শ্রুতিনাটিকা
বৃষ্টির আলাপনী
বি কা শ গুঁ ই
তাপদগ্ধ এক ভ্যাপসা বিকেল। ঘামতে ঘামতে এক গাছের নিচে দাঁড়িয়ে ভাবছি...
এখন যদি একপশলা …ভাবতে না ভাবতেই আলাদিনের জিনের মতো এসে হাজির। মনের কথা বুঝে নিয়ে সে হিমেল বাতাসের হাত ধরে বট, পাইনের মাথা ছুঁয়ে আমার সামনে দিয়ে টিপটিপ করে হেঁটে যাচ্ছে … আমার হৃদয় তন্ত্রীতে তখন মেঘমল্লারের আলাপন। আমি আবেশে আচ্ছন্ন হয়ে পিছন থেকে ডেকে বললাম,-
** ও সুন্দরী, অচিন সখি! তোমার চোখে জল কেন ?
** কী আর করি! কান্নাই যে আমার ইহকাল পরকাল। আমি যে রুদালী।
** "আজি ঝর ঝর মুখর বাদর দিনে"
এসো না একটু গল্প করি।
** না গো! আমার তাড়া আছে। ঐ পূবের মাঠে, কিষাণ-কিষাণীর রুক্ষ ক্ষেতে আমার আমন্ত্রণ। আমি ওখানে নাচব, হাসব, কাঁদব
রোদের সঙ্গে লুকোচুরি খেলব।
** তা বেশ! আর একটু থাকো না কাছে।
তোমাকে সারা গায়ে, মাথায় মেখে তোমার ঘ্রাণে মাতাল হই।
** সে তো সবাই আমাকে আদর করে। আমিও তার মাথায়, গায়ে, ঠোঁটে, চোখের পাতায় মুক্তো হয়ে ঝরি। আবার কেউ বলে-
দূর হ পোড়ামুখি! হাতে-পায়ে হাজা ধরে গেল যে!
** তা তুমি কোথায় থাকো সখি? তোমার বাড়ি কোথায়?
** আমার কোনো বাড়ি নেই গো! আমি কখনও মেঘের পাড়ায়, কখনও পাহাড় চূড়ায়।
আবার কখনও মাঠে ঘাটে ঘুরে বেড়াই,
আর সবুজ পাহাড়ে ঘেরা চেরাপুঞ্জির মালভূমিতে- আমি রাণী হয়ে যাই।
** বাহ্ বেশ তো! আচ্ছা, তুমি তো এখনও তোমার নামটা বললে না!
** সে কী গো! এতক্ষণ আমার সঙ্গে গল্প করেও আমাকে চিনতে পারলে না?
আমাকে কেউ বলে খেয়ালী, কেউ বলে পচাপাগলী। আর তোমাদের কবিরা- কেউ বলে ঋতুরাণী। আবার আদর করে কেউ বলে, শাওনী। আমাকে তুমি রুদালী বলেই ডেকো। আসলে, আমি যে কৃষ্ণমেঘে বাঁধা রাই। চলি গো গোঁসাই।
** এসো, আবার এসো কিন্তু। এ পথেই দেখা হবে এই গাছতলায় কিম্বা কোনো শ্রাবণী মেলায়।
প্রিয় রানার এভাবেই এগিয়ে চলুক। শুভকামনায় ভরা থাক চলার পথ।
উত্তরমুছুনঅসাধারণ
উত্তরমুছুন