপাশে ধূসর নিশ্চুপ
শূন্যের ছবি আঁকছে সারারাত
অভিমান ফিরে আসেনি কোনওদিন
চোখের জল মুছে সেও এখন গার্হস্থ্য সৈনিক
পৃথিবীতে কোথাও তার গৃহ আছে
অবেলার রঙে হয়তো এখনো আলতা পরে
নির্বিবাদে হেঁটে যায় পৃথিবীর পথে
এক একটি দিন যায় এক একটি রাতের দিকে
সমস্ত যুদ্ধের শেষে আর কি সকাল আসবে আমাদের?
আগামীকাল অথবা আর একটি সকাল
বড় অনিশ্চিত মনে হয় পৃথিবীর কাছে...
ফ্লেমিংগো
শি খা না থ
গুনছি বসে একলা প্রহর বসন্ত ফাগ নেই কোথাও,
জলের ঘরে একলা সবুজ দিন হারিয়ে প্রেম উধাও।
অপেক্ষারা দাঁড়িয়ে থাকে মুচকি হাসে বসন্ত বায়,
নিমেষহারা শব্দগুলো জল ছবিতে প্রাণ হারায়।
স্বপ্নগুলো ধূসর এমন কপট রঙে ঝিলমিলে,
সব জমানো সময় এখন পোকার মতো কিলবিলে।
নেশায় মাতাল ভবঘুরের এক পা তুলে তপস্যা,
তোমার রূপে বিভোর আমি সেই যে আমার সমস্যা।
ছন্দ নাচে নামের গুনে তুমি শেখাও রূপ ভুলে,
তোমায় নিয়ে পদ্য লেখে বড্ডো লেখা গোলমেলে।
ভালোবাসা এমনিই হয়, ভুল ঠিক রয়না মনে,
এইটুকু সুখ নিচ্ছি আমি চোখের আরাম গোপন কোণে।
অপাঠ্য
প ল্ল ব ভ ট্টা চা র্য
সময়গুলোর ভীষণ প্রস্থানের তাড়া।
কত অজস্র কথা জমে রয়েছে;
টেবিলে থরে থরে সাজানো
দিনলিপির পরিসংখ্যান ক্রমান্বয়ে।
এক কাপ চা'য়ে এসে যোগ দিলে
একটু নাড়াচাড়া করে দেখাতাম---।
তুমি পড়ো--- আর নাই পড়ো
একটা অটোগ্রাফ নিয়ে নিতাম
ছেঁড়া ছেঁড়া প্রচ্ছদের নীচে---।
কবিতা ভালোবাসে না অনেকেই--- জানি,
তবু ভাঙা চোরা শব্দগুলোর কাতর মিনতি।
প্রতিশ্রুতি ভেঙে অতীতকে প্রকাশ।
নাছোড়বান্দা হৃদয়ে এখন
উপদংশরাও ভগ্নাংশে মিশে গেছে।
পরত পরতে বদলে গেছে সব
সব স্থবিরতা ভেঙে---
তোমার দেওয়া সেই কলমটাই
একমাত্র গতিশীল-,
বিরামহীন লিখে যায়--- অপাঠ্য ।
তুমি চা খেতে এলে না
তাই গল্পগুলো বলা হলো না---
যত না বলা গল্পগুলো বাকি রয়ে গেল।।
পাগল দিনে
অ লি পা ব সু
পথ চলতে চলতে হঠাৎ তোমার সাথে দেখা
নাম সুধলেম তোমায়
তুমি বললে দুঃখবিলাস
সমতলে কোথাও না থেমে যখন জগৎকে নিয়েছি হাতের মুঠোয়
তখন দেখেছি দুটো ছায়া পাশাপাশি আমি তুমি
মালভূমি পথে থেমে থেমে জগৎ থেকে পাওয়া কান্না অপমান জ্বালায় মুঠো উপচে পড়েছে
তখন দেখেছি আমি ঢেকে গেছি
তোমার ছায়ায়
হিংসায় ঢেকেছে গহীন অরণ্য
বন্ধ দরজায় আঘাত করে অনুশোচনার দ্বগ্ধে না মরি
থৈ থৈ পাগল দিনে,
দূরে একটা পথ নদীর মতন
তুমি আছো তুমি আছো খুব কাছে
আমার নিজের চেয়েও কাছে
বোধে বোধে যুক্তির পরপারে
তাই দৃষ্টি ঢেকে যায়
চোখ দেখে বিশ্ব চরাচর
জগৎ সংসার
আঁচল পেতে আছি অনন্ত কাল ধরে; দু'ফোটা আনন্দাশ্রু দাও প্রভু
তোমার উপস্থিতি বিশ্ব দেখুক আমাতে
বিশ্ববন্ধু তুমি
তুলসী ঘুরে ঘুরে পায় লেগে থাকে
হৃদয়নন্দন বনে ৷৷
প্রেম এবং প্রেমের প্রক্ষেপ
অ মি তা ভ দে
তুমি কার সাথে প্রেম করবে বা
কতজনের সাথে করবে।
কতটা আধুনিক হতে পারে ওই প্রেম।
আমার কিছু লিখতে ইচ্ছে করছে।
অবশ্যই আমার নিজস্ব কিছু ধারণা।
প্রেম শব্দটা সত্যিই কাব্যিক।
এর ব্যঞ্জনা কবির লেখায় যতটা
মেলে বাস্তবের রুক্ষ জমিতে
ততটা বাঙ্ময় নয়।
প্রেম শুধু দুটো মনের মিলনই নয়
দুটো বিপরীত মনের একক প্রকাশ।
প্রেমের ধারণাটা পুরনো দিনের
হলেই ভালো।
আধুনিক প্রেমের অনেক প্রতিশব্দ
এসে গেছে।
ডেটিং, চ্যাটিং,রুমডেট।
শেষেরটা রীতিমতো কর্কশ আমাদের চিন্তা ভাবনার নিরিখে।
এক নিভৃতে বন্ধ ঘরে দুটো মন আর শরীর মিলে যাবে।
এটাকে প্রেম বললে প্রেমের অপমান হবে।
থাকিনা পুরনোপন্থী হয়ে।
কি আসে যায় অত্যাধুনিক প্রেমের
সংজ্ঞা না ভাবলে।
বরং আমাদের যা বয়স ভয় লাগবে
যদি আমাদের পরের জেনারেশন
ঐ মোহ মুগ্ধতায় প্রলুব্ধ হলে।
প্রেমের পূর্ণ বিকাশ তার বিরহে।
কবির চিন্তা কিন্তু মিথ্যে নয়।
সেই প্রেম তথাকথিত স্বর্গীয় প্রেম
হতেও পারে আবার নাও হতে পারে।
তবে দুটি মনের গভীরে প্রোথিত
আবেগ মিলনের আকাঙ্খার প্রত্যাশী থাকেনা।
অব্যক্ত দুঃখের ভারে পূর্ণ করে নেই তাদের জীবনদর্শনকে।
দাম্পত্য প্রেম কিন্তু সবচাইতে
আড়ম্বরপূর্ণ। দাম্পত্য কলহে তার
পূর্ণ বিকাশ। আমরা যতই বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কের পাঁকে ডুবি না কেন ওটাকে প্রেম কোনোদিন বলা যাবে না। কিছু শরীরী চাহিদা কিছুক্ষণের জন্য প্রেমাস্পদের ভালো লাগার কারণ হতে চেষ্টা করে মাত্র।
প্রেম হতেই পারে না।
অন্য দিকে দম্পতিরা যত কলহ
করুকনা কেন, যত বিছানার
অন্য প্রান্তে মুখ ঘুরিয়ে শুয়ে থাকুক, তাদের অভিমান সাময়িক।
তাদের আত্মজ দের নিরাপত্তার
নির্ভরতা দেওয়া টাকে তাদের
সম্পর্কের রসায়ন মনে করলে এত মধুর একটা
সম্পর্ককে অপমান করা হবে।
দম্পতির মিলিত প্রয়াস পরিবর্তিত
পরিস্থিতিতেও প্রেমকে কালজয়ী
করে তুলতে পারে।
বৈবাহিক সম্পর্কের বাইরে নারী
পুরুষ যখন মিলিত হয় গোপনে
তাদের উদগ্র বাসনা নিয়ে,
তখন প্রেম শব্দটা বিলীন হয়ে যায়।
শরীরী সম্পর্কের বাইরে প্রেমের
প্রকাশ তার মাধুর্যে, তার কোমলতায়, তার নিঃস্বার্থ নিষ্কাম বদান্যতায়। তার নীরব হয়ে থাকার ঔদার্য তাকে মুখর করে তুলে প্রেমের প্রতিধ্বনিতে।
আমরা যতই অস্বীকার করি না
কেন, যতই বলি মানিনা কোনো
অনুশাসন সমাজের। আসলে
নিজেরা ভালো করেই
জানি সমাজ বদ্ধ প্রাণী আমরা।
প্রেম কখনো দ্বিচারিতা করতে
শেখায় না। অবশ্যই সত্যি কারের
প্রেম। বহুগামিতা কিন্তু প্রেমের
ব্যস্তানুপাতিক।
প্রেমের সাথে একটা শব্দ অনেকক্ষণ ধরে উচ্চারণ করিনি, কিছুটা ইচ্ছা করে। হ্যাঁ যে শব্দবন্ধটি অনুচ্চারিত থেকেও উপমা হয়ে আছে।
"ভালোবাসা"।
প্রেম যদি পরিণত হয় ভালোবাসা
তার প্রকাশ।
ভালোবাসার অনুভূতি অনেক
সম্পর্কে থাকে।
আমি কিন্তু প্রেমিক প্রেমিকার
কথা বলছি এখানে।
কিম্বা স্বামী স্ত্রী।
একজনকে ভালোবাসব আর
একজনের বা বহুজনের সাথে
প্রেম করবো... চিন্তাটা সোনার
পাথর বাটির মতো।
সম্ভব নয়।
সংজ্ঞা হিসেবে রাধা কৃষ্ণের কথা
বার বার উঠে আসে।
সেটা সত্যই ঐশ্বরিক। তার কাহিনী
সবার জানা।
সে আলাদা গল্প।
আমি জানি আমার উত্তরপুরুষ
প্রেমে পড়বে। শুধু যুগোপযোগী
ধারণা বা তাদের স্বাধীনতাকে
স্বেচ্ছাচার করবার জন্য ব্যবহার
করলে আমি আহত হবো।
হতে পারি আমি ভ্রান্ত তবুও
ত্রস্ত থাকবো॥
মায়ের ব্যথা
বী থি কা ভ ট্টা চা র্য
"ওই শোনো মা বাদ্যি বাজে, পরল কাঠি ঢাকে,
চলোনা মা প্রণাম করি, দেখি দুগ্গা মাকে।"
ছোট্ট মেয়ের আবদারে মার, দুচোখে বানভাসি।
আঁচল খুঁটে চোখটি মুছে, ঠোঁটের কোণে হাসি।
"ছেঁড়া শাড়ী মলিন জামায়, কেমন করে যাই,
তুমি নাকি মা সকল জনের, মোদের কেন নাই?
গত বছর করোনাতে, প্রাণ গেল ওর বাবার,
লোকের বাড়ীর বাসন মেজে, জোটে দুটো খাবার।
নতুন জামা কোথা থেকে, কেমন করে পাই?
এসব কথা বলছি তোমায়, অনেক দুঃখ তাই।
কোনোমতে মায়ে ঝিয়ে, আছি নুনে ভাতে,
নুন আনতে পান্তা ফুরায়, তাও জোটেনা মোটে।
টালির চালা ভাঙ্গা বাড়ী, বর্ষাতে জল পরে,
নেতারা কেউ চায়না ফিরে, আছি কেমন করে।
ঠাকুর দেখা সে দূর অস্ত, স্বপ্ন দেখাও মানা,
মুখ বুজে তাই একপাশে রই, ঘামে ভেজে জামা।
আসতে যেতে কতই লোকে তাকায় কেমন করে,
ভয়ে ভয়ে আছি বেঁচে, প্রাণটা মুঠোয় ধরে।
তুমি তো মাগো সবই জানো, দেখেও দেখো না,
বড়লোকের মা শুধু কি? মোদের কেউ না?
দূরের থেকেই প্রণাম করি ধরি দুটি চরণ,
বলতে পারো অভাগাদের হয়না কেন মরণ?"
শঙ্খ
উ দ য় ভা নু চ ক্র ব র্তী
তোমাকে এক একদিন শঙ্খের মতো মনে হয়, নেহাৎই কুড়িয়ে পাওয়া, তবু অপূর্ব খাঁজের কারুকার্য-
নির্জন সাগরতীরে সবার অলক্ষ্যে,
নিঃশ্বাসে ছুঁয়ে থাকা গভীর সুর যা মুছে দেয় লৌকিক সমস্ত নিষ্ঠুর স্তব্ধতাকে,
দূরে সরিয়ে দেয় একাকীত্বের নির্মম কাঁটাঝোঁপ,
আকাশে ভেসে ওঠে পৌর্ণমাসী চাঁদ আর দু একফালি পেজা মেঘ অথবা হেলে পড়া বহুকল্প রোদ!
ভাবি মঙ্গল অমঙ্গলের উর্দ্ধে আশ্চর্য সেই ব্যক্তিগত সত্য ,
ঢেউয়ের উত্তাল শব্দ, নশ্বর হারজিত এ' জীবনের..!
মনে রেখো, যতবার ভালবাসা হারাবে,
ততবার খুঁজে নেব তোমাকে ওই বালি ঢিবির পাশে!
যাজ্ঞসেনী
অ রু ণি মা চ্যা টা র্জী
মুক্তকেশী মুক্তমনা
দুলছে যেন সাপের ফণা,
ও মেয়ে তুই স্বাধীনতা
এ সব তো নয় কথার কথা!
জ্বলছে আগুন যাজ্ঞসেনী
তোর পিঠেতে মুক্ত বেণী,
সাপের ফণা দুলছে যেন
ভয় পেয়েছো ! তোমরা মানো?
তুষের আগুন ধিকি ধিকি
চাঁদ তারাদের ঝিকিমিকি,
বোমার মতো আছড়ে পড়ে
আমজনতার স্বর যে চড়ে!
সেবার ব্রতে দীক্ষা নিলি
তারার মাঝে হারিয়ে গেলি,
বলী দানে অমর থাকিস
তোর ধর্ম যত্নে রাখিস।
যাজ্ঞসেনী মরে না কভু
দিনের আলো নিভু নিভু,
লক্ষ প্রদীপ জ্বালিয়ে গেলি
সেই পথেতে আমরা চলি!
স্বাধীনতার আকাশ এখন
বৃষ্টি ঝরায় যখন তখন,
তোর চোখের ওই অশ্রু ধারা
প্লাবন হয়ে ভাসছে ধরা।
যাজ্ঞসেনী যাজ্ঞসেনী
পিঠের পরে মুক্ত বেণী,
ফনা হয়ে ছোবল দিবি
সব হিসাবের শোধ তো নিবি!
এখনো পুড়ছে হলুদ একটা খাম
দু র্গা প দ ম ন্ড ল
কতদিন যেন দেখিনি তোমাকে
কতদিন আগে তোমাতে আমাতে দেখা;
শিশির সেদিন ছুঁয়েছিল লেবু পাতা,
আজ উড়ে যায় উত্তরি, আঙরাখা।
হারানো বকুল আজও আসে ফিরে ফিরে
যমুনা-পুলিনে আকুলিয়া থির দিঠি,
আসবে না আর কোনোদিনও বুঝি তবে
হলুদ মাখানো প্রিয় বিরহের চিঠি!
তোমার চোখের শাওন কি ঘন হয়!
অভিমানী মেঘ ভেসে আসে অবেলায়!
বাদশাহী মন হারানো মোহর খোঁজে,
তীক্ষ্ণ বুলেটে বিঁধে থাকে পরাজয়।
আকাশ কি চেনে মেঘের বিপন্নতা?
পাহাড় কি শোনে যক্ষের হাহাকার?
এখনো পুড়ছে হলুদ একটা খাম,
গোপন মৃত্যু রঙিন আঙরাখার।।
জলকেলি
গী ত শ্রী সি ন হা
সেই কবে থেকে রোঁয়া ওঠা পথে পথে রোদে ভিজছি...
স্যাঁতসেঁতে মফস্বলি মানুষের কাছে আবেদন করি...
তারা জীবন দেখে নি! প্রস্তাবে সপাটে চড় কষায়!
পরকীয়ায় মাতবো তোদের সাথে, নিয়ম বেঁধে শব্দ কি যায় মাপা!
ইচ্ছে করে সভ্যতার আবাস একটা গড়ি, নাম রাখি তার, 'সাংস্কৃতিক পরকীয়া কেন্দ্র'।
পুরুষ শব্দ- নারী শব্দ একই নদীতে পা ভিজিয়ে শব্দ খেলা করুক। এরা চরিত্র চুরি করা মানুষ নয়...
ভাবতে ভাবতে সময়ের বয়স বেড়ে চলে... ইচ্ছেদেরও...
কতো মিস কল ফিরে গেল সঙ্ঘ সভ্যতার ঘর থেকে...
অপেক্ষা শুধুই সাদা পৃষ্ঠা আর কলম!
পটভূমিতে দৃশ্য বলে চলেছে--- এ-কোনো বিপ্লব নয়...! এটা একটা বিশ্বস্ত বিশ্বাসের করাঘাত... একটা খিদের নাম! পরিযায়ী পায়ে রক্তের বলিরেখা...
তোমরা বলো টাকা ছাড়া পুরুষ বিধবা!
আমি বলি, শব্দ ছাড়া শতাব্দী অন্ধকার, এঁটোকাটা সময়ের চন্ডাল জীবন...
সারা পৃথিবী আজ স্টুডিও সাজিয়ে বসেছে প্রদর্শনীর ভিড়ে, বেকার প্রদর্শনী মুখ বই-এর পাতাজুড়ে... সাহিত্য সেখানে খেলনা, চুপসে যাওয়া গ্যাসবেলুন... হাস্যকৌতুক ভরা চৌরাস্তার মোড়।
ফেলে দেওয়া শব্দের মাঝে কিছু শব্দ আজও দীর্ঘশ্বাস চুষে চলে।
শব্দ আর স্বপ্ন ঠোঁটে ঠোঁট ঘেষে চোখের জল চেটে খায়।
দমকা হাওয়ায় উড়তে দিও না তাদের... ওরা গর্ভের সন্তান, জায়গা করে নিচ্ছে সায়াহ্নে ভূমিষ্ঠ হতে চায়।
ক্যাপসুল গেলার মতো আটকে যায় না যেন কন্ঠনালীতে...!!!
সাদামাটা চায়ের দোকান
দে বা শী ষ স র খে ল
দুটি গ্রহে দুই রূপ
অগুরুচন্দন ধূপ জ্বলে
অমৃত কোলাহলে
খুশী রাঙ্গা বাঁশি হয়
ঢেউ তোলে নিশিথপিঞ্জরে।
তুমি তখন ঘরে
চোখ ঢুলু ঢুলু
তোমার সাদামাটা চায়ের দোকান সাথে ল্যাংচা ও ভাবরা
ফুল কামরায় ট্রেনে চেপে হাওড়া
অব্দি দল ভালোবেসে।
কমরেড চায় দোকানে
ছেলে বসে কিছুদিন,
তারপর সময়ের ঋণ
সংসারে দুদিন
ভালোবেসে তোমার চায়ের গন্ধে ভিড় করে যারা
তারা পায় সুশ্রুষার আলো তোমার ডাইনে আনতে বাঁয়ে
কুলোয় না
তবু তোমার মুকুট মাটিতে লুটোয় না
দুধে মদে বিকৃত মানুষের খাঁচা ভেঙ্গে যায়
ঝড়ে কাক মরে
তোমার অক্ষরের জাদু সাদামাটা তোমার নিজস্ব ধারাপাত
তোমার কল্যান চিহ্নিত হাত
সকলের ভরসার আলো।
জলপরী ও মনতরী
আ ল্পি বি শ্বা স
জলঘুঙুর পায়ে বেঁধে
ছলছল জল জলপরী
একূল থেকে ওকূল ভাসায়
ঘাটে বেঁধে মনতরী
বুকের মাঝে জেগে ছিলো
সবুজ অবুঝ চর ক্ষত
শরত এসে বুনে দিলো
সাদা কাশফুল ছিলো যত
বাদল মেঘের শরীর ক্ষয়ে
ছিঁটেফোঁটা বৃষ্টি নামে
পরক্ষণেই রোদের আলো
ঠিকরে পড়ে মধ্যযামে
ও মাঝিভাই কোথায় গেলি
বেলা যে এলো পড়ে
কোথায় গেলি নোঙর ফেলে
কে আছে তোর মনঘরে ?
দুগ্গা আসছে
ঋ ত ম পা ল
নীল আকাশে ঢাকের তালে,
শরত এলো বঙ্গে;
বছর ঘুরে মা আসবে বাপের বাড়ি,
আসবে চার ছেলেমেয়ে সঙ্গে।
রথের টানে পুজো আসে,
বাঙালি মন আবেগে ভাসে।
হয়েছে শুরু খুঁটি পুজো,
এখন থেকেই তাই সাজো সাজো রব;
দুগ্গা দুগ্গা আসছে, বাঙালির প্রধান উৎসব।
কাশের দোলায় শিউলির চাদরে,
মৃন্ময়ী মা চিন্ময়ী হবেন মহালয়ার ভোরে;
মুছে দিয়ে সব আঁধার, এসো মা সাদরে।
জ্যোৎস্না প্লাবনে
প্র কৃ তি দ ত্তা
ট্রাসের আড়ালে চলে গেছে ছায়াপথ
শহরতলী থেকে বিস্তীর্ণ আকাশ দেখার সুযোগ আর নেই
একচিলতে আকাশটাকেও ঢেকে দিয়েছে মেলিয়া অ্যাজেডারাক
শারদীয়ার আঘ্রাণ মেখে এগিয়ে আসে কোজাগরী রাকা।
মহাজাগতিক সমীকরণ আর আবহাওয়া পরিবর্তন
মিলিয়ে দেয় সেই আটষট্টি সালের দিন
প্রবল বর্ষণে তিস্তা ধারণ করে রুদ্রমূর্তি
সংকেতের রং হলুদ থেকে লাল হয়
সামাল সামাল আর্তনাদ ওঠে প্রতিটি চরভূমে
শীতল ঝড়ো হাওয়ায় বাঁধ ভাঙার আতঙ্ক।
জরুরী সবকিছু অভিকর্ষের বিপরীতে টেনে
যখন হাপিয়ে পড়ি, তখন
শিরশিরে হাওয়া সঙ্গী করে
মেঘে ঢাকা কোজাগরীর রাতে
আকাশের দিকে চেয়ে থাকি
চাঁদের রামধনু বলয় দেখবো বলে।
সরে যায় মেঘ
চাঁদের আলো এসে পড়ে কার্ণিশে
জ্যোৎস্না প্লাবনে
স্বস্তির শ্বাস ফেলে অগুনতি মানুষ।
রৈখিক
সু খে ন্দু ভ ট্টা চা র্য
যে পাখিটি...
প্রিয় বাসাটিতে যার টান
বাসনা অধীর মন
শ্রম ও নির্মাণ
খড়কুটো বাঁধা এই ঘর।
ছায়াকল্পে আঁকা দাগ
মায়া রঙ রামধনু মনে
গতকাল গিয়েছিল উড়ে। আজকেও,
সময়ে এসেছে ঠিক ফিরে
গোধূলির আগে
শ্রম বাঁধা প্রেম বাঁধা পূরবীর রাগে।
যে পাখিটি
প্রিয় বাসাটিতে যার টান
বজ্রনিরোধক তার কিছুতো থাকে না
ঘেরাটোপে অভিলাষী, ক্যানভাসে ছবি
দীর্ঘকাল বীজ বুনে
ফসল তোলার কাজ। শেষে
যে বাতাস ভরে দেবে বাড়ির উঠোন
তার কোনও মালা গাঁথা নেই।
ভোরের আলোতে ভরা
যৌবন। দীঘল পর্যটন শেষে
রোদপড়া স্মৃতির বিকেলে
ঘটি বাটি ঠোকাঠুকি মেনে
হরিতলা রেখে দেবে ছাপ
বাসনা অধীর মন- এই আশা।
এক পাখি দুই পাখি
প্রিয় বাসাটিতে যার টান।
তবু ভালোবাসি
মৌ মি তা চ্যা টা র্জী
তোমাকে পাব না জেনেও হেঁটে খুঁজি তোমার বুকের বামখন্ড ঘেঁষে যাওয়া মহাশূন্যের ধোঁয়া ধোঁয়া ছায়াপথ।
তোমাকে পাব না জেনেও অপেক্ষার সমুদ্রে খড়কুটো সম্বল করে, নতজানু হই অন্ধকারে অনন্তের গর্ভ থেকে ভেসে আসা অশ্রুত কন্ঠস্বরের একছত্র দরবারে।
শ্রাবণের চিঠি আসে।
বৃষ্টিআনে একমুঠো স্বাধীন বাতাস।
বিস্মৃত নুপুরের অতীত নিক্কন হঠাৎ তছনছ করে অব্যক্ত কাব্যের মায়াময় নিস্তব্ধতা।
কোথাও নেই তুমি…..।
ঠিক তখনই একটা বজ্রপাত আঘাত হানে লেখার কলমের ওপর।
আলোর বন্যায় ভেসে যাচ্ছে কাগজ, দোয়াত।
হারিয়ে যাওয়া সময়ের মান অভিমানে ঘিরে থাকা ‘তুমি’ ছেড়ে গিয়েও মিশে যাচ্ছ ছন্নছাড়া মূহুর্তের অসাবধানী আবেগে।
নেফারতিতি
সা য় ন্ত ন ধ র
আজ থেকে পাঁচশ বছর পরে যদি পৃথিবীতে প্রাণ থাকে,
এক তরুণ কবি ফেসবুকের পাতা উল্টে দেখবে কবিতা লেখা দেওয়ালটাকে।
সে জানে মিশর তোমার প্রিয়, তার সভ্যতা তোমাকে টানে
পিরামিডের অন্ধকার স্থানে ফ্যারাওদের রহস্য তোমাকে শিহরিত করে।
মিশরকুমারী নাটক তোমার জানা, মরুভূমির বিস্তৃতিতে সাথ দিয়েছে নির্মম খামসিন,
তবু, নীল নদকে তুমি ভুলে যেওনা, দেখো, সোনালী মরু চিরে সবুজ রেখায় শস্যের বিস্তার।
ছোটবেলার সহজ সরল তুমি বড় হতে হতে নিষ্ঠুর জগৎটাকে চিনলে
চারিদিকে শুধু ঋণাত্মকের ভিড়ে আনুবিস আজ ফিরে পেয়েছে শক্তি।
সূর্য যে সবচেয়ে বড় শক্তি, হায়! তুমি কি সে কথা ভুলে গেছো?
সৌর দেবতা আতেন যার পূজ্য, তিনি থাকতে কিসের ভয় নেফারতিতি?
আপন জ্ঞানে বিজ্ঞান হয় জয়ী, যুদ্ধ যদিও বিশ্বের স্থিতি ভেঙেছে,
সেও একদিন পিছু হটবে নিশ্চয়ই, নেফারতিতি, আমরা আবার করবো জয়।
আগামীর সেই তরুণ কবির জন্য তুমি রেখে যাবে এক আকাশ কবিতা
তোমার আশা সঞ্চারিত শব্দে নতুন করে জন্ম নেবে এক ঈজিপ্সীয় রূপকথা।
সাতাত্তর পেরিয়ে
আ র তি ধ র
চাঁদের গায়ের কলঙ্ক নিয়ে করি গবেষণা
অন-লাইনে চলছে দেদার বেচাকেনা
স্মার্ট বাচ্চাটা কেমন তরতরিয়ে উঠে যায়
মায়ের আগে, ওই চলন্ত সিঁড়ি বেয়ে!
সারা বছর প্রচুর ফলন হচ্ছে, সব সবজি তরকারি সবসময় সহজলভ্য।
শিক্ষিতা ঝকঝকে তরুণী বিদিশা আমার কন্যা, ও বেরিয়ে যায়, ওকে বেরোতে হয়
তিরঙ্গা পতাকা উত্তোলন হবে সকাল সকাল
আমরা সাতাত্তর পেরিয়ে এলাম...
স্বাধীনতার ~
কন্যা আমার বেরিয়ে যায়, আমি কাছে গিয়ে বলি 'আঁধার হবার আগেই ফিরে আসিস'
আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি
আমরা স্বাধীনতা লালন করি
বহু যত্নে...
তবে কেবলমাত্র বুকের ভেতরে।
অপমান
স ন্দী প কু মা র মি ত্র
বাংলা ভাষা মাতৃভাষা
সেই ভাষাতেই জাতীয় গান
স্রষ্টাকে তোরা করলি চূর্ণ
এতো নিজের মাকেই অপমান।
তোরাই নাকি ছাত্র, বলিস,
কোন ভাষাতে পড়িস বই
ভাষাশহিদের দিস গলায় মালা
তাদের মান রাখলি কই।
বিপ্লব, নাকি স্বজনপোষণ
বলতে পারিস আসলে কি
মা বোনেদের অন্তর্বাসে
বিপ্লব পাচ্ছে ছি ছি!
ধর্ষণ খুন কারা করে
কোন বিপ্লবের হাতিয়ার
পারিস যদি দেখিয়ে দে
করে অন্যায়ের প্রতিকার।
লোভ লালসা আর লুঠ পাঠেতে
বিশ্ব দেখল তোদের রূপ
রাখিস মনে বিপ্লব নয়
খুঁড়লি তোরা অন্ধ কূপ।
আগুন চাই
ক বি তা ব ন্দ্যো পা ধ্যা য়
এ কোথায় চলেছি আমরা?
উত্তর নেই জেনেও
প্রশ্ন নিজেকেই বারংবার!
নিশ্ছিদ্র অন্ধকার, নিরাপত্তাহীন জীবন,
মৃত্যুর ছায়া এগিয়ে আসছে ক্রমশই...
আসন্ন শরতের হাওয়ায় বিষাদের সুর,
শিউলির গন্ধ ছাপিয়ে রক্তের আঁশটে গন্ধ!
প্রতিবাদের শব্দগুলো সমাজের কঠিন দেওয়ালে ধাক্কা খেয়ে ফিরে আসছে ক্রমাগত...
স্বপ্নগুলোর আহুতি হয়েছিল মধ্যযামে,
সে চিতা এখন নিভু নিভু
আগুন চাই, আরো আগুন!
নিভন্ত চুল্লির রক্তিম আভায়
আরো একবার নাহয় দেখে নিই মুখ,
প্রতিবাদের ফুটন্ত শব্দগুলো চারিদিকে ছড়িয়ে দিই
জন্ম হোক্ রক্তবীজের...
হিসেব নেই
শ্যা ম ল খাঁ
সাবলীল স্রোতে বাঁধ দিয়ো না
প্রবহমান গতিধারা চলুক না আপন ছন্দে,
ক্ষণিক স্বার্থের লোভে কেন পথ আগলে দাঁড়াও
অহেতুক কেন দাও বাঁধার প্রাচীর?
মাঠ ভর্তি ফসলের জন্ম দিতে বাঁধের নিরেট ফাঁদে
হারিয়ে গেছে কত শত নদ নদী
কখনও হিসেব করেছো কি?
নগরের নির্জীব কোলাহলের গর্ভে হারিয়ে গেছে
কত অরণ্যের ফুটন্ত যৌবন,
হিসেব করেছো কি?
বহুতল অট্টালিকার আগ্রাসী স্পর্ধার কাছে
খেই হারিয়েছে অসহায় আকাশের নীল
দু চোখ মেলে দেখেছো কি একবারও?
শৈশবের তরতাজা দিন গুলো
স্বাভাবিক ছন্দ হারিয়ে, স্বপ্ন পূরণের আগ্রাসনে
চরম পরাজিত হয়ে কাটিয়েছে কত বিনিদ্র রজনী!
হিসেব নিয়েছো?
অহেতুক অপ্রয়োজনীয় বোঝা বইতে বাধ্য হয়েছে
কত কোমল হৃদয়?
হিসেব নেই তার এই চলমান ইতিহাসে।
সন্দেহ আর অবিশ্বাসের নিচ্ছিদ্র প্রাচীরের গাত্রে
আটকে গেছে কত সৃষ্টিশীল মন,
অশান্তির লেলিহান আগুন এড়াতে দিকভ্রষ্ট হয়েছে
কত সংবেদী হৃদয়ের স্বাভাবিক স্বছন্দ গতি?
তারও হিসেব নেই।
সংকীর্ণ মানসিকতার বেহিসেবি পদক্ষেপে
কতবার কত ভাবে পদপৃষ্ঠ হয়েছে
প্রকৃতি, পুরুষ, দেশ, কাল, ইতিহাস
হিসেব নেই...
হিসেব নেই, রাষ্ট্র ,সমাজ, আর ক্ষমতার
একচ্ছত্র আধিপত্যের ইতিহাসে।
বড় সুন্দর
অ নু ভা স র কা র
হাজার ব্যস্ততার ভিড়ে এক ফালি চাঁদ দেখেছিলো মেয়েটা।
অজুহাতের কোন দাম নেই সংসারে,
আঁকাবাঁকা রাস্তায় বড় ঘৃণা তার
তবু এসেছিলো নাম না জানা প্রেমের আহুতি
মেয়েটা বুঝতে পেরেছিলো হয়তো এমন ভাবেই আসে
না চাইলেও আসে
সে যে প্রেম
জরাজীর্ণ শরীর খসে যায় কিন্তু মন
তাকে সামাল দেবে কে
ও যে বড়ো সুন্দর সুন্দরের পূজারী
রাতের অন্ধকারে ফুঁপিয়ে কাঁদে
এ যে তার কাছে ঘৃণা
বড় যন্ত্রনা মুক্তির পথ খুঁজে চলে
নিশি ডাকে কাক ভোরে যখন সে উঠে
বড় ঝরঝরে হয়তো রাতের আঁধার সব ধুয়ে দিয়ে যায়
সাক্ষী থাকে নোনা জল আর ওই এক ফালি চাঁদ,
তার গায়েও যে কলঙ্ক আছে।
তবু সে বড় সুন্দর... বড় সুন্দর।
নষ্ট-সন্ন্যাস
শু ভ জি ৎ দা স দাঁ
যখন সন্ধ্যে বলে নষ্ট হতে চাও?
আমি সন্ন্যাস ভুলে যাই,
কৌমার্য তুলে রাখি কুলুঙ্গির নিভৃত সীমানায়,
মেখে নিই পৌষালী রাতের কুমারী ঘ্রাণ,
মৌন আয়োজনে ডিঙিয়ে যাই দুর্গম বুকের চৌকাঠ।
ক্যানভাসের খোলা শরীর থেকে কুড়িয়ে নিই অলৌকিক ঝিনুক,
পুড়ে যায় রাত,
জ্যোৎস্না ভেজায় সব সীমারেখা,
নোনাজলে ভিজে ওঠে নক্ষত্রের চোখ, আদুল মেঘ।
ঠোঁটের কোণে উপচে পড়ে শিশিরের শব্দতরঙ্গ,
স্বৈরিণী কবিতার নাভি স্পর্শ করে দীর্ঘ ছায়াপথ।
অক্ষরের আদিম উৎস থেকে তুলে আনি স্বয়ংবরা নদী,
জল-বিভাজিকায় ছড়িয়ে দিই হাজারো অপ্রকাশিত কবিতা।
সবুজ পাতার ইচ্ছেটি
সু মা গো স্বা মী
স্তব্ধতার তমসা ছিন্ন করে
আসমানের বুকে
যদি একবার স্বাধীন হতে পারি,
স্বর্গপুরীর মৌতাতে
নোঙর করবে
মনের গভীরে থাকা নৌকাটি।
লবটুলিয়া পাহাড়ের
চীহর ফলের গাছে
যদি শঙ্খচূড়ের বন্ধু হতে পারি,
পক্ষীরাজের পিঠে চড়ে
চড়কাবুড়ির স্বপ্ন ছুঁয়ে
রামধনুটির মিতা হবো আমি।
নিস্পৃহ, অনুদ্বিগ্ন জীবনের
সীমানা অতিক্রম করে
যদি যশোয়ন্তের বন্ধু হতে পারি,
ভবিষ্যতের লক্ষ শতাব্দীর
প্রথম সোহাগী রাতের
কথা হবো আমি।
আমি চাই না
তা প স মা ই তি
দাঁড়াতে বলছ, দাঁড়াতে চাই না
হাঁটতে বলছ, হাঁটতেও চাই না
আঘাতে মেশানো নুন,
ভেতরে ভেতরে দগদগিয়ে তুলছ ঘা
আমি বিশ্রামও চাই না
অন্ধকারে একটা
পাথরের মতো পড়ে থাকতেওৎ চাই না
যে আলো
নিভেছে তার প্রয়োজনের কাছে,
আমাকে কেন সেখানে ঘাড় ধরে নামাতে চাও
প্রেমের মাশুল
শ্রী মা গো স্বা মী মু খা র্জী
হঠাৎ যদি প্রকাশ্যে দেখা হয়ে যায়
তোমার সাথে
কী করবে তুমি, কী বা বলবে!
হাসিটা কী সেই পাহাড়ী ঝোরোর মত
অমলীন থাকবে
নাকি বৃষ্টি হয়ে ঝড়ে পড়বে
পাহাড়ের গা বেয়ে
বুকে জমানো না বলা যন্ত্রণার পাহাড়
জুড়বে কে?
অনেক অগোছালো অনুযোগ বলতে গিয়ে
বাষ্প হয়ে যাবে,
বিনা রক্তপাতে ছিন্নভিন্ন হবে
লেপ্টে থাকা মানচিত্র,
জয় পরাজয় ছাড়াই প্রেমহীন হৃদয় গুনবে
প্রেমের মাশুল ।
খুদেটা
প্র তী ক মি ত্র
মেঘ দেখলেই খুদেটা
জানতে চায়
সেই মেঘের ঠিকানা পাহাড় কিনা?
ও আলোর সাথে মুহুর্ত ওড়ায়।
হিসেবের অঙ্কটা
ও অজান্তেই পাশ কাটায়।
সমতলে
ও সম্ভাবনার দলে।
পোকা মানুষের ভীড়
গড়ে তুলেছে অজ্ঞতার প্রাচীর।
ওর বোধের দোড়গোড়ায়
পাহাড়ের কোনো নেই সীমানা।
অন্বেষণ
বা সু দে ব বা গ
বৃষ্টি এলো বলেই কবিতাকে ছুঁয়ে দেখি তা কি ঠিক, না কবিতা অনুভূতির আস্তরন, কি জানি! তবু মেঘের ডাক, মাটির ভেজা গন্ধ, ঠান্ডা বাতাস বড় আপন করে রে--- তোর ফেরার সময়টা উদাসী হয়ে সম্মুখ পানে তাকিয়ে থাকি, ওই বুঝি ডাক দিলে- "দরজা খোলো"
হৃদয়ের দরজা তো খোলাই পড়ে আছে বহুকাল! প্রতীক্ষার তো শেষ হলো না--- অভিমান ভুলে কি ডাক দিতে নেই! এমন সৃষ্টিছাড়া উত্তাল ঢেউ
তুই ও দেখেছিস, আমি তো পাশে ছিলাম নৌকোর দাঁড় হয়ে, তবে তুই কেন সুদূরে গেলি, ঝরা পাতার কান্না দেখতে ভালো লাগে?
শীত গেলে বসন্তে আসে, ঋতুর পরিবর্তন হয়,
সময় বদলে যায় রে--- কেউ আপন নয়, তুই ছাড়া।
একবার ডেকে দেখ--- "দরজা টা খোলো"
সবাই চলে গেলো, যারা ভরসা ও আশার স্থল কেউ নেই তারা,
বৃষ্টি ঝরছে, খু্ব মনে পড়ছে তোকে,... ফিরে আয় তুই, সত্যি বলছি--- তুই না এলে রাত জেগে জেগে কাটিয়ে দেব--- সেই অন্ধকারের খোঁজে আজীবন--- অনন্তকাল---!
অন্যরকম পৃথিবী
ম ঞ্জি রা ঘো ষ
যাই যাই করেও ফিরতে পারে না সারল্য---
শুদ্ধতা তাকে জড়িয়ে রেখেছে ওতপ্রোতে।
সারল্যের আর থাকতে ইচ্ছে করে না লোকালয়ে,
হাঁটতে ইচ্ছে করে না আলপথ বরাবর
সর্বত্র ই যেন ষড়রিপুর ভরপুর আয়োজন।
ও নিঃশব্দে চলে যেতে চায় পাহাড়ের কোলে
নির্ঝরিণী ঝর্ণা হয়ে।
তারপর, নির্ঝরের স্বপ্নভঙ্গ হলে চলে যাবে
মেঘের মিনার দেশে।
হয় তো,হাত বাড়ালেই পেয়ে যাবে পারিজাতের বাগান,
পারিজাতের রেণুতে রেণুতে মিশে হবে একাকার।
শুদ্ধতাকেও নেবে পাপড়ির সঙ্গসুখে
কথা দিয়েছে, আমরণের সাথী কে।
তবু শুদ্ধতা ওকে বুকের মধ্যে বেঁধে রাখতে চায়---
শপথ বাক্য পাঠ করেছে
লোভ, ক্রোধ, মোহ, মাৎস্য সব কিছু থেকে
আড়াল করে রাখার।
শুদ্ধতা প্রাজ্ঞ, অভিজ্ঞ।
সারল্যের অভিমান তাকে মানায় না।
সে জানে, হাত ছাড়ালেই সারল্য হারিয়ে যাবে
নির্জন অরণ্যে।
অতঃপর, কোনো দিগ্বিজয়ী রাজা মৃগয়া করতে এসে
হরিণ ভেবেই বধ করবে তাকে।
এ পৃথিবী অন্ধ মুনির মতই শোকার্ত হয়ে উঠবে।
তাই, শুদ্ধতা সারল্যের হাত ধরেছে আমরণ মমতায়---
শুদ্ধতা তার ঐশী সত্তা দিয়ে তৈরি করবে
সুন্দর, সুস্থ অন্যরকম পৃথিবী।।
জিডি নম্বর
প্র সূ ন ব ন্দ্যো পা ধ্যা য়
কেস ডাইরির পাতায় কিছু অসংগতি কিছু ভুল।
তবু এত বছর আয়ু পেরোলাম।
আদালত রায় দিল, ভাঙো, ভেঙে যাও মূর্তির মতন,
পাথর তবু কুড়িয়ে এনে আজ তোমার সংসার।
আত্মজীবনীর খসড়া লেখে কিছু গোপন বিলাস,
কিছুটা লেখার পরেই কান্না পায়।
আমি সবাইকে চিনি, অথচ, নিজেকে চিনতে এত গড়িমসি...
প্রেম জীবনের একটা খন্ড মাত্র, বৃহতে সে মরুদ্যানের নীলুনক্সা।
বালিয়াড়ি তবু... আমি তোমার মেষপালক পুরুষ
যাকে গভীর রাতে জাগিয়ে তোলো চাঁদ দেখতে...
বেঁচে আছি, তোমার ঠোঁটের চুমুকে উপশম নেব বলে,
অথবা, বাউলের মতন ঘুরে বেড়াবো তোমার গান গেয়ে মনিহারি দোকানে।
নইলে এ আমি তো কেউ নই, সামান্য জিডি নম্বর।
তৃষ্ণা
সো ম প্র ভা ব ন্দো পা ধ্যা য় (জা রা সো মা)
জোছনা ফুটলেই খিদে পায়,
এমন মায়া জড়ানো তৃষ্ণা, চাইলেই পান করতে পারি আস্ত একটা নদী,
বুনোঝোঁপের ভুলভ্রান্তি শিক্ষণীয়, চকমকি পাথর ঘষলেই জ্বলে ওঠে ঠোঁট, জ্যান্ত মানুষ অনেক বেশি দগ্ধ হয় মৃতের চেয়ে।
এবার অভিযান শবচ্ছেদে বসতে চাইলেই
ডুমুর ফুলের বাহানায় গিলে নেব চাঁদ
তারপর চেতনা ডুবে যাবে মদ ও মোচ্ছবে।।
শিরিন তোমায়
সৌ মে ন দ ত্ত
অনেক কিছুই বলা হয় নি তোমায়, হয়তো সেই রকম কোন শব্দ বাঁধতে পারি নি এখনও,
হয়তো বা পৌঁছাতে পারে নি সেই সব শব্দরা তোমার অন্তরে আজও।
ফিরে এসেছে বারবার, হেরে যায় নি,
ফিরে আসা তো পলায়ন নয়;
ফিরে আসা তো হেরে যাওয়া নয়;
তুমি তো জানোই যতবার ছুঁতে গেছি তোমার হাত, তার চেয়ে গুটিয়ে নিয়েছি বারবার, জুবুথুবু হয়ে বসে থেকেছি নির্বাক হয়ে।
তোমার কাছে গেলেই শব্দ গুলো কেমন ক্যাবলা হয়ে দিশেহারা হয়ে যায়, কুল-কিনারা কিছুই আর খুঁজে পায় না,
ধোঁয়ার মতো এদিক সেদিক ছুটে বেড়ায়।
চলে যাওয়ার জন্য কিছু লিখিনি,
থেকে যাওয়ার জন্যই এই গান লিখেছিলাম,
তোমার ছোঁয়া পেলে হয়তো মূকতা ছেড়ে প্রাণ পাবে।
অনেক কিছুই তো আমরা বলতে পারি না,
ফর্দের মতো লিস্ট বানিয়ে মাথায় নিয়ে ঘুরি,
হয় সব বলা..?
তারা তো হারে নি, হারে না, হারবে কেন...,
শব্দ আর অনুভূতি গুলিয়ে ফেললে সবাই কেমন একলা হয়ে যায় নিশ্চুপে,
শব্দ ছুঁড়ে বাড়ি ফেরা যাক,
অনুভূতি তবে সত্যিই মিথ্যে।
অনুভবে ছুঁতে পারি তোমায় সহস্রবার,
শব্দে আমার কারফিউ।
ভালোবাসাকে আজও খুঁজি
স ঙ্ঘ মি ত্রা ভ ট্টা চা র্য
ভালোবাসাকে আজও খুঁজি সমুদ্রের ঝিনুক কুড়োতে কুড়োতে।
রাতের একফালি বাঁকা চাঁদের মধ্যে খুঁজে যাই ভালোবাসাকে।
যাকে আমি পেয়েছি আজন্ম কাল---
কিছুটা চেতনে কিছুটা আবেগে কিছুটা বৃষ্টির ছন্দে।
প্রেম বলে যাকে আমি জেনেছি এতকাল---
সেকি পার্থিব কোনো প্রেরণা!
নাকি ক্ষুধা তৃষ্ণার চেয়েও উগ্র কোনো অনুভূতি---
যা দিনে রাতে মাতাল ঝাউয়ের বনে আন্দোলিত হয়!
যাকে আমি এতদিন দিনরাত এক করে খুঁজেছি কাশের বনে শরতের আবাহনে।
কিংবা শিউলির গন্ধ মাখা ভোরের কুয়াশায়।
হয়তো সেই প্রেমেরই কোনো আকুতিতে---
কোনো পথিক গ্রামের মেঠো পথে আনমনে বাঁশি রেখে যায় গোধূলিবেলায়।
হয়তো কোনো কথা থাকে না, নাই থাক!
তবুও প্রেম আসে হৃদয়ের অপচয় ঘটাতে অথবা ব্যর্থ কোনো তৃষ্ণা মেটাতে।
কিংবা শারদীয় নিমন্ত্রণে আবার কোনো ঘোর লাগা রাতের আঁধারে।
এইভাবেই হয়তো ভালো থাকে মানুষ!
ঘুণ ধরা সমাজের আদিম রিপুর সাথে লড়তে লড়তে অবসন্ন মনের কোণে---
যখন প্রেম আসে নিঃশব্দে মুহূর্তের ভ্রান্তির পথে!
সেই ভালোবাসা সেই প্রেমকে আমি আজও খুঁজি সমুদ্রের ঝিনুক কুড়োতে কুড়োতে।
আবার রাতের একফালি বাঁকা নীল চাঁদের গভীরে।
শারদ মেয়ে ঘরের মেয়ে
বি বে কা ন ন্দ ন স্ক র
শারদ কনে কাশের বনে শুভ্র জ্যোতি মুখ
নদীর পাটে সাঁতার কাটে শালুক রাঙা সুখ ।
খোঁপায় চুলে হাওয়ায় দুলে শ্যাপলা হাসি কার
আদুল পায়ে মাটির গাঁয়ে শারদ রাঙা মা'র।
এক পলকে রঙ ঝলকে আকাশ রাঙা চোখ
মেঠো পথের মেঠো স্রোতের রঙিন মত্ত লোক।
বছর ঘুরে ভুবন পুরে ভুবন হাসি হেসে
ঘোড়ায় চড়ে শিশির ঝড়ে শারদ মেয়ে আসে।
মৃত্তিকা মা ঘরের উমা ঘরের মেয়ে বুঝি
পাপড়ি মেলা দু চোখ খোলা শারদ মাকে খুঁজি।
আকাশ মাটি ফুল দোপাটি পরশ ছোঁয়া তার
দিঘির কাঁখে শিউলী শাখে নতুন খুশি ভার ।
শারদ মেয়ে ঘরের মেয়ে ঘরের মাগো এসো
গা শিরশির মন্ডপে ভিড় পুজোর ক'দিন বসো ।
বন্দী মুহূর্ত
গীতালি ঘোষ
মুহূর্তরা বন্দী থাকে মন-কেমনের স্মৃতির জালে,
উড়িয়ে ধুলো 'পথ' বেয়ে যায় সময় নামক স্রোতের জলে।
সময় সারণিতে সেসব হারিয়ে যাওয়া মুহূর্তরা
মাঝে মাঝেই দেয় দেখা যে, কথাও বলে জনম ভরা।
আনন্দ-দুখ সব যাপনের মুহূর্তকে আগলে রেখে
প্রাণের মাঝে কেমন করে, অশ্রু আনে থেকে থেকে।
এমনি করেই শৈশব যায়, প্রাজ্ঞ মনের আগমনী
ছাড়তে শেখে অনেক কিছু, তবুও যেন ব্যাকুল ধ্বনি!
মুহূর্তরা বন্দী হয়ে আছে হৃদয়- পাঠশালাতে,
কেমন করে ছাড়বে সেসব প্রান্তবেলায়, মন-নিভৃতে?
থাকুক সেসব মুহূর্তরা প্রাণের ভিতর হয়ে গোপন।
দুঃখ-সুখের জল ভরা সেই কলসগুলোই রইবে আপন॥
লাভ-ক্ষতির অংক
প্র দী প ম ণ্ড ল
কত উপকার, কত অনুগ্রহ, কত দান...
এখনও যখন মনে রবি ফোটে
এখনও যখন সিঁড়ি বেয়ে পিছন ফিরে তাকাই,
বুঝলে স্নেহলতা,
কৃতজ্ঞতার পাশে বার বার আটকে পড়ি।
যেমন ভাবে মাটি কৃষকের প্রতি
নদী নৌকার প্রতি
ঘাস শিশিরের প্রতি
এবং, কৃষক অ-কৃষকের প্রতি আটকে পড়ে।
যদিও, দেওয়া-নেওয়ার কেনাবেচায়
আমি নিজেকে বার বার শূন্যে বিক্রি করেছি।
স্নেহলতা, কত পেয়ে কত দিয়েছি
লাভ-ক্ষতির সেই দুর্বোধ্য অংকে
লাভের খাতায় তাই বার বার কেবল শূন্যই ভেসে ওঠে।
বিষাদের সুর বাজে
ব র্ণা লী মু খা র্জী
স্বপ্নের রাজ্যে কতবার যে দেখা হয়েছে তোর সাথে আমার তার হিসাব নেই,
হিসাব রাখতেও চাইনি কোনদিন__
যদি স্বপ্নেরা ডানা মেলে আর না ফিরে আসে,,
অধরা স্বপ্নগুলো বারবার নাড়াচাড়া করে দেখে অতি যত্নে তুলে রাখি কুলুঙ্গিতে।
স্নিগ্ধ ভোরের আলোয় শিশির ধোঁয়া ঘাসে মা তোমার সুবাস পাই,,
শিউলি ঝরা উঠোনে তোমার রাঙ্গা পায়ের নূপুর ধ্বনি বাজে___
কাশের বনে দোদুল-দোলা মা তোমার আগমনে,
শরৎ আকাশে মেঘের খেলায় মন চলে যায় সুদূরপানে।
স্বপ্নগুলো সত্যি হলে লাগতো ভীষন ভালো,
দশটি বছর হয়ে গেল তুই দূর দেশে,
তুই আমি বেশ তো ছিলাম শত কষ্ট সয়ে,
পুজোর সময় এলেই মন চলে যায় কল্পদেশে___
মেঘ রোদ্দুরের লুকোচুরি খেলা কপোত কপোতীর মতো,
আকাশ নিজেকে সাজিয়ে নেয় মেঘবালিকার মনমতো।
কত না বলা কথা অব্যক্ত হয়ে থাকে,
তোর অপেক্ষায় বসে আছি পূজো সমাগত।
কবিতা
বি ক্র ম জি ত ঘো ষ
মেঘের সাথে কবিতারা খেলা করে
শব্দগুলো যেন বাতাসে চলাচল করে-
সূর্যরশ্মি ঢাকা পড়ে যায়
মেঘের কবলে; কবিতার অক্ষরগুলো
তখনও ফুটে ওঠে সাদা পাতায়।
হারিয়ে যাওয়া কিছু শব্দ
আবারও দেখা দেয় লেখনীর সাথে
শব্দগুলো যেন বৃষ্টি হয়ে ঝরে পড়ে-
কবিতা কোন বাধা মানে না
মেঘগর্জনে আকাশ- বাতাস কেঁপে উঠলেও
কবির হাত কখনও হার স্বীকার করে না।
কবি আর কবিতা কখনও থামে না
এগিয়ে যায় সুন্দর সৃষ্টির সাথে-
কবিতা মেঘের সাথে যেন কথা বলতে পারে
কবির পরিচয় মেলে কবিতার সাথে
কবির আকন্ঠ শব্দপানে
কবিতা নিজেকে মেলে ধরে
সাদা পাতাগুলোর ওপরে।
হারানো আঁখরগুলি
সা র দা চ ক্র ব র্ত্তি
একে একে দিন যায়, মাস যায়,
সময়ের স্রোতে সব কিছু বদলায়।
পুরোনো সব হারিয়ে যায় বা
কখনও কখনও পুরনোকে হারিয়েই
নতুনকে খুঁজে নিতে হয়,
একে একে দিন যায়, মাস যায়
সময়ের স্রোতে সবটা ভেসে যায়।
হারিয়ে ফেলেছি পুরোনো সেদিনের সবচেয়ে প্রিয় দুল, হারিয়েছি সেদিনের ভীষণ প্রিয় গোলাপি বালুচরি,
হেডফোনে রাতের পর রাত কেটে যেতো যে গান শুনে আজ আর তা শোনায় হয়না, যে ভৈরবীতে ভোর হতো আজ তা ভুলেই গেছি,
একে একে সব হারিয়েও
আজ আবার কিনেছি সেই একই দুল,
গোলাপি বালুচরি শাড়ি।
দেখাযাক, এই অগোছালো আমি কতদিন এগুলো আগলে রাখতে পারি।।
কালো এক ঘোড়া
অ ঞ্জ ন ব ল
যদি অঙ্কুরিত হই জল দাওনি ঘাসে,
দিগম্বরী বৃক্ষের অতলে ধাত্রী আকাশকে
মুঠো করে ধরেছি, প্রতিপদের চাঁদ থেকে
আলো শুষে দারুবৃক্ষ হয়ে উঠেছি
পথ শিশুর মতো। যে শিশু ডাগর হয়েছে
বাতাস থেকে যৌবন নিয়ে
চামড়ার গহনে তার কালো এক ঘোড়া
অন্ধকার ফুঁড়ে বেআবরু করে শহরকে।
ঝাড়বাতিগুলি নিভিয়ে দিলে বেশ হয়
নিষ্প্রভ আঁধারে বেঠোফেনের সংসার
ভাঙা সাঁকোর নিচে আগুন পোহাবে,
শীতের ফ্যাকাসে জ্যোৎস্না থেকে
চাঁদ খসে পড়বে, খসে পড়বে
পলেস্তারা বল্কল পাখনা পালক।
ভরপেট খিদে নিয়ে সারি সারি উট
বালিময় মরুভূমি খুঁজবে শহরের বুকে,
আর অন্ধকার এঁদো গলি সাঁকোর নিচ থেকে উঠে আসবে ওরা হৃদপিণ্ডের কাছাকাছি,
চামড়ার গহনে ওদের কালো এক ঘোড়া
অন্ধকার ফুঁড়ে বেআবরু করে শহরকে।
দশভুজা
দি শা পা ল ন দা র
ভাঙাচোরা গলিটার একদম অন্তিমপ্রান্তে, যেখানে
শহর তলিয়ে সৃষ্টি হয়েছে শহরতলির একটা কাঠামো
সেখানে, একচালা মন্ডপে পাঁচ ওয়াটের আলোয়
আর উমার দশটা হাতে খুশির উৎসব জমানো।
বনগাঁ লোকালের নিত্যযাত্রী আশা কিংবা মফস্বলের অত্যাচারিত গৃহবধূ রুমি, অসুখে আক্রান্ত ছোট্ট ঐশী, অথবা কলঙ্কিত অ্যাসিড আক্রান্ত হিয়া, এরাই
সবাই পুজোর আয়োজক, ওরা গায় সঞ্জীবনী মন্ত্র।
ওরা স্বপ্ন দেখে, কেউ দু’মুঠো অন্নের, কেউ সম্মানের, কেউ জীবন স্রোতের, কেউ বা ন্যায়বিচারের; ঝলসে উঠেছে আজ প্রতিবাদী বিদ্যুৎ, ত্রিশূল ধরা এখন আঁচড়, বিদ্রুপ, দারিদ্র্যের উল্কি আঁকা হাতে ওদের।
গলিটাতে এখন হাজার ঝাড়ের রোশনাই
চিন্ময়ী দশভুজার আরাধনায় মগ্ন মৃন্ময়ী দশভুজারা
একশো আট প্রদীপের আলোয় আলোকিত আজ, মাটিতে নেমে আসে আকাশের নক্ষত্রেরা।
ছড়া
স্বা গ ত ম্ ব সু বি শ্বা স
একখানা যদি গল্প আমি লিখি
উড়িয়ে দিয়ে ঠিক বলবে এটাতো গল্প নয়
তাইতো তখন ভাবতে আমি বসি
সাহস তোমার সত্যি অল্প নয়।
কবিতা যদি একটি লিখে আনি
জানি আমি ফেলবে তুমি হেসে
তখন আমি চুপটি করে ভাবি
ছাই মরেছি কেন তোমায় ভালবেসে।
অনেক ভেবে লিখতে বসি আমি
নতুন নতুন দারুণ দারুণ ছড়া
শুনেই দেখছি এই অবেলায়
মাথাতে জল ঢাললে কয়েক ঘড়া!
তাই নতুন করে ভাবতে বসি গোলেমালে কি করে গেলাম ফেসে
রসহীন তুমি কষহীন তুমি
তবুও মরি তোমায়
ভালবেসে।
ভালবাসা
চ ম্পা না গ
যে পথ গিয়েছে বেঁকে তোমাকে ছুঁয়ে,
তারি ভালবাসায়....
কথারা ছিল সারি বেঁধে
হৃদয়ের সব চিলেকোঠা আলো করে।
ভালবাসার একমুঠো সুখ জোনাক আলোয় আঁধার করেছে আলো!!
স্বপ্নিল ইচ্ছেগুলো বার বার ছুটে গেছে সেই আঁকা বাঁকা পথে...
হেঁটেছে বকুল ঝরা পথে খুঁজেছে তোমার পদচিহ্ন!!
ছুঁয়েছে তোমার শিরা-উপশিরা... তোমারি অজান্তে!!
অবজ্ঞায় ফিরায়েছ মুখ অবহেলায় হয়ত সরিয়েছ দূরে।
টেনেছ অদৃশ্য রেখা তোমার আমার মাঝে!!
তবুও আমার
বিশ্বাসে ফুটেছে ফুল ধরেছে প্রেমের মুকুল।
তোমার অনুরাগে পরাগ মেখে হয়েছি লাল
দিগন্ত রেখায় তারি লালিমা সাতরঙে
ভালবাসা ছড়িয়েছে বার বার... তোমারি পথ চেয়ে আজও বসে আছি উদাসী আমি..!!
কীসের এত ভয়
শু ভা শি স সা হু
তোমার হৃদয়ের জানালায় বয়ে যায়
শুধু আমার প্রেমের ঝড়;
আমি শুধু
যেতে চাই
তোমার কাছে,
আমার দিন কেটে যায়
তোমাকে জাগাতে জাগাতে।
তোমার
হৃদয়ের রাতে
শুধু আমার
শব্দ হয়,
আমাকে ভালোবাসতে
তোমার কীসের এত ভয়?
একটি কবিতা
ম ঞ্জ রী গো স্বা মী
এখনও শাবক গন্ধ লেগে আছে গায়ে
কল ওঠা ছোলার সাদা শিশু
হাতড়ে হাতড়ে আলো জল স্তন চায়।
একটু প্রয়াস আর অনেক প্রশ্রয়
এখনও চাইতে পারি রানী মৌমাছি
যৌথ খামারে চুপ বসে বসে পাবো
সম্বৎসর মধু আহ্লাদ...
এমনও বেহায়া আছি বলদের লায়েক জোয়াল
তোমাকে পেলেই ঘাড়ে চেপে বসে অজন্মা ক্ষোভ।
বহুদিন হয়ে গেল এমন অসুখ নিয়ে আছি
বহুদিন আমার কোনো ডাক নাম নেই।
পাখি যাত্রা
চি র ঞ্জী ব হা ল দা র
মনে ভাবি আসাম যাবো
আসাম গেলে অস্যাম পাবো।
সেখানে দারুন ঘোতন পাখি
উড়লে আমি করবটা কি।
উড়লে ডানা আলগা চাবি
করো মিথ্যে তালার দাবি।
মনে ভাবি দাবি সুযশ
রস নেই তো কচলালে রস।
মনটা তোমার রসের নাগর
নাগর ছাড়া বাঁচো বাঁচো।
ভাঙতে পারে তালা চাবি
ভাঙতে পারে Awesome কাচও।
মনের ভাষা ধিকি পাখি
ঘুরন পাখির দাম এক সিকি।
এত ই সস্তা পাখি কেনা
সেনা কিনবে আর বল কি।
কিনবে কিছু বোঝা বুঝি
রাজা মারবে মারবে রুজি।
কোন সে পাখি মারবে রাজা
এমন ম্যাগনেচিউড খুঁজি।
মনে ভাবি আসাম যাবো
আসাম গেলে অসামান্য
পাবো কিছু খয়রাত আর
যবের সাথে বন্ধু কাহ্ন।
খুঁজতে যাবো পাখির পালক
রাজার গর্ভে উড়ছে বালক
অশেষ গেলে আর কি পাবো
আমার সাথে যাবে আলোক।
মনে ভাবি আসাম যাবো
অস্যাম পাবো। পাখি পাবো।
দিকচক্রবাল
কা বে রী রা য় চৌ ধু রী
প্রগতির আলোয় চিকমিক রঙমশাল দেখে মোহনিয়া সুখের খোঁজ,
চোখের তারায় গ্যালাক্সির নিয়নে ধাঁধায় দৃষ্টিভ্রম।
ভিড়ঠাসা জৌলুসে চেনা অচেনার মাঝে হারিয়ে যাওয়ায় নেই মানা,
পৃথিবীর গোলার্ধে ঘূর্ণায়মান মনের দোলাচলতায় ভোগান্তি রোজ।
বিনুনী ঝোলানো সেই মেয়েটি চেনা ডাকনাম শোনার জন্য আজও উচাটন..
কচিপাতায় ভোরের কিরণ স্নেহের পরশে মাখামাখি ।
শৈশবের সেই মুখগুলো উঁকি দিয়ে দেয় হাতছানি...
আকাশ নীল ও সাগর নীল একাকার হয়ে উড়োজাহাজ মন সুদূরপ্রসারী।
কিশোরী পেছন ফিরে দেখা মায়া কাজলে সিক্ত আঁখি
সম্পূর্ণা নারী ঝরা ফুলের মতো এক গাছ থেকে আরেক গাছে ঠাঁই পায়।
পরগাছা হয়ে পরের জন্য বিলিয়ে দুঃখগুলো বর্ষার মেঘের জল, চোখের জল বৃষ্টির জলে মিশে আড়ালে লুকিয়ে হৃদয়ের অতল।
আকাশে দামিনী ঝলকে রণদুন্দভি নিনাদ জাগ্রত হোক দ্যুতিময় আলোক
দেবী রূপে রণং দেহি মে দশচক্র ধারীনির চক্ষুদান।
ভোরের সাতরঙা রশ্মিছটায় রমনীগণের তেজস্বিতায় হোক আগামীর নবজাগরণ,
ঘরে বাইরে অক্লান্ত পরিশ্রমের পরও সহনশীল ধৈর্য্যৈর পরাকাষ্টা।
সৃষ্টির অপরূপা আলোকিত বিশ্ব চরাচর তমালী রাত্রি অতিক্রান্ত লগ্নে অর্জিত হোক অধিকার।।
রেহাই পেতাম
লা ল ন চাঁ দ
তোমার সঙ্গে সম্পর্ক হবে বুঝিনি
হঠাৎ দেখা হঠাৎ সম্পর্ক
তুমি আমার আর আমিও ঠিক যেনো তোমার
অথচ দুদিনের সম্পর্ক ভেঙে গেলো
বুঝলাম তুমি অভিমানী
অহঙ্কার তোমাকে দূরে সরিয়ে নিয়ে গেছে
কথা বলার সময় নেই এখন
হাঁড়িতে চাল ফুটছে। অফিস যাবো
আজও হয়তো ম্যাডাম বকাঝকা করবেন
সব সয়ে নেবো
সংসার করতে চেয়েছিলাম
হলো না
তুমি ভেঙে দিলে মাটির পুতুল। নিঃস্ব করে গেলে আমায়
পুজো পুজো গন্ধ চারদিক
দরজায় কড়া নড়ে
তবে কি তুমি? বুকটা প্রসারিত হলো একহাত
দৌড়ে গিয়ে দরজা খুলি
তুমি না পিওন
খোরপোষের চিঠি
ভাবছি এর আগেই যদি মৃত্যু হতো আমার। রেহাই পেতাম।
সীতার প্রতি দ্রৌপদী
ম ম তা শ ঙ্ক র সি ন হা (পা ল ধী)
পুরাকালে জতুগৃহের অগ্নি থেকে রক্ষা পেতে বনের পথে পথে ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশে ঘোরেন পান্ডবগণ---
অন্যদিকে প্রতিশোধের অগ্নিতে প্রজ্জ্বলিত দ্রুপদরাজ দ্রোণকে বধে সমর্থ পুত্র লাভের আশায় করেন পুত্রেষ্টি যজ্ঞ।
যজ্ঞাকুন্ডের হোমানল থেকে প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় জন্ম লভিনু ধৃষ্টদ্যুম্ন নামে মহাপরক্রমশালী পুত্র ও এক মহিষীকন্যা---নাম তার দ্রৌপদী।
সুদূর পাঞ্চাল দেশে যজ্ঞকুন্ডের হোমানল থেকে উত্থিত যাজ্ঞসেনী সর্বগুণা সমন্বিতা কন্যা পাঞ্চালী---নন তিনি মনুষ্য যোনিজাতা সামান্যা কন্যা।
অপরদিকে জনক দুহিতা---সীতা--যিনি লাঙলের ফলায় কর্ষিত ভূমি থেকে উত্থিতা---জানকী।
তাদের মিল একটাই---তারা কেউ মনুষ্য গর্ভজাতা মানবী নন।
একজনের জন্ম অপরজন দাপরে।
উভয় রাজমহিয়ষীই ভাগ্যের ফেরে হয়েছিলেন বনবাসী।
রামচন্দ্র হরধনু ভঙ্গ করে সীতার হাতে পরেছিলেন বরমাল্য,
পাঞ্চালীকে ব্রাহ্মণের ছদ্মবেশী তৃতীয় পাণ্ডব তীরন্দাজিতে ঘুরনীয়মান মৎসচক্ষু বিদ্ধ করে জয়ী হয়ে করেছিলেন বরণ।
মানসচক্ষে ব্যথিত হৃদয়া,অশ্রুসিক্ত দ্রৌপদী সীতা মাতাকে যেন বলেন--"হে দেবী মাতৃ আজ্ঞা পালনে আপনাকে তো হতে হয়নি পঞ্চস্বামীর মধ্যে বিভক্ত, বারেবারে প্রামাণ করতে হয়নি আপনার সতীত্ব।
হ্যাঁ--যদিও এটা ঠিক---আপনাকে দিতে হয়েছে সতীত্বের অগ্নিপরীক্ষা---লঙ্কারাজ রাবণের পঞ্চবটি থেকে উদ্ধারের পরববর্তী পর্যায়ে।
আর আমি পাঞ্চালী--দ্রুপদরাজ কন্যা, পঞ্চপান্ডবের রাজমহিয়ষী---কৌরবদের ভরা সভাস্থলে আমার পঞ্চস্বামীর সম্মুখে পাশাখেলার হারস্বরূপ হয়েছি আমি বস্ত্র হরণের ঘৃণ্য নারীত্বের অবমাননার শিকার।
হ্যাঁ---এক কথা সত্য---অর্জুন সখা--পার্থ--বস্ত্রের যোগান আমার দিয়েছেন ঠিকই---কিন্তু আমার সম্ভ্রম, আব্রু রক্ষায় ব্যর্থ পান্ডবগণ!!!
হে সীতাদেবী আপনাকে সহ্য করতে হয়নি আমার মত কুরুক্ষেত্রের রণাঙ্গনে পঞ্চপুত্রের করুণ মৃত্যুর শোক,
শোকার্ত পুত্রবধুদের হৃদয়বিদারক অশ্রুসিক্ত আর্তক্রন্দন।
আমি পাঞ্চালী, পান্ডবগণ রাজমহিয়ষী----আমার পঞ্চস্বামী যে যার নিজ, নিজ রাজমহিয়ষীদের নিয়ে করেছেন নিজেদের অবসর সময়ের আনন্দ উৎযাপন।
সীতাদেবী আপনি সতীত্বের পরীক্ষা দিয়েছেন ঠিকই--- কিন্তু রামচন্দ্র আপনাকে কখনই তো করেন নি পঞ্চভ্রাতার মাঝে বিভক্ত!!!!!
আপনার দুঃখে ধরিত্রী মার বুক হয়েছে দ্বিধা বিভক্ত---আর আপনি তাতে হয়েছেন সমাহিতা।
আমি দ্রৌপদী--- পান্ডরাজমহিয়ষী হয়েও আমার ঘটেছে চরম করুণ পরিণতি।
পঞ্চস্বামীর পাঞ্চালী---যে কি না-- বুদ্ধিমত্তা ও রাজকার্য পরিচালনায় পান্ডব সখা কৃষ্ণসম পারদর্শী---সেই আমিই স্বর্গলোকে যাওয়ার আগে পান্ডবগণ দ্বারা হলেম পরিত্যক্তা, ভূলুন্ঠিতা।
সন্তান শোকাতুর, স্বামী, সহায়সম্বলহীনা এক রাজমহিয়ষীর জীবন গাঁথার ঘটল পরিসমাপ্তি।"
মল্লিকা
সু শা ন্ত সে ন
সবাই মল্লিকার কাছে যেতে চায়
গ্রামের মেয়ে পুরুষ সবাই।
মল্লিকা সবাইকে টানে
মাধ্যাকর্ষণের টানে অথবা অভিকর্ষ,
মল্লিকার টানে পতঙ্গের মত
সবাই ঘুর ঘুর করে মল্লিকার পাশে এসে পৌঁছায়।
আজকাল গ্রাম হয়ে উঠেছে
আধা শহর,
পাশের আধা শহরের মৌমাছি'রাও
মল্লিকার রূপকথা শোনে।
তারাও দলে দলে আসতে থাকে
মল্লিকার চারপাশে।
এই ভাবে মল্লিকার চারপাশে ভিড় বেড়ে যায়।
আগমনী
শ ম্পা মু খা র্জী কো লে
আসছে পুজো সাজছে আকাশ হবে মায়ের বোধন,
দশ হাতে মা রক্ষা করবে অসুর হবে নিধন।
কুমোর পাড়া ব্যস্ত এখন গড়তে মায়ের মূর্তি,
মন্ডপে মাকে পৌঁছে দিতে চলছে তারই প্রস্তুতি।
ঢাকি ওয়ালা ছেই দিচ্ছে ঢাকে বাজাবে পূজা মন্ডপে,
সন্ধিক্ষণ পূজা হবে একশো আট প্রদীপে।
পুরুত মশাই মন্ত্র পাঠে করছেন অনুশীলন,
আর নেই কো বেশী দিন মায়ের মর্ত্যে আগমন।
করিম চাচার ফুলের চাষ পদ্ম আর শালুক,
রাম রহিমের হাত ধরে মা আবার ফিরে আসুক।
বোস কাকীমার আলপনায় উঠবে সেজে মায়ের বেদী,
বিশুর মা গড়বে শ্রী এসো গো সব দেখবে যদি।
বরণ ডালা সাজিয়ে মাকে এয়তীরা করবে বরন,
শাঁখ বাজিয়ে উলু দিয়ে হবে মায়ের বোধন।
দ্বার ঘটেতে পাঁচু খুড়ো জল ভরে রাখবে,
কুমারী পূজা, নব পত্রিকা স্নান নিয়ম রীতিতে হবে।
মেয়েরা সব কাটবে ফল সাজাবে পূজার ডালা,
ও পাড়ার অর্জুনদা আনবে তীরকাঠি আর কাদার ডেলা।
সবাই এখন ব্যস্ত কাজে সাজো সাজো রব,
শিউলি, কাশ বলছে দেখো এলো যে উৎসব।
এই খানেতে সবাই সবার বড়ই আপনজন,
তোমরাও এসো গো সবাই রইলো নিমন্ত্রণ।
আরও একটা দিন
তী র্থ ঙ্ক র সু মি ত
মুছে যাওয়া দিনগুলো
এখন আয়নার কথা বলে
এক পা, দু পা- প্রতি পায়ে পায়ে
ইতিহাস জড়িয়ে থাকে
কথা পাল্টানো মুহূর্তে...
"তুমি" নামে একটা ছায়া
আজ অতীতের দরজায় কড়া নাড়ে
ব্যর্থ পরিহাসের কথনে
অসমাপ্ত চিঠি আমার বালিশের নিচে
চোখের জলের...
আরও একটা দিন।।
বৃষ্টি মানেই
দে বা র তি গু হ সা ম ন্ত
বৃষ্টি মানেই মায়া,
বৃষ্টি মানেই নেশা,
বৃষ্টি মানেই ঘোরলাগা এক
নিরামিষ ভালোবাসা।
বৃষ্টি মানেই স্বপ্নচারিনী,
বৃষ্টি মানেই অভিমানিনী,
বৃষ্টি মানেই আলুথালু বেশে
সুসজ্জিত অসমাপ্ত কাহিনী।
বৃষ্টি মানেই সৃষ্টিছাড়া,
বৃষ্টি মানেই লাগামহীন,
বৃষ্টি মানেই খিচুড়ি ডিমভাজায়,
রসনাতৃপ্তির সুস্বাদু পারমিশন।
আজ না হলে কাল
স ন্দী প ন গু প্ত
দরকারে আছি আমিও
শেষে আমিতে পড়ে টান,
সাহায্যের কথা শুনলেই
মানুষ ম্রিয়মাণ...
বদলে যায় সংকল্প
আদর্শ মানে হার,
কাজ ফুরোলে তুমি হবে
জল চিরতার...
দুঃখ হলে থাকবে একা
সুখের পাশে ভিড়,
তখন সবাই বন্ধু
যেটা ডাকনাম অতিথির...
হঠাৎ টাকায় অহংকারী
তারাই বাঁচে দম্ভে,
পাপের বিচার কোনোদিনই
হয়নি অবিলম্বে...
নিয়তি
সু বা ই তা প্রি য় তি
যখনই আমাদের প্রেমটা ভেঙে পড়বে
তখনই তোমাদের বন্ধুত্বটা পুনর্বাসন পাবে
তোমরা গল্প করবে হেসে হেসে একই প্রতারকের
গ্লানিগুলো শুধু থেকে যাবে আমাকে পরিহাসের
দিন হয়ে আসবে তোমাদের ওখানে
ঘরে আমার একার রাত নামবে।
জীবনের গান
চ ন্দ ন চ ক্র ব র্তী
ঝড়ের রাতে বাতায়নে একলা বসে আছি
আকাশ পারে বৃষ্টি ও মেঘ এসে কাছাকাছি
গাইছে ওরা জীবনের গান যেন খুশীর সুরে
ক্ষণে ক্ষণে,রাগ অভিমান,পালা যাচ্ছে ঘুরে।
ওমনি তোমার গাওয়া সে গান উঠল বেজে প্রাণে
আমরা যেদিন ভেসেছিলাম প্রথম প্রেমের বানে
গানের মাঝেই বলে ছিলে ঝড় বাদলের রাতে
আসবে তুমি আমার ঘরে বকুল নিয়ে হাতে।
মন তো আমার টের পেয়েছে তোমার উপস্থিতি
আঁচল তোমার উড়ে যেন গাইছে প্রেমের গীতি
কালো কুন্তল উথাল পাথাল দিল পরশ দানি
আমরা দুজন কন্ঠে নিলাম সেদিনের গানখানি।
সকাল হলে উঠে দেখি বকুল গাছটা শুয়ে
বৃষ্টি ভিজে বকুল সবই পড়ে আছে ভুঁয়ে
সুবাসটুকু চুরি করে ফিরে গেছে হাওয়া
আমার শুধু স্মৃতি নিয়ে জীবনের গান গাওয়া।
অপেক্ষায় প্রতীক্ষা
বি শ্ব রূ পা ব্যা না র্জী
এমন একটা সাঁঝের অপেক্ষা;
ঘুগনী, ঝালমুড়ি বা ফুচকার স্টল।
খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে
পূর্ণিমার চাঁদ দেখা।
অপেক্ষার মানুষের প্রতীক্ষা,
স্টলের চেয়ারে বৃদ্ধ বৃদ্ধাদের কথপোকথন।
তারাও এসেছে সময় কাটাতে, একান্তে ।।
চা'য়..... ঘটি গরম.....
ইচগার্ড দাদ- হাজা -চুলকানির মলম
নেবেন নাকি?
বাদাম লেবু লজেন্স,
দাদা বৌদি লাগলে বলুন।
হরেক স্বরে ফেরিওয়ালার ফেরি।
আচ্ছা অপেক্ষা কেনো ফেরি করা যায় না?
এইবার ঘরে ফেরার পালা;
শেষ ট্রেন ছাড়ার সময় হয়ে এসেছে।
একাকী সন্ধ্যেটা মন্দ না,
তবুও সবশেষে থাকে
একটা অপেক্ষা।।
যদি ভেসে যাও
অ ঞ্জ ন ব্যা না র্জ্জি
বাতাসে বাজে ডমরু মাদল
মাদলের তালে দোলে পত্রদল
আকাশে তুলোর মতো জলধর
খেয়ালী বারিধারায় ভেজে চরাচর
তখন দেখবে এক পক্ষীরাজ
প্রথম আলোর মতো কারুকাজ
ডানায় সফেদ মুক্তোর সাজ
বুকে তোমাকে ঘোরাবার সাধ
যদি অসীমের ছোঁয়া চাও
দুটি ডানায় ভেসে যাও
টপকিয়ে যাবে মেঘের কেশ
বহুদূরে যেখানে তারাদের দেশ
দেখবে চারিদিকে ঘন নীল
সমুদ্রের জলের মতো নীল
নীল ঢেউয়ে আনন্দ উচ্ছ্বাস
ভুলে যাবে দুঃখ বিষাদ।
শুধু তুমি
অ ন্ন পূ র্ণা দা স
"আমার আছ তুমি, শুধু তুমি"
পুরোনো দিনের গানটি বৃষ্টিভেজা দিনে রেডিওতে শুনতে লাগছে বেশ।
একদিকে রান্নার হাতা, খুন্তি তার সাথে গান,
সময়টা যেন একান্ত নিজস্ব...
এইসময় সে আর তার ভাবনা থাকে।
মেয়ে স্কুল, বর কাজে, ব্যস্ততা একটুখানি এখন কম,
যেন মনে হয় বিজ্ঞাপন বিরতি...
তবুও এই সময়টা উপভোগ করতে বেশ লাগে।
এখন যদি বলি 'আমার আছ তুমি শুধু তুমি'
বেশ মানায় কথাটি...
তবে কি সেটা সব সময় মানায়! নাকি ব্যস্ততম সময় উপভোগ করে বিজ্ঞাপন বিরতিতে মানায়!
আমরা যদি কাজে ব্যস্ত না হই,
বিরতি উপভোগ করতে পারি না।
তাইতো বিরতি,
আর তখনই ভাবনা তুমি মধুর হয়ে ওঠো,
যখন আমি ব্যস্ত থাকি।
অনড় সত্য
আ শী ষ কু মা র চ ক্র ব র্তী
ছল ভরা মুখে হাসি হেসে
তারা বেশ আছে এই পৃথিবীতে।
সাধুর বেশে আছে তারা বেশ
নকল মেকিতে ছেয়ে আছে দেশ।
সমাজে রয়েছে বেশ সম্মানে
পরশ করে না পাপ সে পরাণে।
ধ্যাণ জপে তারা থাকে নিশিদিন
তাদের মন হয় না মলিন।
কৃত্রিম আর নকল মেকিতে
পৃথিবী ভরেছে ভালবাসাতে।
যোগ্য যারা দাম নাহি পায়
বদনামে তারা জীবন কাটায়।
অবিচল অনড় থাকে যে সত্য
কখনও মিথ্যা এ কথা নয়তো।
আমি পাইনি ধ্যাণ করে কিছু
ধ্যাণেতে আমি হারিয়েছি শুধু।
হারিয়েছি ক্রোধ চিন্তা ও ভয়
অবসাদে ভরা জীবন
মৃত্যুর ভয় হারিয়ে আমার
মৃত্যুঞ্জয়ী এ মন।
গ্রহণ
স ঙ্গী তা ক র
ক্রমশঃ অস্ফুট চিৎকারে ছেয়ে যায় চারিদিক
দ্রাঘিমা বরাবর হেঁটে চলে অগুণিত মানুষ,
বৃত্তাকার বিষুব অপেক্ষায় থাকে ফিরে আসার!
বোধহয় কেন্দ্রস্থলে ফিরতে চায় না কেউই,
এফোঁড় ওফোঁড় হয়ে যাওয়া অর্ধচন্দ্রাকৃতি চাঁদে
কবি খুঁজে পান না কোনো কলঙ্ক,
বেদনার দৃশ্য আঁকতে ব্যর্থ শিল্পী ভ্যানগগ!
হতাশায় দৃষ্টি ছোঁড়েন মহাশূন্যের দিকে,
পৃথিবী জোড়া শুধুই নকলত্বের ছোঁয়া,
গোপনে অভুক্ত শিশুর জঠরে জ্বলে সুপ্ত আগ্নেয়গিরি,
পাগলিটা রাস্তা পার হতে গিয়ে হয়েছে দ্বিখন্ডিত
চাঁদ, সূর্য সহ নক্ষত্ররাজি খুঁজে পেলো না পৃথিবীকে,
বিজ্ঞানীও বুঝলো না গ্রহণ লাগে প্রতিদিন অনাহারী মানুষের ঘরে!
আহত শরীরটা ছটফট করতে করতে গেলো মরে,
মিথ্যে যন্ত্রণা, মিথ্যে গ্রহণের ছবি খুঁজতে খুঁজতে---
জীবন্ত যন্ত্রণা হারায় অগোচরে।
শেষ সম্বল
প্র দী প কু মা র দে (নী লু)
অনেক কিছুই রেখে গেলাম!
কিছু স্মৃতি কিছু আবিলতা, অসমাপ্ত কবিতা,
বৃক্ষহীন রুক্ষ প্রান্তর, স্রোতহীন নদী,
যা কিছু সব রেখে যাচ্ছি দুঃখে শোকে,
বিদায়ের আগে দেখে নিই সাজানো বাগান,
ঝোপঝাড়ে ভরা, যত্ন করার কেউ নেই,
পোষ্যদের বিদায় দিয়েছি কপালে চুম্বন এঁকে,
এই অবেলায় তোদের আর কে দেখে।
পোড়ো বাড়ি যেন আমারই অবয়ব,
চলে যেতেই হবে এটাইতো বাস্তব।
এসো মা দুর্গা
টু লা স র কা র
মা দুর্গা এসো এই ধরা ধামে।
মানুষ মেতেছে মৃত্যু উল্লাসে।
মায়েদের সম্মান পথের ধূলায়
তুমি আছো, দেখাও বিশ্বাসে।
লুণ্ঠনকারী নির্বিচারে করে লুন্ঠন
প্রতিকার দূর, প্রতিবাদ নির্লিপ্ত
অসুরের দল ভীষণভাবে প্রকট।
অসুরের অত্যাচারে, সমাজ অভিশপ্ত।
রুদ্র মূর্তি কোথায় তোমার?
মায়েরা হারাচ্ছে স্বামী সন্তান
চাই মেয়েদের চন্ডাল রূপ
বদল চাই মেয়েদের অবস্থান।
তোমার মস্তক হচ্ছে ছিন্ন
মাকে হতে হচ্ছে খন্ডিত।
একদেশের এক মা, এক মাতৃভূমি
অসুরের হাতে অত্যাচারিত।
ভূলুণ্ঠিত সম্মান, ফিরে পেতে চাই।
মানুষের প্রতি মানুষের দ্বেষ
কিভাবে ভালোবাসা পুনরুদ্ধার?
স্বস্তিতে বাঁচবে এই দেশ।
এসো শক্তিরূপেন, এসো মহাকাল
হোক নিধন, অসুর বংশের
দেখাও তোমার পরাক্রম।
পরিসমাপ্তি চাই এই ধ্বংসের।
অসহায় পৃথিবী
স র ব ত আ লি ম ণ্ড ল
মাঝে মাঝে মনে হয়,
এ পৃথিবীটা বড় অসহায়।
ওই যে পূর্ণিমার চাঁদ, সেও বড় একা।
যে সূর্যটি আলো দিয়ে-
পৃথিবীকে আলোকিত করেছে, সেও বড় একা।
আমরা মনুষ্য সমাজে বাস করি বটে,
একটু গভীরে ভেবে দেখো
ঐ চাঁদ সুরজের মতো তুমি আমি বড় একা।
যে এভারেস্ট শৃঙ্গ ভূমি থেকে আকাশ ছুঁয়ে
দাঁড়িয়ে আছে সেও বড়ো একা।
কেউ চায় না এ পৃথিবীর বুকে একা থাকতে,
ওই যে বাগানের ফোটা ফুল-
বন্ধু হিসেবে ডেকে নেয় প্রজাপতি, মৌমাছিকে!
আসে বটে, মধু ফুরিয়ে গেলে সেও চলে যায়।
আসলে আমরা সবাই বড়ো একা,
এটাই সত্য। এটাই ভবিতব্য।
প্রহর
ন ব নী তা ম ন্ড ল
ও হে সৃষ্টি-সৃজনী সৃষ্টির সমারোহে তোমার জুরি মেলা ভার
এই বৈচিত্র্যময় পৃথিবীতে তোমার বৈচিত্র্য অপার।
দিনের প্রাক্কালে যখন সূর্যরশ্মির রঙিন প্রভায় আলিঙ্গন কর
তার নাম দিয়েছ ঊষা- সৃষ্টির আদিলগ্ন।
পাখিদের কলতানে স্নিগ্ধ বাতাসে ছড়িয়ে দাও মধু-মালতীর সুবাস
ভ্রমরেরা খুঁজে পায় জীবনের অমৃত রসদ।
ধীরে ধীরে জ্যান্ত ও চলমান হয়ে ওঠে পৃথিবী
প্রস্ফুটিত হয় মানব জীবন।
ক্রমপ্রভামান বৃদ্ধি পায় দায়িত্ব-কর্তব্যের পাহাড়
বৃদ্ধি পায় ভার বহনের ক্ষমতাও।
ঠিক যেনো দুপুরের সূর্য্য ছড়িয়ে দিচ্ছে তার সর্বোচ্চ শক্তি।
মাঝে মাঝে সে যেনো হারিয়ে ফেলে তার ধৈর্য-শৌর্য, রুক্ষতাও আসে তাদেরই হাত ধরে।
চঞ্চল পৃথিবী যেন নিরুদ্বেগ, বাঁচে ছায়াতলে নিশ্চিন্তে।
সৃষ্টিসত্তা যেনো ঘনীভূত হয় প্রতিক্ষনে- সৃষ্টি সৃজনে।
জীবনের বুদ্ধিদীপ্ত, প্রখরতা বাড়তে থাকে
সৃষ্টি যেনো পূর্ণাঙ্গ হতে থাকে শান্ত- দৃঢ় ও গাম্ভীর্যপূর্ণ।
তৈরি হয় সুখময়, মায়াময় গোধূলী।
বাতাস মৃদু মৃদু বয়
ঘনায়িত হয় জীবনের তটরেখা।
উজ্জল্যময় জীবনের প্রভাব রয়ে যায় সকলের মাঝে।
শুধু দিনটি হারিয়ে যায় নিশীথের অজস্র নক্ষত্রের মাঝে।
মানুষ পোড়ানো যায় না
ই কা বু ল সে খ
ঘড়ির কাঁটার সাথে বেড়ে চলে
তবু আজ আর উঠব না
আর কোনো সংগ্রাম নয়
এখন শুধু অপেক্ষা
পুরাতন জিনিস কিনতে আসা ফেরিওয়ালার অপেক্ষা
এতদিন যাবৎ
আপন ভেবে যা কিছু করে এলাম
তারই আজ কাঠের বাজারে গেছে
আগুনে সংবেদনশীল এমন দামি কাঠ কিনতে
তারা জানে না—
হেরে যাওয়া মানুষের বুকগুলো বুক নয়;
এক একটা জ্বলন্ত আগ্নেয়গিরি।
কবিতা সমাহিত
অ র্পি তা কু ন্ডু
এখন আর শব্দরা ভিড় করে না
জলরঙের আলপনায় বীথি খোঁজে না বনের দুইপাশ
সম্ভ্রমের সিঁথি পথে এলোমেলো চুলের ঢল
তোমার দুই চোখের গভীরে এক আশ্বাসের প্রেক্ষিত
কী তুমি? কবির নীল সন্ধ্যা?
জরাসন্ধের সময়ের কোনো এক কাব্যাংশ
তুমি ইতিহাস তো নও
আমার চিবুক ছোঁয়া দুএকফোঁটা
জল কি
কী তুমি বলতো
যুগাতীত মোহ...
না সে ত সম্ভব নয়
তুমি অবিশ্বাস্য অন্তর্হিত
তুমি আদি পুরুষ...
সেখানে আমি সমাহিত...
চাঁদ বুড়িমা'র সঙ্গে
ব দ রু ল বো র হা ন
চাঁদ বুড়িমা'র সঙ্গে আমার ভীষণরকম ভাব,
চাঁদ বুড়ি'মা পান খাওয়ালে, আমি খাওয়াই ডাব।
চাঁদ বুড়ি'মা চরকা কাটে, গুনগুনাগুন গায়,
স্নেহ-মায়ায় আমায় ডাকে হাতের ইশারায়।
আমি তখন যাই উড়ে যাই, মনের পাখা মেলে,
চাঁদ বুড়ি'মা গল্প শোনায় মন-মাধুরী ঢেলে।
চাঁদ বুড়িমা'র সঙ্গে আমার আছে একটা মিল,
আমার মতোই চাঁদ বুড়িমা'র ডান গালে এক তিল।
তাই তো আমি তার কাছে খুব আদর বেশি পাই,
এতো আদর আর কেউ কি পায়? আমার জানা নাই।
দৃশ্য
অনি ন্দি তা না থ
ভোরের আকাশ সূর্যের আলো
ঝলমলে দিন।
পৃথিবীর প্রকৃতির ল্যাসময়ী রূপ!
পাখিদের মিষ্টি কন্ঠস্বর,
অরণ্যে মৃদু বায়ু বইছে।
প্রশান্তির ছায়া মনে ছুঁয়ে যায়,
নীরব শান্তিময় পরিবেশ !
নদী বয়ে চলে, মৃদু স্রোতে।
সৌন্দর্য্যের প্রকৃতি স্বপ্নের
পাহাড় দাঁড়িয়ে আছে,
এক মহিমান্বিত শক্তি লয়ে।
পাতার ফিসফিস শব্দ।
অনুমান করতে পেরেছে
শিব তাঁর 'নীল কন্ঠ' পাখি
উড়িয়েছেন, উমার আগমন মর্তে।
তারাদের দেখা মেলে সন্ধ্যায় ,
একটি স্বর্গীয় দৃশ্য!
বোধ
টি ঙ্কু মু খা র্জী
প্রতিদিন কত কথাই না বলে যাই কপটে অকপটে,
নির্ভেজাল স্বীকরোক্তি নয় কোনোটাই---
তবু বলি, সভ্যতার ঝোলা ভরতে।
সত্যি কথাটা বলেছিল একজন...
বলেছিল, "অমলকান্তি রোদ্দুর হতে চেয়েছিল"।
আমি জানি, সেই রোদ্দুরের গন্ধটা পিছন ছাড়েনি এখনও...
নাক জ্বলে যায়....!
মেঘবলয়ের ছাড়পত্র পেয়েছিলাম কলঘরের লীনতাপে, তাই
আজীবন কুনোব্যাঙের অভিনয়ে জীবন কাটানো অভিনেতা
সূর্য দেখেনি কোনোদিন।
একদিন ঝলসে ওঠা আলো, না রোদ্দুর নয় --
হয়তো বা উত্তপ্ত, জ্বলন্ত চুল্লি
জ্বালিয়ে দিল চোখ, পুড়িয়ে দিল শামুক শরীর...
সেদিন পুড়তে পুড়তে মন প্রাণভরে রোদ্দুর মেখেছিল, আস্বাদন করেছিল উষ্ণতা, বুঝেছিল
উষ্ণতার দীর্ঘশ্বাসের তিন ভাগই তো জল।
কবিতা
চ ন্দ্র না থ ব সু
গাছ দেয়
অক্সিজেন
তুমি দাও চা
দুটোই আমার বাঁচার রসদ।
দম বন্ধ হয়ে আসে
যখন দেখি অন্যায় অনাচার।
তবু বন্ধ হয় না কাজ
তোমার থেকে যে পাই অক্সিজেন!
এই কথা গুলো ঠিক মতো লিখতে পারতাম না
তুমি যদি এসে মুখের কাছে না ধরতে এককাপ চা।
তবু অকপটে সব কথা লিখতে পারছি না---
অযথা কেন কাটছে গাছ?
কেন পাচ্ছে না সঠিক মজুরি
চা শ্রমিকরা।
আন্দোলন নয়
আমরা এখন অল্পতেই খুশি ।
উন্নয়ন হবে না
ভর্তুকি কমবে না
ভুল পথে আছি যুদ্ধবাজদের মতে
আমরা কি সত্যিই চাই সঠিক ভাবে বাঁচতে?
তাহলে কেন জলাভূমি বুজিয়ে ফেলছি?
গাছ কাটছি?
ডিজে বাজাচ্ছি বন্যপ্রাণ পরিসরে?
অন্যায় ভাবে বালি তুলছি নদীবক্ষ থেকে?
কে দেবে উত্তর?
প্লাস্টিক উৎপাদনকারী কে কিছু বলবো না
ছোট্ট দোকানদারকে করবো জরিমানা
শুধু চেয়ে দেখো
কেমন চলছে দেশখানা।
সাঁকো ভেঙে যায়
ই লা সূ ত্র ধ র
এখানে এখন এক বিষণ্ন বিকেল
ওপারে সন্ধ্যা নামে উৎসব জুড়ে
মাঝখানে প্রহরের সাঁকো ভেঙে যায়
পাঁজরের খোপে খোপে দুঃখ জমে আছে
যেন এক অসম্পূর্ণ কবিতা যাপন
নামহীন গোত্রহীন অযাচিত আমি
অন্ধকার বিভীষিকায় নুয়ে পড়ে আছি
উদ্দাম রাত্রির কাছে ঠিকানা বিলীন
দাবার ঘরের মতো সাদা কালো রঙে
দিন আর রাতগুলো এঁকেছে জীবন
বোড়ের চালের মতো গুটি সেজে থাকি
অস্তিত্ব খুঁজে বেড়াই সীমানার ধারে
ঘূর্ণিতে উড়ছে ধূলো-ঝড়ের আভাস
তৃণস্তরে ঘাসের শরীর সেও শিউরে ওঠে
হীরের কুচির মতো শিশিরের ফোঁটা
দায়সারা প্রেমিকের মতো সময় হারায়
মেঘের ভ্রুকুটিতে রোজ আতঙ্কিত হই
গণ্ডি পেরোতে গেলে হাজার কারসাজি
কতদিন এইভাবে আপোষের আমি
অচলের চলাচলে চাবিকাঠি খুঁজি
জালিম জমানা
র ত্না রা য়
সময়ের ঘড়ি সময়কে গিলে খায়
কার্পেটের নীচে দুর্গন্ধের আড়ত
মিছিলে হাঁটে আপোষ আতর সুখ
কফিনে বন্দী আদর্শলিপি যত।
নিলাম হচ্ছে ময়ূর সিংহাসন
পাসবইটা ফালতু হিসেব কষে
টেবিলের নীচে বাঁহাতের চুলকানি
বেনামী বাতাস দিব্যি রসেবসে।
বোঝেনি যারা বিদ্যাসাগরীয় ভাষ্য
ভাঁড়ারে জমে ভাঁড়ামির সিলমোহর
সেলামি দিয়ে পার পেয়ে যাও হরি
নইলে নৌকা বিপদসীমায় নোঙর।
বিশপঁচিশের গুটি চালাচালি শেষ
মুখোশের মুখ রিপোর্টিং করে পেশ
গান্ধী বাবার চলন আজকে অচল
স্ট্রেট ব্যাটে তবে জমবে খেলা বেশ।
সন্ত্রাসী বাতাস বলছে আগুন চাই
বেনীর সাথে শিরও হোক জবাই
পুড়ছে পুড়ুক আপাদমস্তক জেহাদ।
একই চিতায় তুমি আমি ধুলোছাই।।
শারদ অনুরোধ
বি দি শা ব্যা না র্জী
ভাদ্রের শেষ, আশ্বিনের শুরু,
আকাশেতে কেন তবু মেঘের গুরুগুরু?
অনেক তো হল
বৃষ্টি-বৃষ্টি খেলা---
এবার তবে আসুক না
শারদীয়া বেলা
উৎসব না মাটি হয় বুক দুরুদুরু!
পথেঘাটে জল, মাঠ-ভরা কাদা
কি করে যে হবে তবে প্যান্ডেল বাঁধা?
মনে কত সাধ
বন্ধুরা মিলে
ঘুরব ইচ্ছেমত
সব চিন্তা ফেলে,
বৃষ্টির কেনই বা তাতে বাদ সাধা !
সারাটা বছর একঘেয়ে যাপন,
পুজোর পাঁচটা দিন খুশির প্লাবন!
ভোরে ঝরা শিউলি
রোদেলা আকাশ--
পুজো-পুজো গন্ধ
মাঠভরা কাশ--
দূর থেকে কাছে আসে যে যেথা আপন।
মন তাই সারাদিন
ইচ্ছেডানা মেলছে ,
বৃষ্টির পায়ে ধরে
সকাতরে বলছে ---
বৃষ্টি , লক্ষ্মীটি তুই,
এবার নে বিদায়!
কালো মেঘ যেন তোর
সাথে সাথে যায়!
যেতে যেতে কান পাত
শোন্ সেই ধ্বনি--
শারদীয়া বাতাসে
মঙ্গল আগমনী!
শারদীয়া
শি খা দ ত্ত
এই পথে হেঁটে গেছে অপু দুর্গা-
কাশবন হলুদ রোদ্দুর, আনীল আকাশ। এইখানে তুমি ডেকে নিও আমায়। আমার কোন তাড়া নেই, দু'দণ্ড স্থির হয়ে বসি এই শরতে; মেখে নিই লাবণ্য মথিত নদীর নীল জল ভার। তুমি ভরবে আমার দুহাতে সুজাতার পরমান্ন। আমি জল দর্পণে ফোটাবো এক একটি করে রক্ত কমল। রাঙা ধুলো ঝোড়ো হাওয়া পেরিয়ে আবার
দেখা হবে এই নিরালায়। আমি গহন অরণ্য হব তোমার হাত ধরে চির সবুজ জীবনের মতো সুন্দর। গুচ্ছ গুচ্ছ সোনালী মেঘের অন্তরালে লুকিয়ে নেব যাব যাবতীয় অসুখ।
ধ্বংসের চালচিত্র
শ র্মি ষ্ঠা মি ত্র পা ল চৌ ধু রী
ডুবে যেতে যেতে শূন্যে হাত বাড়াচ্ছি...
আকাশ থেকে পাষাণ প্রতিমা-
যদি কিছু ফেলে দেয়!
দ্বীপের মতো আর জেগে থাকতে পারছি না!
চারিদিকে বিষাক্ত সমুদ্রর জল;
এগিয়ে আসছে একটু একটু করে...
দানবেরা কি দাপিয়ে বেড়াবে এখানে?
কিছু মানুষ যদিও রাত পাহারা দেয়;
তাদের সাথে ভিড়ে মিশে থাকে শিয়াল-শকুন!
মানবিক বুদ্ধি কি তবে ছোঁয়াচে নয়?
ভাদ্রের ধূসর আকাশের নিচে উৎসব নয়;
মায়ের কোলে মেয়ের শব!!!
তোমার জন্য
সং হি তা ভৌ মি ক
তোমার জন্য বসে আছি পথের পানে চেয়ে,
তোমার জন্য বসে আছি নিজেকে ভুলে গিয়ে-
তোমার জন্য জীবন আকাশে সূর্য চাঁদ উঠে,
তোমার জন্য শূন্য ভূমিতে সবুজ ঘাস গজিয়ে ওঠে।
তোমার জন্য অনেক সুখ, নিলাম আমি দুঃখ,
তোমার জন্য ইটের প্রসাদ, আমার জন্য বৃক্ষ।
তোমার জন্য জীবন আলো, নইলে সব অন্ধকার,
সবার সামনে তোমায় আমি করছি যে স্বীকার।
ভিড়ের মাঝে হারিয়ে গিয়েছি, খুঁজে আমায় নিও,
বেশি কিছু চায়না আমার, ভালোবাসার স্বীকৃতিটুকু দিও।
পথে চলতে অনেক বাধা তবু হবে চলতে,
জানি আমায় ভালোবাসো, হবে একদিন বলতে।
সেদিন কবে আসবে তার জন্য বসে রই,
বলবে তুমি নাম না জানা ওই মেয়েটি কই।
সন্ধান করোনি শোক কতটা গভীর
ড রো থী দা শ বি শ্বা স
সন্ধান করোনি শোক কতটা গভীর, নিরুত্তরে শুধু রাখ চিনে
কতটা কষ্ট পেলে মানুষ নীরব থাকে--- রেখে গেলাম এ বার্তা টাইমলাইনে।
রোদ উঠলে কর্মশক্তি বাড়ে,
মন ভালো হয়,
সতেজ হয়ে উঠি,
বেরিয়ে পড়ি কাজে।
বৃষ্টি হলে শুধু প্রাণধারণ
ঘরবন্দী।
ঝিমঝিম চাঁদের আলোয়
স্বপ্নময়তা---
আর নক্ষত্র?
সূর্য ছাড়া এমন ঔজ্জ্বল্য কার?
আছে--- আছে----
তিলোত্তমার----
"তিলোত্তমা একটি নক্ষত্রের নাম"
এ বিশাল মহাকাশে তাকে খুঁজে নিতে
বেগ পেতে হবে না।
সবচেয়ে ঔজ্জ্বল্য যে তারই।
ধরার পানে চেয়ে চেয়ে দেখছে
অন্যায়কে মেনে নিতে নিতে
ভয়ে ভীত হয়ে
শোষিত হয়ে
অত্যাচারিত হয়ে
হতাশার আঁধারে ডুবে যাওয়া
কত মন আলোকিত হলো তার আলোয়।
এই মৃত্যু উপত্যকায় (জানুয়ারি- ১৯৮৭)
শ ক্তি প্র সা দ ধ র
এ মৃত্যু উপত্যকায়
কেন ভীড়
এখানে আর হবে নাকো কিছু
চলো পথিক
অন্য কোনোখানে
এখানে আর হবে না কিছু
এ মৃত্যু উপত্যকায়
শুধু কানাকানি শুধু হানাহানি
চলো পথিক চলো
এখানে প্রতিটি জীব আজ হয়েছে স্থবির
একই লক্ষ্যে একই পথে
সংঘর্ষের মাঝে আজ জীবন নেই
মৃত এ উপত্যকা মৃত এ সভ্যতা
নেই কোথাও সজীবতা
দৃষ্টি হয়েছে অদৃশ্য
আজ আর আকাশে নেই মেঘ
যে যোগায় তোমায় শীতলতা
এখানে আছে শুধু মঞ্চ
নেই ঘরবাড়ি
যে মঞ্চ থেকে উচ্চারিত হচ্ছে বিচ্ছিন্নতা
সংহতি আজ গৃহছাড়া
উদার আকাশ হয়েছে আজ সীমাবদ্ধ
ও বলে আমার সে বলে আমার
করেছে তারে ব্যক্তিগত
লোভ লালসা চারিদিকে ছেয়ে আছে
সৌন্দর্য আছে আজ এখনও সেখানে
যেখানে এখনও বন্যপ্রাণী
অবাধে করছে বিচরণ
সুন্দর পরিখার আশেপাশে
এখানে হয়েছে সবই মূল্যহীন
বাঁচতে যদি চাও
একে ধরো তাকে ধরো
তেল মাখো আরও মাখো
কারো মাথায় কারো পায়ে
অধ্যয়ন দূরে রাখো
ঘুমাও সুখে
অপার্থিব
ন ব কু মা র মা ই তি
গত শ্রাবণে আমরা পাহাড়ে গিয়েছিলাম
যম্পেস ছিল সেদিনের ট্যুর
আলো আঁধারির মাঝে জঙ্গল ঘেরা আমাদের বাসা
সামনে সুবিস্তৃত লন
নদী বিভাজিকায় মিলন মধুর রাত
ঝর্ণার জল-কল্লোল, পূবালী হাওয়া
অনিন্দ্যসুন্দর ছিল ভ্রমণ পথ
সারি সারি বনঝাউ, ধূ-ধূ বালির চর
নিরিবিলি রাতে জোছনা আলোয়
পাহাড়ি টিলায় বসেছিলাম দু'জন
আগামীর অনাস্বাদিত ভবিতব্যের কথা ভেবে
যখন সম্বিত ফেরে, দেখি শুনশান পৃথিবী
এক অনন্ত অপার্থিব জগতের মানচিত্র
ভেসে উঠেছিল নদীর সুনীল জলে
বড় মায়াময়, বৈদুর্যমণির মত উজ্জ্বল
যেমন পরকীয়া প্রেমে মাধুর্য বড্ড বেশি
পেয়েও হারাতে হয়, আর বেশি পাবো বলে
বিরহেই সার্থক মিলন, নব অনুরাগ মাঝে!
আমরা পথ চলছি
ন ব কু মা র মা ই তি
ভুলতে চেয়েও ভুলে থাকতে পারিনা
অজস্র চিন্তা রাশি ক্রমশ কুরে কুরে খায়
সত্তার ঘরবাড়ি, জৈবিক অনুষঙ্গ
তবুও ভোলা যায় না সেদিনের সেই মুখ
বিকেলের মায়াবী নরম আলোয় দেখা মুখ
বিন্যস্ত কেশরাশি, হরিণ চোখের চাহনি
পলকহীন আমার দৃষ্টি অজান্তে চলে যায়
দিগন্ত রেখায়, অনন্ত অনুভবে দৃশ্যমান হয়
তোমার চপল পায়ের ছন্দ, নুপুর নিক্কন
আশমানী শাড়ির ভাঁজ, স্লিভলেস অন্তর্বাস
আকাশ গঙ্গার পানে উদ্দাম বয়ে চলা নদী
সারি সারি ঝাউবন, বলাকার পাখায় উদাসী হিন্দোল
অদূরে পাহাড়ী টিলায় অস্তাচলে দিনের সূর্য
অভিকর্ষ অনুভব, বড্ড মায়াময় আমাদের মিথুন মুগ্ধতা
আমরা পথ চলছি শান্তিনিকেতনের দিকে...
অমিলিত
শু ভ শ্রী রা য়
তোমার সঙ্গে দেখা হয়নি বলে
যে কবিতাটা শুরু হয়েছিল,
তার তো থামার কোনো লক্ষণই নেই!
তবে তাই হো'ক,
আপাতত তার যাত্রা অব্যাহত থাকুক,
অনেক পথ চলুক অসম্পূর্ণ সেই কবিতা...
হাঁটতে হাঁটতে কুড়িয়ে নিক মনখারাপ, কষ্ট,
অপেক্ষার আনন্দ এবং পুরনো কথাবার্তা আমাদের;
তারপর সেগুলো এ দিক ও দিক করে গুছোতে গুছোতে
কবিতার পংক্তিগুলোকে যথাসাধ্য ভরে দিক।
কাব্যের এ সাজ সম্পূর্ণ হবে না সহজে,
আমাদের দেখা হওয়াও তো অনায়াস নয়...
প্রতীক্ষার অবসান পর্যন্ত সেই কবিতা
বিরহ, মিলনেচ্ছা আর শরীরী আবেগের দোলাচলে
নিজেকে খুঁজে পাক ফিরে ফিরে;
দেখা হওয়া, না হওয়ার আলো-অন্ধকারে।
যে কোনো মনখারাপ
শু ভ শ্রী রা য়
যে কোনো মনখারাপ ভেদ করে
বেরিয়ে আসতে চায় একটা কবিতা,
তার কথাও শুনতে হবে বৈকী!
সেই কবিতার ভেতর দিয়ে
রাঙা পথ এক উদাস বাউলকে খু্ঁজে নেয়,
তার অপ্রচারিত গান শুনে দুয়েকটা পাখি
সুখে ও স্বস্তিতে কিচিরমিচির প্রশংসা করে...
এই পাখিগুলোই ক্রমে ক্রমে মন ভালো করে দিয়ে
উড়ে যায় দিগন্তের সুদূরতম বিন্দু পার হয়ে।
যে কোনো মনখারাপের ভেতর
একটা কবিতার বাসা থাকবেই
আর সে কবিতার আনাচেকানাচে জড়ো হবে পাখীদের সহর্ষ কিচিরমিচির।
শেষের সেদিন
অ গ্নি মি ত্র
যেদিন জন্ম নিলাম
সেদিনের কথা মনে নেই...
হঠাৎই যেন দেখলাম পৃথিবীটাকে;
বড় হতে হতে দেখলাম
এই পৃথিবীর কদর্যতা, নগ্নতাকে!
দেখছি, সবাই কীভাবে নিজেকে
দ্রুত শেষ করে ফেলছে!
প্রেম, মায়া, দয়া সব
অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছে।
শেষের সেদিনটা আর আমি
দেখতে চাই না, তার আগে
যেন আমি নিজেই
শেষ হয়ে মিলিয়ে যাই ..।।
দ্বন্দ্ব
নূ পু র রা য় (রি ন ঝি ন)
এক বুকে হা হুতাশ এক বুকে শান্তি
এক বুকে বৃষ্টি আর এক বুকে প্রশান্তি।
এক বুকে বাড়ে ক্ষত এক বুকে মরহম
এক বুকে ঝরে খুন এক বুকে বাড়ে দম।
এক বুকে ঝড় ওঠে এক বুক ব্যথাহীন
এক বুক খান খান এক বুক ভাবে দীন।
এক বুকে ওঠে ঝড় এক বুকে শীতলতা
এক বুক আশা হত এক বুকে সফলতা।
এক বুকে ওঠে ঢেউ আর এক বুক শান্ত
এক বুকে খুঁড়ে খায় এক বুক দিকভ্রান্ত।
আলোকবর্তিকা
নূ পু র রা য় (রি ন ঝি ন)
এই যে এতো আলোর রোশনাই! চারিদিকে!
এই যে মধুরেণু মুখে ভ্রমরের গুনগুন
উর্বর বাহারি বাগানের মাটি!
গাছ ফুল প্রজাপতি! কোনটা .....
ঠিক কোনটায় নিজস্বতা?
জল মাটি সার সহযোগে উপযোগী
উর্বর মাটি খুঁড়ে রত্ন ভান্ডারের খোঁজ
খুব সহজ কি মনে হয়?
সুগন্ধি বাহারি পারিজাত বড়ো প্রিয় হলো
কি আছে নিজের বলে?
একটা হাত ছাড়া!
ধিক! ধিক তোমার অস্পৃশ্য অপাংক্তেয় মন!
পূর্ণতা লাভের আশায়
রিক্ত নিঃস্ব আজ ক্রমাগত!
দিনের শেষে বাড়িতে একা হয়ে গেলে
ম নো জ অ ধি কা রী
বউ আজ তার প্রিয় শাড়িটি পড়েছিল। তার চেয়ে প্রিয়
শাড়িটি পরে বউ মাঝে মাঝে বাপের বাড়ি যায়
তার চেয়ে প্রিয়টি তুলে রাখা আছে দুর্গাপূজায় পরবে বলে
আরও একটা আছে আলমারির গোপন লকারে
লুকানো কেউ জানে না, সেও আমাকে বলেনি কোনদিন।
মাঝে মাঝে আলমারি থেকে আমার জামা বের করে
দেয় নানা রঙের। আমার কোনটা প্রিয় রং সে জানে। কোন
জামাটার কোথায় ছেঁড়া কোথায় তলিমারা পকেট, কোন
জামাটা ফুলহাতা আজ খাটো হয়ে এসেছে, সব জানে
বরং বলা ভালো মুখস্থ। আমার প্রিয় রং ছিল হলুদ। সময়ের
অবক্ষয়ে মেনে নিতে হয়েছে সবুজকে। তবু আমি
জামা পাল্টাইনি শরীর পাল্টেছি যেভাবে পাল্টায় গাছ
তার বাকল প্রতি বসন্তে। সেও আমাকে
মাঝে মাঝে জিজ্ঞেস করে 'কোন শাড়িটা পড়বো গো'।
আমি বলি যেটা তোমার সবচেয়ে প্রিয়। সে আজ প্রিয় শাড়িটি
পড়েছিল যেটা রাখা ছিল আলমারির গোপন লকারে ।
তার মুখের হাসি দেখে বুঝতে পারলাম সমাজ
পরিবর্তনশীল। দুই চোখ বন্ধ করে অনুভব করলাম,
এইটুকুই যা ব্যক্তিগত।
প্রতিবিম্ব
ম নো জ অ ধি কা রী
বিষণ্ণতা বলতে আজ
তোমার হাতে কাচের চুড়ি আর লেডিস ছাতা
চোখে চোখে কত দেখা আর হয় না।
ভাবনাগুলো আজ বালির টুকরো
অসর্তকভাবে চোখে এসে পড়ে, জল আসে
মিথ্যে কান্নায় কেঁদেছিলাম একদিন খুব
এখন আতঙ্কে থাকি, রোজ সন্তোষজনক দুঃখে!
ডাকহরকরা
ধী রে ন্দ্র না থ চৌ ধু রী
আমার মনের ভেতর ডাকহরকরা, উড়ো খামে পাঠায় সে এক চিঠি...
খামের ভেতর লুকিয়ে সেই মেয়ে, আমার দিকে তাকায় মিটিমিটি।
হাত ইশারায় ডাকলো আমায় কাছে, ঠোঁটের কোনে লাজুক হাসি রেখে...
আমি বললাম, কি জানতে চাস, আসবি নাকি বায়োডাটা দেখে?
বললো মেয়ে, ছিঃ ছিঃ, বোকা ছেলে, চায়না হৃদয়, সার্টিফিকেট খানা...
আসলে তোর সাতরঙা রঙ মেখে,
মেলে দিলাম তোর দেশেতে ডানা।
উড়ে এলাম অনেকখানি পথ, পাহাড়, নদী, পেরিয়ে ধানক্ষেত...
খামের ভেতর রেখেছি কল্পনা, চোখের ওপর মনের সংকেত।
আমি বলি, ভয় নেই তোর কিছু, গাছ-গাছালি দেখছে সব চেয়ে...?
বললো মেয়ে, ধন্য ওরা সব, আমার ডানার স্নিগ্ধ বাতাস পেয়ে।
যতই বোঝাই, এ দেশটা তোর নয়, মনের বাগান রাখছি আমি খালি...
উদাস চাওয়া মেলেলো আকাশেতে, ভাবটা যেন... ওইই বনমালী।
মানচিত্রের অলিগলি জানা, শর্টকাটেতে রাস্তাটা খুব চেনে...
এটা যে তার ভুল ঠিকানায় আসা, কক্ষনো সে নিচ্ছে না তো মেনে।
বললো মেয়ে, আমি আসার পর, যদি ভাবিস হচ্ছে যে তোর ক্ষতি...
যাচ্ছি চলে তোর আঙিনা ছেড়ে, উড়লো মেয়ে হয়ে প্রজাপতি।
ইচ্ছে করার চিঠি
ধী রে ন্দ্র না থ চৌ ধু রী
ইচ্ছে করে একটা লিখি চিঠি,
থাকবে তাতে পাতা ঝরার গান,
দুখের স্বরলিপি সে গান ঠিকই
ঝাপসা চোখে নোনা জলের বান।
জানি, তুমি মুখ ফিরিয়ে নেবে,
বুকের মধ্যে চাপা দীর্ঘশ্বাসে,
দেখলে না তো একটুখানি ভেবে,
এ-জন তোমায় কতো ভালোবাসে।
"ভালোবাসা" শুধুই কাঁচের চুড়ি,
একটু আঘাত লাগলে ভেঙে যাবে,
এটা তোমার মস্ত ছল-চাতুরী,
এই যুক্তিতে নিজেকে আগলাবে?
আসলে তে ভালোবাসার মানে,
সঠিকভাবে নেইতো তোমার জানা,
ভালোবাসা সুর তুলে দেয় প্রানে,
এগিয়ে যাওয়া পাখির দুটো ডানা।
মেললে ডানা,অসীম নীলাকাশ,
হালকা হাওয়ায় পাখনা মেলে ওড়া,
অসীম মানেই আনন্দের আভাস,
খুশীর ডানায় ইচ্ছে মতন ঘোরা।
আকাশ কি আর টুকরো করা যায়,
কোনো ভাবে ভাঙতে তুমি পারো?
তোমার মনের গোটা আকাশটায়
উড়ছি..... তুমি জায়গা দাও আরও।
পুজো এলেই
ধী রে ন্দ্র না থ চৌ ধু রী
পুজো এলেই মনের ভেতর ঢ্যাম-কুড়াকুড়,
তোর সাথে তো দেখা হবে সকাল-দুপুর।
ঠাকুর দেখা... ওতো শুধু নামমাত্রই,
ওই ছলেতে তুই আর আমি ঠিক বেরোবোই।
সবাই জানে থাকবে সাথে বান্ধবীরা,
আমরা জানি তুই আর আমি মন-ফকিরা।
ব্রেকড্যান্স, আর ধূনুচী নাচ দেখবে কে রে...
আমরা তখন নির্জনেতে রকমফেরে।
মগ্ন তখন ফুচকা এবং এগরোলে,
প্যান্ডেলেতে ঢাকি তখন সুর তোলে।
কুড়কুড়াকুড়, ক্রাক, ঝিক আর ঢ্যাম-ঢ্যাম-ঢ্যাম...
সপ্তমীতে প্যান্ডেলেতে পুরোটা জ্যাম।
ও সামলায় কাকে, আর সে সামলায় তাকে...
আমরা তখন খুনসুটিতে মত্ত সেই ফাঁকে।
অষ্টমীতে বাবা-মাকে রাখতেই হয়,
পাছে জেনে ফেলে আবার সেইখানে ভয়।
আমার একাদশী, মুখে হরতকি...
অন্য কোথাও আপনমনে একাই বকি।
ইচ্ছে করে বাপ-মাকে দিই ঘুমের বড়ি,
ঘুম পাড়িয়ে, দুজনেতেই কেটে পড়ি।
অষ্টমীতে ওদের সাথেই ওঠাবসা,
আমার মুখে তখন ওদের ঝামা-ঘসা।
অষ্টমীটা যায় যে তখন খুব নেতিয়ে,
নবমীতে তোকে পাবার স্বপ্ন নিয়ে।
ঘুম আসেনা উত্তেজনায়, কখন যে ভোর...
নবমীতে নরম হাতের পরশ যে তোর।
সকালে কোনো প্যান্ডেলেতে হায়রে হায়,
বসে থাকি দু কোনেতে, দু-জনায়।
পুষ্পাঞ্জলি কখন যে শেষ, নেই খবরে,
পুরোহিতও চেঁচায় আরো তারস্বরে,
তিথি যে শেষ, তাড়াতাড়ি, আর কে বাকি...
আমরা শুধু সাঁঝের অপেক্ষাতে থাকি।
নবমীতে হঠাৎ কেমন প্ল্যান পাল্টাস,
আমার বুকের ভেতর তখন কি দীর্ঘশ্বাস।
নবমীতে আমি যেন খুব পুরোনো,
সন্ধ্যেবেলা পোষাক পরিস চোখ জুড়োনো,
সঙ্গে দেখি অন্য সে এক মুসকিল- আসান...
দশমীতে ঠাকুর তো নয়, আমার ভাসান!
বেঁচে যাওয়া প্যাপিরাসে গূঢ় মনলিপি
অ সী ম দাস
চাও বা না চাও
মনে মনে পরপর প্যাপিরাসে লিখে চলে মন।
স্মৃতির শোষক চোখে ধুলো দিয়ে শুধু
জেগে থাকে অফুরন্ত আলাপের হিমশৈল পাতা,
পাতার পাত্রে কিছু গূঢ় মনলিপি।
পাঠোদ্ধার করতে করতেই
হিউয়েন সাং এর ঘোড়া ভেসে যায় জলে
আলেকজান্ডারের সাম্রাজ্য পিপাসার শব
শেষ চিকিৎসক নিয়ে যান কাঁধে
সমরেশে'র রামকিঙ্কর আঁকা শেষ হয় না।
প্রতিটি অসমাপ্ত চুম্বনের মতো
মনে মনে আলাপন কিছু গূঢ় থেকে যায়।
জীবন্ত হও, নয়তো জড়
অ সী ম দা স
মনের ভিতর সেই ডুবুরি তল কুড়োতে নামছে
বুকে দম ভরেছে বাতাস রাজা বনস্পতির,
তলের বৃন্ত মনের কথা গোপন ফুলে ফুটিয়ে
নীরব, শোনার জন্য হারিয়ে বাজি বেদম ফকির!
সেই ডুবুরি পাগল নাকি? অজানা দূর
ডুবতে ডুবতে ফুরিয়ে যাবে হাজার আয়ু,
তাও কী পাবে মাইলস্টোনে আর কতদূর
খোদ প্রকৃতির আছে কী সেই শক্তি স্নায়ুর?
তবুও এই অবাক নেশাই বাঁচিয়ে রাখে
নয়তো জড়, রাখছি আমি তোমরা কী নও?
ইচ্ছেটা থাক স্বেচ্ছা সুখে, শুঁকলে বাসি।
খোঁজটা আসল বোধটা বোঝো জীবন্ত হও।
হলুদ ঘাসের শীষে শিশিরের ফুল
অ সী ম দা স
এতো এতো না-পাওয়ার পাথর প্রশ্রয়ে
দৃশ্যের ছায়া হাঁটে পিছু- পাওয়া পায়ে।
স্মৃতির অশৌচ, স্মৃতি ভুলে যায় নিজে।
তবুও পৌনঃপুনিক চাওয়া, চেয়ে চেয়ে
শুকনো করে চাতকের চোখের প্রতিভা।
এক আশ্চর্য অধমর্ণ জন্মের শোকের মগজ
খুঁজে চলে তথাগত দৃষ্টির প্রশান্ত বোধের কবিতা।
পরমা প্রকৃতি এসে বাসা বাঁধে কানে
--কে যেন আসবে কাল পরমান্ন পথে!
শুধু এ আশার ম্যারাথন শ্বাস জুড়ে
আনমোল আগামীর অনন্ত প্রশ্বাস।
হলুদ ঘাসের শীষে ফুটে ওঠে শিশিরের ফুল।
কবিতার অন্বেষণে
প লা শ বি শ্বা স
( ৬৫ )
খেজুর গুড়ের মিষ্টতা লেগে থাক তোমার দু'টো ঠোঁটে
সোনা রোদ্দুরে শিশিরে শিশিরে মুক্তো হাসুক খিলখিল
আর চন্দ্রমল্লিকার কুঁড়িতে প্রেম কথা
ইতিহাস লিখুক এই শীতে
প্রভাতকালীন রহস্যের ঘেরাটোপে
কবিতার অন্বেষণে
প লা শ বি শ্বা স
( ৬৬ )
ভালোবাসি নীহারিকায় বিলীন হয়ে
ভালোবাসি দেহ প্রাচীরের বাইরের তরঙ্গ স্রোত
তোমায় আমায় মিলিয়ে দ্যায় যা
বাতাস স্তব্ধ থাকুক কিংবা ঝড়ের সাথে
তখন বাগানে বসন্ত ফুল হলুদ
কবিতার অন্বেষণে
প লা শ বি শ্বা স
( ৬৭ )
আজ গোলাপে লিখেছি তোমার নাম
সূর্য ওঠার সাথে সাথে
চোখের পাতায় শিশিরের পরশ মেখে
গোলাপ ছোঁয়া কবিতার স্তবকে
ভাসে শুধু তোমারই মুখ-ছবি
কবিতার অন্বেষণে
প লা শ বি শ্বা স
(৬৮)
সমুদ্র স্নানে সেদিন জড়িয়ে রাখবে আমায়
ভেজা শাড়ির মতো তোমার সারা শরীরে
জানি হিংসেতে জ্বলে উঠবে সমুদ্র
শোনাবে অহংকারী গর্জন নাদ মুহুর্মুহু
সহসা এলে ঢেউ আমায় আরও জাপটে নেবে বক্ষ মাঝে
কবিতার অন্বেষণে
প লা শ বি শ্বা স
( ৬৯ )
বাতাস ছুঁয়ে আছি আজও ক্লোরোফিলের স্বপ্ন মেখে
মিশে যাবো মাটিতে একদিন ঝরাপাতার মতন
তোমার সান্নিধ্যে আরো কিছুদিন সবুজ হয়ে থাকতে
এসো অকাল বৃষ্টি বুকে নিয়ে
জ্যান্থোফিলের সমস্ত দাগ মুছে ফেলি
কবিতার অন্বেষণে
প লা শ বি শ্বা স
( ৭০ )
আছি একরকম যখন বৃষ্টির ফোঁটাগুলো ঝরছে বাইরে
আমি ঘরের ভিতরে আর বনলতা তুমি দূরে দূরে
বৃষ্টি ফোঁটা ছড়িয়ে দিলাম বনলতার মনে
বারান্দায় দাঁড়িয়ে রেখো গো আমায় চিন্তনে
আজ তোমার বাহুডোরের বড্ড কাঙাল আমি
জীবন সফরে
সু মি তা চৌ ধু রী
গড়িয়ে চলে চাকা সময়ের পথ বেয়ে,
বর্তমান লহমায় অতীত হয়
জীবন সফরের অবিরাম গতিতে।
স্মৃতির কূলে জলছবিরা ভাসে
হরেক রংবাহারি কোলাজে।
অন্তিমে সাদায় মিশে পূর্ণবৃত্ত হয় এ যাত্রাপথ।।
ধরা অধরায়
সু মি তা চৌ ধু রী
পদ্মপাতার জলকে ছোঁয়া সহজ নয়,
সে কেবলই ইতি-উতি যায় গড়িয়ে।
ধরা দিয়েও অধরা থাকার নিজস্ব কৌশলে।
জীবনের আনন্দও তেমনই জটিল ধাঁধা,
যাপন সীমার চৌহদ্দিতে করে কাটাকুটি খেলা।
পলের চালনিতে ছেঁকে ভরো তাকে মনের সিন্দুকে।।
উপেক্ষিত কালো
সু মি তা চৌ ধু রী
রাতের গভীরেই লেখা থাকে আগামী আলোকের আহ্বান,
তবু রাত উপেক্ষিত হয় কালোর অপ্রিয়তায়,
সমাজ-সংসারের অপাংক্তেয়, আবর্জনারা সামিল হয় কালোর তালিকায়।
শুধু অমানিশার বুক চিরে জেগে ওঠেন কালি, কৃষ্ণ,
বন্দিত হন আপন মহিমায়, ভুবনমোহিনী রূপের আলোকচ্ছটায়,
"কালো জগতের আলো", পাঠ দেন নিরুচ্চারে, অন্তরের শিক্ষায়।।
অসমাপ্ত উপন্যাসের কথা
সু মি তা চৌ ধু রী
স্মৃতির সরণি বেয়ে জেগে ওঠে
এক অসমাপ্ত উপন্যাস,
কতো বৈচিত্র্যময় চরিত্রের সমাহারে।
সময়ের পাকদণ্ডি বেয়ে পিছু হাঁটি,
কতো গোপন আপন যাপন, ফিরে দেখি নয়ন ভরে।
বিশ্লেষণের মাপকাঠিতে বারবার ভাবনারা,
যেন বিচারশালা বসায় নতুন করে।।
ফিরতি প্রশ্ন
সু মি তা চৌ ধু রী
জীবনের প্রতি অধ্যায়ে হাজার প্রশ্ন মিছিল
ঘিরে ধরে যেন নাগপাশে,
শেষ খেয়া বাইবার আগে ফিরে বারেক
তাকে প্রশ্ন করি একটাই,
এতো প্রশ্ন-উত্তরের ভিড়ে
মিলেছে কি একটাও হিসেব, তোমার মনের খাতায়??
আত্মিক সম্বল
সু মি তা চৌ ধু রী
দু'দিনের ভবলীলা 'পরে
সবই বিসর্জন যাবে শেষ খেয়ায়।
অবিনশ্বর রয়ে যাবে যা কিছু আত্মিক সম্বল,
তাই তো হৃদয় আগলে রাখে মান।
যতোটুকু আপন জীবনের পরিসরে করেছে সে আহরণ,
সেটুকুই রবে এ ভূমি 'পরে অমরত্বের মর্যাদায়।।
কবিতাগুচ্ছ
উ প ম ন্যু মু খা র্জী
(১)
স্বার্থের সংঘাত
অবিরাম অনায়াস,
দ্বন্দ্বের দ্বিচারিতা
কেন ছাপ ফেলে যাস?
আঁধারের সখ্যতা
আলো আর ছায়া তে,
আলেয়ার রেশ তাই
আঁধারের মায়া তে।
ধরনীর পদতলে
সৃষ্টির উৎসব,
সকাল টা বোঝেনা
বিকেলের রূপ সব।
নীরবতা ভাষা যার
এতটুকু প্রেরনা,
অবুঝের মন নিয়ে
সুখ টুকু কেড়ো না।
ভালোবাসা মনে তার
স্বাধীনতা কাড়া তে,
উত্তর দাও কেউ
পারো সব হারাতে?
(২)
স্বপ্নের আবেশ তৈরি হয়েছিল
সেদিন, বৃষ্টি হয়েছিল যখন-
তোমার দুয়ার থেকে উঠে এসেছিল
বৃষ্টিস্নাত মেঘ ,মুহুর্তটা মেপে রেখেছিলাম
মনে নেই ঠিক কখন
জলচৌকিতে বসে তোমার চোখের জলেই
সেরে নিয়েছিলাম সূর্য স্নান,
আমার প্রতিটি না বলা কথায়
তোমায় ভালোবেসে ছিলাম
বলা হয়নি তখন।
(৩)
পেরিয়ে এলাম সকাল বেলা
স্নিগ্ধতা আজ স্মৃতি
বয়ে গেলাম কবে,
ভাবতে থাকি বসে
আমি এখন দুপুর
রোদ্দুর এখন মধ্য গগন হবে।
মুহূর্তরা অপেক্ষায়
বিকেল হবে কখন
মনের স্নান টা সেরে নেবো ঠিক
সূর্য ডুববে যখন।
পা দুলিয়ে বসবো আমি
তোমার কাছে এসে
বলো সন্ধে হয়ে আসবে তুমি
আমায় ভালোবেসে?
ভাবতে থাকি এসব বসে
কত সময় পার
চাওয়ার কোনও শেষ নেই
তাই পাওয়া হয়না আর।
জীবন অনেক লম্বা হলো
অভিযোগ নেই কোনো,
আত্ম দর্শন ইচ্ছে ছিল
বুঝিনি একদিনও।
আরও কিছু অপেক্ষা
আসবে বার্ধক্যের রাত,
দাড়িয়ে থাকবো প্রশ্ন চিহ্নে
অনুভবে যাতায়াত।
ভাবনা তখন শেষ হবে
বুঝবো হয়তো অস্তিত্বের কারণ,
ওপার থেকে দেখবো আমি
চেতনার সেই আগুন
একবার হাত রেখেছিলাম
যা দুবার রাখা বারণ।
(৪)
একাকিত্ব ছিল আমার নিজের মত করে,
সাথ ছাড়েনি কখনও...
এলাম আমি তারপরে তে একটু একটু সরে,
ছিল সে তখনও...
জীবন এখন লেখনী হীন কাউকে কি বা বলি
পদ্ম পাতার জল আঁকতে জলেই কেন চলি,
সময় নেই একাকিত্বের বুঝিয়ে গেল শোক
অচেনা তুই আমার কাছে তোর যে ভালো হোক,
একাকিত্ব সাথ ছাড়লো
তুই অনেকের এখন তোর অনেক অনেক লোক,
হেসে ফেললাম আমি
যদিও জানে অন্তর্যামী
আজ একাকিত্ব হারিয়ে আমি কেমন বড়লোক।
ঝাপসা আমি এখনও...
একগুচ্ছ কবিতা
স্ব প ন কু মা র ধ র
অতিক্রম
ইচ্ছে করে হাতটি ধরে,
কেবলই চলি উড়ে,
বাধা-বিপত্তি যতই আসুক,
অতিক্রম করবো পরস্পরে।
স্বপ্নগুলো
স্বপ্নগুলো সব আনচান করে,
খেলা করে আবেগ নিয়ে,
অনুভূতিতে থাকে কেবলই শিহরণ,
চিন্তা-ভাবনার অমিল যায় রয়ে।
আলো
সূর্যোদয়ের আলো মিশেছে জীবনে,
ছড়িয়েছে উজ্জ্বল ধারা,
সূর্যাস্তের আলো ক্রমশঃ আগুয়ান,
অন্ধকার ঘনাবে সারা।
বুঝব কী করে
সুখের পেছনে দৌড়চ্ছি সবাই,
সুখকে পাওয়ার তরে,
সুখ যে আছে মনের ভেতর,
বুঝব কী করে!
চাহিদা
প্রাপ্তির ভাঁড়ার পূর্ণ হলেও,
চাহিদার হয় না শেষ,
যতক্ষন না নিজেই ভাবো,
এই তো আছি বেশ।
ইচ্ছে
চলো এসো, হাত ধরো,
এগিয়ে চলি সামনে,
সুখ-দুঃখ পার করবো,
একসাথে মিলে দু'জনে।
লড়াই
বৃষ্টি বলে জল আমার,
নদীর ও দাবি তাই,
অধিকারের প্রশ্নে দ্বন্দ্ব চলে,
অস্তিত্বের লড়াই যে ভাই!
চিন্তাটা
হয়েছে কত উথাল-পাতাল,
দেহ ও মনের অন্দরে,
চিন্তাটা তবু রয়েই গিয়েছে,
মনের অতল গহ্বরে।
ভেবেছি
ভেবেছি এক হয়েছে আরেক,
মিল ছিল না দু'য়েতে,
তবু ও জীবন এগিয়েই চলেছে,
সময়ের সাথে সাথে।
ছোটবেলা
প্রণব কুমার বসু
(১)
তখন আমি ছয়, আর তুই বোধহয় আট
তোর নাম ছিল রাণী, আমার সম্রাট
একসাথে স্কুল বাসে
ঘোরাঘুরি আশেপাশে
আমার আঁকা ছবি দেখে বলতিস - "বিচ্ছিরি - কাট্ |"
(২)
আমি ছেলেদের, তুই মেয়েদের দলে
খেলে ফিরতাম বাড়ি সন্ধ্যা হলে
মুখে হাতে জল দিয়ে
একটু গড়িয়ে নিয়ে
পড়তে বসার আগে পা ধুয়ে নিতাম জলে।
(৩)
আমি পালাতাম টেনে দিয়ে চুল
দেখা হলে বলতাম - "হয়ে গেছে ভুল"
তুই জোরে কাঁদতিস
যদিও ভালোবাসতিস
একদিন খুঁজে দিয়েছিলাম তোর কানের দুল।
(৪)
আমার ছিল অনেক কিছুর অভাব
নালিশ করা ছিল তোর স্বভাব
খেলতে গিয়ে হেরে
যেতিস মাথা নেড়ে
তোর ছিল বোধহয় ভাইয়ের প্রভাব।
(৫)
চুল কেটে করেছিল তোকে ন্যাড়া
রেগে গেলে আমি তোকে ডাকতাম - "ভ্যাঁড়া"
ছুটে আসতিস আমায় মারতে
অনুরোধ করতাম আমায় ছাড়তে
সকলের সামনে তোকে বলেছিলাম -"গ্যাঁড়া"
(৬)
আমি ছিলাম খুব বদমাশ
রেগে গেলে মারছিস - ঠাস - ঠাস
আমি মুখ ঘোরালে
হাসতিস তুই আড়ালে
এভাবেই কেটে গেছে মাসের পর মাস।
অপরূপ পলাশ
অ শো ক কু মা র দ ত্ত
(১)
তুমি তার বেদনার সুগন্ধি শ্রাবণ--- গুঁড়ো গুঁড়ো মেঘে ছড়িয়ে যাও সুদূর বাতাসে!
করতলে ধরে রাখি অশ্রু নিদারুণ ভেজা কোনো ব্যার্থ
প্রেমের সংশয় ও আবেগে!
গল্প যুবক যারা এই শহরের
সব প্রণয় ব্যবসায়ী--- স্পর্শ করে আঁধারের ছায়াময় দিন!
কী ভেবে তোমাকে আমি খুঁজে
খুঁজে মরি--- প্রণয় ধারা আজ
হৃদয়ে হয়েছে রোমান্টিক! তৃপ্ত
তুমি শুয়ে আছো একলা খেলাঘর নিয়ে হ্রদের সম্মুখে
আমাদের ভেজা আবেগে আপ্লুত করবে এই প্রেমের শহর ভিজে চোখের অপরূপ রক্তপলাশ ও রাঙামাটিতে।
(২)
নৈশব্দ্যের দিন যায়
স্মৃতিঝরা তেঁতুলপাতায়!
নৈশব্দ্যের দিন যায়
নগ্ন প্রেমে মগ্ন
চাটুকারিতায়!
নৈশব্দ্যের দিন যায়
নিরালোকে
ছায়ায়-মায়ায়!
নৈশব্দ্যের দিন যায়
বেকার উৎসবে
ধামা ধরায় !
নৈশব্দ্যের দিন কাটে
ক্ষুধাতুর অগোপন
বিপ্লবে!
নৈশব্দ্যের দিন কাটে
রাহুগ্রস্ত উৎসবের
মলিন দশকে!
তবুও প্রতিদিনের যে
কোনো একটি দিন সশব্দে
দিন ফাটে প্রবল বিস্ফোরণে
সমস্ত প্রহর কাটে দিন-বদলের
ছায়ায়-মায়ায়!
আর
সকল প্রতিবিপ্লবী কোলাব্যাঙ থপ-থপ করে সাধের ঘুমঘরে
ফিরে যায়!
(৩)
এখন তুমি অনেক অনেক দূরে
সেখানে যায় না কোনো পরিযায়ী পাখি!
একলা আমি একলা ঘরে বসে
তোমার দেওয়া মায়া হরিণ নিয়ে থাকি!
কেন তুমি হারিয়ে ফেললে ভালোবাসার আলো ভরা দুপুর
শ্যামলী বাগানের লোহার ঝুলানো সিঁড়ি আর বিস্ফোরণের নোটবুক ভরা চিঠি?
আমার কি আর করার আছে---
আমি তো সারাদিন নাটক নিয়ে থাকি!
এ ভেবে ভেবেই কেটে যায় আমার আলো-আঁধারের প্রণয় প্রণয় খেলা!
তুমি কি এখনো আমাকে উদাসী পাগল প্রেমিক ভেবেই রাখো--- আমি তো কেবল নাটক নিয়েই থাকি!
(৪)
শেষবারের মতো নীরবে আলোকিত অন্ধকার আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে!
স্মৃতির বালু বেলায় কত কত মুখ ভিড় করে আসে!
চার পাইয়ে শুয়ে থাকা অপরূপ গাণিতিক চিহ্ন ও শব্দের আলোকিত দৃশ্যমান জীবন
প্রিয় সব মুখের ভিড় থেকে জীবন নিভৃত হয় অপরূপ সাধনার মতো নির্বিকার আলোকশিখার মতো স্থির হতে থাকে--- পবিত্র চিতা আগুন ছোঁয়া দেয় তাঁকে!
শোভন শরণার্থী শিবিরে ইশ্বরের আর একজন শরণার্থী আসে!
(৫)
কি ভাবো---
তোমাকে ভালোবাসা ছাড়া আর কোনো কিছুতেই অধিকার নেই আমার?
এই যে অগাধ জ্যোৎস্না বৃষ্টি ছলছল নদীর জল অফুরান এলোমেলো বাতাস কোনো কিছুই আমার নয়!
দিনের শেষ পর্যন্ত আমরা কোনো ছায়া দেখিনি কোনো প্রবল বনস্পতির! গোধূলির ছায়ামাখা সূর্য ও ঠিক করে দেখতে পারিনি নিখুঁত অশ্রুজলে! চাঁদের আলো আলগোছে ছড়িয়ে গেছে তোমার অশ্রুসজল মুখে
সাধ জাগলেও ঠোঁট স্বাদহীন থেকেছে বারেবার!
দেওয়ালে মাথা ঠুকতে ঠুকতে কতবার বলবো তোমাকে ঝুমা তুমি আমার!
কি ভাবো তুমি--- তোমাকে ভালোবাসার কোনো অধিকার নেই আমার?
(৬)
উচ্ছ্বাসভরা নদীর দিক থেকে জলজ হাওয়ারা ভেসে ভেসে আসে! নিস্তব্ধ দুপুরের নির্জনতা ভেদ করে কখনো কখনো বেজে ওঠে ভাসমান স্টিমারের বাঁশি!
টুকিটাকি জেলে নৌকারা ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে এদিক-ওদিক! নিয়তি নির্ধারিত প্রেমিকের ভূমিকায় পারঘটায় একা-একা বসে আছি!
দু-হাতের করতলে ধরে রেখেছি বিস্মিত ঝরা পাতার আলো--- অদূরেই ডুবে আছে ব্যর্থ প্রাণের সোনার তরী!
ভাবছি--- আরেকবার ভালোবেসে যদি তুমি হাততালি দাও
অজানা আকাশে অচেনা রোদ্দুর মেখে ভালোবাসার পাখি হয়ে আরো একবার উড়ি!
কবিতাগুচ্ছ
স ঞ্জ য় কু মা র ক র্ম কা র
সুবোধ্য সংযম
অনুরূপ একটি আলোকের স্মৃতি সময়ের সাথে বেশ বিবর্ণ হয়ে থাকে...!
ঘাট-বাঁধানাে জনশূন্য নিস্তব্ধ অন্তর্গত কত পুকুর,অবিরত কত পাখি ও পাখাল—
কড়া রৌদ্রের শুভ্রতা মেখে নানা বর্ণের বিকিরণ ছড়িয়ে পড়ে...!
একটি নিখুঁত আড়াল প্রকৃতির বিচরণে পাখিদের নীরবতা—
স্রোতের শব্দ ভেসে কন্ঠ যেন দ্রুত বাতাসকে স্পর্শ করে যায়!
মানবিক অনুভূতি ও আবেগধর্মী ভালোবাসাটা যেন স্বয়ং বৎসলতার বলিষ্ঠ বহিঃপ্রকাশ...!
নির্গুণ ভক্তি ও প্রজ্জ্বলন চরণে আলম্ব নির্মাণ করে চলে...!
প্লেটোনিক ভালোবাসা ও বন্ধুত্বের অন্তরঙ্গ বৈচিত্র্যকে শনাক্ত করে যায়,
আপদ দূরীকরণে স্বস্ত্যয়ণ ও লেখার প্রতি তীব্র আকর্ষণটা অপ্রতিরোধ্য হয়ে অদৃশ্য হয়ে থাকে...!
অভিনব সন্ধ্যার হিমেল ছোঁয়া, স্নিগ্ধ সুবোধ্য সংযমে শুধু বেঁধেই গেছি জীবন...!
অদ্ভুত একাকীত্ব বোধ ঘিরে ভেসে যাচ্ছিল চরাচর এক মায়াবী ছায়ার মোহে,
নিঃস্ব রিক্ত বৈরাগীর রূপ, সুর, ছন্দ রং আকাশ ছোঁয়া অদ্ভুত সৃষ্টি,
জীবনটাও বেশ পছন্দের নির্মাণে পূর্ণ...!!
শুধু কবিতার আরাধনা
অদেখা চোখটাই যেন জীবন---
ন্যায়বোধ ও ভালোবাসার দৃষ্টিকোণে...
সুস্থ্য, সবল পবিত্র অন্তর মনের শুধু কন্ঠ শুনে গেছি....
প্রবল উত্তাপ নিয়ে কঠিন সত্যগুলো শিখিয়ে দিয়ে যায়...!
সংসর্গ চোখে শুধু কবিতার আরাধনা---
অসফল কামনা নিয়ে গায়ে নতুন বাতাস,
প্রাচীন বাতাসের খোঁজে শুধু নিঃশ্বাস নিয়ে ফিরি,
চারিদিকে ছিলো শুধু ধূ ধূ চরাচর, মোহময় দিনগুলি ছিলো বেশ অস্থির দৃষ্টির মত...!
আলো ঠিকরে যখন আলো চেয়েছি তখন অন্ধকার
এসে গেছে---!
অগাধ-অসীম উৎসাহ ভরে বৃষ্টি ভেজা দিনে ভরা শান্ত আশীর্বাদের মতো অভিষিক্ত করে গেছে!
এলোমেলো জলে কালো চুলের মত মেঘ হাওয়াই উড়ে গেছে...!
চোখে মুখে বৃষ্টির বিন্দুগুলো টিপ টিপ শব্দগুলাের সাথে কাগজ ভরে কত শব্দ রেখে গেছি...!!
অলভ্য পথের খোঁজে
দুচোখ ভরে শুধু "স্বপ্ন আঁকা"------
স্কন্ধে বয়ে নিয়ে চলেছে শুধু দুঃখের ভার,
বেমানান মনে পড়ে সেই সোনালি অতীত,
গোধূলি বেলা শেষে গা-ছমছম সেই নিকষ আঁধার...!
অন্তরটা বেশ জাজ্বল্যমান হয়ে পড়ে----
ভাসে শুধু সেই প্রাণের কিশলয়, জ্বলে যায়
সেই শিখা অনুভূতিহীন হৃদয়ের কাছে...!
সন্ধ্যাবাতির সেই মৃদু আলো—
লোহার ধরুনি থেকে আলো কমানো বা বাড়ানো দিনের কথা,
কত আনন্দের মুহূর্তই ছিল...!
রাতের আঁধারে অলভ্য পথের খোঁজে উষ্ণ বাতাসের উত্থান আর ভাঙা ইতিহাসের মত গতিপথ যেন পরিবর্তন করে চলেছে...!
আঁধারেতে দৃষ্টি মেলে জলে ভেজা চোখ----
মাখামাখি অপরূপ কত সবুজ দৃশ্য ভেসে,
রক্তিম উদ্ভাস ছড়িয়ে অবারিত কত কৃষ্ণচূড়া,
উদাস করা কত সুর, ‘গুলমোহরের মত কতোবারই
যে ঝরে গেছে...!!
জীবন ও কীর্তি স্মরণ
এক পশলা বৃষ্টি শুধু আশীর্বাদের মত অবতীর্ণ হয়ে আছে!
চোখে আঁকা দুঃখের বোধ উষ্ণ হ’য়ে থাকে,
মুক্ত আঙ্গিকে স্বতন্ত্র বোধের ভেতর উচ্চারিত শব্দগুলো ধরাছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে...!
স্মৃতি-আখ্যানে শুধু ভাবতে শেখায় সত্য ও মিথ্যার ভেতর বিপ্রতীপ দূরত্ব ক্রমশ মুছে দিয়ে যায়...!
সময়ের নিরিখে নবীন হয়ে দীর্ঘ অন্তরঙ্গে কতই আলাপচারিতা ছিলো...
চোখে কবিতার অবলোকন, শুধু কবিতার জন্য কত কিছু...
একটি অবাঞ্ছিত আবেগ বিরক্তির তীব্র অনুভূতি গুলোর সাথে মিশে থাকে,
ব্যক্তিত্ব বা নিজের স্বভাব সৃজনশীলতার সাথে জড়িত থাকে...!
জীবন ও কীর্তি স্মরণ সাথে সেই সোনালি দিনের ঋদ্ধ,
স্বার্থশূন্য দুঃখ ও দরিদ্রের মর্মপীড়া, আর ঘুমিয়ে পড়া কবেকার অস্থিরতা...
অবিরাম ক্রোধ এবং অবিচারের অনুভূতি কলমে জীবন্ত হয়ে ওঠে!
অক্ষরসজ্জা গল্পগুলো বোধহয় এভাবেই বলীয়ান হয়ে স্বপ্ন দেখে যায়...!!
ছন্দময় জীবন
হাঁটু গেড়ে বসে আর নয়,
অসাধ্য উচিত,সাধ্যাতীত শ্রমে
শেষ রক্ষার নিগ্রহ থেকে মুক্তির সন্ধান করেই চলেছি...!
মুমূর্ষু মরণাপন্ন আর নয়...
বিস্তৃত প্রসিদ্ধি ও বাঞ্ছা বাসনার
থমথমে নিশ্চল নীরবে সমৃদ্ধির
প্রাবল্যে ফেঁপে উঠি,
সংঘর্ষের হতাহতের সাথে তীব্র চাপ অসহ্য ঘোলা জলের মত হর্ম্য চূড়ায় বসে ভাঙা গড়ার রঙিন বুদ্বুদ গুলো শুধুই দেখে যায়...!
ছন্দময় জীবন ও জয়ের সন্ধানে ক্লান্তি যেন সফল পথের বাধা হয়ে থাকে...!!
ভাবনাদের নাম কবিতা
শা ন্ত ম য় গো স্বা মী
(১)
শহরে প্রচন্ড ভীড়, হাল্লারাজার তুমুল চিৎকার,
কাট আউট শিল্প… ফুটপাথহীন গাড়ির গ্যারেজ সরণী
তাই, শহরে ফিরব না কেউ আর।
শান্তস্বরে থাকি, দেখি… তুমুলা নদীর পলি
কত কালো অন্ধকার তার আনাচ কানাচে
শ্যামল ধানজমি… তার সবটুকু সোনা
উগড়ে দেয়, দেখি ফসলের তরঙ্গমালায়
মেঠো আলপথ, লন্ঠনের মৃদু আলো
আলো কাঁপে আলোর মায়ায়
আলো ভাঙে… ভেঙে ভেঙে যায়।
(২)
পাহাড়ের সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে আয়নায় দেখি।
পরিপাটি জীবন… নানান হিসেবনিকেশ
কখনও এভাবে নিজেকে ভালো করে দেখিনি আগে,
কিছুটা আলো ঘিরে থাকে আমায় এখন…
মাঝে মাঝে খানিকটা সময় ছিঁড়ে আনা টুকরো
মেঘের ভিতর রোদ হয়ে ঢুকে পড়ে হঠাৎ… সটান।
ফিসফিস করে নিজেকে জিজ্ঞাসা করি,
ভালো আছো?
নাগরিক সময় হাঁটিয়ে মারে…
আমি এখন জ্যোতির্বলয়ে ঘোরাফেরা করা
এক জন্ম প্রতারক।
(৩)
বসে রয়েছি পা ছড়িয়ে ভেজা ভেজা
মনকেমনের নৌকো আটকে আছে
আঙুল ডোবা জলের চড়ায়…
সবুজ বাতাসে শরীর ছড়িয়ে এক একবার
মুখোশ ছিঁড়ে রোদ আসে এই সপ্তদীপায়
সাত পাহাড়ের মাথায় তখন স্পর্শহীন আলোর উদ্ভাস।
(৪)
বাষ্প জমবেই শ্রান্তি নামলে… বুকের পাঁজরার নিচে
কিছুটা নেতিয়ে পড়া বেড়ালীনির মতো।
… আমি অভিমান করি না।
ক্লান্তি লাগলেই এক মায়াঘর আমায় ঠিকানা বলে দেয়
দীর্ঘ এক মশারীর ছায়া ঢেকে রাখে আমার স্বেদবিন্দু।
… আমি ভাবনায় থাকি না।
কান্না জমলেই আমি এখন কম্বল ব্যবহার করি।
অনেকটা শীতকাতুরে নাবিকের মতো।
… আমি আঁকড়ে ধরা মানি না।
একগুচ্ছ লিমেরিক
সু নৃ তা রা য় চৌ ধু রী
গীতবাদ্য
বনলতা সাধতো গলা পাশের বাড়ির বারান্দায়
চেরা গলার আলাপ শুনে লাগলো দোলা পরাণডায়
আমিও কিসে কম বা যাই
তবলা ঠুকি ধপ্পড় ধাঁই
পাড়ার লোকের ঝাড়ে এখন ঝাড়খণ্ডের সারান্ডায়।
বনে বনে
সারান্ডার এই বন বাংলোয় সঙ্গীতে আর সঙ্গতে
বারান্দাতে শেয়াল আসে সুর তোলে তরঙ্গতে
বাদ সাধলো ট্যুরিজমে
ট্যুরিস্ট নাকি আসছে কমে
ভাবছি এবার পালিয়ে যাবো পিগমি দেশের কঙ্গোতে।
মহাবিদ্যা
রান্নাঘরে শেকল ভেঙে খুলে বন্ধ দোর
গভীর রাতে বাসন কোসন হাতিয়ে নিল চোর
পদ্ম পিসির রান্নার হাত
চাখতে গিয়ে চোর কুপোকাত
খাওয়ার নেশায় ভুলেই গেছে কখন হলো ভোর।
ক্ষমা
চোর কেঁদে কয়, ’পদ্ম পিসি, ধরিয়ো না কো পুলিশে
অমেত্তোকে হার মানাবে তোমার পিঠে পুলি সে।’
পদ্ম কয়, ‘দেখ্, ভোরের আলো
ছাড় না চুরি, থাক না ভালো।’
কান ধরে চোর কসম খেলো, নয়তো ফাঁকা বুলি সে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন