ছড়া


বসন্ত বেলায়

শ ক্তি প দ প ণ্ডি ত

এসেছে ফাগুন রঙের আগুন
পলাশ শিমুল গাছে,
বড় শোভাময় নব কিশলয়
শাখে শাখে ভরে আছে।

আসে মৌমাছি করে নাচানাচি
ফাগুনের সারাবেলা,
ফুলে ফুলে তার মধু ভান্ডার
বসায় হট্টমেলা।

কোকিলের সুর মিষ্টি মধুর
কুহু কুহু রবে ডাকে,
পলাশের বনে ওড়ে আনমনে
ফুলের আবীর মাখে।

শিহরণ জাগে রাগে অনুরাগে
হলুদ পাতারা ঝরে,
বসন্ত কাল উথাল পাথাল
পুলকিত অন্তরে।





চল মিলেমিশে থাকি

ম ধু মি তা  রা য়  লীনা

বনের মাঝে সোনালী রোদ হঠাৎ গেল দেখা,
সিংহমশাই মাঠের মধ্যে বসেছিলেন একা।
সোনা রোদে গাছের পাতা করছিলো চক চক,
শালিক চড়াই সবাই মিলে করছিলো বক বক।
দৌড়ে এসে জেব্রা বলে নতুন জামা চাই,
সাদা কালো ছাড়া জামা কোথায় গেলে পাই?
ঘাড় দুলিয়ে টিয়া বলে পরবি সবুজ জামা?
ছোট্ট হাতি বলে আমার আনবে জামা মামা।
ডোরা কাটা জামায় বাঘের লাগে না আর ভালো,
ভাল্লুকের মতন যে তার লাগবে জামা কালো।
বন মুরগিটা এসে বলে  মুকুট চাই মাথার,
এমনি মুকুট পাবে তুমি দুবাই কিম্বা কাতার।
দীঘল চোখে  কাজল পরে  উট এসেছে ধীরে,
শিয়াল ভায়া সবার কথা শুনছে ফিরে ফিরে।
তাড়াতাড়ি পা চালিয়ে আসছে ঘোড়া দেখি,
অবাক হয়ে বলছে রাজা, "বলছো সবাই একি!!"
মানুষ গুলোর দেখা দেখি হচ্ছো সবাই নষ্ট,
তোমাদের দেখে আমি পাচ্ছি বড়ই কষ্ট।
ভালোবাসি তাইতো আমি বলছি কথা শোনো,
মিলে মিশে থাকো সবাই, ঝগড়া না হয় কোনো।





হাসির রাজা

ব দ রু ল  বো র হা ন 

হাসির রাজা লোকটা কেবল
সারাটাদিন হাসে,
সবাই বলে, লোকটা নাকি
হাসতে ভালোবাসে।

সব কথাতে পায় সে মজা
খুব খেতে চায় মিষ্টি গজা।

জিলিপিটা দেখলেই তার
আর থামে না হাসি,
গড়িয়ে পড়ে, পাশাপাশি 
বেজায় রকম কাশি।

জিলিপিতে কী দেখে সে
একতরফা হাসে?
অবশেষে, দম আটকে তার
পরিণতি লাশে।
         




রঙ উৎসব

বি বে কা ন ন্দ  ন স্ক র

মন খুশি বাজে বাঁশি রঙ মাখা দিন
আলো হাসি রাশি রাশি মুছে গেল ঋণ।

হাতে রঙ পায়ে রঙ রঙীন শরীর 
আকাশে বাতাসে ওড়ে লালচে আবীর।

বনে রঙ মনে রঙ রঙের আদল
পলাশে শিমুলে বাজে রঙের মাদল।

রঙ জ্বরে রঙ ভরে বাসন্তী শ্বাস
রঙ খেলা রঙ বেলা রঙ উচ্ছ্বাস।

রঙ মেখে রঙ লেখে পটভূমি লাল
রঙ সাজি আজ বুঝি রঙের সকাল।

রঙ রঙ শুধু রঙ রঙ ভেজা রব
ফাগুনে আবার  এলো রঙ উৎসব।





তাথৈ খুশির রঙে

সু ব্র ত  দা স

আলতো বাতাস দোল দিয়ে যায় 
রাংতা পাতার আড়ে,
জলপিপিরা সাঁতার কাটে 
গা ঝাড়া দেয় পাড়ে-
ঠিক তখনই লাল পলাশের 
শোভায় কি মন কাড়ে?
অশোক শিমুল তারাও বুঝি
লাল রঙেতেই নেয়ে,
ভালোবাসার ভোরাই সুরে
উঠছে কি গান গেয়ে!
প্রীতির গীতির মিলনমেলায়
তা থৈ খুশির ঢঙে,
মনের ঘর আজ ভরুক সবার 
বসন্ত-ফাগ রঙে!!





অজ্ঞ

রু স্ত ম  আ লী

যে পারে না কোনো কাজ
      সে কথায় ষোলোয়ানা,
  সবার  আগে সস্তা  দরে
       বিকায় কথাখানা।
  কথার ছলে বোঝাতে চায়
        সেজে বড় বিজ্ঞ;
   নিজেকে যে বিজ্ঞভাবে
         সেই তো মহা অজ্ঞ।





সূর্য জাগে শিশির মেখে

তু হি ন  কু মা র  চ ন্দ 

আমার গাঁয়ের পাখপাখালি 
সবুজ পাতায় মুখটি ঢাকা, 
চারদিকে তার পান্না সবুজ 
ছন্দ দিয়ে সেসব আঁকা। 

মৌমাছিদের গুনগুনে গান 
চালতা গাছের উচ্চ ডালে,
চারদিকে চুপ সন্ধ্যাবেলায় 
সর্ষে ফুলে মুক্তো ঢালে।

ধানের ক্ষেতে সোনা ফলে 
ঘাড়ের বাঁকে ধানের আঁটি,
চাঁদ এখানে জ্যোৎস্না ঢালে 
আকাশ বিছোয় শীতল পাটি।

পরীর পাখায় রেশম জড়ায় 
নদীর জলে কালকে রাতে, 
ফাগুন হাওয়া পাল তুলে রয় 
ঈশান কোনের অপেক্ষাতে।

রংয়ের আকাশ রামধনুকের 
রং ছড়িয়ে দিচ্ছে আরো, 
ভোরের আলোয় জোনাক ঘুমোয় 
আমায় তুমি চিনতে পারো।

সূর্য জাগে শিশির মেখে 
ফাগুন হাওয়ায় নদীর ঘাটে,
আমার সকাল আমার বিকাল 
এদের নিয়েই সময় কাটে।





উটকো বৌটি হুট ক’রে এক

স্ব প ন  কু মা র  পা হা ড়ী
 
উটকো বৌটি হুট ক’রে এক
শুঁটকো ছোঁড়ায় পেয়ে
উটজ মধ্যে উটকানো ছেড়ে
উটের পিঠেই ভাগলবা।
বরটা তখন আধখানা জেনে
পুরোটাই হ’ল পাগল বা
আধ পাগলাটে—বকবক করে, 
মুখে রইল না আগল বা
জেনেই সবটা হড়কে দিয়েছে
নতুন কাউকে চেয়ে!





আসবো তোমার পাড়ার মোড়ে

চৈ তা লী  চ ক্র ব র্তী

কুহু কুহু কোকিল সুরে
মন ভেসে যায়
উদাস দূরে
আকাশ রাঙিয়ে 
পলাশ শিমুল 
রেঙেছে ভীষণ
আবীর রঙে।
মনের রঙে
আবীর মেখে
বাসন্তী রঙ শাড়ি পরে
আসব তোমার 
পাড়ার মোড়ে।




অস্তাচলে

চৈ তা লী  চ ক্র ব র্তী

শহর থেকে দূরে
বাসন্তী রোদ্দুরে
সারাবেলা ভরিয়ে আকাশ
সূর্য্যি ফেরেন ঘরে।
কুহুকুহু কোকিল সুরে
মন ভেসে যায় উদাস সুরে
অন্তঃপুরে শঙ্খ বাজে
তুলসী তলায় প্রদীপ সাজে
ম্লান গোধুলীতে তারারা ফোটে
সান্ধ্য আঁধার ঘনিয়ে আসে।






মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চতুর্থ বর্ষ || প্রথম ওয়েব সংস্করণ || শারদ সংখ্যা || ১২ আশ্বিন ১৪৩১ || ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

তৃতীয় বর্ষ || দ্বিতীয় ওয়েব সংস্করণ || হিমেল সংখ্যা || ৪ ফাল্গুন ১৪৩০ || ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

তৃতীয় বর্ষ || তৃতীয় ওয়েব সংস্করণ || বাসন্তী সংখ্যা || ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ || ১০ মে ২০২৪