ছড়া

শীতের ছানা

সৌ মে ন্দ্র মু খো পা ধ্যা য়

সকাল সকাল দল পাকিয়ে
জমিয়ে এলো জাঁক করে,
জানলা দিয়ে জুজুর মতন
ভোরেরবেলা সাঁট করে।

চাদরটাকে যতই টানি
শীত মানে না ভাই রে ভাই,
তাই না দেখে হিমেল ছানা
নাচতে থাকে তাইরে নাই।

কেমন মজা, খুব তো কদিন
গাইছিলি তুই ঠান্ডা নাই,
বলবি নাকি নগ্ন গায়ে
ভোরের মাঠে খেলতে যাই?

কী আর বলি, কম্বলটার
দু-ভাঁজ খুলে জড়াই গায়,
পা ঢাকতে মাথা বেরোয়
সবটা কেমন গুটিয়ে যায়।

শীত ছানারা দুলতে থাকে
গাইতে থাকে হিমেল গান,
শিশির মেখে নাইতে নামে 
ডোবার জলে ভোরের স্নান ।





শীত নেমেছে শীতলপুরে

তু হি ন  কু মা র  চ ন্দ

পদ্মপাতায় জল টলমল 
বিন্নীধানের খই,
আকাশ থেকে পরীর রানী
ধার দিয়েছে মই।

ভীড়মি খেলেন চাঁদের বুড়ি 
লক্ষ হীরের মালায়,
চরকাটাকে লুকিয়ে রাখেন 
ভীনগ্রহীদের জ্বালায়।

শীত নেমেছে শীতলপুরে 
নতুন চালের গন্ধে,
আসছে ফিরে জ্যোৎস্না নিয়ে 
হারিয়ে যাওয়া ছন্দে।

কুয়াশাতে সকাল ঢাকা 
নতুন র‍্যাপার গায়,
বাঁশের পাতায় সূর্য শিখায় 
রৌদ্র খেলে যায়। 

নবান্নতে  মাস কেটে যায় 
বিন্নীধানের খই,
এলো কখন নবান্ন মাস 
দেখতে পেলাম কই?





মানবতা

অ রু ণ  দা শ 

মানবতা আজ উড়ু ইচ্ছা 
দাদুর মুখের বুঝি কিচ্ছা। 
অজ্ঞানের অন্তরীণ সত্য 
জন্মই সাজে হয়ে দৈত্য। 
পদভারে লোকালয় কাঁদে 
কারে কবে বেঁধে নেয় ফাঁদে। 

মানবতা বুলিগাথা আচ্ছা
প্রাণ পেয়ে কেউ খায় লাচ্চা
লাঠি হাতে শান দেয় পাক্কা 
ফুটো করে গরীবের চাক্কা।
জ্ঞান দান করে যায় সোজা 
টানতে টানতেই করে গুজা। 

পুড়ে যায় লোকালয় চিত্র 
দুর্জনেরা সাজে মহামিত্র।
ধোঁয়া তুলে কান নিল চিল 
না বুঝেই মূর্খ মারে ঢিল। 
মিত্র বুকে সাগরের তেষ্টা
ফাঁক পেয়ে নেয় লুটে শেষ্টা। 

হাতে তার রাসভারী ডান্ডা 
লাভের চরণে পড়ে পান্ডা। 
ভোগেরাগে হয়ে অতি পুষ্ট
বলে থাক খাবে কাল দুষ্ট। 
লোভে হয় পাপ জেনে রাখ
মাথে শুধুই পদধুলি  মাখ। 

যুক্তি শুনে রাগেমেগে  বলে 
ফেলে দেবো নর্দমার জলে। 
মানবতার চোখে তোরা ভুল
ঠিক কেটে নেব তোর চুল। 
শোকসভা হবে না কোনদিন
মরার পরেও রবে হয়ে ঋণ।
 




শীতের দু’টি মাস

গো বি ন্দ  মো দ ক


খুব শীত আজ শীতের দুপুর 

নিথর হে জল স্তব্ধ পুকুর

কুয়াশাভাঙা বেলা—

ক্ষেত ভরা ঐ পালং মুলোয়

চাষীর খামার ধামা কুলোয় 

রৌদ্র-ছায়ার খেলা।


শিমের ফুল আর কড়াইশুঁটি 

বনভোজনের আজকে ছুটি 

সাহেবপীরের মাঠ—

ডালিয়া গাঁদা মরসুমী ফুল 

অপরাজিতাও দুলছে দোদুল

গাজনতলার হাট।


উলের পোশাক গরম জামা 

দাওয়ায় খোকা দিচ্ছে হামা 

নলেনগুড়ের বাস—

বেড়াতে যাওয়া বইমেলাতে 

সোনাঝুরির হাটচালাতে 

শীতের দু’টি মাস।






ছড়া

স্ব প ন কু মা র  পা হা ড়ী

মার-কাটারি প্রেম করেছেন
সদ‌্য যখন যুবা।
তখন তো সেই বিদেশবাসী---
বিদেশ মানে কুবা।
ঠোঁটের ফাঁকে জ্বলতো চুরুট
পাত্তা কি পায় পুরুত-টুরুত
ভাগিয়ে নিয়েই মাল্যবদল
বৌয়ের নাম হুবা।





শীত-সবজি

সু ব্র ত  দা স 

সবজি শীতের কবজি ঘোরায় 

জবর সবুজ লড়াই,

ফুলকপি আর বাঁধাকপির 

সবচে' বেশি বড়াই!


পালং মূলো ওড়ায় ধুলো 

অহঙ্কারেই গাজর-

বিট এর সাথে ফিট হয়ে ভাই 

ফোলায় সে কী পাঁজর!!


গুটি গুটি, কড়াই শুঁটি 

নজর কাড়ে সবার,

কত রকম তরকারিতে 

ঝাঁপ দেবে সে ক'বার!


মনের খাতায় ধনেপাতার 

সে কী আধিপত্য,

অলগলির পিয়াজকলির 

জয়জয়কার সত্য!!


হিমশিম খায়, শিম ডাকে তায় 

আয় টমেটো ওয়েলকাম,

লাল শাক দেখে সেলাম ঠোকে 

সবুজ ক্যাপসিকাম!!





বাঙালীর শীত

বি শ্ব রূ পা  ব্যা না র্জী 

শীতের রোদ মেখে গায়
পৌষ মাঘেরা গান গায়
গাছের পাতা ঝরে যায় 
বসন্ত দেয় সাড়া।

বাউল ভাটিয়ালি গান 
অথবা ছৌয়ের নাচ 
শিল্প আর সংস্কৃতিতে 
হই যে মাতোয়ারা।

খেজুরের রস 
আর পিঠে পুলি 
আরও একবার মনে করায় 
আমরা বাঙালী।।





আর্যার হাজারো প্রশ্ন

শি বা নী  চৌ ধু রী

সূর্য কেন ঠিক দুপুরে মাথার ওপর থাকে?
চাঁদটা কেন ভেসে থাকে মেঘের ফাঁকে ফাঁকে?
তারাগুলো বন্ধু বুঝি! একসাথে তাই থাকে?
ওরা সবাই আমার মতোই ভালোবাসে মা'কে?

সব গাছের‌ই পাতার রঙ সবুজ কেন হয়?
লাল নীল হলুদ সাদা, ফুল কালো কেন নয়?
প্রজাপতির পাখা ভরে আলপনা কে আঁকে?
জোনাকির ওই আলোটা কেই বা জ্বেলে রাখে?

গরুর মাথায় দেখি তো দুইখানা শিং আছে,
পাখি কেন বাসা বানায় এ গাছে সে গাছে?
বিড়াল কেন মাছ খায়, ছাগলে ঘাস পাতা?
রোদ উঠলে কুকুরদের দাওনা কেন ছাতা?

বৃষ্টি মানেই আকাশ থেকে জল পড়ে ঝরঝর,
বাজ পড়লে আলোর ঝিলিক, শব্দ কড়কড়---
কতো কিছুই জানতে ইচ্ছে হয় যে মনে মনে,
তাইতো এতো প্রশ্ন করে আর্যা জনে জনে ।।




হিমেল শিশির

বি বে কা ন ন্দ  ন স্ক র

হিম টুপ টুপ হিমেল শিশির
চোখের পাতায় হিম
ঘ্রাণ বাতাসে হিমেল পরশ
নাচন তাদ্রিম -দ্রিম ।
হিম সাগরের হিমেল ছোঁয়ায় 
হিমেল বারান্দাতে
হিম কলেবর হিমের সূরজ
 নরম হিমেল প্রাতে ।

হিম টুপ টুপ হিমেল শিশির
সোহাগ বিন্দু ঘাসে
রোদের আভায় ভোরের সভায়
হিম কণিকা হাসে ।
হিম মাখা ফুল হিম রাঙা দুল
হিমেল মেয়ের খুশি
হিমের পরশ হিম পরশে
বাজায় হিমের বাঁশি ।




ইকির মিকির চামর চিকির

সা য় ন্ত ন  ধ র 

ইকির মিকির চামর চিকির, 
করছে শুধু কিচিরমিচির
টিনে টুপটাপ ঝরছে শিশির, 
গা-ঘেষে গরম হওয়ার ফিকির

ওরে আদরের তুর্কী সেনা
খাচ্ছে খুঁটে ডালিয়া দানা
নুড়ি পাথরও চলছে বোঝাই
কিচিরমিচির ঠোঁটে সদাই।

পালক শূন্য রঙীন মাথা
শীতের জন্য রয়েছে কাঁথা
দুটো ধূসর দুটো সাদা
ছোট্টটা তো ঘুমিয়ে কাদা।

সারাটাদিন অফিস ঘরে
টুকুর টুকুর টাইপ চলে
সন্ধ্যা হলেই ঘরে ফিরে
ঘুম যাপনের প্রয়াস চলে।

চালকুমড়ো গাজর কুচি
রাইপাতা আর পেঁয়াজ কুচি 
গম, ভুট্টা, ছোলা খাওয়া
মাঝে একটু নাইতে যাওয়া।

বুলবুল, ঘুঘু, টিয়েকে দেখে
উড়তে চায় তোদের মন
দৌড়টাও তো শিখতে হবে
মুরগি, ময়ূর তোদের আপন।

ছোট্টবেলায় আমার ছিল 
একটা ডাহুক ছানা
তোদের মধ্যে অমর সে আজ 
বেঁচে থাক তুর্কী সেনা।




মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চতুর্থ বর্ষ || প্রথম ওয়েব সংস্করণ || শারদ সংখ্যা || ১২ আশ্বিন ১৪৩১ || ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

চতুর্থ বর্ষ || দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওয়েব সংস্করণ || হিমেল ও বাসন্তী সংখ্যা || ৯ চৈত্র ১৪৩১ || ২৩ মার্চ ২০২৫

তৃতীয় বর্ষ || তৃতীয় ওয়েব সংস্করণ || বাসন্তী সংখ্যা || ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ || ১০ মে ২০২৪