অণুগল্প

স্বার্থ

নি র্মা ল্য ঘো ষ 


মানিক বাবু ভীষণ স্বার্থপর এক ব্যক্তি। নিজের স্বার্থ ছাড়া কোনো কাজ উনি করেন না কোনদিনও। কম বেশি হয়ত সবাই আমরা স্বার্থপর কিন্তু ওনার মত স্বার্থপর বিরল। ওনার নিজের স্ত্রী এবং সন্তানেরাও ওনাকে এজন্য পছন্দ করেন না।

সেদিন ছিল বিজয়া দশমী। সিঁদুর খেলে এসে মানিক বাবুর স্ত্রী ওনাকে দশমীর প্রণাম করলেন। মানিকবাবু স্ত্রী কে আশীর্বাদ করে বলে উঠলেন:

"তোমার সিঁথির সিঁদুর চিরকাল অক্ষয় থাকুক।"

মানিক বাবুর স্ত্রী হাঁ হয়ে গেলেন। বললেন:

"এই আশীর্বাদেও তুমি নিজের স্বার্থকে জড়িয়ে নিলে!!! ধন্য তুমি!!! সত্যিই তুমি নমস্য।"

মানিকবাবু মুচকি হেসে উঠলেন।







প্রতিস্পর্ধা

বী থি  ক র

খুব চেষ্টা করেও মায়ের মতো করে মাছের ঝোল রান্না করতে পারল না অর্পিতা। গতকাল রাতে খাবার টেবিলে যা হল, সেটা ভেবেই বুকের মধ্যে ধড়াস ধড়াস করছে আর ঘেমে একাকার হচ্ছে এই পৌষ মাসের শীতেও। স্নান সেরে এসে  টেবিলে খাবার সাজাতে গিয়ে কাচের জগটার কথা মনে হল। কত শখের ছিল, সেটাও ভেঙে দিল! আজকাল সব ভেঙে যায়, কিছুতেই জোড়া লাগান যায় না।

-বউমা, অমিতকে ডেকে নিয়ে এসো। হাঁ করে কি দেখছ জানালার বাইরে? তোমার আর শিক্ষা হবে না দেখছি। এত অমনোযোগী মেয়ে!

বাবার কথায় সংবিৎ ফিরে এল অর্পিতার। বুকের কাছে আঁচলের খুঁট টেনে নিয়ে এসে বলল,
-ডেকেছি আমি, ও  বলল আসছে।

যতক্ষণ বাবা আর তাঁর ছেলে খাবার খেল, ঠিক ততক্ষণ অর্পিতার ভয়ে বুকের ভেতরটা কাঠ হয়ে গেল। অমিতের ডাকে সাড়া দিতে যাবে এমন সময় বাড়ির ল্যান্ডফোনে ফোন এল। নিশ্বাস ছেড়ে বাঁচল যেন অর্পিতা। খাবারের প্লেটগুলো খালি, কোথাও একটাও ভাতের দানা নেই।

বারান্দায় শীতের রোদ এসে লুটোপুটি খাচ্ছে। এমন এক দিনে মা খেতে বসে বলেছিলেন, "বউমা, সংসার একটা চক্রব্যূহ। যত তাড়াতাড়ি বুঝবে সেটা, ঠিক তত তাড়াতাড়ি নিজের হাতের মুঠোয় নিতে পারবে। আমি চাই না, তুমি তোমার শাশুড়ির মতো মুখ বন্ধ করে অন্যায় সহ্য করে যাও।"
পেছন থেকে অমিত এসে আচমকা চুলের মুঠি ধরে টানতে টানতে ঘরে নিয়ে গেল। শাড়ির আঁচলটা টেনে বুক থেকে নামিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ল শরীরে। অর্পিতার মনে পড়ে গেল মায়ের কথাগুলো। এদিকে শ্বশুর তাঁর বহু পুরানো রেডিয়োটা চালিয়ে দিল। অর্পিতা দাঁতে দাঁত চেপে শরীরের সব শক্তি দিয়ে অমিতের গালে বসিয়ে দিল পাঁচ আঙুল। অনভ্যস্ত হাতের চড় খেয়ে উঠে দাঁড়ালো অমিত। দরজার ছিটকিনি খুলে সোজা বেরিয়ে গেল।
অর্পিতা শাড়ি ঠিক করে বাইরে বেরিয়ে এসে নিজের ভাত বেড়ে, মায়ের তৈরি আচারের বয়াম থেকে আচার নিয়ে রোদে পিঠ দিয়ে গরম ভাতের গ্রাস তুলল মুখে।








সর্বনাশ

মো য়া ল্লে ম  না ই য়া
           
বহুদিন পর তিথিকে দেখে অনাথ বাবু খুশি হলেন৷ কাছাকাছি আসতেই একগাল হেসে বললেন, ...কেমন আছ তিথি?

তিথি চমকে ওঠে... কেমন আর থাকবো স্যার? আপনিই তো আমার সর্বনাশ করে দিয়েছেন !

অনাথবাবু অবাক হয়ে প্রশ্ন করেন,... আমি!?

হ্যাঁ, আপনি। প্রথম যেদিন আমাকে গীতবিতান উপহার দিয়েছিলেন সেই দিন!

অনাথবাবু স্মরণ করেন আজ থেকে ষোল বছর আগে মফঃস্বলের সেই কলেজের কথা ৷ তিনি তখন সদ্য অধ্যাপকের চাকরী পাওয়া এক যুবক৷ তার চারপাশে ভিড় করে থাকা এক ঝাঁক তরুণ তরুণী! সাহিত্যের অমোঘ টানে স্যারের সঙ্গে তাদের নিবিড় সম্পর্ক। সেই সূত্রে তিথিকে পাওয়া। আর তাকে গীতবিতান উপহার দেওয়া। অনাথ বাবুর স্মৃতি রোমন্থনের মাঝখানে তিথি বলে ওঠে,

 …..সেই গীতবিতান ফিরিয়ে দিতে এসেছি স্যার ৷

ষোল বছর আগে ধুসর হয়ে যাওয়া এক গীতবিতান তিথি ব্যাগ থেকে বার করে অনাথবাবুকে দিতে যায়। তার বাড়ানো হাতটা সযত্নে ধরে অনাথবাবু বলে ওঠেন, 

…আচ্ছা তিথি, তোমার সর্বনাশের সংশোধন কি আর করা যায়না ?

…এ সংশোধন করতে গিয়ে আপনার বাড়িতে আরও একজনের সর্বনাশ করবেন কেন স্যার? সর্বনাশ সংশোধন….সর্বনাশকে আরো বাড়িয়ে তোলে, আপনি কি তা জানেন না? 

তার প্রিয় তিথির কাছ থেকে এমন কৈফিয়ৎ সুলভ প্রশ্নে অনাথবাবু হেসে ফেললেন,... 

গীতবিতান আমার কাছে গীতার মতো, আমার কাছে ধর্মের মতো! যাকে আমি আমার ধর্ম সমর্পন করেছি তাকে আমি কিভাবে ভুলি বলো?

…তিথি অবাক হয়ে অনাথ বাবুর মুখের দিকে তাকিয়ে বিস্ময়ে বলে ওঠে… স্যার!

…চলো তিথি অনেকটা সময় পার হয়ে গেছে, বেলাশেষের সূর্য পশ্চিমাকাশে ঢলে পড়েছে। এখুনি গৃহে না ফিরলে আঁধার নেমে আসবে!

...তিথি অনাথবাবুর হাতটা শক্ত করে ধরে। তারপর কলেজ ক্যাম্পাসের নির্জনে ঝরে পড়া লাল কৃষ্ণচুড়া মাড়িয়ে, বসন্তের শেষ কটা দিন একসাথে থাকার শপথ নিয়ে তারা এগিয়ে চলে।
        ঠিক সেই সময় দূরে, কোথাও তখন বেজে চলেছে..."  আজ কৃষ্ণচূড়ার আবির নিয়ে আকাশ খেলে হোলি ৷"







একাকিত্ব

সু ল গ্না   চৌ ধু রী 

বৃদ্ধ কমল বাবু তাঁর সঙ্গিনী শুভা চলে যাওয়ার পর বড্ড একলা হয়ে পড়েছেন। তাঁর দুই পুত্র। তাঁর মতই মেধাবী। ছোট্ট থেকে সন্তানদের বেশ সহবত শিখিয়ে গড়ে তোলা এই শান্তিপ্রিয় পরিবারের কর্তা কমল বাবু হেসে খেলে কাল কাটিয়ে আজ জীবনের প্রায় শেষ প্রান্তে। তরুণ অবস্থায় কমল বাবু তাঁর জীবন শুরু করেছিলেন উত্তরবঙ্গের জলপাইগুড়ি শহরে। সুখী পরিবারের এই আদ্যন্ত ভদ্র আর শান্তিপ্রিয়  পরিবারটা মানুষজন অসম্ভব ভালোবাসতেন। অসম্ভব মেধাসম্পন্ন এই মানুষটা কত সহায়হীন মানুষের সহায় হতে যে পেরেছিলেন তার হিসেব নেই।
অবসরের পরে বৃদ্ধ কমল বাবু কলকাতায় তাঁর আত্মীয়স্বজনকে কাছে নিয়ে হৈ, হৈ করে থাকবেন বলে এসে বাড়ি বানালেন। দুই পুত্র চাকরি নিয়ে যথাক্রমে কুয়েত আর সিঙ্গাপুর। যে আশা নিয়ে সকলকে কাছে পাবেন ভেবে এসেছিলেন সে ধারণাকে ভুল প্রতিপন্ন করে আজ আত্মীয়রাও যে যার মতন।   

স্ত্রী শুভা দেবী ছিলেন পেশায় এক সফল শিক্ষিকা। যিনি তাঁর কর্মজীবনে বহু পুরস্কারে পুরস্কৃত হয়েছিলেন। জননীসুলভ আচরণের জন্য শুভা দেবী সকলের প্রিয় পাত্রী ছিলেন। হঠাৎই এক বসন্ত সকালে এ জগতের সকল মায়া ত্যাগ করে  পৃথিবীর পরের পৃথিবীতে রওনা দিলেন সকলের প্রিয় শুভাদেবী। বিস্ময়ে হতবাক কমলবাবু কি করবেন বুঝতে পারলেন না। খবর পেয়ে বিদেশ থেকে ছেলেরা এসে তাদের মায়ের পারলৌকিক ক্রিয়া শেষ করে তাদের বাবাকে নিয়ে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করলে গেলেন না কমলবাবু। বাবাকে নিয়ে যেতে না পেরে দিশেহারা  পুত্রেরা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে  তিনজন কাজের লোক তাদের বাবার জন্য ঠিক করে দিয়ে ফিরে গেলেন যাঁর যাঁর কর্মস্থলে। 

কমলবাবুকে কেউ দেখতে গিয়ে যদি বলতেন আপনি এইভাবে একা থাকবেন কি ভাবে? ছেলেদের সাথে চলে গেলেই তো পারতেন। বৃদ্ধ কমলবাবু হেসে বলতেন আমার বাড়ির মতন আনন্দ পৃথিবীর কোত্থাও মিলবে না গো, "এ আমার পরম প্রিয়, নিজের বহু কষ্টার্জিত অর্থে তৈরী। এই বাড়িতে রাখা আমার সুদিনের হাসি, আনন্দ, ভালোবাসা। তিনি বলতেন পুত্রদের এই ভবিষ্যৎ তো আমরাই চেয়েছি, কাজেই আমার একাকিত্ব নিয়ে তাদের কাছে ঘ্যানঘ্যান করতে আমি চাই না।  
ওদিকে একা কমলবাবুর বাড়িতে তিনজন কাজের লোকের কাজ নিয়ে কলহের ঠ্যালায় পাড়াপড়শির কানপাতা দায়। এরই মাঝে এক সকালে আবিষ্কার হলো বৃদ্ধ কমলবাবু আলঝাইমার্সে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন। তাঁর এক নিকট আত্মীয়া এসে সেটা খেয়াল করে এই চলৎশক্তিহীন বৃদ্ধের খবর জানালেন তাঁর পুত্রদের। শয্যা নেওয়া বৃদ্ধ আর ছেলেদের সাথে দূরভাষে কথাটুকুও বলার ক্ষমতা হারিয়ে ফেললে, কমলবাবুর এক পুত্র ছুটি নিয়ে এলেন ডাক্তার কন্স্যাল্ট করতে, দেখা গেলো শয্যায় থাকাকালীন তাঁর পিঠটা বেডসোর হয়ে ভরে উঠেছে। মাস মাহিনায় নিযুক্ত তিনটে কাজের মানুষ তাঁকে কেউ সঠিক যত্ন করেইনি। ভালোবেসে ভালোরাখা তো বহুদূরের কথা, অবশ্য সেটাই খুব স্বাভাবিক, তারা শুধু মূল্য গুনে নিয়েছে। আর প্রাণ ভরে বৃদ্ধর ঐশ্বর্যমণ্ডিত বাড়ির বাতানুকূল যন্ত্র, ফ্রিজ, টি,ভি, মায় গাড়ি নিয়েও এদিক সেদিক গেছে। বিদেশে কর্মরত ছেলেরা যে বিশ্বাস করে তাদের হাতে তাদের বাবাকে রেখে সকল ভোগের ব্যবস্থা করে দিয়ে গেছিলেন। কিন্তু বৃদ্ধ যে ক্রমশঃ শারীরিক আর মানসিকভাবে আক্রান্ত হয়ে পড়েছেন তা আর কেউ খেয়ালই করেন নি।
ডাক্তার কন্স্যাল্ট করে বৃদ্ধকে তাঁর পুত্র শহরের নামী এক নার্সিংহোমে ভর্তি করে দিলে দিন তিনেক পরেই প্রচণ্ড মানসিক এবং শারীরিক কষ্ট নিয়ে গত কয়েকদিন আগে তিনি ইহলোকের মায়া ত্যাগ করে গেলেন।  

এপারে পড়ে রইলো তাঁকে ঘিরে রাখা সকল আয়োজন, আর কমলবাবুর চলে যাওয়ার পর তাঁর গুণাবলীর রচনাসমগ্র, যা পৃথিবীর নিয়ম। মানুষের চলে যাওয়ার পরে বড্ড আলোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়ায়। এই গুণের তালিকায় তখন কত শত পালকের সংযোজন, অথচ যা জীবদ্দশায় কদর পায় না। থাকলে কাছে কেউ তো বোঝে না। চলে গেলে সব্বাই খোঁজ করে। তাই এখন সেই তিনজন কাজের লোক যারা বৃদ্ধের রক্ষণাবেক্ষণে ছিলো তাদের কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জনের পালা, আসলে স্বার্থপর মানুষগুলো এখন বাস্তুহারা হওয়ার ভয়ে খুবই মুষড়ে পরেছে ঠাঁই কোথা পাবে, এই ভেবে।
 
হায় রে মানুষ!!!







ভালবাসায় দ্বৈতসত্তা

কা বে রী  রা য় চৌ ধু রী

অরুণিমা দীর্ঘদিন পর অনির্বাণকে দেখতে পেলো সাদা ধুতি পরিহিত গুরুদশা অবস্থায়, মনটা ডুকরে উঠলো ভালবাসা যে এক অমোঘ টান। এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেও রেহাই পেলো না, অনির্বাণ মুখোমুখি দাঁড়িয়ে প্রশ্ন - কেমন আছো মিতা?
অরুণিমার সংক্ষিপ্ত উত্তর- ভাল আছি, কিন্তু তোমার এ বেশ?
অনির্বাণ- বাবা আর আমাদের মধ্যে নেই, ব্যস এই পর্যন্তই, অরুণিমা ট্রেনে যেতে যেতে অতীতে ফিরে দেখা, এখনো মায়া জড়ানো দিঠি পিছুডাকে আজও ভোলে নি ভালবাসায় ঢেউয়ের স্পন্দিত আলোড়ন। হৃদয়ে গোলাপ কাঁটার ঘায়ে রক্তক্ষরণ সুপ্ত বেদন অন্তরালে গোপন।
দাদার বন্ধু দোল খেলার সুবাদে আবিরে রাঙ্গানো প্রথম পুরুষের স্পর্শে বসন্ত জাগ্রত প্রাণ। দু'জনের কথাবার্তা দিয়ে প্রেম পেয়ালায় ডুব সাঁতার। অনির্বাণ চাকরির পরীক্ষা দিচ্ছে এছাড়া ওর বাবা অটোমোবাইলের ব্যবসা খুলে দিয়েছে। অরুণিমা প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষিকা, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের খাতা এনে অনির্বাণকে নানাভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল।
অরুণিমার প্রেম ছিল কোকিলার কূহুতান, পলাশ, শিমুলের লালিমা আভায় অস্তরাগে সোহাগী গুনগুন, বউ কথা কও পাখির কূজনে উন্মনা হয়ে উঠতো অনির্বাণের সঙ্গীনি হওয়ার ইচ্ছায়। দুই বাড়িতে ওদের মেলামেশায় বাধা ছিল না।
অনির্বাণ ভালবাসার দেখনদারিতে অরুণিমার মনটাকে জয় করে নিয়েছিল। ওরা দু'জন কাছাকাছি আসলেই অরুণিমার হৃদয়ে নদীর জলোচ্ছ্বাসে ঢেউয়ের প্লাবন। বিয়ের ব্যাপারে অনির্বাণ চাকরি পাওয়ার অজুহাত দেখাতো, এভাবে ছয়টি বসন্ত অতিক্রান্ত, মেয়ের বয়স বাড়ছে, বাড়ির লোকের উৎকন্ঠা, অরুণিমারও ভরসায় কোথাও একটা কিন্তু সংযোজন, প্রেমে দোটানা, অনির্বাণের মধ্যে ভালবাসার রাশ যেন গভীরতার অভাব। আত্মীয়ার সুবাদে বিয়ের প্রস্তাব এবং পাত্রপক্ষের গুণী মেয়ে, শিক্ষিকা, সুন্দরী বলে পছন্দ হয়ে যায়। অরুণিমা একান্তে অনির্বাণকে সব জানায়, কিন্তু ও নিরুদ্বেগ, ওর চোখে একবারও আশার আলো দেখায় না, অরুণিমার চোখের জলে বাঁধ মানে না, অশ্রুনদী বানভাসি বালুচর, একটি মেয়ের চোখের জলের মূল্য যে না বোঝে তার অন্তরে ভালবাসা তাসের ঘর। অরুণিমা আজ বিবাহিত, স্বামী, সন্তান নিয়ে সুখী, তবুও শত আঘাতেও ওর হৃদয়ে প্রথম প্রেমের সুগন্ধ হৃদয়ে রহে নীরবে অন্তরে মম।।







জীবন এক আসল লড়াই

সু স্নি গ্ধা

জন্মকালেই মুখ দেখে মা নাম দিয়েছিল তেজস্বিনী। যেমন নাম, তেমনই চরিত্র। ছোট্ট থেকে শুধুই লড়াই আর লড়াই। সামাজিক কাজেও পিছিয়ে থাকার নয়। পাড়ার পুজোয় কে চাঁদা দিল না, তাকে বুঝিয়ে টাকা আদায়--, টাকার অভাবে কে সুচিকিৎসা পাচ্ছে না--- সব  কিছুতেই সে এগিয়ে যায়। তারপর স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ‍্যালয়ের পরীক্ষা---সবখানেই সে কৃতকার্য, সবেতেই সে এগিয়ে। ভালোবাসা বলো সংসার বলো প্রতিটা ক্ষেত্রে  মেয়েদের এভাবেই যে লড়ে যেতে হয়। স্বামীর সুখ, পারিবারের সুখ সেখানেও চলে লড়াই। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে লড়াই করছে তেজস্বিনী, তবে নীরবে। শিক্ষিতা মেয়ে যে সে। ঠিক কে ঠিক আর ভুলকে সে ভুল বলে--- সেখানে কোন পক্ষপাতিত্ব নেই।  আজ হয়তো প্রৌঢ়ত্বে পৌঁছে দুই সন্তানের মা হয়ে তাদের মানুষ করতে গিয়ে জীবনের শ্রেষ্ঠ লড়াইটা করতে হচ্ছে। মাথা গোঁজার জন্য বাড়ি, উপার্জনের সংস্থান থাকলেই হবে না। শিক্ষা চাই। সুশিক্ষা। মানুষ হবার শিক্ষা। সে আর যাই হোক্, মূর্খ সন্তানের মা হতে পারবে না। সন্তানের সুখের জন‍্য তাকে সামনে তাকাতে হবে, তাদের প্রকৃত মানুষ করে তুলতে হবে। তবেই তো আসল জীবন, এক আসল লড়াই।।







নকল সোনা মিনি মাগনা

র ত্না  দা স

রাতদুপুরে গিন্নির ঘুমটা হঠাৎ ভেঙে গেল। একটা কেমন শব্দ হচ্ছে ঘরে, মনে হয় কেউ হাঁটছে। তার তো হাত পা ঠান্ডা হয়ে এলো। স্বামীকে ঠেলতে লাগলেন। অ্যাই, ওঠোনা...

দূর্ ছাই, ঘুমাতেও দেয় না। সারাদিন তো প্যাঁচালের শেষ নেই, এখন রাতদুপুরেও! চুপ করে ঘুমাও তো। -আরে না না, ঘরে একটা শব্দ হচ্ছে, মনে হচ্ছে কেউ হাঁটছে। -আরে রাখো তো তোমার আজগুবি কথা। কেউ না। বৌ আর কি করে, চুপ করে শুয়ে রইলো।

হঠাৎ ধুপ করে একটা শব্দ! মনে হলো কিছু একটা লাফিয়ে পড়লো। -অ্যাই অ্যাই ওঠো ওঠো ।সত্যিই শব্দ। চোর ঢুকেছে বোধহয়। কত্তা তাড়াতাড়ি ধড়মড় করে উঠলো। -কই! কোথায়! কিন্তু খাট থেকে নামার পর হাতে যেন কিসের ধাক্কা লাগলো! -আরে চোর... চোর... এবার দুজনের সম্মিলিত চিৎকারে আশপাশ থেকেও সাড়া আসতে লাগলো। আরে দাদা কী হলো?

কত্তা ততক্ষণে কাউকে জাপটে ধরেছেন। কিন্তু রাখতে পারলেন না। সড়াৎ করে পিছলে বেরিয়ে গেল। সারা গায়ে চপচপে তেল। স্ট্রিটলাইটের আলো হাল্কা ভাবে ঘরে আসছিল, তার মধ্যেই দেখলেন ড্রেসিংটেবিলের সামনে থেকে একটা বাক্স মতো তুলে নিয়ে জানলা গলে কে একটা বেরিয়ে গেল। জানলার শিকটা আগে থেকেই বাঁকিয়ে রাখা ছিল।

পাড়ার কয়েকজন দৌড়ে এলো এরমধ্যে। কি হলো দাদা! গিন্নি ফোঁপাচ্ছে, আমার গয়না ছিল ড্রেসিংটেবিলের ওপর, বাক্সের মধ্যে। ওটা নিয়েই ভেগেছে। সেকি, তবে তো থানায় একটা ডায়েরি করতে হবে! গিন্নি তাড়াতাড়ি বলে উঠলো, এতো রাতে আর কি হবে, কাল সকালে গেলেই হয়। কয়েকজন চোরের পেছনে ছুটেছিল কিন্তু তার দেখা পাওয়া গেল না। যে যার মতো ফিরে গেল।

এবার কত্তা ঝাঁপিয়ে পড়লেন গিন্নির ওপর। তোমার কোনো কান্ডজ্ঞান নেই! গয়না কেউ বাইরে রাখে! আরে দুদিন আগে পাড়ার ভজাদার মেয়ের বিয়েতে গিয়েছিলাম না, তাই। তা আলমারিতে রাখতে পারোনি, বুদ্ধির ঢেঁকি একখানা! 

গজগজানির মধ্যে বৌ হঠাৎ ফিক করে হেসে ফেললো। কী হলো! দাঁত কেলাচ্ছে দ্যাখো! আরে ওগুলো তো সব সিটিগোল্ড। তাই! তাহলে চ্যাঁচাচ্ছিলে কেন! ও তো পাড়ার লোকেরা এসে পড়েছিল তাই।

এদিকে চোরের একটু বদস্বভাব ছিল, আড়ি পেতে লোকের কথা শোনার। সে বাগানে লুকিয়ে বসেছিল। তারপর জানলার কাছে এসে সব শুনলো, দেখলো। দুজনের মুখে কান এঁটো করা হাসি। ওদিকে চোরের মুখ ততক্ষণে মাছ পচা বাসি। কোন ছাগলে চুরি করে! আজকালকার লোকগুলোও হয়েছে, সব নকল সোনা পরে ঘুরে বেড়ায়! পুরো খাটনিটাই জলে। নাহ্ এ লাইনে আর নেই। এবার মারি তো গন্ডার লুটি তো ভান্ডার। পাড়ার এম এল এ মনাদার কাছেই যাবে। শুনেছে কয়লা, বালি পাচার করে ভালো কাটমানি পাওয়া যায়। এবার ওই ধান্দা, একদম হাতে হাতে ক্যাশ।







ঈশ্বর

ছ ন্দা  দা ম

আপনাকে দেখে আমার ঈশ্বর মনে হয়। আমি কৃষ্ণের ছবির দিকে তাকিয়ে কি করব বলুন... তৃষা অনন্যস্বামীর দিকে তাকিয়ে বলল। তারপর চোখ নামিয়ে নিল।

আমি ফুল তুলি মালা গাথি আপনার জন্য। আপনাকে মনে মনে মালা পড়াই। এ আমার প্রেম পূজা যাই বলেন।

পূজারী তৃষার দিকে তাকালেন... তুমি কি বলছ সত্যিই জানো।ঈশ্বরের চেয়ে বেশি কাউকে ভালোবাসা যায়না, বাসতে নেই।ঈশ্বর প্রেম মুক্তির একমাত্র পথ। মানুষের প্রেম তো লোভ লালসা কামভাবে মথিত।

তৃষার দুটো চোখ বেয়ে জল পূজারীর পায়ে পড়ল।
উনি চমকে উঠে পা সরিয়ে নিলেন।

তৃষা বলল...আমি তো শুধু চোখ ভরে আপনাকে দেখতে চাই আর কিছুই চাইনা। আপনাকে না দেখলে ও চলে। প্রতিমা আমার হৃদয়ের মন্দিরে সদা বিরাজিত।।

তৃষা মুখে একটা হাসি নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে নীচের নেমে গেল নিস্তব্ধে।
পূজারী ওর অপসৃয়মান ছায়ার দিকে অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলেন।






দীনবন্ধু

প্র তী ক  মি ত্র

বাগানে শুকনো পাতাগুলো এমনভাবে এদিক-ওদিক হেলায় পড়ে থাকে যে হাঁটলেই বড্ড আওয়াজ হয়। আশেপাশের প্রতিবেশি ভোর থেকে ওঠে। শেওড়াফুলি থেকে সবজি আনে।সেটাই ঠেলাগাড়িতে বেচে। মাঝবয়সী ছেলেটা দীনবন্ধুর ছেলের বয়সী হবে। ছেলেটার বউ দীনবন্ধুকে কাকাবাবু বলে ডাকে। ওদের দুটো ছোট্ট ছেলে-মেয়েও আছে। ছেলেটার চাকরি যাওয়ার পর প্রথম প্রথম বউটা ক’টা পাড়া ছেড়ে স্টেশনের কাছে একটা রুটির দোকানে বসতো। দীনবন্ধুর বউ দিপালীর সেটা চোখে পড়লে দীনবন্ধু ছেলেটিকে ধরে। বাড়ির বউ কাজ করলে তো ভালো কিন্তু ওই জায়গাটা ঠিক সুবিধের নয়। বাচ্চাগুলোই তখন ওকে বলে দেয় যে বাবার চাকরি নেই। ছেলে ভিন রাজ্যে থাকে। তাকে কিছু বলে ঘাবড়ে না দিয়ে দুটো দিন ভেবে ছেলেটিকে ও নিজেই প্রস্তাব দেয় একসাথে ব্যবসা করার। সরাসরি তাকে সাহায্য করতে চাইলে যদি সে নিতে অস্বীকার করে। তাছাড়া অবসরের পর যদি দীনবন্ধুরও কিছু রোজগারের ব্যবস্থা হলে মন্দ কি! লাভের অল্প কিছু ওকে দিলেই হবে। পরে অবশ্য সেটা সে না নিলে দু’হাত জোড় করে কেঁদে ফেলে ওই বাচ্চাদুটোর মা। ‘আমায় যখন কাকাবাবু বলেছো এটুকু না হয়…’ বলে দীনবন্ধু মেয়েটির মাথায় আশীর্বাদ করে। ইতিমধ্যে এইসব দানখয়রাতির খবর দিপালী মারফত ছেলের কানে পৌঁছালে ছেলে বেশ রেগে যায়। প্রতিবেশি ছেলেটি ভেবেছিল দীনবন্ধুর গাছের ডাবগুলো বেচবে। ছেলের চোটপাটের কারণে সবই স্থগিত হয়ে যায়। দিপালী যে কেন এমন করলো? অথচ মেয়েটি রুটির দোকানে কাজ করছে দেখে সেই দীনবন্ধুকে বলেছিল। দিপালীর এদের প্রতি এত রাগ কিসের?
এদের সন্তান আছে আর তার ছেলের নেই বলে? বাগানে ঘোরার সময় দীনবন্ধু তাই একটু সতর্ক হয়। আওয়াজ হলে প্রতিবেশিরা বুঝে যাবে কাকাবাবু বাগানে এসেছে। সেই কাকাবাবু যার সম্বল থাকলেও সাধ্য নেই। দীনবন্ধু গাছের পাতার ফাঁক দিয়ে নীল আকাশের দিকে তাকিয়ে ভাবতে থাকে ছেলের তালিমের বেলা কি কি কমতি রয়ে গেছে।







বসন্তের ঝড়

প্র দী প  দে 

ব্যাগটা সবে নামিয়েছি, গিন্নি দৌড়ে এল, সুদুর রান্নাঘর থেকে নাইলনের মোটা বাজারের ব্যাগ দেখেই উনি বুঝে গেছেন যতসব রদ্দিমাল, মানে সবজি আমি মহামুল্যে কিনে এনেছি।

ও রেগে লাল, মাথার চুল এলোমেলো করে চিৎকার--- এসব কি এনেছো যাচ্ছেতাই?

সবে বাজার থেকে এলাম, করোনার আবহে মুখের মাস্কটাও পর্যন্ত খুলতে পারিনি, হাত পা ধোওয়া দুরে থাক,  কিছু না দেখেই মাথা আমার খারাপ করে দেওয়ার পালা। আর আমি সত্যিই বোকা প্রায়শই মুখ খুলে ফেলি আর সেই একই উৎপত্তি শুরু হয়ে যায়, কচ্ছপের গল্পের মতোই। তাই বলেই ফেললাম ---আরে চেঁচামেচি করছো কেন? আগেতো থলি থেকে সব বার করে দেখো। সমস্ত মাল বেছে বেছে এনেছি।

---দেখো মাথা গরম করে দিও না আমার, বুঝলে? আমি একবার দেখলেই বুঝতে পারি। আর সব বেশি বেশি দাম দিয়ে এনেছো এই সব ফেলে দেওয়া সব্জিগুলো? 

---আরে না না, সব দামী এবং টাটকা!

---ঠিক আছে। ঠিক আছে! যা সব এনেছো--- ওগুলো দিয়ে তুমিই রান্না করবে, আমি ছুঁয়েও দেখবো না, এই বলে দিলাম। যত্তোসব!

আমি তাড়াতাড়ি ব্যাগ উল্টে দিলাম। আনাজগুলো গড়াগড়ি খেয়ে দিক-বেদিক বেমালুম হয়ে গেল। দু একটা হাতে তুলে বৌয়ের উদ্দেশ্যে নাড়ালাম--- দেখো! বললাম না? কত টাটকা দেখ!

গিন্নি ওসবের ধার দিয়েও গেল না। পালং শাকের আঁটিটা হাতে তুলে নিয়ে কি চ্যাঁচানি--- ছ্যা! ছ্যা এটা কি? এটা ফেলে দিলে গরুতেও তো খাবে না!

আমি বেগতিক দেখে কেটে পড়লাম। একেবারে সোজা ছাদে গিয়ে ঠাঁই নিলাম। কান খাঁড়া করে শুনতে লাগলাম গিন্নির চিল্লানি--- কোনো কাজটা যদি পারে। সব কিছুতেই বড় বড় ভাষণ!
কাজের বেলায় অকর্মার ঢেঁকি!

লজ্জায় কান লাল হয়ে গেল। কর্মজীবনে যে আমি কিনা ম্যানেজার হয়ে সকলকে ধমকেছি সেই আমিই এখন বউয়ের হাতে জব্দ হয়ে ল্যাজ গুটিয়ে নিজেকে লুকাচ্ছি! ছিঃ ছিঃ! ভগবানের এ কেমন বিচার? না ভগবান-টগবান কিছু নেই!

আশেপাশের বাড়ির প্রতিবেশী বৌদিরা সব শুনছে আর কি ভাবছে কে জানে? ছিঃ ছিঃ!






সুচেতা ও সৃজা

ব ন্দ না  ম ন্ড ল  মি ত্র

সুচেতা নিজের পায়ে দাঁড়াতে চেয়েছিলো। তার সেই সাধ আজও পূরণ হয়নি, তাই তো সে আঁকড়ে ধরেছিলো একরত্তি সৃজাকে। পরম আদরে বড় করে তুললো সৃজাকে। আজ সে ভূগোলে মাষ্টার্স। সুচেতার বড় গর্ব হয়। এইবার তার মেয়ে তার ইচ্ছে পূরণ করবে। চাকরী করবে, স্বাবলম্বী হবে, মা-বাবার পাশে দাঁড়াবে। তবে আর পাঁচটা মধ্যবিত্ত পরিবারের মত মেয়ের বিয়ে দেবার তাড়া তাদের নেই। শুধু আছে মেয়েকে ঘিরে একবুক স্বপ্ন--- ও উজ্জ্বল নিশ্চিন্ত ভবিষ্যতের আকাঙ্ক্ষা।

কিন্তু সৃজা স্কুলের প্রথম ছাত্রী। কলেজে ফার্ষ্টক্লাস--- এক অদ্ভুত নেশায় বুঁদ হয়ে থাকে। তাকে আরও সুন্দরী হতে হবে। আটষট্টি কেজি থেকে আজ সে পঞ্চান্ন। রোজ চলে ত্বকের মাজাঘষা। দিনের পর দিন অনলাইনৈ আসে কসমেটিক্স। পোশাকে আতিশয্য এবং পেশাদারী সাজে সে অনবদ্য। দুপুরে এক কাপ ভাত ও রাতে একটি রুটি তার রোজকার খোরাক। সকাল তার দশটায় হয়। তারপর রিও পড়তে আসে। দুপুরে স্নান খাওয়া ভাতঘুম ও মুঠোফোনে ব্যস্ততা। সন্ধ্যায় সামায়ার সাথে আড্ডা। এই তা, দিনযাপনের ফিরিস্তি। নরম স্বভাবের সৃজা আজকাল কেমন যে বদমেজাজী ও খিটখিটে হয়ে গেছে! তাই সমঝে চলে সুচেতা। সুচেতা জানালা দিয়ে বাইরে তাকি য়ে থাকে, সৃজা দেখে মুঠোফোন।








তুমি এলে অনেক দিনের পরে যেন বৃষ্টি এলো

তা প স  বা বু

তরুণ নিভাকে খুব ভালোবাসে।পাশাপাশি বাড়ি। দুজনেই দু'বাড়ির ব্যালকনী থেকে একে অপরকে দেখে প্রেমে পড়ে। আর এই প্রেমের সম্পর্ক তাদের মধ্যে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ করে দেয় একদিন। তারপর কেটে গেছে প্রায় দশ বছর সময়ের স্রোতে। সেদিন ঝিরিঝিরি করে বৃষ্টি নেমেছে। তরুণ অফিস থেকে বাড়ি ফিরে চলে গেছে, ব্যালকনীতে রেডিও নিয়ে। দৃষ্টি তার সোজাসুজি নিভার বাড়ির দিকে। একটু ভাবনায় তরুণ হারিয়ে গেছে। হঠাৎ মেয়েলী কন্ঠে নিভা  পিছন থেকে এসে তরুণের মুখের দিকে চায়ের কাপটা এগিয়ে দিলো। তরুণ নিভাকে দেখে অবাক হয়ে যায়। নিভা একটা হলুদ শাড়ি পড়েছে। শাড়িটা তার খুব চেনা আর পরিচিত। সে নিভার দিকে তাকিয়ে বলে, "তোমার এই হলুদ শাড়িটা দেখে এমনি এক বৃষ্টি ভেজা দিনে তোমার প্রেমে পড়ে গিয়েছিলাম। তোমার মনে আছে। আমার কিন্তু আজোও মনে আছে। এ শাড়িটাই পড়ে তুমি ছিলে সেদিন ওই যে দুরে তোমার বাড়ির ব্যালকনীতে বসে। আর আমি এখানে রেডিও হাতে। যাতে গান হচ্ছিল হেমন্ত মুখোপাধ্যায়-এর 'তুমি এলে, অনেক দিনের পরে যেন বৃষ্টি এলো।' নিভা তরুণকে জড়িয়ে ধরে। আর ঠিক তখনই  তরুণের বসার চেয়ারের সামনে রাখা রেডিও থেকে ভেসে এলো গানটা, "তুমি এলে অনেক দিনের পরে যেন বৃষ্টি এলো, তুমি এলে, অনেক কথা এলোমেলো মনে হলো"।




মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চতুর্থ বর্ষ || প্রথম ওয়েব সংস্করণ || শারদ সংখ্যা || ১২ আশ্বিন ১৪৩১ || ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

তৃতীয় বর্ষ || দ্বিতীয় ওয়েব সংস্করণ || হিমেল সংখ্যা || ৪ ফাল্গুন ১৪৩০ || ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

তৃতীয় বর্ষ || তৃতীয় ওয়েব সংস্করণ || বাসন্তী সংখ্যা || ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ || ১০ মে ২০২৪