ছড়া


স্বাধীনতার স্বাদ

স র মা  দে ব দ ত্ত 

সেদিন ক্লাসে বললে এসে ভাষা শিক্ষার স্যর
"এই হারু বলতো দেখি সংজ্ঞা স্বাধীনতার"
হারু ভারি বুদ্ধিমান খানিক চুলকে মাথা 
মনে মনে মিলিয়ে নেয় শুনেছে যেসব কথা
ব্যাকরণের সূত্র বলে ---নেই অর্থে হীন 
এতো জলের মতো সোজা -যে সকল স্বাদ বিহীন, তাহাই স্বাধীন 

এসব শুনে শিক্ষক মশাই ভীমড়ি খাওয়ার যোগাড় 
বই খাতা গুটিয়ে হারু হলো পগার পাড়
"তুই নাকি ভারি চালাক ব্যাটা বুদ্ধির ঢেঁকি 
ভালো করে বুঝিয়ে দি একবার এদিকে আয় দেখি"

এই যে সবাই ইচ্ছে মত পেটভরে খেতে পড়তে পারি 
একেই আমরা স্বাধীনতা বলতে পারি 
হারু ভারি অবাক হল কপালে তুললো চোখ 
পেট পুরে তো হয় না খাওয়া বাবার পেটের রোগ 
গিন্নিমা এক জনের বেশি দেন না আর খাবার 
তাই দিয়ে কী পেট পুরে আমার, মা, বাবার 

শিক্ষকমশাই বলেন রেগে- "আহা ছাড়তো ওসব
ইচ্ছেমতো চলন বলন  যা কিছু স্বাধীনতায় সব"
হারু এবার দ্বিগুণ অবাক  'কী যে বলেন স্যর!!
কথা বললেই বাবুর বাড়ি কাজে রাখবে না আর'
মা তো বলে -'কইবি নে কতা চুপটি করে থাক
পেটের ক্ষিদে মরবে পেটেই, গামছা বেঁধে রাখ'

তাই তো আজও পাইনি কোন স্বাধীনতার স্বাদ
স্বাধীনতার স্বাদ কী তবে এমনই বিস্বাদ 

ভাবতে থাকেন শিক্ষকমশাই কী দেবেন এর জবাব 
সত্যি বুঝি বদলে গেছে স্বাধীনতার স্বভাব।।






খোকার নাচন

কে  দে ব  দা স

আয় রে-ভোঁদর, আয় ছুটে-আয়-
                 ঝপা-ঝপ, দু'টো মাছ-নিয়ে আয়!
দু'টো ইলিশ-ধরে দিস -
                            হাফ, হাফ-করে নিস!

আর-যদি-না পারিস -
                  অনন্ত,  দু'টো রুই-এনে দিস!
ভোঁদর খায়, মাছ -
                                   বাঁদর খায় কলা!

আয়, বাঁদর নিয়ে যা-
                                দুটো কলা, খেয়ে যা!
আয়রে-তুই, দেখে যা-
             আমার খোকন, খাবে-পাকা কলা!

পাকা কলা, খেয়ে খোকন-
                               নাচবে, তা- ধিন, ধিন!
নাচবে-খোকন, নাচবে বাঁদর-
                                        সঙ্গে নাচবে-কে?

ঘরে আছে-হুলো বেড়াল -
                                       কোমর-বেঁধেছে!






চিকিপাখির ছড়া

মি লি  সে ন গু প্ত

ভাবছি বসে ছাতে 
আমি যদি জন্ম নিতাম 
চিকি সোনার সাথে 
ভাবো দেখি আর কতোদিন 
থাকতো আমার হাতে?

চিকি এখন তিন 
আমি দেখো বয়ে বেড়াই 
ছয়ের পিঠে তিন। 

দুঃখ ভীষণ মনে 
হরিণ পায়ে ছুটতে যে চাই 
চিকি সোনার সনে 
মেটেনা সে আশা 
হাঁটুতে যে খচ্খচানি 
রোগ বেঁধেছে বাসা।
চিকি বলে দুওওও 
আমার সঙ্গে পারলেনাতো 
তুমি একটা বুওওও। 

যাকগে ওসব কথা 
চিকি সোনা বড়  হয়ে 
ছাড়াক সবার মাথা। 
পেরিয়ে তাকে যেতেই হবে 
পুরো একটি শতক
তবেই জেনো আমার মনের 
ক্ষোভ মিটবে কতক।






লাগাবই আমি

অ র্ক জ  ম জু ম দা র

একদিন ঠিক লাগিয়ে দেব ঠোকা 
সেদিন বুঝবে ঠেলা, রে পামর অটোওয়ালা। 

একদিন আমি লাগাবই তোমার...  
ছি ছি, নোংরা ভেব না আমায়,   
আবীর নয়, সিঁথিতে তোমার লাগাব সত্যি সিঁদুর সেদিন। 
হ্যাঁ, একদিন আমি লাগিয়ে দেব দৌড়---
বাবাকে আটকে বড় রাস্তার মুখে, কেড়ে নেব বাজারের থলি---    
“ছাড়ো জোয়াল বওয়া, এবার একটু জমিয়ে বাঁচো দেখি”।    

একদিন জোরসে লাগাব অফিস থেকে বাড়ির দিকে হাঁটা,     
মিছিলের গেরোয় আটকে থাকলে চলবে না যে মোটে, 
মা-র ওষুধের সময় ঘড়ি ধরে মাপা
খোকা না হলে কে দেবে সেসব বেছে!   

লাগাব, সব আমি নিশ্চিত লাগাব একদিন,    
অপেক্ষা শুধু রেজাল্টটুকুর, চাকরি একটা লাগাতে দাও খালি।    
কিন্তু... কিন্তু বয়স যে প্রায় শেষ, আর মাত্র এই বারটাই বাকি।   
তারপর? ঈশ্বর? বসে বসে দেখব জীবন খয়ে যাওয়া?
তুমি কি তবে... আর মা-বাবা? না, না, সে আমি পারব না    

তার চেয়ে আমি লাগিয়ে দেব দরজাটা,  
ছিটকিনিটা পরখ করে নিয়ে, লাগাব তবে দড়িতে একটা ফাঁস।    
লাগাবই, কিছু একটা আমি লাগাবই, লাগাতেই হবে।






মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চতুর্থ বর্ষ || প্রথম ওয়েব সংস্করণ || শারদ সংখ্যা || ১২ আশ্বিন ১৪৩১ || ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

তৃতীয় বর্ষ || দ্বিতীয় ওয়েব সংস্করণ || হিমেল সংখ্যা || ৪ ফাল্গুন ১৪৩০ || ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

তৃতীয় বর্ষ || তৃতীয় ওয়েব সংস্করণ || বাসন্তী সংখ্যা || ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ || ১০ মে ২০২৪