কথিকা
ছুটির বেলা
ভা র্গ বী
দিবসের শেষ সূর্য্য শেষ রাঙা আলো ছড়িয়ে দিয়ে বিদায় জানাচ্ছে একটা উজ্জ্বল দিনকে। যেতে হবে তাকে। দিনের যে ছুটি ঘোষণা হয়েছে। যাওয়ার কথায় বিদায়ের সুর লেগে থাকে। আলো ক্রমে কমে আসে। মন ভারী হয়। তাই দিনের অবশ্য কর্তব্য হয় ছুটি শব্দটিকে আঁকড়ে ধরা। ছুটির মধ্যে একটা আরাম থাকে, মুক্তি থাকে। যাওয়ার কথা ভুলে একটা ছুটি মিলবে বলে চরম প্রস্তুতি নিচ্ছে দিনের শেষ রাঙা আলো। ছুটিটা তাকে বেশ কাজে লাগাতে হবে কিনা! কিন্তু কি ভাবে লাগাবে কাজে? বিস্তর ভাবার পর ঠিক করে নিল নিরুদ্দেশ যাত্রায় যাবে দিনের অবশেষ। কোনো ঠিকানা থাকবে না শুধু হেঁটে চলে যাবে সবটুকু ফেলে রেখে। সাথে দিনের নিজস্ব আমিটুকু ছাড়া আর কাউকে নেবে না। পিছনে ফেলে আসা আমিটুকুর প্রতি কোন বাঁধন রাখবে না। সূর্যের আলোয় পুড়তে পুড়তে পুরো দিন ক্রমশঃ সন্ধ্যের পর চাঁদের আলোয় ভিজতে ভিজতে হয়তো বা হঠাৎ বৃষ্টির আড়ালটুকু নিয়ে ঝাপসা চোখে কেবল সামনে দেখবে- আদিগন্ত বিস্তৃত এক বিশাল শূণ্য তেপান্তরের মাঠ। সন্ধ্যায় আলো কমে আসবে আরও। দিনের রং ফ্যাকাসে হবে ধীরে। দূরটা আরও একটু আবছা হবে। দৃষ্টিও কোনো অজানা কারণে ঝাপসা- তবে কি ছুটির মুক্তিটুকুর থেকে যাবার বেলা এই যে "ছিলাম" সেই মায়া সেইটুকুই বড়ো হয়ে উঠলে। দিন নিজেকে বোঝায় আমি আর আমার আমি বড়ো হয়ে উঠতে পারে না কোনোকালে যাবার বেলা, আঁধারের বুকে ডুব দিতে হয় দিনের সবটুকু আলো নিয়ে। ধীরে শান্ত হয় পৃথিবী। সব আলো নিভে আসে সময়ের নিয়মে। আর কোনো গ্লানি থাকে না কোথাও। মনে হয় যেন ক্ষোভ নেই আর এতটুকুও। যন্ত্রনা নেই বিন্দুমাত্র। দ্বিধা নেই। পিছনের দিকে একটিও সজল চোখ হয়তো থাকবে না আর। একটি হাতও দিনকে আঁকড়ে ধরার জন্য বাড়াবে না কোনো প্রিয়-মন। দিনের পিঠের দিকে পিঠ করে দাঁড়াবে সকলে। থেকে যাবে ভারহীন এক চলে যাওয়া শুধু অনন্তের দিকে। অপূর্ব এক প্রশান্তি। অপূর্ব সে চলে যাওয়া। অপূর্ব সে বিদায়। কাঙ্খিত সে বিদায়-বেলার দিকে অপলক চেয়ে আছে আস্ত একটা শেষ হয়ে যাওয়া দিন পরম শান্তিতে। দিন যাচ্ছে রাতের পথে ধীরে আর মাত্র একটুখানি পথ- পেরোলেই যেন মস্ত ছুটি। সে ছুটি অনন্তে। সে ছুটি বুঝিবা মুক্তির অভিমুখে। রবি ঠাকুরের গান ভেসে আসছে কোথা থেকে– "আমার মুক্তি আলোয় আলোয়, এই আকাশে আমার মুক্তি। আমার মুক্তি ধুলায় ধুলায় ঘাসে ঘাসে এই আকাশে আমার মুক্তি..."
একটা বৃহত্তর দীর্ঘ ঈ-কার চিহ্ন ও চন্দ্রমার্গের সিরোসিস চাঁদ
নি মা ই জা না
ডিম্বক ঈশ্বর নিজের বেদির সামনে দুটো ন্যাপথলিনের শিং, তিনটে কিসমিসের গুঁড়ো, চারটা এলাচের টুকরোর ট্রিগার আর একটা মৃত মানুষের মাথা জমিয়ে রাখলেন শেষ রাতের দিকে আমার মৃত শরীরের মৃতজীবী ছায়াটাকে অটো বায়োপসি করবে সিলিণ্ড্রিক্যাল কিন্নর নাশপাতির দলের বিমুগ্ধ সরাইখানার মালিক
সিরোসিস বুকের ব্যাথার মতো পোতাশ্রয়হীন চাঁদের জীবিত কঙ্কালেরা জলের পাতালে সাপেদের বিমুগ্ধ খোলস নীল পাইনের শিথিল যৌনদন্ড মেলে রাখে শুকতারার আদিম ফসফরাস দন্ড নিয়ে,
তারা ঠিক বাবাদের মতো অদ্বৈত ধ্রুবকের চতুর্দশপদী নৌকা, ভৃঙ্গরাজ খনির ভেতরে আঙুল ঢুকিয়ে চন্দ্রমার্গ দেব দেশের মতো অতিবিম্বিত নিঃশব্দ যুগরাজ ভীষ্ম হয়ে যায়, প্রক্ষেপণ অস্ত্র নেই কোন আগ্নেয়াস্ত্র নেই কোন পাশুপাত নেই কোন বরুনাস্ত্র নেই
জলের অনেক গভীর থেকে মৃত মাছ ও জীবিত ঝিনুকদের পচে যাওয়া জন্ম ভাতের মতো উগরে দিই ইথার,
ঈ চিহ্নটিকে বরাবরই অতি ঋষির দুই বাহুতে লিখে রেখে গোপন স্নায়বিক স্নানে যাই, মাথায় জমে যাচ্ছে ইলেকট্রনের পাহাড় কালো কালো চন্দ্রবোড়ার মত একটা ভৌতিক শরীর নীল কক্ষপথ থেকে নেমে আসার পর শ্বেতবস্ত্রের সব ঘোড়ারা নৌকা চালিয়ে পিছিয়ে যেতে অপরাজিতার ফুলের ভেতরে আঙুল ঢুকিয়ে শ্মশানের আধপোড়া বান্ধব যৌন রাশি নির্ণয় করে গলার চারপাশে পুঁতির কাঠির মতো এক একটা বিমুগ্ধ পরকীয়া নদীর নীল ক্যাকটাসে ফুটে উঠছে হলুদ যৌনাঙ্গহীন ফুল, গ্যালন গ্যালন রস খাচ্ছে সাদা পিশাচ আর জানালার পাশে চুপ করে বসে থাকে আমারই নিজস্ব সুমেধ
অভুক্ত যজ্ঞের নিদ্রার মতো বিষাক্ত কণিকা শহরে আঙুল ডোবাতে ভয় লাগে আমার, নিজের ছায়াকে কামড়ে দিয়ে মাংসের থাবা মেরে মাঝ রাতের চোখ কচলে এলোপ্যাথিক ওষুধ দোকানীটি নিজের রক্তকে উনুনে চাপিয়ে ব্রহ্মজ্ঞানের অর্পণ পোকা দেখতে পায় ১৯ শতাংশ ডেরিভেটিভ সাপ মারার ওষুধে,
সেগুন কাঠের পাঠাতনে অব্যয় বীজের অন্ধ মহাজগত জন্ম নিচ্ছে চক্রাকার মাছের আলোকহীন শংকরাচার্যের উদর মহাদেশে, নীল আলো, কেঁপে উঠছে গর্ভপাতের নীল অর্বুদ মেশা শিরাপথের জন্য, বাদামি পরমেশ্বর একাকী স্যাক্সোফোন বাজাতে বাজাতে ব্লেডের হুকে নিজের অশরীর লুকিয়ে ফেললেন।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন