রম্য রচনা

ব্যবস্থার তিন অবস্থা


প্র দী প  কু মা র দে


আমার অবস্থাটা দেখুন, আর শুনুন আমার ব্যবস্থাপনাটা...


একদিন

------------


আমি প্রাণান্ত,

----কিগো এক কাপ চা দেবে? না কি ঘোরাবে?


আমার স্ত্রী জেদি ধর, যেমনটি নামে তেমনটিই কাজেও, ঘেউ ঘেউ করে তেড়ে এল,

---হইব না, আমি তোমার গুলাম নই...


---মনে আছে? পাঁচ বছর ধরে তোমায় পিছনে ঘুরেঘুরে আমি তোমায় ধরেছিলাম?


---তা কি হইছে? আমিই তো ভুল করেছি।


---তখনই আমি মনে মনে ঠিকই করেছিলাম তোমাকে তুলে ঘরে এনে তোমাকে দিয়েই চাকরানির কাজ করাব। আজ আমি শান্তি পেলুম, হাঃ-হাঃ-হাঃ!


আর একদিন

------------------

স্ত্রী জেদি ধর,

---আচ্ছা তুমি তো সবসময়ই বড় বড় জ্ঞানের কথা শোনাও, আমাকে ঠিকমতো উত্তর দাও দেখি, এবছরে ভ্যালেন্টাইন ডে কবে পড়েছে?


---কেন ১৪ই ফেব্রুয়ারি...


---দেখলে তো বুদ্ধু! নিজেই একটি আস্ত পাঠা... সেতো গতবছরেই পড়েছিল, গতবারের কথা কে জানতে চেয়েছে? এবছরের ক্যালেন্ডার থাকলে আর এই মুর্খুমি তোমার চলতো না...



অন্যদিন

-------------

একমাত্র স্ত্রী জেদি ধর তেড়ে এল,

---বেশি বুদ্ধি তোমার? আমার "পাল" বংশের ঐতিহ্যের কথা জানো? বিয়ে করে আমার পদবী পাল পাল্টিয়ে "ধর" করে দিয়েছো তুমি?


আমিও কম যাই না,

---তোমার মা মানে আমার শ্বাশুড়ি মা একদিন তোমার অনুপস্থিতিতে আমাকে জানিয়েছিল তোমাদের পালানো বংশ।


স্ত্রী জেদি,

---সেটা আবার কি?


তোমার বাবা ছিল চাষা। তোমার মা ছিল মজুর। তোমার মাকে পালিয়ে নিয়ে বিয়ে করেছিল। তোমার দাদা এক জেলে মাইয়াকে নিয়ে পালিয়ে বিয়ে করেছিল। তোমার পিসি পালিয়ে গেছিল রাজমিস্ত্রির হাত ধরেই। আর তুমিও পালিয়ে এসেই আমাকে ধরেছিলে। এবার বুঝলেতো?


এবার স্ত্রী বুঝেই আফসোস করছে।


আর একদিন

------------------

স্ত্রী আর নজরদারি ছাড়ে না। জামাপ্যান্ট পড়তেই দৌড়ে এল,

---কিগো কোথায় যাও এখন?


---বাজারে যাইতেছি।


---তা ভাল। কি আনবে?


---দেখি, কি পাওয়া যায়।


স্ত্রীর মুখে হাসির রেশ,

---আমার জন্য কি কিছু আনবে?


আমি মসৃণ করে জানালাম,

---আনবো'খন।


---কি আনবা?


---বুদ্ধি! যেটা তোমার একদমই নেই।


স্ত্রী জেদি, হাতের ভর্তি জলের বোতল ছুঁড়ে মেরে দিল আমায়।


আরও একদিন

---------------------

আমি স্ত্রীকে খুশি করতেই বললাম,

---তুমি খুবই সুন্দর।


স্ত্রী লাফিয়ে উঠল,

---সত্যি?


---সত্যি সত্যি সত্যি...


স্ত্রী এবার পাল্টা প্রশ্ন করলে,

---তোমার একটা গুনের কথা বলো না গো?


---আমি সর্বদা মিথ্যাকথা বলি।


আর সাহসে কুলায়নি, অবস্থা বুঝেই এই ব্যবস্থা।




মূল পাতায় যান।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চতুর্থ বর্ষ || দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়েব সংস্করণ || হিমেল ও বাসন্তী সংখ্যা || ৯ চৈত্র ১৪৩১ || ২৩ মার্চ ২০২৫

চতুর্থ বর্ষ || চতুর্থ ওয়েব সংস্করণ || বাদল সংখ্যা || ১২ শ্রাবণ ১৪৩২ || ২৯ জুলাই ২০২৫

পঞ্চম বর্ষ || প্রথম ওয়েব সংস্করণ || শারদ সংখ্যা || ১১ কার্তিক ১৪৩২ || ২৯ অক্টোবর ২০২৫