ছড়া

খোকার প্রশ্ন

তু হি ন কু মা র চ ন্দ

ভোর বেলাতে বাবার কাছে বলছে ডেকে বিকি
ট্রামের কেন মাথায় বাবা এত্ত বড় টিকি!
কেনই বাবা নদীর জলে ঢেউগুলি খুব কম
কেনই বাবা লুচির সাথে মানায় আলুর দম!

বাবা বলেন বকর বকর একটুখানি থামা,
বল দিকিনি কেবা ছিলেন শাজাহানের মামা!
বলতে পারিস আরব দেশে খেজুর কেন ফলে
বলতো কেন আকাশ থেকে চাঁদ নামেনা জলে!

অবাক হয়ে বাবার দিকে তাকিয়ে থাকে খোকা
আমি কি আর ওসব জানি অতই আমি বোকা,
তুমি আমায় শিখিয়ে দিলে শিখবো আমি তবে
নইলে আমার বিদ্যে বুদ্ধি কেমন করে হবে?

বাবা তুমি বলতে পারো টাক কেন হয় মাথায়
বলতে পারো হাজার ফুটো কেন দাদুর ছাতায়!
কেনই বাবা নালার পাশে ক্ষুধায় মানুষ কাঁদে
বলতে পারো বৃষ্টি বাদল হয়না কেন চাঁদে?

জটিলতর প্রশ্নগুলো শিখলো কোথায় খোকা
বুদ্ধি যে তার ভর্তি মাথায় কে বলেছে বোকা!
খোকার প্রশ্ন মাথায় ঘোরে বুদ্ধিতে যায় চেনা
বুদ্ধি যে তার ভর্তি মাথায় জন্ম থেকেই কেনা।





বুঝবে কেমন মজা

তু হি ন  কু মা র  চ ন্দ 

পড়ার ঘরে মোবাইল নিয়ে মোবাইল ঘাঁটে ছেলে,
সহজ কথায় মায়ের কাছে চাইলে ওটাও মেলে।
অফিস থেকে ফিরলে বাবা সেকি পড়ার ঘটা!
কেউ জানেনা গোপন কথা শুধুই জানে পটা।

বাবা ভাবেন বেশ হয়েছে পড়ায় ভীষণ মন,
এইটুকুনই ছেলে দু'টো পড়বে কতক্ষণ!
বলেন বাবা একটু না হয় বেড়িয়ে এসো ছাদে,
দেখে এসো পাখির ছানা কেনই তারা কাঁদে!!

এমন সময় মোবাইল বাজে কল করেছেন কাকা,
মা রয়েছেন রান্নাঘরে মোবাইল খাতায় ঢাকা।
বাবার পাশেই রাখা ছিলো লাইন টানারই স্কেল, 
মায়ের মোবাইল লুকিয়ে কেন রেখেছিস রাস্কেল?

বলছে পটা মায়ের থেকে চুপ করে না দাদা,
দেখছিলো যে রিলের ছবি সঙ্গে হাঁদা ভোঁদা।
পড়লো পিঠে স্কেলটা এসে সেকি ভীষণ কান্ড,
অঙ্ক ভূগোল হয়নি কিছুই ভাঙ্গলো তেলের ভান্ড।

মা এসে কন গোলটা কিসের কিসের গন্ডগোল,
সারা পাড়া মাথায় কেন নাও না সঙ্গে ঢোল।
বলেন বাবা ছেলেরা সব মোবাইল ঘাটে রোজ,
পাওনি তো টের রান্না শুধুই রাখোই না তার খোঁজ!

এদের পাঠাও বোর্ডিংয়ে কাল তবেই হবে সোজা,
বেরিয়ে যাবে মোবাইল ঘাঁটা বুঝবে কেমন মজা।





হতাশ সদানন্দ

অ জি ত  চৌ ধু রী

বাদল দিনে মাংস কিনে
সঙ্গে মিষ্টির হাঁড়ি,
সদানন্দ মনে আনন্দ 
চললো শ্বশুর বাড়ি।

জোরে জোরে বৃষ্টি পড়ে 
ছাতা মাথায় দিয়ে,
ক্ষণে ক্ষণে ভাবছে মনে 
খিচুড়ি খাবে গিয়ে!

শ্বশ্রূমাতা কণকলতার 
রান্নার হাত পাকা,
ভাবছে তবে ভালোই হবে 
এই ক'টা দিন থাকা!

যেই গিয়েছে বাড়ির কাছে 
ভীষণ খারাপ মন,
তীর্থে গেছে শ্বশ্রূমাতা 
মথুরা বৃন্দাবন।






বর্ষা নূপুর

সু ব্র ত  দা স

টিপ টাপ, টাপুর টুপুর
দেখি আজ সারা দুপুর,
আহা শুনি বর্ষা নূপুর
খুশি মন আকাশ উপুড়!

ঝিরিঝিরি ইলশেগুঁড়ি
বকুল ও হিজল গুড়ি, 
মাতাবেই আষাঢ়পুরি
কেতকী-কদম কুঁড়ি!!

ঝমাঝম মুষলধারে
করাঘাত বদ্ধ দ্বারে,
রাংতা পাতার আড়ে
হাসনু সুবাস ছাড়ে!

মোট কথা বর্ষা এলে
বই খাতা সত্যি ফেলে,
ফুটবল বেড়াই খেলে
একদল দামাল ছেলে!!






নৌকা

গো বি ন্দ  মো দ ক 

ছোটবেলায় আমার ছিল প্রিয় একটি খেলা, 

বর্ষাকালে বানিয়ে নিতাম কাগজেরই ভেলা। 

দুপুর বেলা আকাশ জুড়ে মেঘ করতো যেই, 

বইপত্র গুটিয়ে দিতাম-— পড়াতে মন নেই!

অঙ্ক খাতার পাতা ছিঁড়ে কাগজের নৌকা গড়ে, 

"আয় বৃষ্টি ঝেঁপে" গাইতাম ভীষণ জোরে জোরে। 


অমনি আমার ডাকটি শুনে বৃষ্টি আসতো জোরে, 

এক মুহূর্তেই বৃষ্টির জলে— উঠোন উঠতো ভরে।

একে একে কাগজের নৌকা ভাসাতাম সেই জলে, 

অধীর হয়ে দেখতাম সব কেমন করে চলে!

বৃষ্টি-ফোঁটার ঢেউয়ে নৌকা চলতো ঘুরে ঘুরে, 

মনে তখন আনন্দ গান বাজতো বাদল সুরে। 

কাগজের নৌকাগুলো ভীষণ জলের তোড়ে, 

উঠোন থেকে নালায় পড়ে ছুটত ভীষণ জোরে। 

মনে ভাবতাম নৌকা যাবে তেপান্তরের দেশে, 

সেখান থেকে পরী-রাণী আসবে মিষ্টি হেসে!

কাগজের নৌকার কথা আজও মনে পড়ে, 

মনের মধ্যে বৃষ্টি তখন— মুষলধারে ঝরে!






মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চতুর্থ বর্ষ || প্রথম ওয়েব সংস্করণ || শারদ সংখ্যা || ১২ আশ্বিন ১৪৩১ || ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪

তৃতীয় বর্ষ || দ্বিতীয় ওয়েব সংস্করণ || হিমেল সংখ্যা || ৪ ফাল্গুন ১৪৩০ || ১৭ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

তৃতীয় বর্ষ || তৃতীয় ওয়েব সংস্করণ || বাসন্তী সংখ্যা || ২৭ বৈশাখ ১৪৩১ || ১০ মে ২০২৪