ছড়া

উরুষ গাছের কুরুস পাতায়

তু হি ন কু মা র চ ন্দ

প্রজাপতির পাখায় আঁকা রামধনু রং মাখা,
গ্রামের শেষে খড়ের গাদায় রঙীন ঘুড়ি রাখা,
খাবার ঘরের ঠিক পিছনে যজ্ঞডুমুর গাছে,
একটা কাকে খাবার লুকোয় কেউ দেখে নেয় পাছে।

উরুষ গাছের কুরুস পাতায় জল ছলছল করে,
বর্ষাতে নয় শীতের দিনেও জল ঢুকে যায় ঘরে।
রান্নাঘরে ভাতের হাঁড়ি ভাত কিছু নেই তাতে,
সবটুকুনই ভাত খেয়েছে ইঁদুররা কাল রাতে।

পুকুর ঘাটে বাসন মাজে শূন্য ভাতের হাঁড়ি,
উপোস ভাঙে পুকুর জলে ভিজছে পরার শাড়ি।
ঘোষপুকুরের স্বচ্ছ জলে ঘোষালপাড়ার হাঁসে,
ডুবছে উঠছে শুকনো পালক হাওয়ার দোলায় ভাসে।

খড়ের গাদায় কুকুর ঘুমোয় পুকুরপাড়ের মাঠে,
বৃষ্টি পড়ে টাপুর টুপুর সারাটা দিন কাটে,
ক্লান্ত রাখাল মাথায় বাঁধা লাল টুকটুক ফিতে
বৃষ্টি দেখে চুপ বসে রয় দুর্গাবাড়ির ভিতে।






ব্যাঙের আনন্দ 

মি ষ্টু স র কা র 

ঘ্যাঙর ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ, 
আমি পানা পুকুরের ব্যাঙ;
বৃষ্টি ভিজে, আনন্দেতে 
গাইছি ঘ্যাঙর ঘ্যাঙ।

তোমরা বাপু শখের কিচ্ছু
বোঝো না কি ছাই!
তোমাদের সুখ সাজ সজ্জায়,
আমরা জলে পাই।

তপ্ত দুপুর এত্ত গরম 
ভাল্লাগে না কেমন!!
বিষ্টি পেয়েই গান ধরেছি
ঘ্যাঙর সুরে এমন।

তোমরা বাপু মানুষেরা
করছো ছয় নয়,
বর্ষা আসতে কচ্ছে দেরী
মরছি জল তেষ্টায়!

গাছগুলো প্রায় ফেললে কেটে!
নতুন কি আর বুন্ ছো?
গাছের ছায়া, বিষ্টি ফোঁটা 
মনের মাঝে গুনছো।

কুয়োতলায় শ্যাওলা তো নেই!
কেমন করে থাকবে?
জল গভীরে, কোথাও বা নেই!
শুখা শরীর ঢাকবে?

ব্যাঙের জানো জগৎ ছোটো
কুয়োর জলে তৃপ্তি।
এবার সেটাও শুকনো হোলো
বুঝছ না বিপত্তি!

মেঘ উড়িয়ে নিয়ে আসা!
কাজ কি ব্যাঙের রোজ?
এমনতরো ছুতোনাতায়
খাচ্ছো (ব্যাঙের) বিয়ের ভোজ!

তবুও দেখি--- কুয়োর বোলে,
মারছো কথায় বিঁধে!
তোমাদের নেই লাজ-লজ্জা?
হবেনা আর সিধে!

তোমরা শুধু হ্যানা! ত্যানা!
বড়ো কথা চষে!
মারছ নাকি সবুজ ধরা,
মরছ কি না নিজে?

এবার একটু খারাপ চিন্তা 
বিতর্কটা থামাও,
কিসে সবার ভালো হবে
বলছি শোনো দাঁড়াও।

বিষ্টি আনে সবুজ ফসল
প্রাণে সুরের ছোঁয়া 
গাছ লাগালে তপ্ত প্রাণে 
আরও দেবে ছায়া।





খুঁজছি আমি সেই রাঁধুনি 

র ত্না রা য় 

কুঁচকে কপাল ভাবছি আমি এক যামিনী 

মেঘের ঘরে রান্না করে কোন ভামিনী! 

মস্ত বড়ো আকাশ কড়াই চাপিয়ে  দিয়ে

সূর্যটাকে ডাইনে বাঁয়ে সামলে  নিয়ে

কয়লাগুলো উল্কাপাতের করছে গুঁড়ো 

বদমেজাজী বাজ খুড়োকে দিচ্ছে হুড়ো।

রোদ্দুরটা পলা মেপে দেয় সে নেড়ে

রামধনু ব্যাণ্ড পাঁচফোড়নের গন্ধ বেড়ে।

নুন গোলা জল বৃষ্টি ফোঁটা টাপুরটুপুর

শিউলি হাসি কাবাব চিনি চাপুরচুপুর। 

মনখারাপের কুয়াশা দুধে রাঁধছে পায়েস

নতুন গুড়ের শিশির ছোঁয়ায় ভুলছে বয়েস।

শেষ বিকেলের পলাশ শিমুল মশলা গরম

ফুলকো লুচি জ্যোৎস্না ঘিয়ে ভাসছে শরম॥

বলতো তোরা জানিস নাকি কোন সে মেয়ে

পাঁচ ব্যঞ্জন জমিয়ে রাঁধে ঘেমে নেয়ে।






সুনিতা তোমাকে সেলাম 

ম ধু মি তা রা য় লী না 

পাড়ি দিলো সোনা মেয়ে দূর মহাকাশে,
সঙ্গী উইলমোর চলে তার পাশে পাশে।

মহাশূন্যে দিল পাড়ি আট দিন বলে,
যান্ত্রিক গোলযোগে গেলো নয়মাস চলে।

চুপচাপ বসে না সে করে কাজ কত,
বলে একদিন গাছ হবে শত শত।

লেটুস গাজরে ভরে উঠবে মহাকাশ,
হাজার মানুষ সেথা করবেই বাস।

সবজি ফলবে সেথা নাম যার ভেজি,
মাইক্রো গ্রাভিটিতে চাষ হবে কেজি কেজি।

যে দেশেতে মেয়েরা ঘরে রয় বন্দী,
সে দেশের মেয়ে আজ পাখিদের সঙ্গী।

মেয়ে হাঁটে মহাকাশে হয়ে ভারহীন,
এইভাবে কাটায় সে আড়াইশো দিন।

ফেরাতে সুনিতাকে ব্যার্থ হয় নাসা,  
ড্রাগন স্পেস শিপ জাগায় মনে আশা।

ইলনমাস্কের স্পেস শিপ নামে এসে জলে,
বিজ্ঞানের জয় যাত্রা শুরু  দর্পবলে।

ভারতের সব ঘরে আসুক এমন সন্তান,
এরাই তো রাখবে ভারতের মান।






বর্ষা এলে 

শ ক্তি প দ প ণ্ডি ত 

বর্ষা যখন আসে
বৃষ্টি নূপুর টাপুর টুপুর
সড়ক, নদী ভাসে।

ভীষণ চেনা হাওয়া
বাদল মেঘের পিছন বেগে
করতে লাগে ধাওয়া।

মন মেতেছে দেখে
চেরাপুঞ্জীর মেঘ নিয়েছি
একটু গায়ে মেখে।

সকাল থেকে সন্ধে
ঝরঝরিয়ে বৃষ্টি নাচন
কাঁঠাল চাঁপার গন্ধে।

বৃষ্টি অবিরত
সাগর নদী উথলে ওঠে
গরম দুধের মতো।

গাছপালা যায় নুয়ে
মনের মধ্যে ময়লা যাদের
সব যেন যায় ধুয়ে।






মায়ের বিকল্প 

নূ পু র রা য় 
 
বিকল্প খুঁজতে গিয়ে শূন্য হাতে ফিরে 
বিচিত্র ভূবন মাগো শুধু স্বার্থ ঘিরে।

হাহাকার করে মন পরশের তরে
বাতাসের আগে এসে রোগ ঘিরে ধরে।

প্রলেপবিহীন ক্ষত যত দুঃখ পাই
তোমার ছোঁওয়া পেলে সব ভুলে যাই।

মা সে তো মা হয় নেইকো বিকল্প
আগলে রাখার চেষ্টা হোক না সঙ্কল্প! 

দিন বদলের স্বপ্ন আঁকে দৃশ্য নিত্য 
সুখে থাক ছেলেপুলে না থাক উদ্বৃত্ত!

ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র স্বার্থ সেতো সবটাই বাহ্য
মা সে যে মা'ই অবলীলায় করে সহ্য!





বাদল বাদল 

বি বে কা ন ন্দ ন স্ক র 

বাদল বাদল বৃষ্টি মাদল
নদীর বাদল ছুট
দু কূল ভাঙন উতল প্লাবন
কূল ছাপিয়েই লুট।

মেঘলা মুখের কষ্ট দুখের
কালচে রঙের আকাশ 
বৃষ্টি নিঃশ্বাস বৃষ্টিতে শ্বাস 
বৃষ্টি ভেজায় আকাশ।

বর্ষাতি গান বর্ষাতি প্রাণ
বৃষ্টি স্নানে সুখ
গায়ের কৃষাণ বাজায় বিষাণ
বাদল বাদল মুখ।

বাদল বাদল মায়ের আঁচল 
বর্ষাতি মঙ্গল 
কদম ফুলের গন্ধ মেদুর 
আষাঢ় মেঘের ঢল।





মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চতুর্থ বর্ষ || দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়েব সংস্করণ || হিমেল ও বাসন্তী সংখ্যা || ৯ চৈত্র ১৪৩১ || ২৩ মার্চ ২০২৫

চতুর্থ বর্ষ || চতুর্থ ওয়েব সংস্করণ || বাদল সংখ্যা || ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ || ২৯ জুলাই ২০২৫

কবিতা